নয়াদিল্লি, ১৯ জানুয়ারি, ২০২৩
কর্ণাটকের নব ঘোষিত রাজস্ব গ্রামে প্রকৃত সুবিধাভোগীদের সত্ব দলিল (হাক্কু পত্র) প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। জনসমাবেশে ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, জানুয়ারি মাসে ভারতের সংবিধান কার্যকর হয় এবং স্বাধীন ভারতে নাগরিকদের অধিকারকে তা সুনিশ্চিত করে। তিনি বলেন, এই পবিত্র জানুয়ারি মাসেই কর্ণাটক সরকার সামাজিক ন্যায়-বিচারের লক্ষ্যে এক উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নিয়েছে। বানজারা সম্প্রদায়ের গুরুত্বপূর্ণ এই অনুষ্ঠান যেখানে ৫০ হাজারেরও বেশি পরিবার এই প্রথম সত্ব দলিল গ্রহণ করেছেন তার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তান্ডা বসতিতে এইসব পরিবারগুলির পুত্র-কন্যাদের জন্য এর ফলে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত হবে। এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী কালাবুরাগি, ইয়াদগিরি, রায়চুর, বিদার এবং বিজয়াপুরা এই ৫টি জেলার বানজারা সম্প্রদায়কে অভিনন্দন জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৩ হাজারেরও বেশি তান্ডা বসতিকে কর্ণাটক সরকার রাজস্ব গ্রাম ঘোষণা করার গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। এই উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য তিনি শ্রী বাসবরাজ বোম্মাই জি এবং পুরো দলকে অভিনন্দন জানান।
বানজারা সম্প্রদায়ের এই এলাকার সঙ্গে তাঁর যোগাযোগের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সম্প্রদায় তাদের নিজের মতো করে জাতীয় উন্নয়নের ক্ষেত্রে নানা অবদান রেখেছে। তিনি উল্লেখ করেন অবিস্মরণীয় সেই মুহূর্তের কথা যখন লক্ষ লক্ষ বানজারা পরিবার ১৯৯৪এর বিধানসভা নির্বাচনের সময় পদযাত্রা করে এসেছিল এবং প্রধানমন্ত্রী সেই সমাবেশে অংশ নিয়েছিলেন। তিনি উল্লেখ করেন, প্রথা মাফিক বেশ-ভূষায় সজ্জিত হয়ে মা এবং বোনেরা তাঁকে স্নেহাশীষ জানিয়েছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডবল ইঞ্জিন সরকার ভগবান বাসবেশ্বরার নির্দেশিত সুশাসন এবং সমন্বয়ের পথ অনুসরণ করে চলেছে। তিনি বলেন, “ভগবান বাসবেশ্বরার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে আমরা সকলের উন্নতিকল্পে কাজ করছি।” প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, অনুভব মন্ডপম-এর মতো মঞ্চের মধ্যে দিয়ে গণতন্ত্র ও ন্যায়-বিচারের নমুনা প্রস্তুত করে দিয়েছে। সমস্ত রকম বৈষম্যের ঊর্ধ্বে উঠে এবং সকলের সশক্তিকরণের লক্ষে তিনি পথ দেখিয়েছিলেন বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বানজারা সম্প্রদায় কঠোর দিন প্রত্যক্ষ করেছে। আজ সময় এসেছে যখন তারা সম্মান এবং স্বচ্ছন্দের সঙ্গে জীবনযাপন করতে পারে। তিনি বলেন, বানজারা সম্প্রদায়ের তরুণদের জন্য বৃত্তি এবং জীবিকা অর্জন ও পাকা বাড়ির বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, যাযাবর জীবন বৃত্তির যেসব অসুবিধা সেদিকেও খেয়াল রাখা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৩ সালে যে সমস্ত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তাব করা হয়েছিল আজ তা পূরণ করা হচ্ছে। ভোট ব্যাঙ্ক রাজনীতির কারণেই এই বিলম্ব ঘটানো হয়েছিল বলে তিনি উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন এই উদাসী মনোভাবের দিন সম্পূর্ণ বদলে গেছে।’
