Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

কেন্দ্রীয় বাজেট সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর বক্তব্য

কেন্দ্রীয় বাজেট সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর বক্তব্য


নতুন দিল্লি, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

 

উন্নয়নের লক্ষ্যে ভারতের যাত্রাপথে আজকের দিনটি হল এক গুরুত্বপূর্ণ মাইল ফলক! কারণ আজকের বাজেট হল ১৪০ কোটি ভারতবাসীর আশা-আকাঙ্খা পূরণের এক বিশেষ প্রতিশ্রুতি। প্রত্যেক ভারতীয়র স্বপ্নের বাস্তবায়ন ঘটতে চলেছে এই বাজেটের মধ্য দিয়ে। দেশের যুবসমাজের জন্য আমরা অনেকগুলি ক্ষেত্রের দ্বারই উন্মুক্ত করে দিয়েছি। উন্নত ভারত গঠনের সংকল্পকে বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাবেন দেশের সাধারণ নাগরিকরাই। সেই অর্থে এবারের বাজেট হল আমাদের বহুগুণ শক্তি বৃদ্ধির এক বিশেষ দ্যোতক। এবারের বাজেটের মধ্য দিয়ে একদিকে যেমন মানুষের সঞ্চয় বৃদ্ধি পেতে চলেছে, অন্যদিকে তেমনি বিনিয়োগ বৃদ্ধির পাশাপাশি সাধারণ নাগরিকরা আরও বেশি মাত্রায় ভোগ্যপণ্য ক্রয়ের সুযোগ লাভ করবেন। এসমস্ত কিছুর মধ্য দিয়ে দেশের উন্নয়নের গতি হবে দ্রুত থেকে দ্রুততর। জনতা অর্থাৎ সাধারণ মানুষের এই বাজেট উপহার দেওয়ার জন্য আমি অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন জি এবং তাঁর সমগ্র টিমকে অভিনন্দন জানাই। 

 

বন্ধুগণ, 

 

সরকারি কোষাগার কিভাবে আরও পূরণ করা যায় সেই দিকেই সাধারণত নজর রেখে বাজেট পেশ করা হয়। কিন্তু এবারের বাজেট হল তার ঠিক বিপরীত। দেশের সাধারণ নাগরিকদের হাতে কিভাবে আরও অর্থের সঞ্চয় ঘটবে তারই একটি বলিষ্ঠ ভিত গঠন করে দিল এবারের বাজেট। সেই সঙ্গে উন্নয়নের কর্মযজ্ঞে দেশের নাগরিকদের অংশীদার করে নেওয়ারও এ হল এক বিশেষ প্রচেষ্টা।

 

বন্ধুগণ, 

 

সংস্কারের লক্ষ্যে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে এবারের বাজেট প্রস্তাবে। পরমাণু শক্তি ক্ষেত্রে বেসরকারি উদ্যোগকে উৎসাহদানের ঘটনা এককথায় ঐতিহাসিক। এর ফলে, আগামী বছরগুলিতে বেসরকারি উদ্যোগে পরমাণু শক্তির উৎপাদন দেশের উন্নয়নকেই আরও ত্বরান্বিত করবে। এই বাজেটে সম্ভাব্য সকল রকম উপায়ে কর্মসংস্থানের সবকটি দিককেই অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমি দুটি বিষয়ের দিকে বিশেষ ভাবে আপনাদের সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করবো। আগামীদিনগুলিতে যেসমস্ত সংস্কার প্রচেষ্টা এক বড় ধরনের পরিবর্তনের অনুঘটক হয়ে উঠতে পারে, সেই প্রসঙ্গেই আমার এই আলোচনা। প্রথমতঃ পরিকাঠামোগত মর্যাদার দিক থেকে ভারতে বড় বড় জাহাজ তৈরির উদ্যোগকে উৎসাহিত করা হবে। সেই সঙ্গে আত্মনির্ভর ভারত অভিযানকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজে আমাদের শক্তি বৃদ্ধি হবে। আমরা সকলেই জানি যে জাহাজ নির্মাণ হল এমন একটি ক্ষেত্র যেখানে সব থেকে বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি সম্ভব। 

 

ঠিক একই ভাবে দেশে পর্যটনের বিকাশ ও প্রসারের সম্ভাবনাও রয়েছে প্রচুর। এই প্রথম পর্যটন ক্ষেত্রটিকে বিশেষ ভাবে গুরুত্ব দেওয়া হল। পরিকাঠামো গঠনের আওতায় দেশের ৫০টি গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন গন্তব্যে হোটেল নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে। এর ফলে, দেশের আতিথেয়তা শিল্প আরও চাঙ্গা হয়ে উঠবে বলে আমি মনে করি। হোটেল শিল্প হল এমন একটি শিল্প যেখানে পর্যটন প্রসারের পাশাপাশি প্রচুর সংখ্যক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিও সম্ভব। উন্নয়নের মন্ত্রকে সম্বল করে দেশ এখন আরও সামনের দিকে এগিয়ে চলেছে। ঐতিহ্য রক্ষার প্রতিশ্রুতিও আমাদের এই যাত্রাপথের সঙ্গী। এবারের বাজেটে এই লক্ষ্যে বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গেই বেশ কয়েকটি সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন গ্রন্থের মূল পান্ডুলিপিগুলির সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে চালু করা হয়েছে জ্ঞান ভারত মিশন। ভারতের জ্ঞান ঐতিহ্যকে অনুসরণ করে একটি জাতীয় ডিজিটাল রিপোজিটরিও গড়ে তোলা হবে। এর অর্থ প্রযুক্তিকে ব্যবহার করা হবে পূর্ণমাত্রায়। জ্ঞান আহরণের যে ঐতিহ্যের আমরা উত্তরসূরি তার আসল নির্যাসটুকু এভাবে সংরক্ষণের চেষ্টা করা হবে।

