নতুন দিল্লি, ২২ ডিসেম্বর, ২০২০
নমস্কার,
আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য, মাননীয় ডঃ সৈয়দনা মুফদ্দল সৈফুদ্দিন সাহেব, শিক্ষা মন্ত্রী ডঃ রমেশপোখরিয়াল নিশঙ্ক জী, শিক্ষা রাজ্য মন্ত্রী শ্রী সঞ্জয় ধোতরে জী, উপাচার্য ভাই তারিক মনসুর জী, সমস্ত অধ্যাপক, কর্মচারী, এই কর্মসূচীর সঙ্গে যুক্ত আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রী, আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের লক্ষ লক্ষ প্রাক্তনী, অন্যান্য মাননীয় ব্যক্তিবর্গ এবং বন্ধুগণ,
সবার আগে আমি আপনাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। আপনারা আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শতবার্ষিকী সমারোহ উপলক্ষে আমাকে আপনাদের আনন্দে অংশীদার হওয়ার সুযোগ দিয়েছেন। আমি ছবিগুলো দেখছিলাম – সেঞ্চুরি গেটস, সোসাল সায়েন্স ডিপার্টমেন্ট, মাস কমিউনিকেশন, সমস্ত বিভাগের ভবনগুলিকে সুন্দরভাবে সাজানো হয়েছে। এগুলি নিছকই ভবন নয়, এগুলির সঙ্গে শিক্ষার যে ইতিহাস জড়িয়ে আছে তা ভারতের অমূল্য ঐতিহ্য।
আজ আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করে অনেক মানুষ ভারতের সর্বশ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠানগুলিতে এবং বিশ্বের কয়েকশো দেশে ছড়িয়ে পড়েছেন। আমার বিদেশ সফরের সময় প্রায়ই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনীদের সঙ্গে দেখা হয়, আর তাঁরা অত্যন্ত গর্বের সঙ্গে বলেন যে আমি আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছি। আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনীরা ক্যাম্পাস থেকে নিজেদের সঙ্গে হাসি, আনন্দ এবং শের-শায়েরির একটি ভিন্ন ঘরানা নিয়ে বেরিয়ে আসেন। তাঁরা বিশ্বের যেখানেই থাকুন না কেন, ভারতীয় সংস্কৃতির প্রতিনিধিত্ব করেন।
‘প্রাউড আলিগস’ – এটাই বলেন তো আপনারা? আপনাদের এই গর্বের কারণও রয়েছে। আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় তার ১০০ বছরের ইতিহাসে লক্ষ লক্ষ জীবনকে সুবিন্যস্ত করেছে, একটি আধুনিক এবং বৈজ্ঞানিক ভাবনায় সমৃদ্ধ করেছে। সমাজের জন্য, দেশের জন্য কিছু করার প্রেরণা জুগিয়েছে। আমি সমস্ত বিষয়গুলি উল্লেখ করলে হয়তো সময় কম পড়ে যাবে। আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের এই পরিচিতি, এই সম্মানের ভিত্তি, এর মূল্যবোধের ভিত্তিতেই সৈয়দ আহমেদ খান এই বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এমন প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রী আর এই ১০০ বছরে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে যাঁরা দেশকে সেবা করেছেন, তেমন প্রত্যেক শিক্ষক, অধ্যাপককেও আমি অভিনন্দন জানাই।
এখন করোনার এই সঙ্কট সময়েও আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় যেভাবে সমাজের সেবা করেছে তা অভূতপূর্ব। হাজার হাজার মানুষকে বিনামূল্যে টেস্ট করানো, আইসোলেশন ওয়ার্ড তৈরি করা, প্লাজমা ব্যাঙ্ক গড়ে তোলা আর পিএম কেয়ার ফান্ডে একটি বড় পরিমাণ অর্থের অবদান রাখা সমাজের প্রতি আপনাদের দায়িত্বগুলি বাস্তবায়িত করার দায়বদ্ধতার পরিচয়। কিছুদিন আগেই আমাকে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ডঃ সৈয়দনা সাহেব চিঠি পাঠিয়েছেন। তিনি ভ্যাক্সিনেশন অভিযানে প্রতিটি স্তরে সহযোগিতা প্রদানের কথা বলেছেন। দেশকে সবার উপরে রেখে এধরণের সংগঠিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে আজ ভারত করোনার মতো বিশ্বব্যাপী মহামারীর বিরুদ্ধে সাফল্যের সঙ্গে মোকাবিলা করছে।