বানজারা সম্প্রদায়ের জননীদের সম্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভয় পাবেন না। আপনাদের এক সন্তান দিল্লিতে এই সমস্ত কিছুর খেয়াল রাখছে।’ প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন তান্ডা বসতিগুলি গ্রাম হিসেবে পরিগণিত হলে গ্রামগুলির মৌলিক সুবিধা পূরণের উদ্যোগ আরও জোরালে হবে। তিনি বলেন, পরিবারগুলি সচ্ছন্দ্যে জীবনযাপন করতে পারবে এবং এই সত্ব দলিল পেয়ে যাওয়ার পর ব্যাঙ্ক থেকে তাদের ঋণ পাওয়া অনেক সহজ হয়ে যাবে। প্রধানমন্ত্রী জানান, কেন্দ্রীয় সরকার দেশ জুড়ে গ্রামীণ বাড়িগুলির জন্য স্বামীত্ব প্রকল্পে সম্পত্তি কার্ড বিতরণ করছে। কর্ণাটকের বানজারা সম্প্রদায় এই সুযোগ পাবে। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার উল্লেখ করে তিনি বলেন, এতে পাকা বাড়ি, শৌচালয়, বিদ্যুৎ সংয়োগ, পাইপ বাহিত পরিশ্রুত জল, গ্যাস সংযোগ দেওয়া হয়ে থাকে এবং ডবল ইঞ্জিন সরকারের এই সমস্ত জনকল্যাণ উদ্যোগের সুযোগ এখন বানজারা সম্প্রদায় ভোগ করতে পারবেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বস্তিতে জীবনযাপন এখন অতীতের ঘটনা।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কর্ণাটক সরকার বানজারা সম্প্রদায়ের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করছে, তা সে জঙ্গল দ্রব্য, শুকনো কাঠ, মধু, ফল অথবা অন্য যেকোনো উৎপাদনই হোক না কেন উপার্জনের মাধ্যম হয়ে উঠবে। তিনি জানান, অতীতের সরকারগুলি কেবলমাত্র কয়েকটি জঞ্জল দ্রব্যের ক্ষেত্রে ন্যূনতম সহায়তা মূল্য প্রদান করতো। কিন্তু এখন ৯০টিরও বেশি জঞ্জল দ্রব্যের ক্ষেত্রে সেই সহায়তা মূল্য প্রদান করা হচ্ছে। এক্ষেত্রেও কর্ণাটক সরকারের সিদ্ধান্তের ফলে বানজারা সম্প্রদায় উপকৃত হবেন বলে তিনি জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার এতগুলো দশক পরেও জনসংখ্যার একটা বিরাট অংশ উন্নয়নের সুযোগ এবং সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিল। দলিত, অবহেলিত, অনগ্রসহ, আদিবাসী, দিব্যাঙ্গ শিশু ও মহিলারা এই প্রথম তাদের প্রাপ্য পাচ্ছেন। তারা মৌলিক সুবিধাগুলি অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে লাভ করতে পারছেন। প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, সাধারণ মানুষের ‘সশক্তিকরণ’-এর লক্ষ্যে আমরা স্বচ্ছ কৌশল নিয়ে এসেছি।
আয়ুষ্মান ভারত এবং বিনা পয়সায় রেশনের মতো প্রকল্পগুলি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “মৌলিক চাহিদাগুলি পূরণ হলে সম্মান প্রতিষ্ঠিত হয়, সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রাত্যহিক অনিশ্চয়তা কাটিয়ে ওঠায় নতুন আশার জন্ম নেয় এবং তারা জীবনধারণের মানোন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করেন।