উপস্থিত সকল শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিবর্গ এবং সহযোগী বন্ধুরা,
যেকোন সজীব ব্যবস্থা সময়ানুগ পরিবর্তনকে স্বীকার না করলে তার সজীবতা শেষ হয়ে যায়। আর যে ব্যবস্থা সজীব নয়, তা বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। সেজন্য ব্যক্তির বিকাশের যেমন প্রয়োজন রয়েছে, তেমনই ব্যবস্থার বিকাশেরও প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু চালু ব্যবস্থাকে বদলাতে সাহস চাই। সেজন্য পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে ব্যবস্থার পর্যালোচনার মাধ্যমে নতুন ব্যবস্থা চালু করার পরিকল্পনা নেওয়া উচিত।
আজ এখানে দু’ধরনের মানুষ রয়েছেন। নবীন ও প্রবীণ প্রজন্মের মানুষ। প্রবীণরা চাকরি ছাড়ার অপেক্ষায়। ২০১৬ কিংবা ২০১৭-য় তাঁরা অবসর গ্রহণ করবেন। তারপর কী করবেন, কিভাবে করবেন সেটা নিয়ে তাঁদের ভাবনা।
আপনারা যখন মুসৌরি অ্যাকাডেমি থেকে পাশ করে বেরিয়েছিলেন, ভেবেছিলেন সবকিছু এখন হাতের মুঠোয়। কিন্তু তারপর দেখছেন এত সহজ নয়। সবকিছু রপ্ত করতে অনেক সময় লাগছে। শৈশবে পাথর খোদাইকারী কিছু মানুষকে দেখতাম কেউ তাদের যদি জিজ্ঞাসা করত, “কী করছ ভাই ?” তিনি জবাব দেন, “কী আর করব, গরিবের ঘরে জন্ম নিয়েছি, পাথর ভেঙে রোজগারের ব্যবস্থা করছি ।” আর একজনকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, “দেখো ভাই, আগে অন্য কাজ করতাম। কিন্তু সেখানে যা রোজগার তা দিয়ে সংসার চলত না। এখন এখানে এসেছি, পাথর খোদাই করে নিজের ভবিষ্যৎ নির্মাণের চেষ্টা করছি।” তৃতীয় জন জবাব দেয়, “একটা কাজ পেয়েছি, শেখার চেষ্টা করছি।” আর একজন তাদের পাশে বসে একই কাজ করছিল তাকে জিজ্ঞাসা করলে জবাব দেয়, “এটা আমার জীবনের সৌভাগ্য একটা বড় মন্দির তৈরি হচ্ছে, পাথর খোদাই করে সেই মন্দিরের অংশ তৈরি করছি।” অর্থাৎ, শেষোক্ত ব্যক্তি অন্যদের মতো একই কাজ করলেও তিনি নিজেকে নির্মীয়মান মন্দিরের অংশ হিসেবে ভাবছিলেন। তিনি মনে মনে সেই মন্দিরকে সুন্দর করে তোলার ব্রত নিয়ে কাজ করে চলেছিলেন। সেজন্য অন্যদের কাছে যে কাজ বোঝা বলে মনে হচ্ছে, শেষোক্ত ব্যক্তির কাছে সেটা আনন্দের বিষয়।
আমিও মাঝেমধ্যে গ্রামেগঞ্জে কাজে যাই। কোন কৃষকের সমস্যার সমাধান করতে, কোন গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছনোর ব্যবস্থা করতে। আপনারাও তেমনই এখানে তিন মাস থেকে ভারতের উন্নয়নের যে কর্মযজ্ঞ শুরু হয়েছে, তার অংশ হয়ে উঠে নিজের এলাকায় ফিরে যাচ্ছেন। যাঁরা সরাসরি মসৌরি থেকে পাশ করে গ্রামে যেতেন, তাঁরা যতটা সন্তুষ্ট হতেন তার থেকে আপনারা অনেক বেশি সন্তুষ্টি লাভ করবেন