Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

‘কৃষি ২০২২ : কৃষকের দ্বিগুণ আয়ের লক্ষ্য‘বিষয়ে জাতীয় সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

‘কৃষি ২০২২  :  কৃষকের দ্বিগুণ আয়ের লক্ষ্য‘বিষয়ে জাতীয় সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

‘কৃষি ২০২২  :  কৃষকের দ্বিগুণ আয়ের লক্ষ্য‘বিষয়ে জাতীয় সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

‘কৃষি ২০২২  :  কৃষকের দ্বিগুণ আয়ের লক্ষ্য‘বিষয়ে জাতীয় সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ


সারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে যেসব বিজ্ঞানী কৃষক বন্ধু এসেছেন এবং এখানেউপস্থিত বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ,

আমরা এখানে সমবেত হয়েছি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও প্রাসঙ্গিক বিষয়ে আলোচনাকরার জন্য।

আমি আপনাদের পেশ হওয়া বক্তব্য দেখেছি এবং মতামত শুনেছি। এই কষ্টসাধ্য কাজেরজন্য আমি আপনাদের সবাইকে অভিনন্দন জানাতে চাই। এটা সত্যি যে কৃষি হচ্ছে এমন একবিষয়, যা হাজার হাজার বছর ধরে আমাদের সভ্যতার ভিত গড়ে দিচ্ছে এবং শক্তিশালী করেতুলেছে। আমাদের শাস্ত্রে বলেছে – “কৃষি ধন্য, কৃষি মেধ্য/যন্তনাভ জীবনম্‌ কৃষি’।

এর অর্থ হ’ল – কৃষি থেকে সম্পদ আসে এবং মেধা আসে, কৃষি হচ্ছে মানব জীবনেরভিত্তি’। তাই এটি বহু পুরনো এক ধারণা। ভারতীয় সংস্কৃতি এবং ভারতীয় কৃৎকৌশল সমগ্রবিশ্বকে এই লক্ষ্যে দিশা-নির্দেশ করেছে। ভারত বিশ্বকে কৃষি ক্ষেত্রে ব্যবহৃতঅসংখ্য কৃৎকৌশল নিয়ে সচেতন করেছে। এই বিষয়ে কথা বলতে গেলে আমাদের ইতিহাসের কথামাথায় রাখতে হবে। এছাড়া, বর্তমান ও ভবিষ্যতকে ভুললে চলবে না।

ইতিহাসের পুস্তকে এরকম বর্ণনা হয়তো আপনারা দেখে থাকবেন, যেখানে বলা হয়েছে,ভারতের কৃষি কাজ দেখে বিদেশ থেকে আগত মানুষেরা অবাক হতেন। কৃষি ক্ষেত্রে আমাদেরদেশে এমন প্রথা ও প্রযুক্তি প্রচলিত ছিল, যা থেকে বিশ্ব শিক্ষা নিতে পারে। আমাদেরবিখ্যাত কৃষক কবি যেমন – ঘাঘ এবং ভাদ্দোরি কৃষকদের তাঁদের কবিতার মাধ্যমে আবহাওয়াও কৃষিকাজ বিষয়ে নীতি-নির্দেশিকা দিতেন। কিন্তু দীর্ঘ ঔপনিবেশিক শাসনে এই সবঅভিজ্ঞতা ও কৃষি পরিকাঠামো সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হইয়ে যায়। স্বাধীনতার পর আমাদেরকৃষকরা পুনরায় কঠোর পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে কৃষিকাজকে নিয়ন্ত্রণ করতে শেখেন।স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে আমাদের কৃষকরা ভারতকে খাদ্যশস্যের ক্ষেত্রে স্বয়ংসম্পূর্ণকরে তোলেন। গত বছর আমাদের কৃষকরা কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে খাদ্যশস্য ও সব্জিরউৎপাদন রেকর্ড পরিমাণ বৃদ্ধি করেছেন। কৃষকদের অসাধারণ দক্ষতা ও শক্তির ফলে মাত্রএক বছরে আমাদের দেশে ডালশস্যের উৎপাদন ১ কোটি ৭০ লক্ষ টন থেকে বেড়ে ২ কোটি ৩০ লক্ষটন হয়েছে।

স্বাধীনতার পর যদিও কৃষি ক্ষেত্রের কাজকর্ম অনেক বৃদ্ধি পায়। তবুও কৃষকদেরউন্নয়ন কিন্তু তেমনভাবে হয়নি। অন্যান্য ক্ষেত্রের তুলনায় কৃষি ক্ষেত্র থেকে আয়কমতে শুরু করে। তাই, পরবর্তী প্রজন্মের মানুষেরা কৃষি কাজ ত্যাগ করে শহরে আরও ভালোকাজের সুযোগের সন্ধানে বেরিয়ে পড়েন এবং মামুলি কাজে নিয়জিত হন। যাঁরা আমাদের খাদ্যসুরক্ষার ব্যবস্থা করেন, সেইসব কৃষকদের আয়ের নিরাপত্তা ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। আপনারাসকলেই এই পরিস্থির কথা আমার চেয়েও ভালো জানেন। যদিও আমি অতীত দিনের পরিস্থিতির কথাবলছি। কারণ অতীত পরিস্থিতির পর্যালোচনার মাধ্যমেই নতুন পথের সন্ধান পাওয়া যায়। আমাদেরমনে হয়, কৃষি সম্বন্ধে অতীত দিনের ধ্যানধারণায় কিছু ত্রুটি ছিল। ফলে, ব্যর্থতাদেখা দেয় এবং তার উন্নয়নেরও প্রয়োজন দেখা দেয়। আমাদের দেশের কৃষকদের আয় দ্বিগুণকরার ক্ষেত্রে এইসব বিশ্লেষণগুলিকে ভিত্তি করেই এগোতে হবে। এই লক্ষ্য পুরনোপদ্ধতিতে অর্জন করা সম্ভব নয় এবং তা অর্জন করতে কৃষি ক্ষেত্রে সার্বিক পরিবর্তনপ্রয়োজন।

