নয়াদিল্লি, ১৪ এপ্রিল, ২০২১
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী কোভিড-১৯ পরিস্থিতি এবং দেশ জুড়ে টিকাকরণ অভিযানের বিষয়ে রাজ্যগুলির রাজ্যপালদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে টিকা ছাড়াও আমাদের মূল্যবোধ ও কর্তব্যবোধ আমাদের বড় শক্তি। গত বছর এই যুদ্ধে অংশ নেওয়ার জন্য তিনি নাগরিকদের প্রশংসা করেন। যে কর্তব্যবোধ থেকে নাগরিকরা সে সময় এই যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন এখন সেই একই অনুভূতি নিয়ে জনভাগিদারীতে অংশ নেওয়ার জন্য শ্রী মোদী সকলকে উৎসাহিত করার পরামর্শ নেন। রাজ্যপালদের ভূমিকার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, নিজ নিজ সামাজিক ক্ষমতাকে ব্যবহার করে এই লক্ষ্যে পৌঁছনোর জন্য রাজ্যপালদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাজ্য সরকার এবং সমাজের মধ্যে আরও ভালোভাবে সমন্বয় গড়ে তুলতে রাজ্যপালরা গুরুত্বপূর্ণ সেতুবন্ধের কাজ করবেন। একই সঙ্গে, সম্প্রদায়গত সংগঠন, রাজনৈতিক দল, অসরকারি সংগঠন এবং সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলির সমন্বিত শক্তির মাধ্যমে এই লড়াইয়ে এগিয়ে যেতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী রাজ্যপালদের পরামর্শ দিয়েছেন, তাঁরা যাতে মাইক্রো কনটেনমেন্ট এলাকা গড়ে তোলার জন্য রাজ্য সরকার ও সামাজিক সংগঠনগুলির সঙ্গে নিরলসভাবে যোগাযোগ বজায় রাখেন। অ্যাম্বুলেন্স, ভেন্টিলেটর এবং হাসপাতালে অক্সিজেন সরবরাহ বৃদ্ধির জন্য সামাজিক সংগঠনগুলি সাহায্য করতে পারে। টিকা নেওয়া ও চিকিৎসা করানোর পাশাপাশি, আয়ুষ পদ্ধতি প্রয়োগ করে সচেতনতা গড়ে তোলার জন্য রাজ্যপালরা ভূমিকা নিতে পারেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের যুবসম্প্রদায় হ’ল আমাদের কর্মশক্তি – আমাদের অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আর তাই, কোভিড সংক্রান্ত নিয়মাবলী ও সতর্কতা আমাদের যুবসম্প্রদায় যাতে যথাযথভাবে মেনে চলেন, সেদিকে নজর দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে আমাদের ছাত্রছাত্রীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে জনভাগিদারীর পথে এগোনো যাবে – এই কাজে রাজ্যপালরা বিশেষ ভূমিকা নিতে পারেন। গত বছর এনসিসি এবং এনএসএস – এর সদস্যরা যে ভূমিকা পালন করেছিলেন, এই বছরও তাদের একই রকম ভূমিকা নিতে হবে। এই লড়াইয়ে জনভাগিদারীর জন্য রাজ্যপালরা গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। আর তাই, রাজ্য সরকারগুলির সঙ্গে সমন্বয় বজায় রাখা এবং রাজ্যের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলিকে পরামর্শ দেওয়ার মধ্য দিয়ে রাজ্যপালরা এই লড়াইকে আরও শক্তিশালী করতে পারেন।
কোভিড সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনার সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত বছর এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অভিজ্ঞতা দেশ অর্জন করেছিল এবং স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উন্নতি ঘটানো হয়েছিল, তার সুবিধা আমাদের নিতে হবে। আরটিপিসিআর পদ্ধতিতে নমুনা পরীক্ষার ক্ষমতা বাড়াতে হবে। কিট এবং নমুনা পরীক্ষার অন্যান্য সরঞ্জামের নিরীখে দেশ এখন আত্মনির্ভর হয়ে উঠেছে। এরফলে, আরটিপিসিআর পরীক্ষার খরচ কমেছে। এইসব সরঞ্জাম বর্তমানে জিইএম পোর্টালে পাওয়া যায়। নজরদারি, শণাক্তকরণ এবং নমুনা পরীক্ষার