Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় শ্রী সনাতন ধর্ম আলয়াম-এর মহা কুম্ভাভিষেকম উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় শ্রী সনাতন ধর্ম আলয়াম-এর মহা কুম্ভাভিষেকম উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ


নতুন দিল্লি, ০২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

 

 

ভেট্রিভেল মুরুগানুক্কু… হরোহরা!  

 

মাননীয় রাষ্ট্রপতি প্রাবো, মুরুগান মন্দির ট্রাস্টের চেয়ারম্যান পা হাসিম, ম্যানেজিং ট্রাস্টি কোবালন, বিশিষ্টজনেরা, তামিলনাড়ু এবং ইন্দোনেশিয়ার পুরোহিত এবং আচার্যগণ, ভারতীয় বংশোদ্ভূতরা, এই পবিত্র অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী ইন্দোনেশিয়া ও অন্যান্য দেশের নাগরিকবৃন্দ এবং এই সুবৃহৎ মন্দির নির্মাণ কাজে অংশগ্রহণকারী প্রতিভাবান শিল্পীবৃন্দ!  

 

জাকার্তায় মুরুগান মন্দিরে মহা কুম্ভ-অভিষেকমে অংশগ্রহণ করতে পারায় সৌভাগ্য আমার হল। এই অনুষ্ঠানে আমার ভাই রাষ্ট্রপতি প্রাবো-র উপস্থিতি আমার জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। যদিও শারীরিকভাবে আমি জাকার্তা থেকে শত শত কিলোমিটার দূরে রয়েছি, কিন্তু মানসিকভাবে এই অনুষ্ঠানেই উপস্থিত রয়েছি। ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে সুসম্পর্কের উদাহরণ এই অনুষ্ঠান। দিন কয়েক আগে রাষ্ট্রপতি প্রাবো ভারত থেকে যখন ফিরেছেন, তখন ১৪০ কোটি ভারতবাসীর ভালোবাসা তাঁর সঙ্গী ছিল। আমি মনে করি, তাঁর মাধ্যমে আপনারা ভারতের শুভেচ্ছা পেয়েছেন।   

 

জাকার্তার মহাকুম্ভ-অভিষেকমের পবিত্র অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে আপনাদের প্রত্যেককে এবং ভগবান মুরুগানের ভারত ও ইন্দোনেশিয়া সহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা কোটি কোটি ভক্তবৃন্দকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। তিরুপ্পুগালের পবিত্র মন্ত্রোচ্চারণের মধ্য দিয়ে আমি ভগবান মুরুগানের প্রার্থনা করি। স্কন্দ শক্তি কবচম প্রত্যেককে রক্ষা করুক। এই মন্দির প্রতিষ্ঠার স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে ডঃ কোবালন এবং তাঁর দলের সদস্যরা যে কঠোর পরিশ্রম করেছেন, তার জন্য তাঁদের অভিনন্দন জানাই। 

 

বন্ধুগণ, 

 

ভারত এবং ইন্দোনেশিয়ার জনগণের মধ্যে সম্পর্ক ভূ-রাজনীতির উর্ধ্বে, হাজার হাজার বছরের সভ্যতার বাঁধনে আমরা আবদ্ধ। আমাদের দুই সভ্যতার ঐতিহাসিক যোগসূত্র রয়েছে। ঐতিহ্য, জ্ঞান এবং আস্থার উপর ভিত্তি করে আমাদের এই বন্ধন, যা অভিন্ন বিশ্বাস এবং আধ্যাত্মিকতার সঙ্গে সম্পৃক্ত। ভগবান মুরুগান এবং ভগবান শ্রী রামের সঙ্গে যেমন আমাদের সম্পর্ক রয়েছে, একইভাবে আমরা ভগবান বুদ্ধের আশীর্বাদধন্য। আর তাই বন্ধুরা, যখন ভারত থেকে কেউ ইন্দোনেশিয়ায় প্রামবানান মন্দিরে প্রবেশ করে হাত জোর করে প্রার্থনা করেন, তখন কাশী অথবা কেদারনাথে যে অধ্যাত্ম অনুভূতি সঞ্চারিত হয়, এখানেও সেই একই অনুভূতি আমরা প্রত্যক্ষ করি। যখন ভারতবাসী কাকাউইন এবং সেরাত রামায়ন শোনেন, তখন বাল্মিকি রামায়ন, কম্ব রামায়ন অথবা রামচরিতমানস শুনে মনে যে আনন্দ বোধ হয়, এক্ষেত্রেও সেই একই অনুভূতি সৃষ্টি হয়। 