যখন এইসব ছোটখাটো সমস্যাগুলি সমাধান করা হচ্ছে, তার মদ্য দিয়ে একটিপরিপূর্ণ বিকশিত কৃষি আন্দোলন সামনে আসে।

বন্ধুগণ, কোনও মাঠে একটি ষাঁড়কে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখলে সে ঘুরতেই থাকে। সেমনে করে, সে এগিয়ে যাচ্ছে কিন্তু ঘটনা হচ্ছে যে, আসলে সে বাঁধা পড়ে যায় এবং একছোট্ট গণ্ডীর মধ্যে দৌড়তে থাকে। কৃষি ক্ষেত্রকে অনুরূপ বন্ধন থেকে মুক্ত করার মহানদায়িত্ব আমাদের ওপর ন্যস্ত হয়েছে।

বীজ থেকে কৃষকদের জন্য বাজারের উন্নয়নের মতো বিভিন্ন ধরণের ইস্যু মোকাবিলায়সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে, কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার লক্ষ্যে। স্বয়ম্ভরতার এই যুগেকৃষকদের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। সরকার নিতি আয়োগ, আপনাদেরমতো বিশিষ্ট বিজ্ঞানী, কৃষক এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য পক্ষকে সঙ্গে নিয়ে একটিআন্তঃমন্ত্রক কমিটি গঠন করেছে এবং এই কমিটি কৃষি ক্ষেত্রের সমস্যার সমাধান খুঁজেবের করবে। সরকার এই কমিটির নির্দেশিত পথে এগিয়ে যাবে।

সাম্প্রতিক বাজেটে কৃষকরা যাতে তাঁদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য দাম পায়, তারজন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশা প্যাটেল এই কর্মসূচির বিষয়েঅত্যন্ত উৎসাহের সঙ্গে উল্লেখ করেছেন। এর আওতায় কৃষকরা তাঁদের উৎপাদন ব্যয়ে ৫০শতাংশ পাবেন। অর্থাৎ তাঁদের শস্যের দেড় গুণেরও বেশি মূল্য তাঁরা পাবেন। সরকাররাজ্য সরকারগুলির সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করে এই কর্মসূচিটির সুবিধা যাতে কৃষকদের কাছেপৌঁছে যায়, সেই লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে।

আমরা আগেকার কর্মসূচিগুলির সীমাবদ্ধতাকে অপসারণ করে, সেগুলিকে নির্ভুলব্যবস্থায় পরিণত করতে চাই।

ভাই ও বোনেরা,

কৃষকদের আয় বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে সরকার চারটি পৃথক পর্যায়ের ওপর দৃষ্টিনিবদ্ধ করেছে –

প্রথমত, কৃষির ব্যয় কমানো দরকার, দ্বিতীয়ত, তাঁদের উৎপাদিত শস্যের ন্যায্যমূল্যের ব্যবস্থা করতে হবে, তৃতীয়ত, ক্ষেত থেকে বাজারে নিয়ে যাওয়ার পথে ফসল নষ্টহওয়া কমাতে হবে এবং চতুর্থত, কৃষকদের অতিরিক্ত আয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। সরকারেরসমস্ত নীতিগত, টেকনিক্যাল ও আইনগত সিদ্ধান্ত এই চারটি পর্যায়ের ওপর দাঁড়িয়ে আছে।আমরা আমাদের সিদ্ধান্ত বিভিন্ন কৃৎকৌশলের সঙ্গে যুক্ত করার চেষ্টা করায় তার সদর্থকফল পাওয়া যাচ্ছে।

নিমের প্রলেপযুক্ত ইউরিয়া উৎপাদনের সিদ্ধান্তের ফলে কৃষকদের কৃষি উৎপাদনেরব্যয় বহুলাংশে কমেছে। ১০০ শতাংশ হারে নিমের প্রলেপযুক্ত ইউরিয়া ব্যবহারের ফলে একইজমিতে কম সার ব্যবহার করতে হচ্ছে। এরফলে তাঁদের ব্যয় কমেছে এবং উৎপাদনও বেড়েছে, যাতাঁদের আয় বাড়িয়েছে।

ভাই ও বোনেরা,

আজ পর্যান্ত আমাদের দেশে ১১ কোটিরও বেশি কৃষক তাঁদের জমির স্বাস্থ্যসংক্রান্ত ‘সয়েল হেলথ কার্ড’ পেয়েছেন। এই কার্ডের ব্যবস্থা হওয়ার ফলে উৎপাদনশীলতাওবৃদ্ধি পেয়েছে। এখন কৃষকরা জানেন যে, মাটির স্বাস্থ্যের ওপর নির্ভর করে ঠিক কতটাপরিমাণ সার ব্যবহার করতে হবে। ১৯টি রাজ্যে সমীক্ষা চালিয়ে দেখা গেছে, এর ফলে ৮-১০শতাংশ হারে রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমেছে এবং ৫-৬ শতাংশ হারে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিপেয়েছে। তবে বন্ধুগণ, এই কার্ডে সম্পূর্ণ সুবিধা পেতে হলে সমস্ত কৃষককে এটিব্যবহার করতে হবে। এটা তখনই সম্ভব হবে, যখন সমস্ত কৃষকের জন্য এই কার্ডের ব্যবস্থাকরা হবে। আমি প্রস্তাব করছি যে, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলির বিএসসি এগ্রিকালচারপাঠ্যক্রমে সয়েল হেলথ্‌ কার্ড থেকে প্রাপ্ত ফলাফল পরীক্ষার বিষয়টিকে অন্তর্ভুক্তকরা হোক। দক্ষতা বৃদ্ধি কর্মসূচির সঙ্গেও এটিকে যুক্ত করতে হবে।

