আমার বিশেষবন্ধু প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু,
সংবাদ মাধ্যমের বন্ধুগণ, প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এবং মিসেস সারা নেতানিয়াহু, তাঁদেরবাসভবনের দ্বার আমার জন্য আজ উন্মুক্ত করে দেওয়ায় আমি তাঁদের ধন্যবাদ জানাই। তাঁদের উদার এবং আন্তরিক আতিথেয়তায় আমি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ।
বন্ধুগণ,
হলকাস্টে সেইভয়ঙ্কর সন্ত্রাসের ঘটনায় যে ৬০ লক্ষ ইহুদি তাঁদের প্রাণ হারিয়েছিলেন, তাঁদেরস্মৃতির উদ্দেশ্যে সম্মান জানাতে এবং তাঁদের স্মরণ করতে আমি মাত্র কিছুক্ষণ আগেইয়াদ ভাশেম মেমোরিয়াল মিউজিয়ামে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন করে এসেছি। বেশ কয়েক প্রজন্মআগের অকথ্য অত্যাচার এবং অশুভ ক্ষতি ও ধ্বংসের কথা স্মরণ করিয়ে দেয় ইয়াদ ভাশেম।ট্র্যাজেডির গভীরতা কাটিয়ে উঠে এবং ঘৃণাকে জয় করে এক উজ্জ্বল গণতন্ত্র গড়ে তোলারলক্ষ্যে যে অদম্য শক্তির পরিচয় দিয়েছেন আপনারা তাঁর প্রতি এহল এক শ্রদ্ধার্ঘ্যবিশেষ। মানবতা এবং সভ্যতার মূল্যবোধে যাঁরা বিশ্বাসী, তাঁরা সকলেই যে তা রক্ষারজন্য ঐক্যবদ্ধভাবে সচেষ্ট হবেন, এই শিক্ষাই আমরা লাভ করি ইয়াদ ভাশেম থেকে। এইকারণেই আমাদের বর্তমান সময়কালকে যা নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে তুলেছে সেই সন্ত্রাস,উগ্রবাদ এবং হিংসার বিরুদ্ধে আমাদের অবশ্যই প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে রুখে দাঁড়ানোর সময়এখন উপস্থিত।
বন্ধুগণ,
আমাদের এইদু’দেশের জনসাধারণের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্কের ইতিহাস বিগত কয়েক সহস্র বর্ষের।অর্থাৎ, যেদিন প্রথম ইহুদি সম্প্রদায়ের মানুষ ভারতের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলে এসেপৌঁছোন, সেদিন থেকেই সূচনা এই পারস্পরিক সম্পর্কের। সেই সময়কাল থেকেই ইহুদিসম্প্রদায়ের ক্রমবিকাশের শুরু এদেশে। আর এইভাবেই তাঁদের রীতিনীতি, আচার-আচরণ এবংযাবতীয় ঐতিহ্য মিশে যায় ভারতীয় জনসমষ্টির মধ্যে। লেঃজেঃ জেএফআর জেকব, ভাইসঅ্যাডমিরাল বেঞ্জামিন স্যামসন, বিশিষ্ট স্থপতি যোশুয়া বেঞ্জামিন এবংচিত্রাভিনেত্রী নাদিরা, সুলোচনা এবং প্রমীলার মতো ইহুদি সন্তানদের জন্য আমরা গর্বঅনুভব করি। তাঁদের বিভিন্ন অবদান বিশেষভাবে সমৃদ্ধ করে তুলেছে ভারতীয় সমাজেরমূলস্রোতটিকে। ভারতের ইহুদিরা হলেন, দু’দেশের মিলিত ইতিহাসের এক উজ্জ্বল ও সজীবযোগসূত্র। আমার এই ইজরায়েল সফর হ’ল দু’দেশের বিভিন্ন সম্প্রদায়গুলির মধ্যেসুপ্রাচীন মৈত্রী বন্ধনেরই এক বিশেষ উদযাপন। আমি আরও আনন্দিত যে, আগামীকালইজরায়েলে বসবাসকারী প্রচুর সংখ্যক ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রতিনিধিদের সঙ্গে একঅনুষ্ঠানে মিলিত হওয়ার সুযোগলাভ করতে চলেছি।
বন্ধুগণ,
২৫ বছর আগেআমাদের দু’দেশের মধ্যে পূর্ণ কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের পর থেকে দ্রুত বিকাশ ঘটেছেআমাদের পারস্পরিক মৈত্রী সম্পর্কের। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির লক্ষ্যে এক সাধারণ লক্ষ্য,বিশেষ উদ্ভাবন ও প্রযুক্তিগত সম্পর্ক এবং দু’দেশের সমাজ ব্যবস্থাকে সুরক্ষিত রাখারবাসনার মধ্যেই নিহিত রয়েছে আমাদের মিলিত কর্মপ্রচেষ্টার এক বিশেষ সুযোগ। আগামীদশকগুলিতে আমরা গড়ে তুলতে আগ্রহী এমন এক নিবিড় সম্পর্ক যা আমাদের অর্থনৈতিকসহযোগিতাকে পথ দেখাতে পারবে আরও নতুনভাবে। ভারত বর্তমানে বিশ্বে দ্রুততম গতিতেবিকাশশীল এক বৃহৎ অর্থনীতির দেশ। উন্নয়নের ক্ষেত্রে যে সমস্ত অগ্রাধিকার রয়েছে, তাপূরণে প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনকে আরও বেশি করে ব্যবহারের চিন্তাভাবনা রয়েছে আমাদের। এরমাধ্যমে শিক্ষা, বিজ্ঞান, গবেষণা এবং বাণিজ্য প্রচেষ্টার ক্ষেত্রগুলিকেসম্প্রসারিত করা সম্ভব। শান্তি, সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতার বিরুদ্ধে যে সমস্ত হুমকিরআজ আমাদের মুখোমুখি হতে হয়েছে, তার মোকাবিলায় এক বলিষ্ঠ নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলারজন্য আমাদের দুটি দেশই সহযোগিতাবদ্ধ হতে আগ্রহী। এই লক্ষ্য পূরণে একটি সুনির্দিষ্টকার্যসূচি প্রণয়ন ও রূপায়ণের জন্য আমি সহযোগিতার সঙ্গেই কাজ করে যেতে আগ্রহীপ্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু’র সঙ্গে। আমি আরও একবার আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাইপ্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এবং মিসেস নেতানিয়াহু’কে আমাকে এইভাবে সাদর সম্ভাষণজানানোর জন্য।
ধন্যবাদ।আপনাদের সকলকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
PG /SKD/ SB
Sharing my remarks at the press meet with PM @netanyahu. https://t.co/MxUZyLo72s pic.twitter.com/34SZX8j9i1
— Narendra Modi (@narendramodi) July 4, 2017