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনধন অ্যাকাউন্ট এই অবহেলিত সম্প্রদায়কে অর্থনৈতিক মূল স্রোতে টেনে এনেছে। ঠিক তেমনি মুদ্রা যোজনা কোনোকিছু বন্ধ না রেখেই তপশীলি জাতি তপশীলি উপজাতি এবং অন্য অনগ্রসর শ্রেণীর জন্য ২০ কোটি ঋণের নিশ্চয়তা দিয়েছে। এর ফলে এই সম্প্রদায়ের মধ্য থেকেই উদ্যোগপতি হয়ে ওঠার সুযোগ সামনে এসেছে। মূদ্রা সুবিধাভোগীর মধ্যে ৭০ শতাংশই মহিলা বলে তিনি জানান। হকাররা কোনো কিছু বন্ধক না রেখেই স্বনিধি প্রকল্পে ঋণ পাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অবকাশ’-এর মধ্যে দিয়ে আমরা আর এক নতুন উদ্যোগ নিতে চলেছি যাতে এই অবহেলিত সম্প্রদায়ের তরুণদের জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং তাদের মধ্যে আস্থার মনোভাব গড়ে তুলবে।
প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, বর্তমান সরকার সমাজে মহিলাদের কল্যাণের ক্ষেত্রে অনুভূতিশীল এবং প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই তাদের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করা হচ্ছে। আদিবাসী সম্প্রদায়ের কল্যাণের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আদিবাসীদের নিয়ে দেশ যে গর্বিত, সরকার তা বিভিন্নভাবে তুলে ধরছে। তিনি বলেন, গত ৮ বছরে দিবাঙ্গ সম্প্রদায়ের উন্নয়ন সুনিশ্চিত করতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং অবহেলিত সম্প্রদায়ের মানুষরা এখন দেশের বিভিন্ন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের শীর্ষে অধিষ্ঠিত হয়েছেন। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার অনগ্রসর শ্রেণীর জন্য জাতীয় কমিশনকে সাংবিধানিক মর্যাদা দিয়েছেন। সারা ভারত মেডিকেল কোটায় অন্য অনগ্রসর শ্রেণীর তালিকাভুক্তদের সংরক্ষণ চালু করেছে এবং কেন্দ্রীয় সরকারের গ্রুপ-সি এবং গ্রুপ-ডি পদে ইন্টারভিউয়ের বাধ্যবাধকতাকে বিলোপ করে দিয়েছে। এছাড়াও ভারতে আঞ্চলিক স্বীকৃত ভাষাগুলিতে চিকিৎসা, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং কারিগরি বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষা দানের সুযোগ তৈরি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, এই সমস্ত ব্যবস্থার ফলে তপশিলী জাতি, তপশিলী উপজাতি এবং অন্য অনগ্রসর সম্প্রদায়ের গরিব পরিবারগুলি এবং গ্রামের তরুণরা সব থেকে বেশি সুবিধা ভোগ করতে পারছেন।
প্রধানমন্ত্রী জানান, যাযাবর এবং আধা-যাযাবর সম্প্রদায়ের জন্য সরকার একটি বিশেষ উদ্যোগ এবং জনকল্যাণ পর্ষদ প্রতিষ্ঠা করেছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের সরকার এইসব পরিবারগুলিকে প্রত্যেকটি জনকল্যাণ কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত করার কাজ চালাচ্ছে।’
প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, ডবল ইঞ্জিন সরকার মনে করে ভারতে বসবাসকারী প্রত্যেকটি শ্রেণীর প্রথা, সংস্কৃতি, খাদ্য, পোশাক আমাদের শক্তি এবং আমরা তার সংরক্ষণ এবং এই শক্তিকে লালিত করতে চাই। তিনি বলেন, ‘সুহালি, লাম্বানি, লাম্বাডা, লাবানা এবং বাজিগড় আপনাদের যে নামই হোক না কেন সাংস্কৃতিকভাবে আপনারা সমৃদ্ধ এবং বর্ণোজ্জ্বল। দেশের গর্ব এবং দেশের শক্তি আপনারা। আপনাদের হাজার বছরের ইতিহাস রয়েছে। এই দেশের কল্যাণে আপনাদের অবদান রয়েছে।’ এই ঐতিহ্যকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হবে এবং একের সঙ্গে অন্যের উন্নতির পথকে সুনিশ্চিত করা হবে। ভাষণের শেষে প্রধানমন্ত্রী গুজরাট এবং রাজস্থানের বানজারা সম্প্রদায়ের উল্লেখ করেন এবং নতুন জলাশয় তৈরির ক্ষেত্রে লাখা বানজারাদের ভূমিকার কথা জানান তিনি। সেই বানজারা সম্প্রদায়ের জন্যই কাজ করতে পেরে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন।