আমরা এইপাঠ্যক্রমে পাশ করা ছাত্রছাত্রীদের জন্য বিশেষ সার্টিফিকেট দেওয়ার কথা ভাবছি। এইসবসার্টিফিকেটের সাহায্যে ছাত্রছাত্রীরা গ্রামে গ্রামে মাটি পরীক্ষার গবেষণাগার তৈরিকরতে পারবে। মুদ্রা যোজনায় তাঁরা যাতে ঋণ পায়, তারও ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যখন এইধরণের সমস্ত গবেষণাগারগুলি একটি কেন্দ্রীয় তথ্য ভাণ্ডারের সঙ্গে যুক্ত করা হবে এবংএকটি কেন্দ্রীয় পোর্টালে মাটির স্বাস্থ্য সংক্রান্ত যাবদীয় তথ্য পাওয়া যাবে, তাথেকে বিজ্ঞানী ও কৃষকেরা উপকৃত হবেন। এমন একটা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে, যারমাধ্যমে কৃষি বিজ্ঞানীরা মাটির স্বাস্থ্য বিষয়ে কৃষকদের অবগত করবেন এবং তাঁদেরসেচের জলপ্রাপ্তি ও জলবায়ু বিষয়েও কেন্দ্রীয় তথ্য ভাণ্ডার থেকে তথ্য দিয়ে সহায়তাকরা হবে।

বন্ধুগণ,

আমাদের সরকারদেশের কৃষি নীতির নতুন দিশা নির্দেশের উদ্যোগ নিয়েছে। কৃষি ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরণেরপ্রকল্প নির্মাণের পদ্ধতি পরিবর্ত্ন করা হয়েছে। উদাহরণ হিসাবে বলা যায় –প্রধানমন্ত্রী কৃষি সিঁচাই যোজনা প্রকল্পে দুটি পৃথক ক্ষেত্রে জোর দেওয়া হয়েছে।প্রথমটি হ’ল – দেশের অতিক্ষুদ্র সেচের ব্যবস্থা উন্নয়ন ও দ্বিতীয়টি হ’ল প্রচলিতসেচ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করা।

তাই সরকারপ্রায় দুই-তিন দশক ধরে বন্ধ থাকা ৯৯টি সেচ প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ কররা সিদ্ধান্তনিয়েছে। এর জন্য ৮০ হাজার কোটিরও বেশি অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। এর ফলে, এই বছরেরমধ্যে প্রায় ৫০টি সেচ প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ হয়ে যাবে এবং বাকিগুলি আগামী বছরেরমধ্যেই শেষ হবে। যার অর্থ ২৫-৩০ বছর ধরে ঝুলে থাকা প্রকল্পগুলি এই সরকার ২৫-৩০মাসে সম্পূর্ণ করার উদ্যোগ নিয়েছে। যেদ সেচ প্রকল্পগুলির কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে, তারফলে কৃষি ব্যয় কমবে এবং কৃষকদের কষ্টও হ্রাস পাবে। প্রধানমন্ত্রী কৃষি সিঁচাইযোজনার আওতায় ২০ লক্ষ হেক্টরেরও বেশি জমি ক্ষুদ্র সেচের সুবিধা পাচ্ছে।

আপনারানিশ্চয়ই জানেন যে, কৃষি ক্ষেত্রে বিমার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কৃষকদের ফসলের জন্যতাঁদের অনেক টাকা করে প্রিমিয়াম দিতে হ’ত এবং বিমার কভারেজও ছিল সীমাবদ্ধ। সরকারবর্তমানে কৃষি বিমার প্রিমিয়াম যে শুধু কমিয়েছে তাই নয়, প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমাযোজনার আওতায় কৃষি বিমার পরিধিও বহুলাংশে বৃদ্ধি করেছে।

বন্ধুগণ,

আমাকে বলাহয়েছে যে, এই প্রকল্পের আওতায় ১১ হাজার কোটি টাকা দাবি কৃষকদের মিটিয়ে দেওয়াহয়েছে। কৃষক প্রতি অথবা হেক্টর প্রতি দাবি অর্থও দ্বিগুণ হয়েছে। এই প্রকল্পটি বেশকিছু কৃষকের জীবন রক্ষা করছে। এছাড়া, এরফলে, বেশ কিছু পরিবারও উপকৃত হচ্ছে।দুর্ভাগ্যবশত, এই কাজের কথা গণমাধ্যমে কোনওদিন হেডলাইন হবে না এবং এই খবর অবহেলিতইথাকবে। তাই এই প্রকল্পের সঙ্গে কৃষকরা আরও বেশি করে যুক্ত হন, তা দেখার দায়িত্বআমাদের সকলেরই।

সরকার চেষ্টাকরছে যে, ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে বপণ করা ফসলের অন্তত ৫০ শতাংশ যাতে এই প্রকল্পের আওতায়আসে।

