Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

উন্নত ভারত গঠনের স্বপ্ন সফল করে তুলতে প্রয়োজন দেশবাসীর মিলিত প্রচেষ্টা : প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী

উন্নত ভারত গঠনের স্বপ্ন সফল করে তুলতে প্রয়োজন দেশবাসীর মিলিত প্রচেষ্টা : প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী


নতুন দিল্লি, ১২ জানুয়ারি ২০২৫

 

“বড় বড় লক্ষ্য পূরণ কখনই সরকারের একার দায়িত্ব নয়। সকল নাগরিকের মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমেই এই লক্ষ্য পূরণ সম্ভব।”

জাতীয় যুব দিবস উপলক্ষে ‘বিকশিত ভারত, তরুণ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলাপচারিতা ২০২৫’ অনুষ্ঠানে ভাষণদানকালে এই মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। রাজধানীর ভারত মণ্ডপমে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে এদিন যোগ দিয়েছিলেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ৩,০০০ জন উদ্যমী তরুণ ও যুব নেতা। উল্লেখ্য, স্বামী বিবেকানন্দের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে প্রতি বছর ১২ জানুয়ারি দিনটি যুব দিবস রূপে সারা দেশে উদযাপিত হয়। 

শ্রী মোদী তাঁর ভাষণে আরও বলেন, দেশের যুবসমাজের ওপর স্বামী বিবেকানন্দের ছিল অগাধ আস্থা ও বিশ্বাস। তিনি আরও বিশ্বাস করতেন যে তাঁর শিষ্যরা হবেন তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধি। সিংহের মতো বীর বিক্রমে তাঁরা ঝাঁপিয়ে পড়বেন যেকোন ধরনের সমস্যার সমাধানে। তিনি নিজেও স্বামীজির বিশ্বাস ও ধ্যান-ধারণায় বিশ্বাসী বলে এদিন উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, স্বামী বিবেকানন্দ যদি আজ আমাদের মধ্যে জীবিত থাকতেন তাহলে ২১ শতকের যুবকদের লক্ষ্য করে তিনি তাঁদের সম্পর্কে আরও স্থির প্রত্যয়ী হয়ে উঠতেন। 

তরুণ ও যুবক অংশগ্রহণকারীদের কাছে প্রধানমন্ত্রী আজ তাঁর উন্নত ভারত গঠনের চিন্তা-ভাবনার কথাও ব্যক্ত করেন। এই লক্ষ্য পূরণে অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক তথা কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গীর ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি। শ্রী মোদী বলেন যে উন্নত ভারতে অর্থনীতি এবং পরিবেশ ও পরিস্থিতির একই সঙ্গে উন্নতি ঘটবে। নতুন নতুন সুযোগ সৃষ্টি হবে শিক্ষা এবং আয় ও উপার্জনের ক্ষেত্রে। উন্নত ভারতে সুদক্ষ তরুণ ও যুবক কর্মীর কোন অভাব হবে না। বিশ্বের বড় বড় সংস্থাগুলি এদেশের তরুণদের মধ্যে যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করে। মহর্ষি অরবিন্দ, গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং হোমি জে ভাবার মতো বিশিষ্ট চিন্তাবিদদেরও এদিন স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। 

শ্রী মোদী বলেন যে বিশ্বের বড় বড় সংস্থাগুলিতে গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত রয়েছেন ভারতীয় তরুণ ও যুবকরা। তাঁদের দক্ষতা ও পারদর্শিতা আজ বিশ্বের কাছে এক অনুসরণযোগ্য দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আগামী ২৫ বছর হল এমনই এক গুরুত্বপূর্ণ ‘অমৃতকাল’ যখন উন্নত ভারত গঠনের স্বপ্নকে সফল করে তুলতে যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাবে ভারতীয় যুবসমাজ। একদা অসম্ভবকে তাঁরা যেদিন সম্ভব করে তুলবেন, সেদিনই উন্মেষ ঘটবে এক উন্নত ভারতের। 

বর্তমান যুবসমাজের ক্ষমতায়নে তাঁর সরকার যে অঙ্গীকারবদ্ধ আজ একথাও বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, প্রায় প্রতিটি সপ্তাহে দেশের কোথাও না কোথাও একটি করে নতুন বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠছে। আবার প্রায় প্রত্যেক দিনেই স্থাপিত হচ্ছে একটি করে আইটিআই। তিন দিন অন্তর প্রসার ঘটছে একটি করে অটল টিঙ্কারিং ল্যাবের এবং প্রায় প্রতিদিনই স্থাপিত হচ্ছে দুটি করে নতুন কলেজ। বিগত এক দশককালে দেশে আইআইটি-র সংখ্যা ৯ থেকে উন্নীত হয়েছে ২৫টিতে। অন্যদিকে, আইআইএম-এর সংখ্যা ১৩ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১টিতে। এমনকি, এইমস-এর মতো হাসপাতালগুলির সংখ্যাও বর্তমানে বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে তিনগুণ। গত ১০ বছরে ভারতে মেডিকেল কলেজের সংখ্যাও দ্বিগুণ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। 