কর্ণাটকের রাজ্যপাল শ্রী থওয়ার চাঁদ গেহলট, কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বাসবরাজ বোম্বাই, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শ্রী ভগবন্ত খুবা এবং কর্ণাটক সরকারের মন্ত্রীরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
প্রেক্ষাপট
সরকারি প্রকল্পের শতকরা ১০০ ভাগ পূর্ণ করার প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিভঙ্গীর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে কালাবুরাগি, ইয়াদগিরি, রায়জুর, বিদার এবং বিজয়াপুরা এই ৫ জেলার প্রায় ১ হাজার ৪৭৫টি অনথিভুক্ত বসতিকে নতুন শুল্ক গ্রাম হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। কালাবুরাগি জেলার সেদাম তালুকার মালখেদ গ্রামে প্রধানমন্ত্রী এইসব নব ঘোষিত শুল্ক গ্রামে প্রকৃত সুবিধাভোগীদের সত্ব দলিল প্রদান করেছেন। ৫০ হাজারেরও বেশি সুবিধাভোগীদের এই সত্ব দলিল পেয়েছেন।
PG/AB/NS
Speaking at a programme in Kalaburagi, Karnataka where title deeds are being distributed to Banjara community. https://t.co/25R1bFOT3V
— Narendra Modi (@narendramodi) January 19, 2023
A historic day for the Banjara community in Karnataka. pic.twitter.com/HLnc9EPYCG
— PMO India (@PMOIndia) January 19, 2023
Inspired by the ideals of Bhagwaan Basaveshwara, we are working for welfare of all. pic.twitter.com/evt4K6TBhH
— PMO India (@PMOIndia) January 19, 2023
We are working with a clear strategy for empowering the people. pic.twitter.com/3jbP7vYVjm
— PMO India (@PMOIndia) January 19, 2023
Jan Dhan Yojana has revolutionised financial inclusion. pic.twitter.com/ABU8KqemmH
— PMO India (@PMOIndia) January 19, 2023
Our government is devoted to welfare of every section of society. pic.twitter.com/BoI98RWn0H
— PMO India (@PMOIndia) January 19, 2023
Thank you Yadgiri for the very warm welcome! pic.twitter.com/1z3nuIQn7I
— Narendra Modi (@narendramodi) January 19, 2023
Culturally and historically, the month of January is an important one. Today, several people belonging to the Banjara community will celebrate the festival of development. It is a big day for them… pic.twitter.com/XE9FYcNxeX
— Narendra Modi (@narendramodi) January 19, 2023
Here is how our Government has worked to address the inconveniences faced by the Banjara community. pic.twitter.com/RlEnCgU6hR
— Narendra Modi (@narendramodi) January 19, 2023
ಕೇಂದ್ರದಲ್ಲಿರುವ ಎನ್ಡಿಎ ಸರ್ಕಾರ ಮತ್ತು ಕರ್ನಾಟಕ ಸರ್ಕಾರ ಸಮಾಜದ ಅಂಚಿನಲ್ಲಿರುವ ಸಮುದಾಯಗಳ ಜೀವನವನ್ನು ಹೇಗೆ ಸುಧಾರಿಸಿದೆ ಎಂಬುದನ್ನು ಕಾಣಬಹುದು. pic.twitter.com/CUKtkLTHCO
— Narendra Modi (@narendramodi) January 19, 2023