কেননা, আপনারা জানেন যে দেশের ভবিষ্যৎ নির্মাণে আপনার কাজ কতটা কার্যকরী হবে। এই দুইয়ের মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে। এই তিন মাসে সামগ্রিকভাবে দেশের ভবিষ্যৎ নির্মাণের পরিকল্পনা সম্পর্কে জানার ফলে এখন নিজের প্রান্তে গিয়ে কাজ করতে আপনাদের ঐ শেষোক্ত খোদাইকারীর মতো আনন্দ হবে। যে এলাকায় যাবেন, সেখানে কোন দুটি গ্রামে বিদ্যুতের খুঁটি না থাকলে আপনাদের মনে পড়বে যে ভারতের এমনই ১৮ হাজার গ্রামে বিদ্যুতের খুঁটি নেই। প্রধানমন্ত্রী আগামী এক হাজার দিনের মধ্যে এই ১৮ হাজার গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সেজন্য আমাকে এই দুটি গ্রামে যত দ্রুত সম্ভব বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। আমি দেরী করলে গোটা ব্যবস্থাটাই শ্লথ হয়ে পড়তে পারে। তার মানে আপনাদের স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গী এবং প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা ভারতের উন্নয়নে সদর্থক ভূমিকা গ্রহণ করবে। কাজ করতে গিয়ে হয়ত দেখেছেন, এক রকম তথ্য পেয়ে কাজ শুরু করলেন। হঠাৎই আরও কিছু কাজ এসে জুটল, নতুন পরামর্শ – যা আপনাকে ঐ সময়ের মধ্যেই করে দিতে হবে। আপনি যেহেতু সামগ্রিকভাবে বিষয়টা জানেন, আপনি কখনই বিরক্ত হবেন না।
এই তিন মাসের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আপনারা নিজেদের দায়িত্বপ্রাপ্ত এলাকার উন্নয়নে লেগে পড়ুন। এটাই প্রথম ব্যাচ যারা দেশের সামগ্রিক কর্মযজ্ঞ সম্পর্কে জানার এ ধরনের তিন মাসের অভিজ্ঞতা নিয়ে তাদের এলাকায় যাচ্ছেন। এই সামগ্রিক দৃষ্টিকোণ থেকেই আপনারা নিজেদের বিভাগকে পরামর্শ দেবেন। আপনাদের বিভাগ থেকে আমি জানতে পেরেছি তারা এই তিন মাসও নিয়মিত আপনাদের সঙ্গে মতবিনিময়ের মাধ্যমে, এমনকি আপনাদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে বিভাগের কর্মযজ্ঞকে প্রাণবন্ত করে তোলার চেষ্টা করেছেন।
এখন আপনারা নতুন দায়িত্ব নিয়ে যাচ্ছেন। আপনাদের মনের মধ্যে দু’ধরনের অনুভূতি হতে পারে। প্রথমত, একটি আগ্রহ –“প্রথমবার যাচ্ছি, এর আগে কোন সরকারি ব্যবস্থায় নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ হয়নি। এখন যেখানে যাচ্ছি সেটা কেমন জায়গা, কী ধরনের কাজ করতে হবে।” দ্বিতীয়ত, “কিছু একটা করে দেখাতে হবে।” যেকোন দায়িত্ব পাওয়ার আগে প্রত্যেক ব্যক্তির মনে এরকম চিন্তাই হয়। কিন্তু, সেটা করতে গিয়ে পেশাগত জীবনের শুরুতেই যখন কোন সংঘাতের মুখোমুখি হন তখনই তার জীবনে সঙ্কট নেমে আসে। যারা ২০, ২৫, ৩৫ বছর ধরে কোন ক্ষমতা উপভোগ করছে, সেই কায়েমি স্বার্থকে হঠাৎ করে আঘাত করলে তারাও আপনাকে ছেড়ে দেবে না। আপনাদের বয়সের থেকে বেশি সময় ধরে তারা সেই ক্ষমতা উপভোগ করছেন।