ভাই ওবোনেরা, আমাদের সরকার দেশের কৃষি ক্ষেত্রের জন্য বাজার পরিকাঠামো উন্নত করারসিদ্ধান্ত নিয়েছে। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলি সহযোগিতামূলক যুক্ত রাষ্ট্রীয়তারধারণায় এ বিষয়ে যৌথ সিদ্ধান্ত নেন, তা হলে কৃষকরা আরও বেশি করে উপকৃত হবেন। তাই,কৃষকদের কল্যাণের স্বার্থে রাজ্য সরকারগুলিকে আধুনিক আইনগুলি রূপায়ণের জন্য বলাহয়েছে। সরকার কৃষি উৎপাদন এবং বিপণনের সঙ্গে একটি ল্যান্ড লিজ অ্যাক্ট বা জমি লিজআইন প্রণয়নের চেষ্টা করছে। এছাড়া, গুদামঘর নির্মাণ সংক্রান্ত নীতি-নির্দেশিকা সরলীকরণএবং এই ক্ষেত্রে এই ধরণের আরও কিছু সিদ্ধান্ত কৃষকদের স্বার্থ আরও বেশি করেসুরক্ষিত করবে।

২০২২ সালেরমধ্যে কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার লক্ষ্যে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলিকে একযোগে কাজকরতে হবে। প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্পদ যোজনার আওতায় পরিবহণের সময়ে ফসল নষ্ট হওয়ারপ্রবণতা প্রতিরোধে উদ্যোগ গ্রহণের ব্যবস্থা হচ্ছে। কৃষি ক্ষেত্রকে আরও শক্তিশালীকরতে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে। শুকনো পণ্য সংরক্ষণ, হিমঘর এবং গুদামজাতকরণেরসাহায্যে কৃষি ক্ষেত্রের সমগ্র সরবরাহ শৃঙ্খলকে সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

এবারেরবাজেটে যে ‘অপারেশন গ্রিন’ নামে যে কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে, তার সঙ্গে সরবরাহশৃঙ্খল পরিকাঠামোর যোগ রয়েছে। ফুল ও সব্জি উৎপাদক কৃষকরা এরফলে সবচেয়ে বেশি উপকৃতহবেন। যেমন – ‘আমূল’ মডেলের মাধ্যমে দুগ্ধ উৎপাদকরা উপকৃত হয়েছেন এবং লক্ষ লক্ষকৃষকের আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। অনুরূপভাবে ‘অপারেশন গ্রিন’ প্রকল্পের মাধ্যমে আলু,পেঁয়াজ ও টমেটো উৎপাদক কৃষকরা উপকৃত হবেন।

বন্ধুগণ, রুলও রিটার্ন মার্কেটকে এবং গ্রাম পর্যায়ের এপিএমসি-গুলিকে বিশ্ব বাজারের সঙ্গে যুক্তকরা প্রয়োজন। আমাকে জানানো হয়েছে যে, ব্রিটিশ শাসনকালে একটি কমিশন স্থাপন করাহয়েছিল। এমনকি, সেই কমিশনও প্রতি ৫-৬ কিলোমিটারের মধ্যে কৃষকদের জন্য একটি করেবাজার নির্মাণের সুপারিশ করেছিল। ১০০ বছর আগের সেই পুরনো ধারণা আমরা রূপায়ণ করছি।বাজেটে গ্রামীণ খুচরো কৃষি বাজার বা ‘জিআরএএম’-এর ধারণাটি এরই সুফলে এসেছে। এইকর্মসূচির আওতায় সারা দেশের ২২ হাজার গ্রামীণ বাজারের পরিকাঠামো উন্নয়ন করা হবেএবং শেষ পর্যায়ে কৃষিপণ্য বিপণন কমিটির সঙ্গে যুক্ত করা হবে। এর অর্থ কৃষকরাতাঁদের বসবাসের জায়গা ৫, ১০ অথবা ১৫ কিলোমিটারের মধ্যেই একটি করে ব্যবস্থা পাবেন,যা তাঁদের দেশের বাজারের সঙ্গে যুক্ত করবে। কৃষকরা তাঁদের উৎপাদিত পণ্যদ্রব্য এইগ্রামীণ হাটের মাধ্যমে সরাসরি ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করতে পারবেন। আগামী দিনগুলিতেএইসব কেন্দ্রগুলি কৃষকদের আয়ের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠবে। এছাড়া,কর্মসৃজন ও কৃষি-ভিত্তিক গ্রামীণ অর্থনীতির ক্ষেত্রেও এই কেন্দ্রগুলি বিশেষ ভূমিকানেবে। সরকার এই ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করতে কৃষক উৎপাদক সংগঠনকে উৎসাহিত করছে।কৃষকরা গ্রামীণ হাট এবং এলাকার বড় বাজারগুলিকে ছোট ছোট সংগঠনের মাধ্যমে যুক্ত করতেপারবেন। এই সংগঠনের সদস্য হিসাবে তাঁরা একসঙ্গে যেমন তাঁদের প্রয়োজনের জিনিসপত্রকিনতে পারবেন, অন্যদিকে তাঁদের উৎপাদিত পণ্যদ্রব্য একসঙ্গে বিক্রিও করতে পারবেন।ফলে, তাঁদের আয় বৃদ্ধি পাবে।

