Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

কর্ণাটকের চিক্কবল্লপুরে শ্রী মধুসুদন সাই ইন্সটিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সস অ্যান্ড রিসার্চ-এর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

কর্ণাটকের চিক্কবল্লপুরে শ্রী মধুসুদন সাই ইন্সটিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সস অ্যান্ড রিসার্চ-এর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী


স্যার এম এম বিশ্বেসরাইয়াকে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন

“ ‘সব কা প্রয়াস’ এর মাধ্যম ভারত উন্নত দেশ হওয়ার পথে এগিয়ে চলেছে”

“দরিদ্রদের সেবার জন্য ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানের গৌরবময় ঐতিহ্য রয়েছে কর্ণাটকের”

“আমাদের সরকার দরিদ্রদের উন্নয়নের কাজ করে চলেছে। কন্নড় সহ সব ভারতীয় ভাষায় চিকিৎসা শিক্ষার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে”

“দরিদ্রদের ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর জনগণের স্বাস্থ্যকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে”

“স্বাস্থ্য সম্পর্কিত নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে আমরা মহিলাদের সর্বোচ্চ প্রাধান্য দিচ্ছি”

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ চিক্কবল্লপুরে শ্রী মধুসুদন সাই ইন্সটিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সস অ্যান্ড রিসার্চ-এর উদ্বোধন করেছেন। এসএমএসআইএমএসআর চিকিৎসা সংক্রান্ত শিক্ষার পাশাপাশি উন্নতমানের চিকিৎসা পরিষেবা দেবে বিনামূল্যে। ২০২৩ শিক্ষা বর্ষ থেকে এই প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করবে।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, চিক্কবল্লপুর আধুনিক ভারতের এক রূপকার স্যার এম এম বিশ্বেসরাইয়ার জন্মস্থান। তিনি তাঁর স্মৃতিতে শ্রদ্ধা জানান। ঘুরে দেখেন সমাধি সংগ্রহশালা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, চিক্কবল্লপুর স্যার বিশ্বেসরাইয়ার জন্য অন্যতম অনুপ্রেরণার উৎস।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সত্যসাই গ্রাম পরিষেবার এক দুর্দান্ত মডেল। শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে এই প্রতিষ্ঠান যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে তিনি তার প্রশংসা করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ এই মেডিকেল কলেজ উদ্বোধনের ফলে এই লক্ষ্যপূরণের কাজে আরও কিছুটা অগ্রগতি হল।

প্রধানমন্ত্রী অমৃতকালে উন্নত দেশ গঠনে ভারতের প্রতিশ্রুতিবদ্ধতার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘সব কা প্রয়াস’ অথা সকলের চেষ্টার মাধ্যমে এই প্রতিশ্রুতি পূরণ সম্ভব। ‘বিকশিত ভারত’ গড়ে তোলার জন্য সামাজিক ও ধার্মিক প্রতিষ্ঠানগুলির ভূমিকার ওপরও জোর দেন তিনি। শ্রী মোদী বলেন, দেশের দরিদ্র, দলিত, অনুন্নত ও আদিবাসী শ্রেণীর জনগণের সশক্তিকরণের কাজ চলছে।

প্রধানমন্ত্রী শ্রী সত্যসাই বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল উদ্দেশ্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, চিকিৎসা শাস্ত্রে সরকার দেশকে বিশেষভাবে উন্নত করে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছে। ২০১৪ সালে দেশে ৩৮০টির কাছাকাছি মেডিকেল কলেজ ছিল। বর্তমানে তা বেড়ে হয়েছে ৬৫০। দেশের উন্নয়নশীল জেলাগুলিতে ৪০টি মেডিকেল গড়ে তোলা হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিগত ৯ বছরে দেশে মেডিকেল পড়ার ক্ষেত্রে আসন সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। আগামী ১০ বছরে দেশে যত সংখ্যক চিকিৎসক তৈরি হয়ে আসবেন তা হবে স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত মোট চিকিৎসকের সংখ্যার অনুরূপ। দেশের উন্নয়নের ফল কর্ণাটকেও প্রতিফলিত হচ্ছে বলে উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, এই রাজ্যে ৭০টির কাছাকাছি মেডিকেল কলেজ রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জানান, এ বছরের বাজেট অনুযায়ী দেশে ১৫০টি নার্সিং প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর ফলে নার্সিং ক্ষেত্রে সুযোগ বাড়বে।