আপনারা হয়ত ভাববেন আমি আই এ এস আধিকারিক হয়ে এসেছি। আর তারা ভাববে আমার কর্মজীবনে আপনার মতো ১৫ জন এসেছেন আর গেছেন। আপনি স্বপ্ন নিয়ে গেছেন। আর তারা পরম্পরাকে আকড়ে ধরে বেঁচে আছে। সেই স্বপ্ন আর ঐতিহ্যের মধ্যে যে সংঘাত তা অনেক সময় আপনার কাজকে শ্লথ করে দেয়। কখনও আপনার দৃঢ়তা কোন কাজে সাফল্য এনে দিলে আপনি উৎসাহিত হয়ে ভাবলেন, “দেখো এটা করে দিয়েছি।” কিন্তু পরমুহূর্তেই দেখবেন আর এগোতে পারছেন না। কারণ আপনাদের সার্বিক কাজের অভিজ্ঞতা দশ বছরের বেশি নয়। সেজন্যই যেখানে যাবেন আগে সেখানকার মানুষজন এবং জীবনশৈলীকে বুঝুন। অনেক কিছু শিখতে পারবেন। ঐ কাজে যারা অভিজ্ঞ তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করুন। শুধু ফাইলে মুখ গুঁজে থাকবেন না। আপনার পঠিত বিদ্যার সঙ্গে অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের ফলিত বিদ্যার সমাহারে নিজের ভিতকে শক্ত করে গড়ে তুলুন যা আপনার আগামী ২০-২৫ বছরের মূলধন হয়ে উঠবে।
প্রথম কর্মক্ষেত্রের মাটি থেকে অভিজ্ঞতার রস টেনে নিয়ে নিজেকে বৃক্ষে পরিণত না করতে পারলে আপনি সময়ের সঙ্গে একটি পাইপলাইনে ঢুকে পড়বেন যা কিছুদিন পর আপনার মনে নিজের কর্মস্থলকে বোঝা বলে মনে হবে। আপনার ওপরওয়ালা ভাববেন, ২০ বছর হয়ে গেছে এই আধিকারিকের, তাকে কোথায় রাখি। অমুক দপ্তরে জুড়ে দিলেন তারপর সেই দপ্তরের ভাগ্যে যা আছে দেখা যাবে ! কিন্তু আমরা যদি শিখতে শিখতে, কাজ করতে করতে এগোতে থাকি তাহলে দেখবেন আপনার চারপাশের সবকিছু সম্পর্কে আপনার মাথায় এত তথ্য থাকবে তা আপনাকে যেকোন পরিস্থিতি সামলাতে সাহায্য করবে। অভিজ্ঞতা পুরনো চালের মতো ভাতে বাড়ে।
আমাকে একজন মুখ্যমন্ত্রী একটা ঘটনা শুনিয়েছিলেন। তিনি জীবনের শুরুতে পুলিশ বিভাগে নীচু পদে চাকরি করতেন। কিন্তু তাঁর ব্যক্তিত্ব এমন ছিল যে তিনি একদিন মুখ্যমন্ত্রী হতে পেরেছিলেন। তিনি যখন মুখ্যমন্ত্রী হলেন, তখন অন্য দলের একজন প্রভাবশালী নেতার ছেলে অপহৃত হয়েছিল। সংবাদমাধ্যম শোরগোল তোলে। মুখ্যমন্ত্রী, তাঁর গোটা ব্যবস্থাকে কাজে লাগান। তিনি প্রথম যে আদেশ দেন সেটা আমি আপনাদের শোনাতে চাই। তিনি প্রথমেই ইন্টিলেজেন্সের আধিকারিকদের বলেন তারা গোয়ালাদের সঙ্গে দেখা করেন। তাদেরকে জিজ্ঞাসা করেন কার বাড়িতে দুধের চাহিদা বেড়েছে। যিনি আগে ৫০০ গ্রাম দুধ নিতেন, তিনি এখন ২ লিটার নিচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রী কথা শুনে তাঁরা এরকম কয়েকজনকে চিহ্নিত করে। আর সেই বাড়িগুলিতে তল্লাশি চালিয়েই ঐ নেতার ছেলেকে পাওয়া যায়। মুখ্যমন্ত্রী তাঁর পুলিশে চাকরি করার অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এই নির্দেশ দিয়েছিলেন। কারণ, এত বড় নেতার ছেলেকে যারা অপহরণ করেছে তাদেরকে সেই ছেলেকে খাওয়ানোর জন্য বেশি দুধ নিতেই হবে।