বাজেটে বলাহয়েছে যে, সমবায় সমিতির মতো কৃষি উৎপাদক সংগঠনগুলিকেও আয়কর থেকে ছাড় দেওয়া হবে।মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে সুগন্ধী, ভেষজ এবং জৈব কৃষির সঙ্গে এইসব কৃষি উৎপাদকসংগঠনের সঙ্গে যুক্ত করা গেলে কৃষকদের আয়বৃদ্ধির লক্ষ্যে তা হবে একটি গুরুত্বপূর্ণপদক্ষেপ। বন্ধুগণ, সময়ের দাবিতে জল বিপ্লব, নীল বিপ্লব, মিষ্টি বিপ্লব এবং জৈববিপ্লবকে সবুজ ও শ্বেত বিপ্লবের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে। এই ক্ষেত্রগুলি থেকেকৃষকদের অতিরিক্ত আয় বৃদ্ধির ব্যবস্থা হবে। এছাড়াও কৃষকরা জৈব কৃষি ও মৌমাছিপালনের মতো বিকল্প উদ্যোগেও যুক্ত হলে, তা থেকেও আয় বৃদ্ধির সংস্থান হবে।

কৃষকদেরসামনে জৈবকৃষি, মৌমাছি পালন, সামুদ্রিক উদ্ভিদ চাষ, সৌরকৃষি-র মতো আধুনিক কিছুবিকল্পও রয়েছে। তবে এই সমস্ত বিষয়ে তাদের যতদূর সম্ভব সচেতন করে তোলা সম্ভব।

আমিচাই এ বিষয়ে বিশেষ করে প্রচলিত এবং জৈবকৃষি বিষয়ে তথ্য আদান-প্রদানের জন্য একটিডিজিটাল মঞ্চ গড়ে উঠুক। কৃষকদের বাজারের চাহিদা, বৃহৎ গ্রাহক, সরবরাহ শৃঙ্খল এবংজৈব কৃষি বিষয়ে এই ডিজিটাল মঞ্চ থেকে সচেতন করে তোলা সম্ভব হবে।

সরকারকৃষির এইসব উপক্ষেত্রে কর্মরত কৃষকদের সহায়তার জন্য সহজে ঋণ প্রদানের ব্যবস্হারউদ্যোগ নিচ্ছে। বাজেটে মৎস চাষ এবং পশুপালন ক্ষেত্রের চাহিদার কথা মাথায় রেখে ১০হাজার কোটি টাকার একটি পরিকাঠামো সংক্রান্ত তহবিল গঠন করা হয়েছে। গত তিন বছরেকৃষকদের জন্য ঋণের পরিমান ৮ লক্ষ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ১১ লক্ষ কোটি টাকা করাহয়েছে। সহজেই যাতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যাঙ্কের কাছ থেকে ঋণ পেতে পারেন সেইলক্ষ্যেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

কৃষকদেরজন্য সহজে ঋণ প্রদানের ব্যবস্হা ছাড়াও সরকার চায়, কৃষকরা তাদের প্রয়োজনেনির্দিষ্ট সময়ে দরকার মতো ঋণ পাক। এটা দেখা গেছে যে সমবায় সমিতিগুলি থেকে ক্ষুদ্রকৃষকরা ঋণ পেতে সমস্যায় পড়েন। তাই সরকার দেশের সমস্ত প্রাথমিক কৃষি সমবায়সমিতিগুলিকে কম্পিউটারের মাধ্যমে সংযুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সারা দেশের ৬৩হাজার এ ধরনের সমিতি কম্পিউটারের মাধ্যমে সংযুক্ত হলে ঋণদানের ব্যবস্হাটি অনেকবেশি স্বচ্ছ হবে।

কৃষকদেরঋণ পেতে জন-ধন যোজনা এবং কিষান ক্রেডিট কার্ড-ও অনেক সুরাহা এনে দিয়েছে। বন্ধুগণ,আমাকে জানানো হয়েছে এক দশকের পুরনো একটি আইন অনুসারে বাঁশকে গাছ হিসেবে ধরা হতোএবং তাই আগে থেকে অনুমতি না নিয়ে বাঁশ কাটা যেত না। এই আইনটির কথা শুনে আমিঅত্যন্ত আশ্চর্য হয়েছিলাম। নির্মাণক্ষেত্রে বাঁশের প্রয়োজনের কথা সকলেই জানেন।আসবাবপত্র, হাতের কাজ, ধূপকাঠি, ঘুড়ি এবং দেশলাই কাঠি তৈরির ক্ষেত্রে বাঁশব্যবহার করা হয়ে থাকে। অথচ বাঁশ কাটার জন্য আগে থেকে অনুমতি নেওয়ার বিষয়টি এতো ঝামেলারযে কৃষকরা তাদের জমিতে বাঁশের চাষ এড়িয়ে চলতেন। আমরা তাই এই পুরনো আইনটিকেপরিবর্তন করেছি। এর ফলে বাঁশ চাষিদের আয়বৃদ্ধি সম্ভব হবে।

কৃষিপ্রজাতির ক্ষেত্রে আমরা আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বন্ধুগণ, আপনারাজানেন যে আমাদের দেশে কাঠের উৎপাদন প্রয়োজনের তুলনায় অনেকটাই কম। তাই চাহিদারসঙ্গে সরবরাহের মধ্যে বিরাট ফাঁক রয়েছে। তাই সরকার বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষরোপনকে উৎসাহিতকরার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভেবে দেখুন, ৫, ১০ বা ১৫ বছর এর মধ্যে যদি সেই কৃষকেরসংশ্লিষ্ট গাছটি কাটার অধিকার দেওয়া হয়, তাহলে তার আয়ের ওপর এর কি রকম প্রভাবপড়তে পারে।