 

আর এখন তো ভারতের অযোধ্যায় ইন্দোনেশিয়ার রামলীলা প্রদর্শিত হচ্ছে। আমরা যখন বালিতে “ওঁ স্বস্তি-অস্তু” শুনতে পাই, তখন ভারতে বৈদজ্ঞদের স্বস্তি বচনের কথা মনে পরে। ভারতের সারনাথ এবং বোধগয়ায় ভগবান বুদ্ধের থেকে আমরা যে শিক্ষা লাভ করি, ইন্দোনেশিয়ার বোরবুদুর স্তুপ থেকেও সেই একই অভিজ্ঞতা অর্জন করি। আজও ওড়িশায় বালি যাত্রা উদযাপিত হয়। এর মধ্য দিয়ে প্রাচীন যুগে ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে সমুদ্র যাত্রার কথা আমাদের মনে করিয়ে দেয়, যার মাধ্যমে সাংস্কৃতিক এবং বাণিজ্যিক যোগসূত্র গড়ে ওঠে। আজ যখন ভারতীয়রা ‘গরুড় ইন্দোনেশিয়া’ বিমানে ভ্রমণ করেন, তখন তাঁরা দুটি দেশের অভিন্ন সংস্কৃতির স্বাদ পান। 

 

বন্ধুগণ, 

 

আমাদের সম্পর্ক অনেক শক্ত বাঁধনে আবদ্ধ। সম্প্রতি রাষ্ট্রপতি প্রাবো যখন ভারত সফর করছিলেন, তখন আমরা এই অভিন্ন ঐতিহ্যের বিভিন্ন দিক আলোচনা করছিলাম। আজ জাকার্তায় বিশাল এই মুরুগান মন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আমাদের প্রাচীন ঐতিহ্যের এক স্বর্ণালী অধ্যায় যুক্ত হল। এই মন্দির শুধু আমাদের বিশ্বাসের কেন্দ্রই হয়ে উঠবে না, এটি আমাদের সাংস্কৃতিক মূল্যবোধেরও কেন্দ্র হয়ে উঠবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।  

 

বন্ধুগণ, 

 

আমি শুনেছি এই মন্দিরে ভগবান মুরুগান ছাড়াও অন্য দেবদেবীরাও প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। এই বৈচিত্র্য-বিবিধতা আমাদের সংস্কৃতির অন্যতম ভিত্তি। ইন্দোনেশিয়ায় যাকে বলা হয়, ‘ভিন্নকা তুংগ্গল একা’ — ভারতে আমরা তাকেই বলি বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য। এই বৈচিত্র্যই ইন্দোনেশিয়া এবং ভারতে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষকে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে বসবাস করতে সহায়তা করে। আর তাই, বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য – এই ভাবনায় অনুপ্রাণিত হয়ে আজকের এই পবিত্র অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।  

 

বন্ধুগণ,

 

ভারত এবং ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে আমাদের সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ, ঐতিহ্য এবং পরম্পরা দুদেশের জনসাধারণকে আরও কাছে নিয়ে এসেছে। প্রামবানান মন্দির আমরা যৌথভাবে সংরক্ষণ করতে উদ্যোগী হয়েছি। বোরবুদুর বৌদ্ধ মন্দিরের ক্ষেত্রেও আমাদের অভিন্ন অঙ্গীকার রয়েছে। এইমাত্র আপনাদেরকে আমি অযোধ্যায় ইন্দোনেশিয়ার রামলীলা প্রদর্শনীর বিষয়ে জানালাম। এই ধরনের আরও অনুষ্ঠান যাতে আয়োজন করা যায়, সে বিষয়ে আমাদের উদ্যোগী হতে হবে। রাষ্ট্রপতি প্রাবোর সঙ্গে একযোগে এই লক্ষ্যে দ্রুত কাজ করার বিষয়ে আমি আশাবাদী। 

 

আমাদের অতীত, আমাদের স্বর্ণোজ্জ্বল ভবিষ্যতের মূল ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে। আরও একবার আমি রাষ্ট্রপতি প্রাবো-কে আমার কৃতজ্ঞতা জানাই এবং এই মন্দিরের মহাকুম্ভ অভিষেকম উপলক্ষ্যে সকলকে অভিনন্দন জানাই।  

 

অনেক অনেক ধন্যবাদ!

 

[প্রধানমন্ত্রীর মূল ভাষণটি হিন্দিতে ছিল।]  

 

SC/CB/SKD