 

বন্ধুগণ, 

 

এবারের বাজেটে কৃষকদের জন্য যে সমস্ত ঘোষণা রয়েছে তা শুধুমাত্র কৃষি ক্ষেত্রেই নয়, সমগ্র গ্রামীণ অর্থনীতিতেই এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী ধন-ধান্য কৃষি যোজনার আওতায় দেশের ১০০টি জেলায় সেচ ও পরিকাঠামো ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করে তোলা হবে। অন্যদিকে, কিষাণ ক্রেডিট কার্ডের সর্বোচ্চ সীমাও বাড়িয়ে করা হচ্ছে ৫ লক্ষ টাকা। 

 

বন্ধুগণ, 

 

১২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বার্ষিক আয়কে কর মুক্ত বলে ঘোষণা করা হয়েছে এবারের বাজেটে। সমস্ত রকম আয় ও উপার্জনের মানুষের ওপর লাঘব করা হয়েছে করের বোঝা। মধ্যবিত্ত শ্রেণীর যেসমস্ত মানুষ নির্দিষ্ট পরিমাণ আয় ও উপার্জন করে থাকেন তাঁরা এ থেকে বিশেষ ভাবে উপকৃত হবেন। আবার যাঁরা সবেমাত্র নতুন পেশার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন বা নতুন চাকরি পেয়েছেন তাঁদের কাছেও এই কর প্রস্তাব এক বিশেষ সুযোগ এনে দেবে। 

 

বন্ধুগণ, 

 

এবারের বাজেটে নির্মাণ ও উৎপাদনের ওপরও বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া হয়েছে, যাতে শিল্পোদ্যোগী, ক্ষুদ্র-মাঝারি ও অনুশিল্প এবং ক্ষুদ্র উদ্যোগপতিদের আরও বেশি মাত্রায় শক্তি বৃদ্ধি ঘটবে, ফলে নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির সম্ভাবনাও আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠবে। পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি, চর্ম শিল্প, পাদুকা শিল্প, খেলনা উৎপাদন সহ বিভিন্ন ধরনের শিল্প প্রচেষ্টাকে বিশেষ ভাবে সহায়তা দেওয়া হবে এবারের বাজেট প্রস্তাব অনুসরণ করে। এর থেকে এটাই সুস্পষ্ট যে ভারতে উৎপাদিত পণ্য সামগ্রী এখন থেকে আন্তর্জাতিক বাজারেও সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে। 

 

বন্ধুগণ, 

 

বিভিন্ন রাজ্যে বিনিয়োগের উপযোগী প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ গড়ে তোলার প্রস্তাবও রয়েছে এবারের বাজেটে। ক্ষুদ্র-মাঝারি ও অনুশিল্প এবং স্টার্টআপ সংস্থাগুলির অনুকূলে ঋণ সহায়তার পরিমাণকেও দ্বিগুণ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। দেশের তপশিলি জাতি, তপশিলি উপজাতি এবং মহিলা শিল্পোদ্যোগীদের জন্য ২ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ সহায়তাদানের এক কর্মসূচির কথাও বলা হয়েছে। কোনরকম গ্যারান্টি ছাড়াই নতুন শিল্পোদ্যোগীদের এই সহায়তা দেওয়া হবে। নতুন যুগের অর্থনীতির কথা মনে রেখে গিগ কর্মীদের জন্য এবারের বাজেটে একটি বড় ধরনের ঘোষণা করা হয়েছে। এই প্রথমবার গিগ কর্মীরা ই-শ্রম পোর্টালে তাঁদের নাম নথিভুক্তির সুযোগ লাভ করবেন। এর পর থেকে তাঁরা স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সহ অন্যান্য সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির সুযোগ-সুবিধাগুলি ভোগ করতে পারবেন। শ্রমেব জয়তে – অর্থাৎ শ্রমের মর্যাদা দানের প্রতি সরকারি অঙ্গীকারবদ্ধতার এ হল এক বিশেষ প্রতিফলন। নিয়ন্ত্রণমূলক সংস্কার থেকে শুরু করে অর্থনৈতিক সংস্কারের মতো পদক্ষেপগুলি ন্যূনতম সরকারি হস্তক্ষেপের প্রতিশ্রুতি পালনকে আরও জোরদার করে তুলবে। এধরনের একটি কর্মসূচি হল জন বিশ্বাস ২.০, যা আস্থা ও বিশ্বাস ভিত্তিক প্রশাসনকেই প্রতিফলিত করে। 

 

বন্ধুগণ, 

 

এবারের বাজেট শুধুমাত্র বর্তমানের কথা চিন্তা করে পেশ করা হয়নি, ভবিষ্যতের লক্ষ্যেও তা আমাদের প্রস্তুত থাকার দিশা নির্ণয় করে দিয়েছে। তাই আমি আরও একবার এই ঐতিহাসিক জনতার বাজেট ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে অভিনন্দন জানাই আমার সকল দেশবাসীকে। আরও একবার ধন্যবাদ জানাই আমাদের অর্থমন্ত্রীকে। সকলকেই জানাই আমার অসংখ্য ধন্যবাদ। 

 

(প্রধানমন্ত্রীর মূল ভাষণটি ছিল হিন্দিতে)

 

 

SC/SKD/AS