আপনারা জীবনের এমন একটা পর্যায়ে পৌঁছে গেছেন, যখন শুধু ঘাম ঝরাতে হবে। এত ঘাম ঝরাতে হবে যে আপনার অধস্তন কর্মচারীরা ভাববেন, এত বড় আধিকারিক এত পরিশ্রম করেন কাজেই আমরাও চুপ থাকলে চলবে না। সবাই ছুটতে শুরু করবেন। আপনি অফিসের সামনে নোটিশ টাঙ্গিয়ে দিন যে সবাইকে সময়মতো অফিসে আসতে হবে। এই আদেশের যত ক্ষমতা তার চাইতে অনেক বেশি কার্যকরী ক্ষমতা রয়েছে আপনার নিয়মানুবর্তিতায়। আপনি যদি রোজ অফিস টাইমের পাঁচ মিনিট আগে পৌঁছে যান, তাহলে দেখবেন সকলেই সময়ে আসতে শুরু করেছে। কোন নোটিশের প্রয়োজন পড়বে না। আধিকারিকদের যদি বলেন, সপ্তাহে একদিন এলাকা সফরে যাবেন, রাতে গ্রামে থেকে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করবেন, তাহলে যতটা কাজ হবে, তার চাইতে অনেক গুণ বেশি কাজ হবে যদি আপনি নিজে তা করেন।
আমাদের পূর্বজরা যে ব্যবস্থা চালু করে গেছেন, তা মেনে চলতে হবে। তাঁরা নিষ্কর্মা ছিলেন না। তাঁদের প্রত্যেক পদক্ষেপের পেছনে যুক্তি ছিল, কোন না কোন কারণ ছিল এবং তাঁদের সিদ্ধান্তের কার্যকরী সামর্থ্য ছিল। আমরা যদি হুবহু তাঁদের প্রদর্শিত পথে চলি, তাহলেই দেখবেন কাজে সাফল্য আসবে। আর নিজের বুদ্ধি ও অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে যদি ইতিবাচক কোন পরিবর্তন আনতে পারেন তাহলে দেখবেন আগামী দশ বছরে ভারতের চেহারা বদলে গেছে। কারণ, আগামী দশ বছর ধরে ভারতের পাঁচ ভাগের এক ভাগ জেলার উন্নয়নের কর্মযজ্ঞে যাঁরা নেতৃত্ব দেবেন তাঁরা সবাই এখানে বসে আছেন। আপনারাই আগামী দশ বছরে ভারতের পাঁচ ভাগের এক ভাগ মানুষের ভাগ্য বদলে দেবেন। তাহলেই বুঝুন, আপনাদের এই টিমের শক্তি কতটা। আপনাদের সঙ্গে রয়েছে একটি বহু পরীক্ষিত ব্যবস্থা, সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার, আর অর্থ।
দ্বিতীয়ত, সংঘাত এড়িয়ে চলবেন। সংঘাতের সম্ভাবনা প্রায় প্রতি পদক্ষেপেই থাকবে। কিন্তু যেখানেই যাবেন আগে নিজের টিম তৈরি করে নেবেন। অভিজ্ঞ আধিকারিক ও কর্মচারীদের পরামর্শ নিয়ে নিজের লক্ষ্য স্থির রেখে কাজ করলে দেখবেন কত সহজে সংঘাত এড়িয়ে সাফল্য পাচ্ছেন। পেশার শুরুতে এটাই কাজের পদ্ধতি হওয়া উচিত। গত ২৫ বছরে আপনার এলাকায় যে আধিকারিকরা কাজ করে গেছেন, তাঁদের কাজের ইতিহাস পড়ুন, প্রয়োজনে চিঠি লিখে তাঁদের সাহায্য নিন। দেখবেন তাঁরা আপনাকে নতুন পথ খুঁজে বের করতে সাহায্য করবে।
