Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

আফগানিস্তানেরপ্রেসিডেন্টের ভারত সফরকালে ভারত-আফগানিস্তান যৌথ বিবৃতি

আফগানিস্তানেরপ্রেসিডেন্টের ভারত সফরকালে ভারত-আফগানিস্তান যৌথ বিবৃতি


আফগানিস্তানেরপ্রেসিডেন্ট ডঃ মহম্মদ আশরফ গনিকে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানানো হয় তাঁর ১৪ ও ১৫সেপ্টেম্বর – এই দু’দিনের সরকারি ভারত সফরকালে। তিনি ইতিমধ্যেই আলোচনা-বৈঠকে মিলিতহয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। আজ বেলার দিকে তাঁকে স্বাগতজানাবেন ভারতের রাষ্ট্রপতি।

প্রেসিডেন্টগনির সঙ্গে সাক্ষাৎকারকালে প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী ২০১৫-র ডিসেম্বরে তাঁর কাবুলসফর এবং এ বছর জুন মাসে হেরাট সফরের স্মৃতিচারণ করেন। তিনি বলেন, আফগানিস্তানসফরের সময় যে উষ্ণ অভ্যর্থনা তিনি লাভ করেছেন তা আজও তাঁর স্মৃতিতে অমলিন হয়েরয়েছে। শুধু তাই নয়, ঐ দুই সফরকালে এবং ২০১৬-র মে মাসে তেহরানে এবং এ বছর জুন মাসেতাসখন্দে প্রেসিডেন্ট গনির সঙ্গে তাঁর আলাপ-আলোচনা যথেষ্ট ফলপ্রসূ হয়েছে।

ভারতও আফগানিস্তানের মধ্যে সকল পর্যায়ে নিয়মিত ও আন্তরিক আলাপ-আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতেবিশেষ সন্তোষ প্রকাশ করেন প্রেসিডেন্ট গনি এবং প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী। তাঁদের এইপারস্পরিক আলোচনা ও মতবিনিময় দু’দেশের মধ্যে কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্ক গড়েতোলার ক্ষেত্রে বিশেষ সাহায্য করেছে বলেও মনে করেন তাঁরা । শুধু তাই নয়, ভারতও আফগানিস্তানের মধ্যে সহযোগিতার সবক’টি ক্ষেত্রকে তা আরও জোরদার করে তুলেছে – এইমতও প্রকাশ করেন দুই বিশ্ব নেতা ।

ভারত-আফগানিস্তানদ্বিপাক্ষিক উন্নয়ন সহযোগিতা আফগানিস্তানের নিজস্ব রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবংনিরাপত্তা সংক্রান্ত কর্মপ্রচেষ্টাকে বিশেষভাবে সফল করে তুলেছে বলে দুই নেতাই মতপ্রকাশ করেন। সাম্প্রতিককালে আফগানিস্তানে সংসদ ভবন নির্মাণ এবং আফগানিস্তান-ভারতমৈত্রী বাঁধ প্রকল্প গড়ে তোলার কাজ সম্পূর্ণ হওয়ায় তা যে দু’দেশের সম্পর্কেরক্ষেত্রে এক মাইলফলক হয়ে রয়েছে সে কথা আনন্দ ও গর্বের সঙ্গে উল্লেখ করেন দুই নেতা।গত ২২ আগস্ট ভিডিও সম্মেলনের মাধ্যমে স্টোরে প্যালেস-এর যৌথ উদ্বোধনকালেপ্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে ১২৫ কোটি ভারতবাসী তাঁদের আফগানভাই-বোনদের সঙ্গেই রয়েছেন । প্রধানমন্ত্রীর এই প্রতিশ্রুতির তাৎপর্য ওব্যঞ্জনাটি বিশেষভাবে স্মরণ করেন প্রেসিডেন্ট গনি।

একঐক্যবদ্ধ, সার্বভৌম, স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ, গণতান্ত্রিক তথা সমৃদ্ধ আফগানিস্তানগড়ে তুলতে ভারতের সমর্থন ও সহযোগিতার কথা পুনরায় ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রীমোদী। ঐ দেশের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, দক্ষতা বিকাশ, নারী ক্ষমতায়ন, জ্বালানি,পরিকাঠামো এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে শক্তিশালী করে তোলার কাজে ভবিষ্যতেওভারত সর্বতোভাবে সাহায্য ও সহযোগিতা করে যাবে বলে মিঃ গনিকে প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।বিশেষ করে, সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রগুলিতে ক্ষমতা ও দক্ষতা বৃদ্ধির কাজে আফগানিস্তানকেসাহায্য করতে ভারত যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি। এই লক্ষ্যেপ্রধানমন্ত্রী জানান, আফগানিস্তানের এক ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী ও মিত্র রাষ্ট্র হিসাবেভারত ঐ দেশকে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মতো আর্থিক সহায়তা প্রসারে সর্বদাইপ্রস্তুত। এছাড়াও, সুলভ মূল্যে বিশ্বমানের ওষুধপত্র ঐ দেশে যোগান দিতেও ভারতআগ্রহী বলে তিনি জানান প্রেসিডেন্ট গনিকে। সৌর জ্বালানি ক্ষেত্রে আফগানিস্তানকেসর্বতোভাবে সহযোগিতারও অঙ্গীকার করেন তিনি।

