Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

আর্সেলর মিত্তল নিপ্পন স্টিল ইন্ডিয়ার হাজিরা প্ল্যান্টের সম্প্রসারণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও বার্তা

আর্সেলর মিত্তল নিপ্পন স্টিল ইন্ডিয়ার হাজিরা প্ল্যান্টের সম্প্রসারণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও বার্তা


নয়াদিল্লি, ২৮ অক্টোবর, ২০২২

 

নমস্কার!

আপনাদের সকলকে দীপাবলি এবং গুজরাটি নববর্ষ উপলক্ষে অনেক অনেক শুভ কামনা জানাই। নববর্ষে আজ আপনাদের সঙ্গে প্রযুক্তির মাধ্যমে মিলিত হচ্ছি। এই নববর্ষ যেন আপনাদের জন্য অপার সুখ, শান্তি এবং সমৃদ্ধি নিয়ে আসে, আমার প্রিয় গুজরাটের ভাই ও বোনেদের জন্য আমি এই প্রার্থনা করি। আপনাদের সকলকে আর্সেলর মিত্তল নিপ্পন স্টিল ইন্ডিয়ার হাজিরা প্ল্যান্টের সম্প্রসারণ উপলক্ষে অনেক অনেক শুভেচ্ছা। এই স্টিল প্ল্যান্টের মাধ্যমে শুধুই বিনিয়োগ হচ্ছে না, আমাদের ভবিষ্যতের জন্যও অনেক নতুন নতুন সম্ভাবনার দ্বারও উন্মোচিত হচ্ছে। ৬০ হাজার কোটি টাকারও বেশি এই বিনিয়োগ গুজরাট ও দেশের যুবসম্প্রদায়ের জন্য কর্মসংস্থানের অনেক সুযোগ সৃষ্টি করবে। এই সম্প্রসারণের পর হাজিরা স্টিল প্ল্যান্টে অপরিশোধিত ইস্পাত উৎপাদন ক্ষমতা ৯০ লক্ষ টন থেকে বেড়ে ১ কোটি ৫০ লক্ষ টন হবে। আমি লক্ষ্মী মিত্তলজীকে, ভাই আদিত্যকে এবং তাঁর সম্পূর্ণ টিমকে অনেক শুভেচ্ছা জানাই। 

বন্ধুগণ,

স্বাধীনতার অমৃতকালে প্রবেশ করার পর আমাদের দেশ এখন ২০৪৭ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে চলেছি। দেশের এই উন্নয়ন যাত্রায় ইস্পাত শিল্পের ভূমিকা আরও শক্তিশালী হতে চলেছে। কারণ, যখন দেশের ইস্পাত ক্ষেত্র শক্তিশালী হয়, তখন পরিকাঠামো ক্ষেত্রটিও শক্তিশালী হয়। আর যখন ইস্পাত ক্ষেত্র বিকশিত ও বিস্তারিত হয়, তখন সড়ক পথ, রেলপথ, বিমানবন্দর এবং সমুদ্র বন্দরেরও বিস্তার ঘটে। যখন ইস্পাত ক্ষেত্র এগিয়ে যায়, তখন নির্মাণ অটোমোটিভ সেক্টরে নতুন মাত্রা যুক্ত হয়। আর যখন ইস্পাত ক্ষেত্রের ক্ষমতা বাড়ে, তখন প্রতিরক্ষা, মূলধনী পণ্য এবং ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্যের বিকাশও নতুন প্রাণশক্তি পায়। শুধু তাই নয়, এতদিন পর্যন্ত আমরা লৌহ আকরিক রপ্তানী করেই সন্তুষ্ট ছিলাম। আর্থিক উন্নয়নের জন্য আমাদের যত ভূ-সম্পদ রয়েছে, তার যথাযথ মূল্যাঙ্কনের যথেষ্ট প্রয়োজন রয়েছে। আর এই ধরনের ইস্পাত প্রকল্প বিস্তারের ফলে আমাদের লৌহ আকরিক দেশের মধ্যেই সঠিকভাবে ব্যবহৃত হবে। দেশের নবীন প্রজন্মের অনেক কর্মসংস্থান হবে। আর বিশ্ব বাজারে ভারতে উৎপাদিত ইস্পাতের কদর বাড়বে। আমাকে বলা হয়েছে যে, এখানে শুধুই প্রকল্প বিস্তারের কাজ হচ্ছে না, এর পাশাপাশি এখানে ভারতে সম্পূর্ণ নতুন প্রযুক্তিও আসছে। এই নতুন প্রযুক্তি ইলেক্ট্রিক যানবাহন, অটোমোবাইল ও অন্যান্য উৎপাদন এবং নির্মাণ ক্ষেত্রে অনেক সহায়ক হবে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে, আর্সেলর মিত্তল নিপ্পন স্টিল ইন্ডিয়ার এই প্রকল্প ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’র দূরদৃষ্টি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক রূপে পরিগণিত হবে। এটি ইস্পাত ক্ষেত্রে আমাদের উন্নত ভারত এবং আত্মনির্ভর ভারতের স্বপ্ন বাস্তবায়নের চেষ্টাকে নতুন শক্তি যোগাবে। 

বন্ধুগণ,

আজ বিশ্ব আমাদের দিকে অনেক প্রত্যাশা নিয়ে তাকিয়ে আছে। ভারত আজ বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ‘ম্যানুফ্যাকচারিং হাব’ হিসাবে গড়ে ওঠার লক্ষ্যে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। আমাদের সরকার এই ক্ষেত্রের বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় নীতি আবহ গড়ে তুলতে তৎপরতার সঙ্গে কাজ করে চলেছে। আমি গুজরাট সরকারকেও অভিনন্দন জানাই। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্রভাই প্যাটেলের নেতৃত্বে যে নতুন শিল্প নীতি প্রণয়ন করা হয়েছে, সেটি গুজরাটকে ‘ম্যানুফ্যাকচারিং হাব’ হিসাবে গড়ে তুলতে অত্যন্ত দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নীতি বলে প্রমাণিত হবে। 