প্রধানমন্ত্রীর মতে আগামী ২০৪৭ সালের মধ্যে এক উন্নত ভারত গঠনের স্বপ্নকে সফল করে তুলতে প্রয়োজন প্রতিদিন একটি করে লক্ষ্যমাত্র স্থির করা। আর এজন্য দরকার নিরন্তর প্রচেষ্টা। ভারত যে অনতিবিলম্বে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হয়ে উঠতে চলেছে একথাও আজ গভীর আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ঘোষণা করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ১০ বছরে ২৫ কোটি মানুষকে দারিদ্র্যসীমার বাইরে নিয়ে আসার কাজে আমরা সাফল্য অর্জন করেছি। দেশ যে অনতিবিলম্বে সম্পূর্ণ ভাবে দারিদ্র্য মুক্ত হতে চলেছে একথাও আজ গভীর আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ব্যক্ত করেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী। পুর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণেও দেশ যে নিরবচ্ছিন্ন ভাবে এগিয়ে চলেছে একথাও আজ ঘোষণা করেন তিনি।       

ভারতে আগামী দশকে অলিম্পিকের উদ্যোগ আয়োজনের উচ্চাশামূলক লক্ষ্য পূরণের ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করে শ্রী মোদী বলেন, এজন্য প্রয়োজন দেশবাসীর ঐকান্তিক নিষ্ঠা ও কর্মপ্রচেষ্টা। মহাকাশ শক্তির দিক থেকেও দেশ এখন দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে চলেছে। আগামী ২০৩৫ সালের মধ্যে মহাকাশে একটি স্টেশন তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে ভারতের। চন্দ্রায়নের সাফল্য এবং গগনায়নের জন্য প্রস্তুতিপর্ব আমাদের বিশেষ ভাবে উৎসাহ যুগিয়েছে। যার ফলে চন্দ্রপৃষ্ঠে একজন ভারতীয়র পদার্পণের প্রহর গুণতে শুরু করেছি আমরা। এই ধরনের নানা লক্ষ্য পূরণের মধ্য দিয়ে আগামী ২০৪৭ সালের মধ্যে উন্নত ভারত গঠনের পথকে আমরা আরও প্রশস্ত করে তুলতে পারব। 

প্রাত্যহিক জীবনে অর্থনৈতিক অগ্রগতির সুফল ও প্রভাব প্রসঙ্গে শ্রী মোদী বলেন, অর্থনৈতিক অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে মানব জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই ইতিবাচক সুফল দেখা দেয়। বর্তমান দশকের প্রথম দশকটিতে ভারত ট্রিলিয়ন ডলার অর্থনীতির দেশে উন্নীত হতে পেরেছে। তবে, কৃষি এবং পরিকাঠামো বাজেটের ক্ষেত্রে আমাদের বিনিয়োগের মাত্রা হয়তো ততটা বেশি ছিল না। তবে, ট্রিলিয়ন ডলার অর্থনীতির দেশ হয়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে ভারতের বিভিন্ন পরিকাঠামোর প্রসার ঘটেছে দ্রুত হারে। বিমানবন্দরগুলির সংখ্যা যেমন দ্বিগুণ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে, অন্যদিকে তেমনি পর্যায়ক্রমে চালু হয়েছে অনেকগুলি বন্দে ভারত ট্রেন। বুলেট ট্রেন চালানোর স্বপ্নও ভবিষ্যতে বাস্তবায়িত হতে চলেছে। বিশ্বের মধ্যে ভারত হল এমন একটি দেশ যেখানে ফাইভ-জি ইন্টারনেট সংযোগের মাত্রাও বৃদ্ধি পেয়েছে দ্রুততার সঙ্গে। এমনকি, গ্রামপঞ্চায়েতগুলিতেও পৌঁছে গেছে এই সমস্ত সুযোগ সুবিধা। গ্রাম সড়কগুলি আরও উন্নত ও প্রশস্ত হয়েছে এবং মুদ্রা ঋণের সাহায্যে তরুণ শিল্পোদ্যোগীদের সহায়তার যোগান দেওয়া হয়েছে। আমাদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বিনা ব্যয়ে চিকিৎসা পরিষেবা সহ সূচনা হয়েছে আয়ুষ্মান ভারত কর্মসূচির। কৃষকদের জন্য আর্থিক সহায়তা, দরিদ্র সাধারণ মানুষের জন্য পাকা বাড়ি তৈরি ইত্যাদিও আমরা বাস্তবায়িত করেছি। ভারত বর্তমানে ৫ ট্রিলিয়ন ডলার অর্থনীতির দেশ রূপে নিজেকে তুলে ধরার জন্য নিরন্তর ভাবে এগিয়ে চলেছে। আগামী দশক শেষ হওয়ার আগে দেশ যে ১০ ট্রিলিয়ন ডলার অর্থনীতির দেশে রূপান্তরিত হবে এবিষয়েও সন্দেহের কোন অবকাশ নেই। 

আজকের অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় ক্রীড়া ও যুব বিষয়ক মন্ত্রী ডঃ মনসুখ মান্ডবিয়া, কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী শ্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান এবং কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শ্রী জয়ন্ত চৌধুরী ও শ্রীমতী রক্ষা খাড়সে। 

SC/SKD/AS