দুইনেতাই বৈঠকে আঞ্চলিক পরিস্থিতি সম্পর্কে বিশদভাবে আলোচনা করেন। রাজনৈতিকউদ্দেশ্যসিদ্ধির প্রয়োজনে হিংসা ও সন্ত্রাসের ব্যবহারে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেনতাঁরা। এই ধরনের ঘটনা যে আঞ্চলিক শান্তি, স্থিতিশীলতা ও অগ্রগতির ক্ষেত্রে একভয়ঙ্কর হুমকি সে কথাও স্বীকার করেন দুই নেতা। তাঁরা বলেন, যে কোন ধরনের সন্ত্রাসচিরতরে বন্ধ হওয়া উচিৎ । শুধু তাই নয়, সন্ত্রাস দমনের প্রশ্নে যে কোনরকম ভেদাভেদবা বৈষম্য থাকা উচিত নয় সে কথাও এক বাক্যে স্বীকার করেন তাঁরা। আফগানিস্তান ওভারতকে যারা সন্ত্রাসের লক্ষ্য বলে চিহ্নিত করেছে, তাদের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকারআহ্বান জানিয়ে দুই নেতাই বলেন যে সন্ত্রাসবাদীদের কোনরকমভাবে মদত দেওয়া থেকে বিরতথাকতে হবে সবক’টি দেশকেই। সন্ত্রাসের মোকাবিলায় দু’দেশের পারস্পরিক নিরাপত্তা ওপ্রতিরক্ষা সহযোগিতাকে আরও নিবিড় করে তোলার সঙ্কল্প গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রীমোদী এবং আফগান প্রেসিডেন্ট মিঃ গনি। এটি ভারত-আফগানিস্তান কৌশলগত অংশীদারিত্বেরচুক্তির একটি অন্যতম বিষয় বলে উল্লেখ করেন তাঁরা।

বৈঠকেস্থির হয় যে দু’দেশের বিদেশ মন্ত্রীদের নেতৃত্বে কৌশলগত অংশীদারিত্বের প্রসারেগঠিত পরিষদের বৈঠক অনতিবিলম্বেই অনুষ্ঠিত হবে। সহযোগিতার বিভিন্ন ক্ষেত্রের সঙ্গেযুক্ত যৌথ কর্মীগোষ্ঠীগুলির সুপারিশ ও পরামর্শ খতিয়ে দেখা হবে ঐ বৈঠকে ।

প্রেসিডেন্টগনির ভারত সফরকালে অসামরিক এবং বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে সহযোগিতা চুক্তি এবং মহাকাশেরশান্তিপূর্ণ ব্যবহার সম্পর্কে মউ স্বাক্ষরের ঘটনায় সন্তোষ প্রকাশ করেন দুই নেতাই।এ বছর মে মাসে আফগানিস্তান, ভারত ও ইরানের মধ্যে সম্পাদিত ত্রিপাক্ষিক চুক্তিরূপায়ণের ফলে চাবাহার বন্দর দিয়ে এই অঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থা যে আরও উন্নত হয়েউঠবে সে কথাও উল্লেখ করেন তাঁরা। এই প্রসঙ্গে একটি যৌথ মঞ্চ গড়ে তোলার যে আহ্বানজানিয়েছে তিনটি দেশ সে কথা স্মরণ করে তাঁরা বলেন যে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে নিয়ে গড়েতোলা এই মঞ্চটিতে শিল্প থেকে বাণিজ্য – সবক’টি ক্ষেত্রের সমস্যা, সম্ভাবনা ওসহযোগিতার ওপর আলোকপাত করা হবে।

আফগানিস্তানেশান্তি, স্থিতিশীলতা এবং উন্নয়নের প্রশ্নে বিভিন্ন আঞ্চলিক দেশ এবং বহির্বিশ্বেরসঙ্গে আলাপ-আলোচনাকে আরও নিবিড় করে তোলার প্রস্তাবকে স্বাগত জানান দুই নেতা। বিশেষকরে তাঁরা উল্লেখ করেন ভারত-ইরান-আফগানিস্তান ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের সফল আলোচনারপ্রেক্ষিতটিকে। এ মাসের শেষের দিকে নিউ ইয়র্কে ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ওআফগানিস্তানের মধ্যে যে আলোচনা ও পরামর্শ পুনরায় অনুষ্ঠিত হতে চলেছে তার উদ্যোগেরবিশেষ প্রশংসা করেন তাঁরা। আফগানিস্তান সরকারকে সর্বতোভাবে সহযোগিতার লক্ষ্যে ভারতআন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাবে বলে প্রেসিডেন্ট গনিকে আশ্বাস দেনভারতের প্রধানমন্ত্রী।

এবছর ডিসেম্বর মাসে হেরাট সম্পর্কে এশিয়া-ইস্তানবুল প্রক্রিয়ার সূত্রে যে মন্ত্রীপর্যায়ের অমৃতসর সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে তার গুরুত্ব ও তাৎপর্যের কথা তুলেধরেন দুই বিশ্ব নেতা। আগামী ৫ অক্টোবর ব্রাসেল্‌স সম্মেলন আয়োজনের বিষয়টিওবিশদভাবে আলোচনা করেন তাঁরা। শ্রী মোদী অমৃতসর সম্মেলনের উদ্বোধন করার জন্য প্রেসিডেন্টগনিকে আমন্ত্রণ জানালে তা সানন্দেই গ্রহণ করেন আফগান প্রেসিডেন্ট। ঐ সম্মেলনেআফগানিস্তানের অর্থনৈতিক সুযোগ-সুবিধা ও সম্ভাবনার বিষয়টি ভারতীয় শিল্প ও বাণিজ্যপ্রতিনিধিদের কাছে তুলে ধরবেন মিঃ আশরফ গনি। এছাড়াও, বিশ্ব সন্ত্রাস সম্পর্কে একবিশেষ সভায় ভাষণও দেবেন তিনি।

PG/SKD/DM