প্রত্যেক মানুষের জীবন বৈশিষ্ট্যপূর্ণ। আমরা অবসরপ্রাপ্ত আধিকারিকদের পরামর্শ নিয়ে বর্তমান পরিস্থিতির মোকাবিলা করলে উপকৃত হব। নানা সামাজিক সংঘাত এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে অগ্রজদের কাজের অভিজ্ঞতা, পুরনো ফাইল ঘেঁটে সরকারি পদক্ষেপ সম্পর্কে যেমন জানতে পারবেন, তেমনই তাঁদের সঙ্গে কোনভাবে যোগাযোগ করে কথা বলতে পারলে তাঁদের অভিজ্ঞতাও আপনাদের পথ দেখাবে। মনে করুন, কোন এলাকায় ক্ষতিগ্রস্তদের খাবারের প্যাকেট পৌঁছে দিতে হবে, কত প্যাকেট পৌঁছবেন তাও আপনি এভাবে ঠিক করতে পারবেন।
সরকার আর সমাজের মধ্যে যে ব্যবধান তা কেবল রাজনীতিবিদরা সম্পূর্ণ করতে পারবেন না। শুধু নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাই সব সমস্যার সমাধান করতে পারেন না। জনপ্রতিনিধিরা মানুষের অভাব-অভিযোগকে তুলে ধরবেন, সেগুলি সমাধানের পথ খুঁজবেন প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে। প্রশাসনই সকল পরিকল্পনাকে বাস্তবায়িত করে।
প্রশাসনই জনপ্রতিনিধিদের সকল কাজ করে দেয়। অভিজ্ঞ আধিকারিকরাই সকল পরিকল্পনা ছকে দেন। এই যে সিনহাজি-কে দেখছেন, যিনি এইমাত্র আপনাদের সম্পর্কে আলোকপাত করলেন, আপনাদের অভিজ্ঞতা, আপনাদের পরামর্শগুলিকে একসঙ্গে করে তিনি কত সুন্দর প্রেসেন্টেশন বানিয়েছেন। আমি চাইব দপ্তরের অন্য আধিকারিকরাও এই পরামর্শগুলি নিয়ে ভাবনাচিন্তা করে এগুলিকে কিভাবে কার্যকর করা যায় সে সম্পর্কে ভাবেন। হয়ত ১০টার মধ্যে ২টো কাজে লাগবে। তাই হোক।
এই প্রক্রিয়া, আপনারা যেখানেই যাবেন এমনই ভিন্ন ভিন্ন স্তরের আধিকারিক ও কর্মচারীদের সঙ্গে নিয়ে একটি কার্যকরী টিম তৈরি করুন। কারোর অভিজ্ঞতা সাত বছর, কারোর পাঁচ বছর। আপনি সেখানে দুই থেকে আড়াই বছর থাকবেন। শুরুতেই ঐ টিমের সদস্যদের নিয়ে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে কাজ করার পদ্ধতি ভেবে নিয়ে এগিয়ে গেলে আপনার সুবিধা হবে। আপনি একা পর্যালোচনা করলে যা ছয় মাস লাগতো এই টিম আপনাকে তা এক সপ্তাহের মধ্যে করে দেবে। এভাবে ভিন্ন ভিন্ন কাজের জন্য নানা স্তরে ভিন্ন ভিন্ন টিমকে কাজে লাগান। এভাবে প্রশাসনে নমনীয়তা আনতে পারলে দেখবেন দ্রুত আপনার মনে মতো পরিবর্তন করতে পারছেন। আপনাদের এই দায়িত্ব দেওয়া হল। আজ এ কথা বলতে চাই না যে ভারত সরকারের অমুক অমুক পরিকল্পনা আপনারা কার্যকর করবেন। আমি শুধু তাই বলতে চাই যাতে আপনারা উৎসাহ পাবেন।