বাড়িসংলগ্ন বাইরের সীমানা প্রাচীর বরাবর গাছ লাগানো হলে তাতে যে কেবলমাত্র কৃষকদেরসুবিধা হবে তাই নয়, দেশের পরিবেশের পক্ষেও তার অনুকূল প্রভাব পড়বে। আমি অত্যন্তসুখি যে দেশের ২২টি রাজ্য এইসব পরিবর্তমূলক সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছে। কৃষিক্ষেত্রেসৌরশক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহারের ফলেও কৃষকদের আয় বাড়তে পারে। একথা মাথায় রেখে বিগততিন বছরে সরকার কৃষকদের জন্য প্রায় তিন লক্ষ সৌরবিদ্যুৎ চালিত জল তোলার পাম্পপ্রদানের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছে। এরজন্য প্রায় ২.৫ হাজার কোটি টাকার সংস্হানরাখা হয়েছে। এরফলে ডিজেলের মতো জ্বালানীর জন্য খরচ বহুলাংশে সাশ্রয় হয়েছে।বর্তমানে সরকার গ্রিড সংযুক্ত সৌরপাম্প কৃষকদের প্রদানের ওপর বিশেষ জোর দিচ্ছে।কারণ, অতিরিক্ত সৌরবিদ্যুৎ সংশ্লিষ্ট কৃষক গ্রিডের কাছে বিক্রয় করে তার আর্থিকসুবিধা পেতে পারেন।

কৃষিক্ষেত্রথেকে যেসব উপদ্রব্য তৈরি হয়, তাও কৃষকদের আয়ের এক বড় উৎস হতে পারে। এর আগে এবিষয়ে খুব একটা নজর দেওয়া হয়নি। কিন্তু আমাদের সরকার কৃষি বর্জ্যকে সম্পদে পরিনতকরার ওপর জোর দিয়েছে। কৃষিক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের বর্জ্যের কথা আমরা সকলেই জানি।উদাহরন হিসেবে বলা যায়, কলাগাছের ফল বিক্রি করা হয়। কিন্তু এর পাতা এবং কান্ড যদিযথাযথভাবে ব্যবহার করা হয় তাহলে সেগুলি আর নষ্ট হয় না। কলাচাষিদের কাছে এইসববর্জ্য নিয়ে কি করবেন তা এক মাথাব্যাথা হয়ে ওঠে। এগুলি নষ্ট করার জন্য কৃষকরাহাজার হাজার টাকা ব্যয় করতে বাধ্য হন। এমনকি তার পরেও বহু জায়গাতে রাস্তার পাশেএগুলি ছুঁড়ে ফেলা হয়। কিন্তু কলাগাছের এই কান্ড থেকে শিল্পের জন্য কাগজ এবং তন্তুতৈরি করা সম্ভব।

দেশেরবিভিন্ন অঞ্চলে বর্তমানে কৃষি ক্ষেত্রের বর্জ্য পদার্থে ব্যবহার নিয়ে বেশকয়েকটিপ্রচার কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছে। এগুলির মধ্যে রয়েছে, নারকোল ছোবড়ার বর্জ্যপদার্থ, বাঁশের বর্জ্য পদার্থ এবং ফসল তোলার পর ক্ষেত থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন ধরনেরকৃষি বর্জ্য পদার্থ। এই সবকটি ক্ষেত্রের বর্জ্য পদার্থকে ব্যবহার করতে পারলেকৃষকদের জন্য তা আয় বাড়ানোর ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা নেবে।

এবারেরবাজেটে সরকার গোবর্ধন যোজনা নামে একটি কর্মসূচির সূচনা করেছে। এই কর্মসূচি রূপায়িতহলে, তা যে কেবল গ্রামাঞ্চলের পরিচ্ছন্নতা বৃদ্ধি করতে তাই নয়, এ থেকে কৃষকদেরও আয়বাড়বে। পশুপালনের সঙ্গে যুক্ত কৃষকরা গবাদি পশুর বর্জ্য থেকে জৈব গ্যাস উৎপাদনকরতে পারবেন। এছাড়া কৃষি থেক বিভিন্ন ধরনের উপজাত দ্রব্য ব্যবহার ছাড়াও কৃষি উৎপাদনেরপ্রধান বস্তুটিকেও বিকল্প পদ্ধতিতে ব্যবহার করা গেলে কৃষকদের আয় বাড়তে পারে।উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, আখ থেকে ইথানল উৎপাদনের সম্ভাবনার কথা। আমাদের সরকার ইথানলসংক্রান্ত নীতির পরিবর্তন করে পেট্রলের সঙ্গে ১০ শতাংশ ইথানল মেশানোর সিদ্ধান্তঅনুমোদন করেছে। এর অর্থ কৃষিক্ষেত্রে উৎপাদিত অতিরিক্ত আখ চিনি উৎপাদনের পর ইথানলউৎপাদনেও কাজে লাগবে। এ থেকে আখ চাষিরা উপকৃত হয়েছেন।

আমাদেরসরকার দেশের কৃষি ক্ষেত্রের নীতি-পদ্ধতি পরিবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছে। এই ক্ষেত্রেএকটি নতুন সংস্কৃতি নিয়ে আসার চেষ্টা হচ্ছে। এই সংস্কৃতি আমাদের  ‘ সংকল্প সে সিদ্ধি ’ র পথে আমাদেরযাত্রাকে সফল করে তুলবে। ২০২২ সালের মধ্যে আমাদের কৃষিক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রাঅর্জনে সহায়ক হবে। ভারতের উত্থান তখনই সম্ভব, যখন ভারতের গ্রামবাসীদেরও উত্থানঘটবে। দেশের ক্ষমতায়ন হলে, দেশের কৃষকদেরও ক্ষমতায়ন হবে।

