Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

অযোধ্যায় লতা মঙ্গেশকর চক-এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে লতাজির ভক্তি ও নিষ্ঠার কথা স্মরণ করলেন প্রধানমন্ত্রী

অযোধ্যায় লতা মঙ্গেশকর চক-এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে লতাজির ভক্তি ও নিষ্ঠার কথা স্মরণ করলেন প্রধানমন্ত্রী


নয়াদিল্লি, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২

নমস্কার! আজ লতা দিদির জন্মদিন। তিনি আমাদের সকলের কাছে ছিলেন এক শ্রদ্ধেয় ও স্নেহময়ী দিদির মতো। ঘটনাক্রমে আজ আবার নবরাত্রির তৃতীয় দিন যা একইসঙ্গে উদযাপিত হচ্ছে মা চন্দ্রঘন্টার পূজার্চনার উৎসব হিসেবে। সাধারণের বিশ্বাস, কঠিন সাধনার মধ্য দিয়ে মাতা চন্দ্রঘন্টার কৃপায় মানুষ এক ঐশ্বরিক কন্ঠসম্পদের অধিকারী হতে পারে। লতাজি ছিলেন মা সরস্বতীর এক একনিষ্ঠ সাধক। সমগ্র বিশ্বকে তিনি মোহিত করে দিয়েছিলেন তাঁর ঐশ্বরিক কন্ঠসম্পদ দিয়ে। সাধনা করেছিলেন লতাজি। কিন্তু, আমরা সকলেই আজ তাঁর আশীর্বাদধন্য। অযোধ্যার লতা মঙ্গেশকর চক-এ মা সরস্বতীর যে বিশাল বীণাটি আজ সংস্থাপিত হল, তা সঙ্গীত সাধনার এক প্রতীক হয়ে থাকবে। লতা মঙ্গেশকর চক কমপ্লেক্সে জলের মধ্যে মর্মর নির্মিত ৯২টি সাদা পদ্ম তাঁর জীবনকালেরই এক প্রতীকবিশেষ। এই উদ্ভাবন প্রচেষ্টার জন্য যোগীজির সরকার, অযোধ্যা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এবং অযোধ্যাবাসীকে অভিনন্দন জানাই। এই উপলক্ষে সকল দেশবাসীর পক্ষ থেকে আমি আন্তরিকভাবে শ্রদ্ধা জানাই ‘ভারতরত্ন’ লতাজির উদ্দেশে। ভগবান শ্রীরামের কাছে আমি প্রার্থনা জানাই যে লতাজির জীবন থেকে যে আশীর্বাদ আমরা লাভ করেছি তা যেন তাঁর সঙ্গীত মূর্ছনার মধ্য দিয়ে আগামী প্রজন্মগুলিতেও অব্যাহত থাকে।

বন্ধুগণ,

লতা দিদি সম্পর্কে স্নেহ ও আবেগ জড়িত বহু স্মৃতিই আমার রয়েছে। যখনই আমি তাঁর প্রসঙ্গে কিছু বলতে চাই, তখনই তাঁর সেই সুপরিচিত মধুর কন্ঠ আমাকে বিমুগ্ধ করে। দিদি আমাকে প্রায়ই বলতেন যে বয়স দিয়ে কোনো মানুষকে চেনা যায় না। তাঁকে চেনা যায় তাঁর কাজের মধ্য দিয়ে। শুধু তাই নয়, দেশের জন্য যত বেশি করে তিনি কাজ করে যাবেন, ততই তিনি মহত্ব লাভ করবেন। আমি বিশ্বাস করি যে অযোধ্যার এই লতা মঙ্গেশকর চক এবং তাঁর স্মৃতি বিজড়িত সমস্ত কিছুই আমাদের জাতির প্রতি কর্তব্যের কথা স্মরণ করিয়ে দেবে।