বন্ধুগণ,
আমাকে অনেকেই বলেছেন, যে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস নিজেই তো একটি শহরের মতো। অসংখ্য বিভাগ, কয়েক ডজন ছাত্রাবাস, সহস্রাধিক শিক্ষক, অধ্যাপক, লক্ষ লক্ষ ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে একটি যেন মিনি ইন্ডিয়া। আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে একদিকে শতাব্দীকাল ধরে উর্দুর পাশাপাশি হিন্দি, আরবির পাশাপাশি সংস্কৃত পড়ানো হয়। এখানকার গ্রন্থাগারে পবিত্র কুরানের পান্ডুলিপি রয়েছে, অন্যদিকে গীতা, রামায়ণের অনুবাদও ততটাই সয়ত্নে সংরক্ষিত আছে। এই বৈচিত্র্যই আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়েরই নয় দেশেরও মহা শক্তি। আমাদের এই শক্তিকে ভুললে চলবে না, দুর্বল হতে দিলেও চলবে না। আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারতের ভাবনাকে প্রতিদিন আরও শক্তিশালী করে তোলার জন্য আমাদের সবাইকে মিলেমিশে কাজ করতে হবে।
বন্ধুগণ,
বিগত ১০০ বছরে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বের অনেক দেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক মজবুত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। উর্দু, আরবি এবং ফারসী ভাষা নিয়ে এখানে যে গবেষণা হয়, ইসলামি সাহিত্য নিয়ে যে গবেষণা হয়, তা সমগ্র ইসলামিক বিশ্বের সঙ্গে ভারতের সংস্কৃতিক সম্পর্ককে নতুন ইন্ধন জোগায়। আমাকে বলা হয়েছে, যে এখন প্রায় ১০০০ বিদেশী ছাত্র-ছাত্রী এখানে পড়াশুনো করছেন। এক্ষেত্রে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব হলো আমাদের দেশে যা কিছু ভালো, যা কিছু উন্নত, যা দেশের শক্তি বিদেশী ছাত্র-ছাত্রীরা যেন তা দেখে, শুনে, শিখে তাঁদের স্মৃতির মণিকোঠায় সঞ্চিত করে নিজের নিজের দেশে ফিরে যায়। কারণ আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁরা যা-ই শুনবেন, দেখবেন তার ভিত্তিতেই তাঁরা দেশ হিসেবে ভারতের অস্তিস্তের সঙ্গে যুক্ত হবেন। সেজন্যে আপনাদের এই বিশ্ববিদ্যালয় একপ্রকার দ্বৈত দায়িত্ব রয়েছে।
নিজেদের সম্মান বৃদ্ধি এবং খুব ভালোভাবে নিজেদের দায়িত্ব পালন। আপনাদের একদিকে নিজেদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘সফট পাওয়ার’কে আরও উজ্জ্বল করে তুলতে হবে। আর অন্যদিকে জাতি গঠনের ক্ষেত্রে নিরন্তর নিজেদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেক ব্যক্তি, প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রী তাঁদের বক্তব্যগুলি মাথায় রেখে এগিয়ে যাবেন। আমি আপনাদের স্যার সৈয়দের বলা একটি কথা মনে করাতে চাই। তিনি বলেছিলেন, ‘নিজের দেশের জন্য যাঁরা ভাবেন তাঁদের প্রথম এবং সবচাইতে বড় বক্তব্য হলো প্রত্যেক মানুষের কল্যাণে কাজ করা – তা সে মানুষ যে কোনো জাতি, ধর্ম কিংবা মতাবলম্বীই হন না কেন!’
বন্ধুগণ,
তাঁর ওই বক্তব্যকে বোঝানোর জন্য স্যার সৈয়দ একটি উদাহরণ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘যেভাবে মানুষের জীবন এবং তাঁর ভালো স্বাস্থ্যের জন্য শরীরের প্রতিটি অঙ্গ সুস্থ থাকা প্রয়োজন, তেমনি দেশের সমৃদ্ধির জন্য তাঁর প্রতিটি স্তরে উন্নয়ন হওয়া প্রয়োজন।’
বন্ধুগণ,