পরিমাণ বৃদ্ধির গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেছেন, আরটিপিসিআর পদ্ধতিতে নমুনা পরীক্ষার পরিমাণ ৬০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭০ শতাংশ করতে হবে। আরও বেশি সংখ্যক মানুষের যাতে নমুনা পরীক্ষা করা যায়, তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেছেন, যথেষ্ট পরিমাণে টিকা যাতে পাওয়া যায়, তা নিশ্চিত করার বিষয়ে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। ১০ কোটি টিকাকরণের মাইলফলক দ্রুত ছুঁয়ে ফেলার সাফল্য ভারত অর্জন করেছে। গত ৪ দিনের টিকা উৎসবের ইতিবাচক প্রভাবের কথা উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেছেন, এই সময়ে টিকাকরণ অভিযানকে সম্প্রসারিত করা হয়েছে এবং আরও নতুন নতুন টিকাকরণ কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
আলোচনা
এই আলোচনায় উপ-রাষ্ট্রপতি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রী অংশ নেন।
উপ-রাষ্ট্রপতি শ্রী এম ভেঙ্কাইয়া নাইডু কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকার প্রশংসা করেছেন। যেভাবে শ্রী মোদী এই মহামারীকে মোকাবিলা করার জন্য পরিকাঠামো গড়ে তুলতে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছেন তিনি তারও প্রশংসা করেছেন। ভারতে এবং সারা বিশ্বে টিকা উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে বিজ্ঞানীদের অবদানের কথা উল্লেখ করে উপ-রাষ্ট্রপতি বলেছেন, আমাদের স্বাস্থ্য কর্মী, সাফাই কর্মচারী এবং সামনের সারিতে থাকা কর্মীরা এই মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
উপ-রাষ্ট্রপতি রাজ্যপালদের নিজ নিজ রাজ্যে সর্বদলীয় বৈঠক করার পরামর্শ দিয়েছেন। কোভিড সংক্রান্ত যথাযথ আচরণবিধির বিষয়ে নাগরিকদের সচেতন করে তুলতে সুশীল সমাজের সংঠনগুলিকে অংশ নিতে বলেন। টিম ইন্ডিয়া স্পিরিট গড়ে তোলার জন্য নীতিগত পার্থক্য দূর করে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। রাজ্যের অভিভাবক হিসাবে রাজ্যপালদের রাজ্য সরকারকে পরামর্শ দিতে হবে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী শ্রী অমিত শাহ বলেছেন, প্রত্যেকটি জীবন রক্ষা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বৈঠকে কোভিড সংক্রমণ ও টিকাকরণ অভিযানের বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব বিভিন্ন তথ্য উপস্থাপন করেছেন। সক্রিয়ভাবে দেশ তার লক্ষ্য পূরণে এগিয়ে চলেছে।
রাজ্যপালরা নিজ নিজ রাজ্যে কোভিড সংক্রমণ ঠেকাতে কি কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে জানিয়েছেন। টিকাকরণ অভিযানকে সঠিকভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সবধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। রাজ্যপালরা তাঁদের রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর বিভিন্ন ঘাটতির দিকটিও উল্লেখ করেছেন।
বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সক্রিয় ভূমিকার মাধ্যমে কিভাবে জনভাগিদারী বাড়ানো যায় এবং লক্ষ্য পূরণে আরও কি কি পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব – রাজ্যপালরা সে বিষয়েও বৈঠকে আলোচনা করেছেন।
CG/CB/SB
PM interacts with the Governors on Covid-19 situation and Vaccination Drive in the country. https://t.co/9KwHDjmW43
— PMO India (@PMOIndia) April 14, 2021
via NaMo App pic.twitter.com/pnjE2QFccd