বন্ধুগণ,

আমার মনে আছে যে অযোধ্যায় রাম মন্দিরের জন্য যখন ভূমি পূজার আয়োজন করা হয়, তখন লতা দিদির কাছ থেকে আমি একটি কল পেয়েছিলাম। তিনি এতটাই আবেগতাড়িত হয়ে আনন্দ প্রকাশ করেছিলেন যে আমাকে সেদিন আশীর্বাদ পর্যন্ত করেছিলেন। তিনি বিশ্বাসই করতে পারেননি যে রাম মন্দির নির্মাণের কাজ শেষ পর্যন্ত শুরু হতে যাচ্ছে। লতা দিদির সেই গানের কলি আজ আমার মনে পড়ে যাচ্ছে – ‘মন কি অযোধ্যা তব তক শুনি, যব তক রাম না আয়ে’। অযোধ্যার এই পবিত্র মন্দিরে শ্রীরামের আবির্ভাবের আর বেশি দেরি নেই। কোটি কোটি দেশবাসীর হৃদয়ে ভগবান শ্রীরামকে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন লতা দিদি। তাই, তাঁর নাম অযোধ্যার এই পূণ্য নগরীর সঙ্গে স্থায়ীভাবে আজ যুক্ত হয়ে গেল। রামচরিতমানস-এ উল্লেখ রয়েছে, ‘রাম তে অধিক, রাম কর দাসা’। এর অর্থ হল, ভগবান শ্রীরামের ভক্তবৃন্দরা তাঁর পূণ্য আবির্ভাবের অনেক আগেই পৌঁছে যান। লতা দিদির স্মরণে নির্মিত লতা মঙ্গেশকর চক তাই পবিত্র মন্দির স্থাপনের আগেই মূর্ত হয়ে উঠল।

বন্ধুগণ,

ভগবান শ্রীরাম মানবসভ্যতার প্রতীক। তিনি আমাদের নীতি, মূল্যবোধ, সম্ভ্রম ও কর্তব্যনিষ্ঠার এক প্রাণপুরুষ। অযোধ্যা থেকে রামেশ্বরম পর্যন্ত বিস্তৃত প্রতিটি ক্ষুদ্র অণুকণার সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে রয়েছেন ভগবান শ্রীরাম। তাঁর আশীর্বাদেই যে মন্দির নির্মাণের কাজ দ্রুত সম্পন্ন হতে চলেছে তার পরিচয় পেয়ে সারা দেশই আজ রোমাঞ্চিত। অযোধ্যার গর্ব ও ঐতিহ্যের এ হল এক পুনঃপ্রতিষ্ঠা, উন্নয়নের এক নতুন অধ্যায়। যে স্থানটিতে আজ লতা চক গড়ে উঠেছে, তা সাংস্কৃতিক দিক দিয়ে অযোধ্যার গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন স্থানগুলিরই এক সঙ্গমস্থল। রাম কি পৈড়ি-র অদূরেই অবস্থিত এই চকটি। পবিত্র সরযু নদীও বয়ে চলেছে আরও কিছুটা ব্যবধানে। লতা দিদির নামে চক নির্মাণের এর থেকে ভালো স্থান আর কোথায় থাকতে পারে? অযোধ্যার সঙ্গে ‘রাম’ – এই নামটি আমাদের মনে গেঁথে রয়েছে বহু যুগ পরেও। সেরকমভাবেই লতা দিদির গান ও ভজন আমাদের বিবেককে ভগবান শ্রীরামের মধ্যে সম্পৃক্ত করে রেখেছে। রামচরিতমানস-এর সেই মন্ত্র – ‘শ্রীরামচন্দ্র কৃপালু ভজ মন, হরন ভব ভয়ো দারুনাম’, কিংবা মীরাবাঈ-এর ‘পায়ো জি ম্যায়নে রাম রতন ধন পায়ো’ অথবা বাপু’র সেই প্রিয় ভজন ‘বৈষ্ণবজন’ বা ‘তুম আশা বিশ্বাস হামারে রাম’-এর সেই সুমধুর সুর – সবকিছুর মধ্য দিয়ে আমরা একাত্ম হয়ে পড়ি ভগবান শ্রীরামের সঙ্গে। লতাজির কন্ঠে এই ধরনের বহু গান ও ভজনের মধ্য দিয়েই দেশবাসী ভগবান শ্রীরামকে খুঁজে পেয়েছেন। লতা দিদির ঐশ্বরিক কন্ঠসম্পদের মধ্য দিয়ে ভগবান শ্রীরামের এক অপার্থিব সুরের অভিজ্ঞতা আমরা সঞ্চয় করেছি।