আজ দেশও সেই পথে এগিয়ে চলেছে, যেখানে প্রত্যেক নাগরিক বৈষম্যহীনভাবে দেশের উন্নয়নে লাভবান হচ্ছেন। দেশ আজ সেই পথে এগিয়ে চলেছে যেখানে প্রত্যেক নাগরিক তাঁর সাংবিধানিক অধিকারগুলি নিয়ে নিশ্চিত থাকবেন। নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে নিশ্চিত থাকবেন। দেশ আজ সেই পথে এগিয়ে চলেছে যেখানে ধর্মের কারণে কেউ পিছিয়ে পড়বেন না, সবাই এগিয়ে যাওয়ার সমান সুযোগ পাবেন, সবাই নিজেদের স্বপ্ন বাস্তবায়িত করতে পারবেন। এর মূল ভিত্তি হলো ‘সবকা সাথ সবকা বিকাশ, সবকা বিশোয়াস’। দেশের ইচ্ছা শক্তি এবং নীতিগুলিতে এই সংকল্পের প্রতিফলন সুস্পষ্ট। আজ দেশ গবিরদের জন্য যে প্রকল্পগুলি রচনা করছে তার সুফল জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে প্রত্যেক মানুষের কাছে পৌঁছচ্ছে।
কোনো ভেদাভেদ ছাড়াই ৪০ কোটিরও বেশি গরিবের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। কোনো ভেদাভেদ ছাড়াই ২ কোটিরও বেশি গরিব মানুষকে পাকা বাড়ি করে দেওয়া হয়েছে। কোনো ভেদাভেদ ছাড়াই ৮ কোটিরও বেশি মহিলাকে রান্নার গ্যাস সংযোগ দেওয়া হয়েছে। কোনো ভেদাভেদ ছাড়াই করোনার সঙ্কটকালে ৮০ কোটি দেশবাসীকে বিনামূল্যে অন্ন সুনিশ্চিত করা হয়েছে। কোনো ভেদাভেদ ছাড়াই আয়ুষ্মান যোজনার মাধ্যমে ৫০ কোটি গরিব মানুষকে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ব্যয়ে বিনামূল্যে চিকিৎসা সম্ভব হয়েছে। যা কিছু এই দেশের, তা প্রত্যেক দেশবাসীর, আর এর মাধ্যমে প্রত্যেক দেশবাসীর লাভবান হওয়া উচিত; আমাদের সরকার এই ভাবনা নিয়েই কাজ করছে।
বন্ধুগণ,
কিছুদিন আগে আমার সঙ্গে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রাক্তনীর দেখা হয়েছিল। তিনি একজন ইসলামিক পন্ডিতও বটে। তিনি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন, যা আমি আপনাদেরকে জানাতে চাই। স্বচ্ছ ভারত মিশনের মাধ্যমে যখন দেশে ১০ কোটিরও বেশি শৌচালয় নির্মিত হয়েছে, তখন সকলেই এর দ্বারা লাভবান হয়েছেন। এই শৌচালয় কোনো ভেদভাব ছাড়াই নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু এর একটি দিক এমন যা নিয়ে তেমন আলোচনা হয়নি, আর শিক্ষা জগতের লক্ষ্যও সেদিকে যায়নি। আমি চাই যে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রী এই বিষয়টি মনোযোগ দিয়ে শোনেন।
আমার বন্ধুগণ,
একটা সময় ছিল যখন আমাদের দেশে মুসলিম মেয়েদের ড্রপআউট হার ৭০ শতাংশের বেশি ছিল। মুসলিম সমাজের উন্নতিতে মেয়েদের এরকম লেখাপড়া অসমাপ্ত রেখে চলে যাওয়া একটি বড় বাধা হয়ে উঠেছিল। কিন্তু ৭০ বছর ধরে আমাদের দেশে এমন পরিস্থিতি ছিল, যে ৭০ শতাংশের বেশি মুসলিম মেয়েরা তাঁদের পড়াশুনা সম্পূর্ণ করতে পারতেন না। এই পরিস্থিতিতে স্বচ্ছ ভারত মিশন শুরু হয়, গ্রামে গ্রামে শৌচালয় নির্মিত হয়। সরকার স্কুলযাত্রী ছাত্রীদের জন্য মিশন মোডে স্বতন্ত্র শৌচালয় তৈরি করায়। আজ দেশের সামনে পরিস্থিতি কেমন? আগে মুসলিম মেয়েদের স্কুল ড্রপআউট হার ৭০ শতাংশেরও বেশি ছিল যা আজ কমতে কমতে ৩০ শতাংশের কাছাকাছি হয়েছে।
আগে মুসলিম মেয়েরা শৌচালয়ের অভাবে পড়াশুনা ছেড়ে দিতেন। এখন পরিস্থিতি বদলেছে। মুসলিম মেয়েদের ড্রপআউটের হার কমানোর জন্য কেন্দ্রীয় সরকার নিরন্তর চেষ্টা চালাচ্ছে। আপনাদের আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে স্কুল ড্রপআউট ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ‘ব্রিজ কোর্স’ চালু করা হয়েছে। আর এখন আমাকে আরেকটি কথা বলা হয়েছে, যা খুব ভালো লেগেছে। আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন ছাত্রীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ৩৫ শতাংশ হয়েছে। আমি আপনাদের সবাইকে অভিনন্দন জানাতে চাই। মুসলিম মেয়েদের শিক্ষা নিয়ে তাঁদের ক্ষমতায়ণের দিকে সরকারের লক্ষ্য রয়েছে। বিগত ৬ বছরে সরকার প্রায় ১ কোটি মুসলিম মেয়েকে ছাত্রবৃত্তি প্রদান করেছে।
বন্ধুগণ,