প্রধানমন্ত্রী চিকিৎসা শাস্ত্রের পড়ার ক্ষেত্রে ভাষাগত চ্যালেঞ্জের প্রসঙ্গ উত্থাপন করে বলেন, স্থানীয় ভাষায় চিকিৎসা শাস্ত্র নিয়ে পড়ার দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলি পিছিয়ে পড়া অঞ্চলের যুবক-যুবতীদির মেডিকেল বা ইঞ্জিনিয়ারিং পেশায় দেখতে ইচ্ছুক নন বলেও অভিযোগ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সরকার দরিদ্রদের উন্নয়ন কাজ করে চলেছে। কন্নড় সহ সব ভারতীয় ভাষায় চিকিৎসা শাস্ত্র নিয়ে পড়ার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে দেশের দরিদ্র শ্রেণীর জনগণকে কেবল ভোটব্যাঙ্ক হিসেবেই গণ্য করা হত। কিন্তু ‘আমাদের সরকার দেশের দরিদ্রদের পরিষেবা প্রদানকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে। দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর জনগণের স্বাস্থ্যকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।’ শ্রী মোদী জনঔষধী কেন্দ্রগুলির উদাহরণ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, কম খরচে ওষুধ দেওয়ার জন্য সারা দেশে বর্তমানে প্রায় ১০ হাজার জনঔষধী কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে যার মধ্যে ১ হাজারের বেশি রয়েছে কর্ণাটকে। এ ধরনের উদ্যোগ দেশের দরিদ্র শ্রেণীর মানুষের অর্থ সাশ্রয়ের সহায়ক হয়ে উঠছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে অতীত দিনের কথা স্মরণ করেন যখন দরিদ্র শ্রেণীর মানুষ হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবার ব্যয় বহন করতে পারতেন না। বর্তমান সরকার দরিদ্রদের এই সমস্যাটির দিকে বিশেষ নজর দিয়ে আয়ুষ্মান ভারত যোজনা চালু করেছে। এর ফলে দরিদ্রদের জন্য হাসপাতালের দরজা খুলে গেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার দরিদ্রদের জন্য ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনামূল্যে চিকিৎসা নিশ্চিত করেছে।’ তিনি হার্ট অপারেশন, হাঁটু প্রতিস্থাপন, ডায়ালিসিস-এর মতন ব্যয়বহুল শল্য চিকিৎসার উদাহরণ দেন। তিনি বলেন, এ ধরণের চিকিৎসার ব্যয় কমানোর জন্য সরকার প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সব নীতির ক্ষেত্রে মা ও বোনেদের অগ্রাধিকার দিচ্ছি।’ মায়েদের স্বাস্থ্য ও পুষ্টির মান উন্নত হলে সকলের স্বাস্থ্য উন্নত হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার এই লক্ষ্যে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। এ প্রসঙ্গে তিনি শৌচাগার নির্মাণ, বিনামূল্যে গ্যাস সংযোগ, প্রতি বাড়িতে নল বাহিত পানীয় জল প্রদান, সরাসরি ব্যাঙ্কে ভর্তুকি প্রদানের মতো পরিষেবাগুলির উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ব্রেস্ট ক্যান্সারের দিকে সরকার বিশেষ নজর দিয়েছে। গ্রামগুলিতেও প্রাথমিক স্তরে এই রোগ নির্ণয়ের জন্য স্বাস্থ্য কেন্দ্র চালু করা হচ্ছে। কর্ণাটকে ৯ হাজার স্বাস্থ্য পরিষেবা কেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য বোম্মাইজি ও তাঁর দলকে অভিনন্দন জানান।

প্রধানমন্ত্রী এএনএম এবং আশাকর্মীদের সশক্তিকরণ করায় কর্ণাটক সরকারের প্রশংসা করেন। ডাবল ইঞ্জিন সরকার তাদের সম্ভাব্য সব রকম সুবিধা দিতে কাজ করে চলেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। শ্রী মোদী বলেন কর্ণাটকে ১ লক্ষের বেশি নথিভুক্ত সেবাকর্মী ও স্বাস্থ্যকর্মী এবং ৫০ হাজার এএনএম ও আশাকর্মীরা আধুনিক যন্ত্রপাতি পেয়েছেন।

স্বাস্থ্যের পাশাপাশি ডাবল ইঞ্জিন সরকার মহিলাদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের জন্য কাজ করে চলেছে বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। কর্ণাটককে দুধ এবং সিল্কের ভূমি বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডাবল ইঞ্জিন সরকার দুগ্ধজাত সমবায়গুলিতে মহিলাদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে। তিনি বলেন, যখন দেশ সুস্থ থাকে তখন উন্নত ভারত গঠনের লক্ষ্যে সকলে কাজ করেন। ফলে উন্নত দেশ গঠনের লক্ষ্যপূরণের জন্য দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলা সম্ভব হয়।

পরিশেষে প্রধানমন্ত্রী ভগবান সাঁইবাবা ও এই সংস্থার সঙ্গে তাঁর দীর্ঘদিনের যোগাযোগের কথা স্মরণ করেন। তিনি বলেন, ‘আমি এখানে অতিথি নই, আমি এই স্থান এবং ভূমির অংশ। প্রতিবারই আমি যখন আপনাদের মাঝে আসি তখন আমার হৃদয় আপনাদের ভালোবাসায় আরও পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে।’

অনুষ্ঠানে কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী বাসব রাজ বোম্মাই, শ্রী সত্যসাই সঞ্জীবনী সেন্টার ফর চাইন্ড হার্ট কেয়ারের চেয়ারম্যান ডাঃ শ্রী শ্রীনিবাস এবং সদগুরু শ্রী মধুসুদর সাই উপস্থিত ছিলেন।

প্রেক্ষাপট

এই অঞ্চলের ছাত্রছাত্রীদের সাহায্য করতে এবং ব্যয় সাশ্রয়ী মূল্যে স্বাস্থ্য পরিষেবা দিতে প্রধানমন্ত্রী শ্রী মধুসুদন সাই ইন্সটিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সস অ্যান্ড রিসার্চ-এর উদ্বোধন করেন। চিক্কবল্লপুরের মুদ্দেনাহল্লিতে সত্যসাই গ্রামে শ্রী সত্যসাই বিশ্ববিদ্যালয় এটি প্রতিষ্ঠা করে। এই প্রতিষ্ঠানটি চিকিৎসা সংক্রান্ত শিক্ষা প্রদানের পাশাপাশি সকলের জন্য বিনামূল্যে উন্নতমানের চিকিৎসা পরিষেবা দেবে। ২০২৩ শিক্ষা বর্ষ থেকে এই প্রতিষ্ঠানটি কাজ করতে শুরু করবে।