গত ৮ বছরে সমস্ত ধরনের প্রচেষ্টার কারণেই ভারতীয় ইস্পাত শিল্প ইতিমধ্যেই বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ইস্পাত উৎপাদক শিল্পে পরিণত হয়েছে। এই শিল্পে উন্নয়নের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। সরকারের পিএলআই প্রকল্পের বিস্তারে নতুন নতুন পথ গড়ে তুলেছে, আত্মনির্ভর ভারত অভিযানকে শক্তিশালী করেছে। এ থেকে আমরা উন্নত মানের ইস্পাত উৎপাদন বৃদ্ধি এবং আমদানীর উপর নির্ভরতা হ্রাস করার ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জন করেছি। এই উন্নতমানের স্টিলের ব্যবহার ‘ক্রিটিকাল ও স্ট্র্যাট্রেজিক অ্যাপ্লিকেশন’গুলির ক্ষেত্রে বৃদ্ধি পেয়েছে। আপনাদের সামনে এর বড় উদাহরণ হ’ল আইএনএস বিক্রান্ত। আগে আমরা বিমানবাহী জাহাজ নির্মাণের উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় ইস্পাতের জন্য অন্যান্য দেশের উপর নির্ভরশীল ছিলাম। দেশের সুরক্ষাকে শক্তিশালী করতে আমাদের অন্যান্য দেশের মঞ্জুরির উপর নির্ভর করতে হ’ত। এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য আমাদের আত্মনির্ভর হয়ে ওঠা প্রয়োজন ছিল। আর ভারতীয় ইস্পাত শিল্প নতুন প্রাণশক্তি নিয়ে এই চ্যালেঞ্জকে স্বীকার করে নিয়েছে। এরপর, ডিআরডিও-র বৈজ্ঞানিকরা এয়ারক্র্যাফট্‌, কেরিয়ারের উপযোগী উন্নত মানের ইস্পাত তৈরি করেছে। ভারতীয় কোম্পানিগুলি এখন হাজার হাজার মেট্রিক টন ইস্পাত উৎপাদন করছে। আর আইএনএস বিক্রান্ত সম্পূর্ণ রূপে স্বদেশী সামর্থ এবং প্রযুক্তির মাধ্যমে তৈরি হয়েছে। এ ধরনের সামর্থ বৃদ্ধির জন্য দেশ এখন অপরিশোধিত ইস্পাতের উৎপাদন ক্ষমতাকে দ্বিগুণ করার লক্ষ্য স্থির করেছে। এখন আমরা ১৫৪ মেট্রিক টন অপরিশোধিত ইস্পাত উৎপাদন করি। আমাদের লক্ষ্য হ’ল যে আগামী ৯-১০ বছরে আমরা আরও এগিয়ে ৩০০ মেট্রিক টন উৎপাদন ক্ষমতা অর্জন করব। 

বন্ধুগণ,

যখন আমরা উন্নয়নের দূরদৃষ্টি নিয়ে এগিয়ে চলেছি, তখন কিছু সমস্যার কথাও মাথায় রাখতে হবে। ইস্পাত শিল্পের জন্য কার্বন নিঃসরণ তেমনই একটি সমস্যা। সেজন্য একদিকে আমরা অপরিশোধিত ইস্পাত উৎপাদন ক্ষমতা বাড়াচ্ছি আর অন্যদিকে নানা পরিবেশ-বান্ধব প্রযুক্তির ব্যবহারকেও উৎসাহ দিচ্ছি। আজ ভারত তেমনই উৎপাদন প্রযুক্তি বিকাশের দিকে জোর দিচ্ছে, যা শুধুই কার্বন নিঃসরণ হ্রাস করবে না, কার্বনকে ধারণ করে পুনর্ব্যবহারও করবে। আমাদের দেশে এখন বৃত্তীয় অর্থনীতিও উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। সরকারি এবং বেসরকারি ক্ষেত্র মিলেমিশে এই লক্ষ্যে কাজ করছে। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে, আর্সেলর মিত্তল নিপ্পন স্টিল ইন্ডিয়া গ্রুপের হাজিরা প্রকল্পও পরিবেশ-বান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহারের উপর অনেক জোর দিচ্ছে।

বন্ধুগণ,

যখন কেউ কোনও লক্ষ্যে পৌঁছানোর দিশায় সম্পূর্ণ শক্তি দিয়ে চেষ্টা করেন, তখন তাকে বাস্তবায়িত করার সমস্ত প্রতিবন্ধকতা দূর হয়ে যায়। ইস্পাত শিল্পকে নতুন নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে আমাদের সরকার দায়বদ্ধ। আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে, এই প্রকল্প সম্পূর্ণ এলাকার এবং ইস্পাত ক্ষেত্রের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করবে। আমি আরেকবার আর্সেলর মিত্তল নিপ্পন স্টিল ইন্ডিয়ার হাজিরা প্ল্যান্টের টিমকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই, অনেক অনেক শুভ কামনা জানাই। 

অনেক অনেক ধন্যবাদ।

বিঃদ্রঃ : প্রধানমন্ত্রীর এই ভাষণটির কিছু অংশ গুজরাটি ভাষায় ছিল, এর ভাবানুবাদ করা হয়েছে

 

PG/SB/SB