লিঙ্গের ভিত্তিতে যাতে কোনো ভেদাভেদ না হয়, সবাই যেন সমান অধিকার পান, দেশের উন্নয়ন দ্বারা যাতে সবাই উপকৃত হন আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার পেছনেও এই অগ্রাধিকার ছিল। আজও আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় এই গৌরবের অধিকারী, এখানকার প্রতিষ্ঠাতা আচার্যের দায়িত্ব সামলেছেন শ্রদ্ধেয়া বেগম সুলতান। ১০০ বছর আগের পরিস্থিতিতে একজন মহিলার পক্ষে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করা কত বড় ব্যাপার তা কল্পনা করা যায়! আধুনিক মুসলিম সমাজ গঠনের যে প্রচেষ্টা সেই সময় শুরু হয়েছিল তিন তালাকের মতো কুপ্রথা সমাপ্ত করে দেশ আজ সেই প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে গেছে।
বন্ধুগণ,
আগে এটা বলা হতো যে যদি একজন মহিলা শিক্ষিত হন তাহলে গোটা পরিবার শিক্ষিত হয়। একথা অক্ষরে অক্ষরে সত্য। কিন্তু পরিবারের শিক্ষা ছাড়াও এর তাৎপর্য অত্যন্ত গভীর। মহিলাদের শিক্ষিত হতে হবে, যাতে তাঁরা নিজেদের অধিকারগুলি সঠিকভাবে অর্জন করতে পারেন, নিজেদের ভবিষ্যত নিজেরাই ঠিক করতে পারেন। শিক্ষা তার সঙ্গে নিয়ে আসে কর্মসংস্থানকে আর শিল্পোদ্যোগকে। কর্মসংস্থান এবং শিল্পোদ্যোগ তার সঙ্গে নিয়ে আসে অর্থনৈতিক স্বাধীনতা। অর্থনৈতিক স্বাধীনতা থেকেই মানুষের ক্ষমতায়ন হয়। একজন ক্ষমতা প্রাপ্ত মহিলাই প্রত্যেক স্তরে, প্রত্যেক সিদ্ধান্তে অন্য যে কোনো মানুষের সমান অবদান রাখেন। তা সে পরিবারকে সঠিক লক্ষ্যে পরিচালনা করা হোক কিংবা দেশকে সঠিক লক্ষ্যে পরিচালনা করা। আজ যখন আমি আপনাদের সঙ্গে কথা বলছি, তখন দেশের অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকেও অনুরোধ করবো যে যত বেশি সম্ভব মেয়েদেরকে শিক্ষার সঙ্গে জুড়ুন আর তাঁদেরকে শুধু শিক্ষাই নয়, উচ্চ শিক্ষিত করুন।
বন্ধুগণ,
আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে নিজেদের সাম্প্রতিক পাঠ্যক্রমের মাধ্যমে অনেককে আকর্ষিত করেছে। আপনাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ইন্টার ডিসিপ্লিনারি’ বিষয়গুলি আগে থেকেই পড়ানো হয়। কোনো ছাত্র বিজ্ঞানে ভালো আর তাঁর ইতিহাসও ভালো লাগে সে ক্ষেত্রে তাঁর যে কোনো একটি বিষয় বেছে নেওয়ার অসহায়তা কেন থাকবে? এই ভাবনাই আমাদের নতুন জাতীয় শিক্ষা নীতির মূল প্রাণ শক্তি। এতে একবিংশ শতাব্দীর ভারতের ছাত্র-ছাত্রীদের প্রয়োজনগুলি তাঁদের স্বার্থের প্রতি বেশি লক্ষ্য রাখা হয়েছে। আমাদের দেশের নবীন প্রজন্ম ‘আগে দেশ’ আহ্বান জানিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে দায়বদ্ধ। তাঁরা নতুন নতুন স্টার্টআপসের মাধ্যমে দেশের সমস্যাগুলির সমাধান বের করছেন। যুক্তিবাদী চিন্তাভাবনা এবং বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি তাঁদের প্রথম অগ্রাধিকার। নতুন জাতীয় শিক্ষা নীতিতে ভারতীয় যুব সম্প্রদায়ের এই আকাংখাকেই অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি যাতে ভারতের শিক্ষা ব্যবস্থা বিশ্বের আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থাগুলির মধ্যে অন্যতম হয়ে ওঠে। জাতীয় শিক্ষানীতিতে যে ‘মাল্টিপল এন্ট্রি’ আছে, যে ‘এগজিট পয়েন্ট’গুলো আছে সেগুলোর মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদের নিজেদের শিক্ষা সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হবে। প্রত্যেক ‘এগজিট অপশন’এর পর তাঁদের উপযুক্ত শংসাপত্রও দেওয়া হবে। এতে ছাত্র-ছাত্রীদের সম্পূর্ণ কোর্সের ফিসের চিন্তা না করে নিজেদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা থাকবে।
বন্ধুগণ,