তাই,আজকে যেসব নতুন বক্তব্য এখানে পেশ করা হয়েছে, সরকার সেগুলি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবেপরীক্ষা করে দেখবে। পাশা প্যাটেল অভিযোগ করেছেন যে তাঁকে তাঁর বক্তব্য জানাতেমাত্র ৮ মিনিট সময় দেওয়া হয়েছে। যদিও সবাইকেই কম সময়ের মধ্যে তাঁদের বক্তব্য হাজিরকরতে হবে, কিন্তু অত্যন্ত কম সময়ের মধ্যে যেসব তথ্য আপনারা সংগ্রহ করে বিশ্লেষনকরেছেন, তা ব্যর্থ হবে না। সরকার পর্যায়ে সবকিছুরই পর্যালোচনা করা হবে। খুব সম্ভবতএরমধ্যে কিছু কিছু ধারণা দ্রুত রূপায়ণ করা হবে, এবং বাকিগুলির জন্য হয়তো সময়লাগবে, কিন্তু সেগুলিকেও পরে কাজে লাগানো হবে। সরকারি ক্ষেত্রে মানসিকতা পরিবর্তনকরেই কৃষকদের মৌলিক সমস্যাগুলি বুঝতে হবে। আমরা যতো বেশি করে তাদের সঙ্গে যোগাযোগগড়ে তুলবো, ততই তাদের সমস্যা আমরা আরও বেশি করে বুঝতে পারবো। তাই আমরা আপনাদেরমতো অভিজ্ঞ মানুষদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চালানোর চেষ্টা করছি।

এছাড়াওএই ধরনের উদ্যোগকে কি ভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব, সে বিষয়টিকেও ভাবতে হবে। এখানেভারত সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ, মন্ত্রক, তাদের আধিকারিক ও মন্ত্রীরা উপস্হিত আছেন।কিভাবে এইসব মন্ত্রকের মধ্যে নীতি আয়োগের মধ্যে সমন্বয় সাধন করা যায়, তা ভেবে দেখতেহবে। কিভাবে সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে আলোচনার পর কর্ম সম্পাদনযোগ্য বিষয়গুলিকে তুলেধরা যায় এবং অগ্রাধিকার ঠিক করা যায়, তা নিয়েও ভাবতে হবে। তবে আমার ধারনা কোনওকাজই অর্থের জন্য আটকে থাকবে না।

দ্বিতীয়ত,আমাদের বিশ্বাস যে পুরনো প্রথার চক্র ভেঙে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। বিজ্ঞান ওপ্রযুক্তিকে গ্রহন করে আমাদের ধ্বংসের বিজ্ঞানকে এড়িয়ে যেতে হবে। কিছু সময়ের জন্যহয়তো আমরা কিছু প্রযুক্তিকে কাজে লাগাতে পারি। কিন্তু একবার তা পুরনো হয়ে গেলেতাকে আঁকড়ে থাকার কোনও প্রয়োজন নেই। এই মানসিকতাকে আমাদের ত্যাগ করতে হবে। তারজন্যআমাদের হয়তে একটু বেশি কাজ করতে হবে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, যে আমরাস্টার্ট-আপ-এর কথা বললে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিষয়ের ওপর তাঁরা কাজ করতেপারেন কি না তাও ভেবে দেখা দরকার। কিংবা কৃষির ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে আমরাহ্যাকাথনের মতো অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে পারি কি না, তাও ভেবে দেখা দরকার। এইকিছুদিন আগেই হ্যাকাথন কর্মসূচিতে বিভিন্ন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্রছাত্রীরাপ্রায় ৪০০-র কাছাকাছি ইস্যু সরকারের কাছে তুলে ধরেছেন। প্রায় ৫০-৬০ হাজারছাত্রছাত্রী ৩৬ ঘন্টা ধরে নিরবচ্ছিন্নভাবে আলাপ-আলোচনা করে সরকারকে দারুন সব প্রস্তাবদিয়েছেন। এইসব যুবকরা বিভিন্ন বিভাগের বছরের পর বছর ধরে ঝুলে থাকা সমস্যাগুলির খুবসুন্দর প্রযুক্তিগত সমাধানের কথা বলেছেন।

আমিচাই আমাদের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিও এই ধরনের হ্যাকাথনের আয়োজন করুক। আইআইটি,আইআইআইটি এবং ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলি রোবট সপ্তাহ অথবা ন্যানো প্রযুক্তি সপ্তাহউদযাপন করেছে। এটা খুব ভালো। এইসব সংস্হাগুলি অনুরূপভাবে কৃষি প্রযুক্তি সপ্তাহ বাউৎসব উদযাপন করতে পারে কি না, তা ভেবে দেখা দরকার। টেকনিক্যাল ক্ষেত্রে দেশেরসমস্ত উদ্ভাবনী মস্তিষ্ক যদি বিতর্ক এবং ভারতের পক্ষে প্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়েআলাপ-আলোচনা করতে পারে, তাহলে তার থেকে আর ভালো কিছু হয় না। এর মধ্যে যদি আবারপ্রতিযোগিতার বিষয়টিকে রাখা যায়, তাহলে আরও ভালো হবে।

