নয়াদিল্লি, ১৮ জানুয়ারি, ২০২৩
ভিডিও কনফারেন্সের মঞ্চে সাংসদ খেল মহাকুম্ভ ২০২২-২৩ এর দ্বিতীয় পর্যায়ের আজ সূচনা করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। শ্রী হরিশ দ্বিবেদীর উদ্যোগে বস্তি জেলায় এর আয়োজন করা হয়েছে। শ্রী দ্বিবেদী ২০২১ সাল থেকে বস্তি থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য। কুস্তি, কবাডি, খো খো, বাস্কেটবল, ফুটবল, হকি, ভলিবল, হ্যান্ডবল, দাবা, ক্যারম, ব্যাডমিন্টন, টেবিল টেনিস ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের ইন্ডোর ও আউটডোর খেলার প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় এই মহাকুম্ভে। এছাড়াও, প্রবন্ধ রচনা, চিত্রাঙ্কন, রঙ্গোলি তথা আলপনা আঁকা সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক বিষয়ের প্রতিযোগিতা সাংসদ মহাকুম্ভের আরেকটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য।
মহাকুম্ভের সূচনাকালে প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে বলেন, বস্তি হ’ল – মহর্ষি বশিষ্টের স্পর্শধন্য এক পুণ্যধাম। শ্রম, ধ্যান, ত্যাগ স্বীকার ইত্যাদির জন্য এই পুণ্যভূমিটি বিখ্যাত।
খেল মহাকুম্ভের আকার ও আয়তনের বিশেষ প্রশংসা করে শ্রী মোদী আশা প্রকাশ করেন যে, ক্রীড়া ক্ষেত্রে ভারতের পারদর্শিতার যে ঐতিহ্য রয়েছে, তা এই মহাকুম্ভের বিভিন্ন প্রতিযোগিতার মাধ্যমে প্রতিফলিত হবে। প্রায় ২০০ জন সাংসদ তাঁদের নিজের নিজের নির্বাচন ক্ষেত্রে এই ধরনের খেল মহাকুম্ভের আয়োজন করে থাকেন বলে তিনি উল্লেখ করেন। কাশীর সাংসদ রূপে তিনি জানান, বারাণসীতেও এই ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এই ধরনের ক্রীড়া সূচির উদ্যোগ আয়োজনের মধ্য দিয়ে সাংসদরা নতুন প্রজন্মের ভবিষ্যতকে সুগঠিত করে তোলার চেষ্টা করেন বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন।
শ্রী মোদী জানান, এই ধরনের ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় যে সমস্ত খেলোয়াড় যোগ দেন, তাঁদের প্রশিক্ষণ ও অনুশীলন দেওয়া হয় স্পোর্টস অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার ব্যবস্থাপনায়। এবারের খেল মহাকুম্ভে প্রায় ৪০ হাজার খেলোয়াড় অংশগ্রহণ করছেন বলে আনন্দও প্রকাশ করেন তিনি। খেলোয়াড়দের এই সংখ্যা এর আগেরবারের তুলনায় তিন গুণ বেশি বলে প্রসঙ্গত জানান তিনি।
একটি খো খো প্রতিযোগিতা প্রত্যক্ষ করে দৃশ্যতই আনন্দ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। অংশগ্রহণকারী প্রত্যেককেই অভিনন্দন জানিয়ে খেলার জগতে তাঁদের সাফল্য কামনা করেন তিনি।
সাংসদ খেল মহাকুম্ভে মহিলাদের অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উত্তর প্রদেশের পূর্বাঞ্চলের বস্তি এবং ভারতের অন্যত্র মহিলারা ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে তাঁদের মেধা ও দক্ষতাকে বিশ্বমানে উন্নীত করেছেন। মহিলাদের জন্য অনুর্ধ্ব ১৯ টি-২০ ক্রিকেট বিশ্বকাপের ঘটনা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঐ প্রতিযোগিতায় টিম ক্যাপ্টেন হিসাবে শ্রীমতী শেফালি ভার্মার দক্ষতা ও পারদর্শিতা ছিল এক কথায় ক্রীড়াপ্রেমীদের মুগ্ধ করে দেওয়ার মতো। শ্রীমতী ভার্মা ৫টি বলে পরপর বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ওভারের শেষ বলটিতে একটি ছক্কা হাকান। এর ফলে, মাত্র এক ওভারেই তাঁর রান গিয়ে দাঁড়ায় ২৬। দেশের আনাচে-কানাচে এই ধরনের অনেক প্রতিভাই যে লুকিয়ে রয়েছে একথার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ক্রীড়া প্রতিভাকে খুঁজে বের করার ক্ষেত্রে সাংসদ খেল মহাকুম্ভ এক অনুঘটকের ভূমিকা পালন করেছে।