সরকার উচ্চ শিক্ষায় ছাত্র-ছাত্রীদের অন্তর্ভুক্তি বৃদ্ধি এবং আসন বৃদ্ধির জন্যও লাগাতার কাজ করছে। ২০১৪ সালে আমাদের দেশে ১৬টি আইআইটি ছিল। আজ দেশে ২৩টি আইআইটি আছে। ২০১৪-য় আমাদের দেশে ৯টি আইআইআইটি ছিল। আজ তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫টি। ২০১৪-য় আমাদের দেশে ১৩ই আইআইএম ছিল। আজ তা বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ২০টি। চিকিৎসা বিদ্যা শিক্ষা নিয়ে অনেক কাজ করা হয়েছে। ৬ বছর আগে পর্যন্ত দেশে ৭টি এআইআইএমএস ছিল। আজ দেশে ২২টি এআইআইএমএস হয়েছে। শিক্ষা অন লাইন হোক কিংবা অফ লাইন, সবার কাছেই যেন সমানভাবে পৌঁছোয়, সকলের জীবন বদলায়, আমরা এই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি।
বন্ধুগণ,
আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০০ বছর পূর্তিতে আপনাদের মতো সমস্ত যুবা বন্ধুদের কাছে আমার আরও কিছু প্রত্যাশা রয়েছে। ১০০ বছর পূর্তির এই সুযোগে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০০টি ছাত্রাবাস একটি এক্সট্রা কারিকুলার টাস্ক করতে পারবে কি? এই টাস্ক স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তির সঙ্গে জড়িত। যেমন আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে কাছে এত বড় বড় উদ্ভাবক এবং গবেষণা ভিত্তিক মেধা রয়েছে তাহলে ছাত্রাবাসে বসবাসকারী নবীন বন্ধুরা স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নিয়ে গবেষণা করে তাঁদের জীবন সম্পর্কে সে সব তথ্য তুলে আনতে পারবেন কি? যেগুলো সম্পর্কে যথেষ্ট তথ্য নেই। কিছু ছাত্র-ছাত্রী সেই মহাপুরুষদের জন্মস্থানে গেলেন, তাঁদের কর্মভূমিতে গেলেন, তাঁদের পরিবারের মানুষ এখন কোথায় আছেন তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন, কিছু ছাত্র-ছাত্রী আবার অন লাইনের বিভিন্ন উৎস থেকে তথ্য খুঁজে বের করলেন। উদাহরণ স্বরূপ ৭৫টি ছাত্রাবাসের বাসিন্দারা দেশের প্রত্যেক আদিবাসী স্বাধীনতা সংগ্রামীর জীবন নিয়ে গবেষণা করে একটি গবেষণা নথি তৈরি করতে পারেন। তেমনি ২৫টি ছাত্রাবাসের বাসিন্দারা মহিলা স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নিয়ে গবেষণার কাজ করতে পারেন।
আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা দেশের জন্য আরেকটি কাজ করতে পারেন। আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে দেশের এত মূল্যবান প্রাচীন পান্ডুলিপি রয়েছে, এগুলি সব আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। আমি চাইব যে আপনারা প্রযুক্তির মাধ্যমে এগুলিকে ডিজিটাল কিংবা ভার্চ্যুয়াল অবতার রূপে বিশ্বের সামনে তুলে ধরুন। আমি আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশাল প্রাক্তনী নেটওয়ার্ককেও আহ্বান জানাই। আপনারা নতুন ভারত নির্মাণে নিজেদের অংশীদারিত্ব আরও বাড়ান। আত্মনির্ভর ভারত অভিযানকে সফল করতে ভোকাল ফর লোকালকে সফল করে তুলতে অনেক কিছু করা বাকি। এবিষয়ে যদি আমি আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরামর্শ পাই, আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনীদের কাছ থেকে পরামর্শ পাই তাহলে অত্যন্ত আনন্দিত হবো।
বন্ধুগণ,
আজ গোটা বিশ্বের নজর ভারতের দিকে। যে শতাব্দীকে ভারতের শতাব্দী বলা হচ্ছে সেই লক্ষ্যের দিকে ভারত কিভাবে এগিয়ে যাবে গোটা বিশ্বের আগ্রহ ও জল্পনা রয়েছে। সেজন্য আজ আমাদের সকলের একমাত্র এবং একাগ্র লক্ষ্য এটাই হওয়া উচিত কিভাবে ভারতকে আত্মনির্ভর করে তোলা যায়। আমরা কোথায় এবং কোন পরিবারে জন্ম নিয়েছি, কোন ধর্মীয় কিংবা মতাবলম্বী পরিবেশে বড় হয়েছি, তা থেকেও গুরুত্বপূ্র্ণ হল প্রত্যেক নাগরিকের আকাংখা এবং প্রচেষ্টাকে দেশের আকাংখার সঙ্গে কিভাবে জুড়বো। যখন তা নিয়ে একটি শক্তিশালী ভিত্তি গড়ে উঠবে তখন লক্ষ্যে পৌঁছনো আরও সহজ হয়ে উঠবে।