কখনও দেখা যায় যে একটি অঞ্চলের একাধিক ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে পড়েন। সবাই বলে ভাইরাল হয়েছে। কিন্তু পাশাপাশি এটাও দেখি যে অনেকে এই রোগে আক্রান্ত হননি। এজন্য হননি যে তাদের মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি রয়েছে। আপনারা যেখানেই যাবেন, সেখানে যে জিনিসটাই ভাইরাল হোক না কেন, আলস্য, উদাসীনতা, দুর্নীতি – যাই ভাইরাল হোক না কেন, আপনার অন্তরের প্রতিরোধ ক্ষমতা দিয়ে নিজেকে সেই ভাইরাল থেকে মুক্ত রাখবেন। একটি সামান্য প্রতিষেধক মড়ক ঠেকাতে পারে। আর আপনি তো একজন জীবন্ত মানুষ। কপালে হাত দিয়ে বসলে চলবে না। নিজের সততা দিয়ে সমস্যার মোকাবিলা করতে হবে।
কিন্তু কেবলই সংঘাত দ্বন্দ্বমূলক পরিস্থিতির পরিবর্তন করতে পারবে না। আপনারা যত মানুষের সঙ্গে মিশতে পারবেন, তাদের সুখ-দুঃখের সঙ্গী হয়ে উঠতে পারবেন, তত সমস্যা মোকাবিলার শক্তি সংগ্রহ করতে পারবেন। আপনি এলাকার মানুষের প্রিয়জন হয়ে উঠতে পারলে যেকোন দায়িত্ব সম্পাদন সহজ হয়ে উঠবে। আজ গোটা বিশ্ব এমন একটি সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে যা ভারতের অনুকূল। এই সোনালী সুযোগ হাতছাড়া করার কোন অধিকার ভারতের নেই। ১২৫ কোটি ভারতবাসীর স্বার্থে আমরা যারা ক্ষমতায় আছি তাদেরকে এই সোনালী সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। এহেন আন্তর্জাতিক পরিবেশ খুব কম পাওয়া যায়। আমি অনুভব করছি এই সুযোগ আমরা যেন হাতছাড়া হতে না দিই। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আমরা কিভাবে ভারতকে উন্নতির নতুন শিখরে পৌঁছে দেব, আমরা যারা এখানে আছি আমাদেরকেই নতুন ভারত গড়তে হবে। আমাদের সকলের মিলিত শক্তির সমন্বয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। দেখবেন আমরা অবশ্যই সফল হব।
আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা, অনেক অনেক ধন্যবাদ।
PG/SB/DM/……19th November, 2015
Our actions must be in tune with our vision. What we learn on the ground is very important: PM to IAS officers of 2013 batch
— PMO India (@PMOIndia) November 19, 2015
These 10 years are very crucial for you. Make the most of these 10 years & ensure your foundations are strong: PM to 2013 batch IAS officers
— PMO India (@PMOIndia) November 19, 2015
You are the people going to manage several districts across India. The positive change you bring will be beneficial for the nation: PM
— PMO India (@PMOIndia) November 19, 2015
Tensions and struggles don't bring change. It is about how many people to integrate: PM to IAS officers of 2013 batch
— PMO India (@PMOIndia) November 19, 2015