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে আরও বলেন যে, খেলাধূলাকে এক সময় পাঠ্য বহির্ভূত অতিরিক্ত কাজ বলে মনে করা হ’ত। ভাবা হ’ত যে, খেলাধূলা নিছকই শখ বা হবি মাত্র। অতএব, তা মূল্যহীন। এই ধরনের মানসিকতা দেশের প্রভূত ক্ষতিসাধন করেছে। অনাদর ও অবহেলার শিকার হয়ে দেশের বহু তরুণ প্রতিভাই নষ্ট হয়ে গেছে। কিন্তু, গত ৮-৯ বছরে অতীতের এই ভুল সংশোধন করার জন্য দেশ নানাভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, যাতে খেলাধূলার উপযোগী এক উন্নততর পরিবেশ সৃষ্টি করা যায়। এর সুবাদে বহু তরুণ ছেলেমেয়ে খেলাধূলাকে তাঁদের পেশাগত জীবনের অংশ করে তুলেছেন। স্বাস্থ্য, ফিটনেস, দলবদ্ধতার মানসিকতা, উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির উপায়, পেশাগত সাফল্য এবং ব্যক্তিগত পর্যায়ে উন্নতি করার প্রচেষ্টা এখন দেশবাসীর মনে দানা বেঁধে উঠেছে।
খেলাধূলা সম্পর্কে সাধারণের চিন্তাভাবনা এখন কিভাবে প্রভাবিত হয়েছে, সেই প্রসঙ্গের অবতারণা করে শ্রী মোদী বলেন, ক্রীড়া ক্ষেত্রে দেশের সাফল্য একথাই প্রমাণ করে যে দেশবাসীর মানসিকতার এখন অনেকটাই পরিবর্তন ঘটেছে। অলিম্পিক্স এবং প্যারালিম্পিক্স – এ জাতির ঐতিহাসিক সাফল্য ও পারদর্শিতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন যে, খেলাধূলার বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারতের সাফল্য এখন বিশ্ববাসীর কাছে এক আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুধু তাই নয়, খেলাধূলাকে সমাজে এখন বিশেষ মর্যাদার চোখেই দেখা হয়। এর ফলশ্রুতিতেই জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিভিন্ন খেলায় নজির বিহীন সাফল্য অর্জন করেছে ভারত।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ হ’ল এক সূচনা মাত্র, এখনও আমাদের অনেক পথ অতিক্রম করা বাকি রয়ে গেছে। খেলাধূলার অপর নাম দক্ষতা অর্জনের সঙ্গে সঙ্গে চরিত্র গঠন। খেলাধূলার মাধ্যমে উৎসাহিত হয় মেধা ও সংকল্পও। ক্রীড়ার উন্নয়নে প্রশিক্ষণ ও অনুশীলনের গুরুত্ব সম্পর্কে বলতে গিয়ে শ্রী মোদী পরামর্শ দেন যে, খেলোয়াড়রা তাঁদের প্রশিক্ষণকে কতটা কাজে লাগাতে পারছেন, তা জানার জন্য ক্রীড়া প্রতিযোগিতা নিরন্তর ও নিয়মিতভাবে অনুষ্ঠিত হওয়া উচিৎ। বিষয়টির ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা বিভিন্ন স্তরে ও আঞ্চলিক পর্যায়ে খেলোয়াড়দের বুঝতে ও জানতে শেখায় যে, ক্রীড়া জগতে তাঁদের সাফল্যের সম্ভাবনা কতখানি। এইভাবে খেলাধূলার কৃৎকৌশল সম্পর্কে তাঁরা যেমন সতর্ক হয়ে ওঠেন, অন্যদিকে তেমনই প্রশিক্ষকদেরও সুবিধা হয় খেলোয়াড়দের দুর্বলতার স্থানগুলি চিহ্নিত করে তা দূর করার। এক্ষেত্রে দেশের যুব সমাজ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং শীতকালীন খেলাধূলার আয়োজন অ্যাথলিটদের মানোন্নয়নের নানা সুযোগ এনে দিয়েছে। ২ হাজার ৫০০ জন অ্যাথলিটদের প্রতি মাসে তাঁদের মানোন্নয়নের জন্য খেলো ইন্ডিয়া কর্মসূচির আওতায় ৫০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়। অন্যদিকে, টার্গেট অলিম্পিক্স পোডিয়াম স্কিম অর্থাৎ টপস্ – এর আওতায় ৫০০ জন সম্ভাবনাময় খেলোয়াড়কে প্রশিক্ষণ দানের ব্যবস্থা রয়েছে। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতায় সামিল হওয়ার জন্য যে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে, তার আওতায় কয়েকজন খেলোয়াড়কে আর্থিক সহায়তা বাবদ দেওয়া হয় আড়াই থেকে সাত কোটি টাকা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ক্রীড়া জগতে চ্যালেঞ্জ বা সমস্যা রয়েছে অনেক। তার মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় সরকার এক বিশেষ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। খেলাধূলার ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত সহায়সম্পদ, প্রশিক্ষণ, অনুশীলন, প্রযুক্তিগত জ্ঞান ও দক্ষতা, আন্তর্জাতিক আঙ্গিনায় প্রতিভাধর খেলোয়াড়দের প্রবেশ ও যোগদান, খেলোয়াড় নির্বাচনের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতার প্রসার – এই সমস্ত কিছুই নিশ্চিত করা হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ক্রীড়ার উন্নয়নে একদিকে যেমন স্টেডিয়াম গড়ে তোলা হচ্ছে, অন্যদিকে তেমনই কোচ বা প্রশিক্ষকদেরও নিয়োগ করা হচ্ছে। বস্তির মতো অন্যান্য জেলাগুলিতেও এই সুযোগ সম্প্রসারিত হয়েছে।
শ্রী মোদী জানান, সারা দেশে ১ হাজারেরও বেশি খেলো ইন্ডিয়া জেলা কেন্দ্র গড়ে তোলা হচ্ছে। এর মধ্যে ৭৫০টির কাজ ইতিমধ্যেই সম্পূর্ণ হয়েছে। শুধু তাই নয়, দেশের সবকটি ক্রীড়াভূমিকে জিও ট্যাগিং – এর আওতায় নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে, যাতে প্রশিক্ষণ ও অনুশীলনের ক্ষেত্রে খেলোয়াড়দের কোনও সমস্যায় পড়তে না হয়।
প্রধানমন্ত্রী জানান, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের তরুণ ও যুবকদের জন্য মণিপুরে একটি ক্রীড়া বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। উত্তর প্রদেশের মীরাটেও আরেকটি ক্রীড়া বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার কাজ এখন চলছে। উত্তর প্রদেশের বিভিন্ন জেলায় খেলাধূলার উন্নয়নে হস্টেলও খোলা হয়েছে। স্থানীয় তথা আঞ্চলিক পর্যায়ে জাতীয় পর্যায়ের সুযোগ-সুবিধা সম্প্রসারণের ব্যবস্থা করতে সরকার বিশেষভাবে সচেষ্ট রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
ফিট ইন্ডিয়া আন্দোলনের গুরুত্ব প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, ফিটনেসের গুরুত্ব কতখানি সে সম্পর্কে অবগত দেশের প্রতিটি খেলোয়াড়ই। তবে, এজন্য যোগাভ্যাসকে তাঁদের প্রত্যহিক জীবনচর্চার অংশ করে তোলার পরামর্শ দেন তিনি। শ্রী মোদী বলেন, যোগাভ্যাসের মাধ্যমে শুধু দেহই নয়, মানুষের মনও সচেতন হয়ে ওঠে। খেলোয়াড়রা যদি এইভাবে খেলাধূলা অনুশীলনের পাশাপাশি, নিয়মিতভাবে যোগচর্চা করে যান, তা হলে তাঁদের দক্ষতা ও পারদর্শিতা আরও বৃদ্ধি পাবে।
২০২৩ বছরটিকে যে আন্তর্জাতিক বাজরাবর্ষ রূপে উদযাপনের কথা ঘোষণা করা হয়েছে, তার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খেলোয়াড়দের দৈহিক পুষ্টি যোগাতে বাজরার এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
এদিনের অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী যোগী আদিত্যনাথ এবং সাংসদ শ্রী হরিশ দ্বিবেদী।
PG/SKD/SB
Second phase of Saansad Khel Mahakumbh begins today in Basti, UP. It is unique celebration of sports and sportsmanship. https://t.co/stCUJ8eoHw
— Narendra Modi (@narendramodi) January 18, 2023
बीते 8-9 वर्षों में स्पोर्ट्स के लिए एक बेहतर वातावरण बनाने का काम किया है। pic.twitter.com/DOhUEaOIIB
— PMO India (@PMOIndia) January 18, 2023
Team bonding से लेकर तनाव मुक्ति के साधन तक, sports के अलग-अलग फायदे लोगों को नजर आने लगे हैं। pic.twitter.com/oxcPhhTWUt
— PMO India (@PMOIndia) January 18, 2023
आज का नया भारत, स्पोर्ट्स सेक्टर के सामने मौजूद हर चुनौती के समाधान का भी प्रयास कर रहा है। pic.twitter.com/1tiXb9ydmR
— PMO India (@PMOIndia) January 18, 2023