বন্ধুগণ,
সমাজে ভাবনা চিন্তায় মতভেদ হওয়া অত্যন্ত স্বাভাবিক। কিন্তু যখন জাতীয় লক্ষ্য পূরণের প্রসঙ্গ আগে তখন প্রত্যেক মতভেদ দূরে সরিয়ে রাখা উচিত। যখন আপনাদের মতো সমস্ত যুব বন্ধুদের এই ভাবনা নিয়ে এগিয়ে যাবেন তখন এমন কোনো লক্ষ্য নেই যা আমরা সকলে মিলে পূরণ করতে পারবো না। শিক্ষা থেকে শুরু করে অর্থনৈতিক উন্নয়ন, জীবনযাত্রার মানোন্নয়ণ, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, মহিলাদের অধিকার রক্ষা, নিরাপত্তা, জাতীয়তাবাদ পর্যন্ত সমস্ত কিছু প্রত্যেক নাগরিকের জন্য প্রয়োজনীয়। এগুলি এমন কিছু বিষয় যা নিয়ে আমরা নিজেদের রাজনৈতিক এবং ভাবনা চিন্তার দোহাই দিয়ে অসহমত হতে পারি না। এখানে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে এই বিষয়গুলি নিয়ে কথা বলা আমার জন্য এজন্য স্বাভাবিক কারণ এখান থেকে অনেক স্বাধীনতা সংগ্রামী উঠে এসেছেন, এই মাটি থেকে উঠে এসেছেন। এই স্বাধীনতা সংগ্রামীরাও নিজস্ব পারিবারিক, সামাজিক ও ভাবনা চিন্তায় লালিত হয়েছেন। কিন্তু যখন দাসত্ব থেকে মুক্তির লক্ষ্যে লড়াইয়ে নেমেছেন তখন এই সমস্ত ভাবনা স্বাধীনতা প্রাপ্তির লক্ষ্যের সঙ্গেই যুক্ত হয়েছে।
বন্ধুগণ,
আমাদের পূর্বজরা স্বাধীনতার জন্য যেমন কাজ করেছেন, তেমন কাজ এখন আপনাদের, নবীন প্রজন্মকে নতুন ভারত নির্মাণের জন্য করতে হবে। স্বাধীনতা যেমন একটি ‘কমন গ্রাউন্ড’ ছিল তেমনি নতুন ভারতের জন্য আমাদের একটি ‘কমন গ্রাউন্ডে’ কাজ করতে হবে। নতুন ভারত আত্মনির্ভর হবে, সব দিক দিয়ে সমৃদ্ধ হবে – তাহলেই ১৩০ কোটিরও বেশি জনগণ লাভবান হবেন। এই ভাবনা চিন্তা সমাজের প্রত্যেক অংশে পৌঁছে দেওয়ার কাজ আপনাদের মতো নবীন বন্ধুরা করতে পারেন।
বন্ধুগণ,
আমাদের এটা বুঝতে হবে যে শাসন ক্ষমতা সমাজেরই একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কিন্তু সমাজে শাসন ক্ষমতা ছাড়াও অন্যান্য বিষয় রয়েছে। শাসন ক্ষমতার ভাবনা থেকে অনেক বড়, অনেক ব্যাপক হয় প্রত্যেক দেশের সমাজ। রাজনীতির উপরে উঠেও সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার অনেক জায়গা থাকে। সেই পরিসরকে কাজে লাগিয়ে যাওয়া অত্যন্ত জরুরি। এই কাজটা আমাদের আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো ক্যাম্পাস করতে পারে, আপনারা সবাই করতে পারেন।
বন্ধুগণ,
নতুন ভারতের ভাবনা নিয়ে যখন আমরা কথা বলি তখন তার মূলে এটাই থাকে যে রাষ্ট্রকে, সমাজের উন্নয়ণকে রাজনৈতিক চশমা পরে যেন না দেখা হয়। যখন আমরা এই বড় উদ্দেশ্যের জন্য একসঙ্গে কাজ করি তখন কারো কারো বিব্রত হওয়া স্বাভাবিক। এরকম মানুষ বিশ্বের প্রত্যেক সমাজে রয়েছে। এঁরা শুধু নিজের স্বার্থ দেখে আর নিজের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য সমস্তরকম চেষ্টা করে যায়, সমস্তরকম নেতিবাচক ভাবনা ছড়ায়। কিন্তু যখন আমাদের মন এবং মস্তিষ্কে নতুন ভারত নির্মাণের ভাবনা অগ্রাধিকার পাবে তখন এই ধরণের মানুষের পরিসর নিজে থেকে সঙ্কুচিত হয়ে যায়।
বন্ধুগণ,
রাজনীতি অপেক্ষা করতে পারে, কিন্তু সমাজ অপেক্ষা করতে পারে না। দেশের উন্নয়ণ অপেক্ষা করতে পারে না। গরীবরা সমাজের যে কোনো অংশেরই হোক না কেন তাঁরা অপেক্ষা করতে পারে না। মহিলা, বঞ্চিত, পীড়িত ও শোষিতরা উন্নয়ণের জন্য অপেক্ষা করতে পারে না। সব থেকে বড় কথা আমাদের নবীন প্রজন্ম আপনারা সকলে আর অপেক্ষা করতে চাইবেন না। ইতিমধ্যেই বিগত শতাব্দীতে বৈষম্যের নামে অনেক সময় নষ্ট করা হয়েছে, এখন আর সময় নষ্ট করলে চলবে না। সবাইকে একটি লক্ষ্য নিয়ে মিলেমিশে নতুন ভারত গড়ে তুলতে হবে, আত্মনির্ভর ভারত গড়ে তুলতে হবে।