বন্ধুগণ,

এই অভিজ্ঞতা শুধুমাত্র সঙ্গীতের কথা কিংবা গানের সুর ও মূর্ছনার মধ্য দিয়েই সঞ্চিত হয় না। যদি কেউ সেই একই অনুভূতি, একই নিষ্ঠা, শ্রীরামের প্রতি অবিচল ভক্তি ইত্যাদির মধ্য দিয়ে সেই ভজন পরিবেশন করেন তবেই এই অভিজ্ঞতার সঞ্চয় হয়। লতাজির গানের মধ্য দিয়ে উচ্চারিত মন্ত্র, তাঁর বিশ্বাস, আধ্যাত্মিকতা ও পবিত্রতা আমাদের মুগ্ধ ও মোহিত করে।

বন্ধুগণ,

লতা দিদির কন্ঠে ‘বন্দে মাতরম’ – এই ধ্বনি উচ্চারণের মধ্য দিয়ে যেন ভারতমাতা আমাদের সামনে আবির্ভূত হন। নাগরিক কর্তব্য ও কর্তব্যবোধ সম্পর্কে লতা দিদি ছিলেন সকল সময়েই বিশেষ সজাগ। একইভাবে, অযোধ্যাবাসী এবং অযোধ্যার দর্শনার্থীদের মনে নিষ্ঠার ভাব গড়ে তুলবে এই চকটি। এই চক এবং এই ‘বীণা’র মধ্য দিয়ে অযোধ্যার প্রেরণা ও উন্নয়নকে আমরা অনুভব করতে পারব। লতা দিদির নামে নির্মিত এই চকটি শিল্পসাধনার সঙ্গে যুক্ত মানুষের কাছে অনুপ্রেরণার একটি উৎস হয়ে থাকবে। ভারতের শিল্পকলা ও সংস্কৃতিকে বিশ্বের দিকে দিকে ছড়িয়ে দেওয়ার কথা স্মরণ করিয়ে দেবে এই চকটি। আধুনিকতার পথে আমরা যতই অগ্রসর হই না কেন, আমাদের মূল বা শিকড়টিকে বিস্মৃত হলে চলবে না। ভারতের বহু সহস্র বছরের ঐতিহ্যে আমরা গর্বিত। তাই আমাদের কর্তব্যই হল দেশের শিল্পকলা ও সাংস্কৃতিক সম্পদকে বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে পৌঁছে দেওয়া। এজন্য প্রয়োজন লতা দিদির মতো নিষ্ঠা এবং দেশের সংস্কৃতির প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা।

বিশ্বের যে কোনো গবেষক এই চকটি থেকে ভারতের শিল্পকলা সম্পর্কে যে এক বিশেষ অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে পারবেন, এ বিষয়ে আমি নিশ্চিত। লতা দিদির সেই অননুকরণীয় কন্ঠস্বর বহু যুগ ধরেই মিশে থাকবে দেশের প্রতিটি ধূলিকণার সঙ্গে। এই বিশ্বাস নিয়েই অযোধ্যাবাসীর কাছে আমি কিছু প্রত্যাশা রাখি। অদূর ভবিষ্যতে রাম মূর্তি নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হবে এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অনেকেই সমবেত হবেন অযোধ্যায়। তাই, অযোধ্যাবাসীদের উচিৎ তাঁদের সকলকে এক সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন অযোধ্যা উপহার দেওয়া। আজ থেকেই আসুন আমরা এর প্রস্তুতি পর্বের কাজ শুরু করে দিই। প্রতিটি অযোধ্যাবাসীরই উচিৎ এই কাজে সামিল হওয়া। তাহলেই যে সমস্ত পূণ্যার্থী এখানে উপস্থিত হবেন, তাঁরা রাম মন্দির দর্শনের সঙ্গে সঙ্গে অযোধ্যার সুন্দর ব্যবস্থা ও আতিথ্যের অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে যাবেন। অযোধ্যার ভাই-বোনেদের কাছে আমি আহ্বান জানাই, এখন থেকেই প্রস্তুতি পর্বের কাজ শুরু করে দেওয়ার জন্য। লতা দিদির জন্মদিন আপনাদের চিরকাল অনুপ্রাণিত করুক, এই প্রার্থনা জানাই। আপনাদের সকলের জন্য আমার অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল।

ধন্যবাদ!

প্রধানমন্ত্রীর মূল ভাষণটি ছিল হিন্দিতে

 
PG/SKD/DM/