বন্ধুগণ,
১০০ বছর আগে ১৯২০-তে যাঁরা যুবক ছিলেন তাঁদের দেশের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করার, নিজেকে সমর্পণ করার, আত্মবলিদানের সুযোগ হয়েছে। সেই প্রজন্মের তপস্যা ও ত্যাগের ফলেই দেশ ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতা পেয়েছে। আপনাদের কাছে, আজকের প্রজন্মের কাছে আত্মনির্ভর ভারত, নতুন ভারতের লক্ষ্যগুলিকে বাস্তবায়িত করার জন্য অনেক কিছু করার সুযোগ রয়েছে। সেই সময়টি ছিল ১৯২০, আর আজকের সময় হলো ২০২০। ১৯২০-র ২৭ বছর পর দেশ স্বাধীন হয়েছিল, ২০২০-র পরবর্তী ২৭ বছর, অর্থাৎ ২০২০ থেকে ২০৪৭ আপনাদের জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বছর।
২০৪৭-এ যখন ভারত তার স্বাধীনতার ১০০ বছর পূর্ণ করবে আপনারা সেই ঐতিহাসিক সময়ের সাক্ষী থাকবেন। শুধু তাই নয়, এই ২৭ বছরে আধুনিক ভারত গড়ে তোলার অংশীদার হবেন আপনারা। আপনাদের প্রত্যেক মুহূর্তে দেশের জন্য ভাবতে হবে। আপনাদের প্রত্যেক সিদ্ধান্তে দেশের মঙ্গল নিয়ে ভাবতে হবে। আপনাদের প্রত্যেক সিদ্ধান্ত দেশের মঙ্গলের ভিত্তিতেই নিতে হবে।
আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আমরা সবাই একসঙ্গে মিলে আত্মনির্ভর ভারতের স্বপ্নগুলিকে বাস্তবায়িত করবো। আমরা সবাই মিলে দেশকে উন্নতির নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেবো। আপনাদের সবাইকে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আরেকবার অনেক অনেক অভিনন্দন জানাই। আর এই ১০০ বছরে যে যে মহাপুরুষেরা এই প্রতিষ্ঠানের গরিমাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়েছেন, আজ তাঁদের কথাও স্মরণ করছি, তাঁদের পবিত্র স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। আরেকবার আজকের এই পবিত্র অনুষ্ঠানে দাঁড়িয়ে ভবিষ্যতের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা জানাই। সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা প্রাক্তনীদেরকেও আমি উত্তম স্বাস্থ্যের জন্য শুভকামনা জানাই। তাঁদের উন্নত ভবিষ্যতের জন্যও শুভকামনা জানাই। আর আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নত ভবিষ্যতের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা জানিয়ে আমি আপনাদের আশ্বস্ত করছি যে এই সরকার আপনাদের উন্নতির জন্য, আপনাদের স্বপ্নগুলিকে বাস্তবায়িত করার জন্য আমরা কখনো পিছিয়ে থাকবে না।
এই একটি বিশ্বাস রেখে আপনাদেরকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
***
CG/SB/SKD
Speaking at the Aligarh Muslim University. Watch. https://t.co/sNUWDAUHIH
— Narendra Modi (@narendramodi) December 22, 2020
अभी कोरोना के इस संकट के दौरान भी AMU ने जिस तरह समाज की मदद की, वो अभूतपूर्व है।
— PMO India (@PMOIndia) December 22, 2020
हजारों लोगों का मुफ्त टेस्ट करवाना, आइसोलेशन वार्ड बनाना, प्लाज्मा बैंक बनाना और पीएम केयर फंड में बड़ी राशि का योगदान देना, समाज के प्रति आपके दायित्वों को पूरा करने की गंभीरता को दिखाता है: PM
बीते 100 वर्षों में AMU ने दुनिया के कई देशों से भारत के संबंधों को सशक्त करने का भी काम किया है।
— PMO India (@PMOIndia) December 22, 2020
उर्दू, अरबी और फारसी भाषा पर यहाँ जो रिसर्च होती है, इस्लामिक साहित्य पर जो रिसर्च होती है, वो समूचे इस्लामिक वर्ल्ड के साथ भारत के सांस्कृतिक रिश्तों को नई ऊर्जा देती है: PM
आज देश जो योजनाएँ बना रहा है वो बिना किसी मत मजहब के भेद के हर वर्ग तक पहुँच रही हैं।
— PMO India (@PMOIndia) December 22, 2020
बिना किसी भेदभाव, 40 करोड़ से ज्यादा गरीबों के बैंक खाते खुले।
बिना किसी भेदभाव, 2 करोड़ से ज्यादा गरीबों को पक्के घर दिए गए।
बिना किसी भेदभाव 8 करोड़ से ज्यादा महिलाओं को गैस मिला: PM
बिना किसी भेदभाव आयुष्मान योजना के तहत 50 करोड़ लोगों को 5 लाख रुपए तक का मुफ्त इलाज संभव हुआ।
— PMO India (@PMOIndia) December 22, 2020
जो देश का है वो हर देशवासी का है और इसका लाभ हर देशवासी को मिलना ही चाहिए, हमारी सरकार इसी भावना के साथ काम कर रही है: PM
सरकार higher education में number of enrollments बढ़ाने और सीटें बढ़ाने के लिए भी लगातार काम कर रही है।
— PMO India (@PMOIndia) December 22, 2020
वर्ष 2014 में हमारे देश में 16 IITs थीं। आज 23 IITs हैं।
वर्ष 2014 में हमारे देश में 9 IIITs थीं। आज 25 IIITs हैं।
वर्ष 2014 में हमारे यहां 13 IIMs थे। आज 20 IIMs हैं: PM
Medical education को लेकर भी बहुत काम किया गया है।
— PMO India (@PMOIndia) December 22, 2020
6 साल पहले तक देश में सिर्फ 7 एम्स थे। आज देश में 22 एम्स हैं।
शिक्षा चाहे Online हो या फिर Offline, सभी तक पहुंचे, बराबरी से पहुंचे, सभी का जीवन बदले, हम इसी लक्ष्य के साथ काम कर रहे हैं: PM
बीते 100 वर्षों में AMU ने कई देशों से भारत के संबंधों को सशक्त करने का काम किया है।
— Narendra Modi (@narendramodi) December 22, 2020
इस संस्थान पर दोहरी जिम्मेदारी है - अपनी Respect बढ़ाने की और Responsibility निभाने की।
मुझे विश्वास है कि AMU से जुड़ा प्रत्येक व्यक्ति अपने कर्तव्यों को ध्यान में रखते हुए आगे बढ़ेगा। pic.twitter.com/LtA5AiPZCk
महिलाओं को शिक्षित इसलिए होना है ताकि वे अपना भविष्य खुद तय कर सकें।
— Narendra Modi (@narendramodi) December 22, 2020
Education अपने साथ लेकर आती है- Employment और Entrepreneurship.
Employment और Entrepreneurship अपने साथ लेकर आते हैं- Economic Independence.
Economic Independence से होता है- Empowerment. pic.twitter.com/PLbUio9jqs
हमारा युवा Nation First के आह्वान के साथ देश को आगे बढ़ाने के लिए प्रतिबद्ध है।
— Narendra Modi (@narendramodi) December 22, 2020
वह नए-नए स्टार्ट-अप्स के जरिए चुनौतियों का समाधान निकाल रहा है।
Rational Thinking और Scientific Outlook उसकी Priority है।
नई शिक्षा नीति में युवाओं की इन्हीं Aspirations को प्राथमिकता दी गई है। pic.twitter.com/JHr0lqyF90
AMU के सौ साल पूरा होने पर सभी युवा ‘पार्टनर्स’ से मेरी कुछ और अपेक्षाएं हैं... pic.twitter.com/qYGQTU3R3t
— Narendra Modi (@narendramodi) December 22, 2020
समाज में वैचारिक मतभेद होते हैं, यह स्वाभाविक है।
— Narendra Modi (@narendramodi) December 22, 2020
लेकिन जब बात राष्ट्रीय लक्ष्यों की प्राप्ति की हो तो हर मतभेद किनारे रख देना चाहिए।
नया भारत आत्मनिर्भर होगा, हर प्रकार से संपन्न होगा तो लाभ भी 130 करोड़ से ज्यादा देशवासियों का होगा। pic.twitter.com/esAsh9DTHv
सियासत और सत्ता की सोच से बहुत बड़ा, बहुत व्यापक किसी भी देश का समाज होता है।
— Narendra Modi (@narendramodi) December 22, 2020
पॉलिटिक्स से ऊपर भी समाज को आगे बढ़ाने के लिए बहुत Space होता है, जिसे Explore करते रहना बहुत जरूरी है। pic.twitter.com/iNSWFcpRxS