আমাদেরএইসব উদ্যোগকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আমার বক্তৃতায় যেসব ইস্যুগুলি আমি উল্লেখকরেছি, যেমন- সয়েল হেল্থ কার্ড-এর মতো বিষয়টি। বর্তমানে যেসব প্যাথোলজিল্যাবোরেটরিতে আমরা রক্ত পরীক্ষার জন্য যায়, তা বর্তমানে বিরাট এক ব্যবসায় পরিণতহয়েছে। আমরা কেন এ রকম মাটি পরীক্ষার গবেষণাগার গ্রামে গ্রামে গড়ে তুলতে পারি না  !  এটা কি সম্ভব ?  বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকেকিছু মানুষকে এ বিষয়ে কৃৎকৌশল সংক্রান্ত সার্টিফিকেট দিতে হবে, আবার তাদের জন্যমুদ্রা যোজনা থেকে ঋণের ব্যবস্হাও করতে হবে। তাদের জন্য বিভিন্ন প্রযুক্তিসরঞ্জামের-ও ব্যবস্হা করতে হবে। এর ফলে কৃষকরা তাদের মাটি পরীক্ষায় উৎসাহিত হবেএবং উন্নত চাষবাসের জন্য তাদের কাছ থেকে পরামর্শ চাইবেন। আমরা যদি প্রত্যেক গ্রামেএই ধরনের মাটি পরীক্ষাগার গড়ে তুলতে পারি তাহলে লক্ষ লক্ষ যুবকেরও কর্মসংস্হানেরওব্যবস্হা হবে। এছাড়া এর ফলে কৃষি সংক্রান্ত তৎপরতা বৃদ্ধি পাবে এবং মানুষের মধ্যেবিজ্ঞানভিত্তিক মানসিকতা গড়ে উঠবে।

মাটিপরীক্ষার মতো একই গবেষনাগার থেকে জল পরীক্ষারও ব্যবস্হা হতে পারে। কারণ এভাবেইকৃষকদের মানসিকতার পরিবর্তন ঘটানো সম্ভব। আগেরবার তিনি যদি কাপড়ের থলেতে বীজ কিনেথাকেন, তাহলে তিনি পরের বার প্লাসটিকের জায়গায় কাপড়ের থলেই চাইবেন।

কৃষকদেরতাঁদের মোবাইল ফোনে ডিজিটাল অ্যানিমেশন ব্যবহার করে চাষবাসের কাজে সাহায্য করাযেতে পারে। বীজ ক্রয়ের ক্ষেত্রে কোন বিষয়গুলি তার মাথায় রাখা দরকার, সে বিষয়ে এরমাধ্যমে তাকে সচেতন করা যেতে পারে। এ রকম করা গেলে তিনি বুঝবেন এবং প্রশ্ন করতেশুরু করবেন।

গুজরাটেএবং সমগ্র দেশেই আমাদের জনসংখ্যার থেকে বেশি মোবাইল ফোন মানুষের হাতে এসেছে। সারাদেশজুড়ে ডিজিটাল সংযোগ গড়ে উঠেছে। আমরা এইসব বিষয়গুলিকে কি ভাবে অ্যানিমেশনব্যবহার করে কৃষকদের কাছে নিয়ে যেতে পারি, তা ভেবে দেখা দরকার। আমার মনে হয়,এভাবেই আমরা এক বিরাট পরিবর্তনের সূচনা করতে পারি। আমি পশুপালন ক্ষেত্রের কথাবলছিলাম। এই ধরনের বেশকিছু ক্ষেত্র রয়েছে যেখানে সুনির্দিষ্ট কোনও আইন নেই। আমিসংশ্লিষ্ট সমস্ত দপ্তরকে বলতে চাই যে এ বিষয়ে আইন তৈরি করা হলে অনেক সুবিধা হবে।ত্রুটি দূর করে একটি মান্য ব্যবস্হা গড়ে তোলা সম্ভব হবে। এখানে দেওয়া বিভিন্নমানুষের সবকটি প্রস্তাবই আমার কাছে ভালো লেগেছে। আমি অনেককিছু জানতে পেরেছি। আমিবরাবরই এসমস্ত বিষয় নিয়ে উৎসাহি। তবে আজ আমি যা জানলাম, তার অনেকটাই আমার কাছেনতুন। এগুলি আপনাদের কাছে এবং আমাদের দপ্তরগুলির কাছেও ব্যবহারের উপযোগী হয়ে উঠতেপারে। আমার বিশ্বাস আজকের এই আলোচনা ফলপ্রসূ হয়ে উঠবে।

আমরাকি রাজ্যে রাজ্যে আজকের মতো অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে পারি  ! যেখানে এই ধরনের বিভিন্ন ধারনা তুলে ধরাহবে এবং ক্ষেতে কাজ করা কৃষকরাও সেখান থাকবেন। থাকবেন এই ক্ষেত্রে বিভিন্ন কৃৎকৌশলবিশেষজ্ঞরাও। আমার মনে হয়, এই ধরনের উদ্যোগ রাজ্যে রাজ্যে করা সম্ভব। কারণ আমাদেরদেশ এতো বড়ো যে কোনও একটি রাজ্য কোনও একটি পরীক্ষা সফল হলে অন্য রাজ্যে তা সফলনাও হতে পারে। একটি রাজ্যে এক ধরনের এক ধরনের বিশ্বাস, অন্য রাজ্যে হয়তো অন্যধরনের বিশ্বাস কাজ করে।

আমরাযদি এই কাজকে রাজ্য ভিত্তিক, অঞ্চল ভিত্তিক অথবা কৃষি-আবহাওয়া জোন ভিত্তিক করতেপারি তাহলে তা অনেকবেশি ফলপ্রসূ হতে পারে। আমরা কি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়েরছাত্রছাত্রীদের জন্য এইসব ইস্যু নিয়ে তাদের পাঠ্যক্রমের চূড়ান্ত বর্ষে বা তার আগেবিতর্কের আয়োজন করতে পারি না ?    যতক্ষন না আমাদের এইধরনের মানসিকতার মিলন ঘটানো সম্ভব, এবং এই আলোচনা একেবারে তৃণমূল স্তর পর্যন্তপৌঁছে দেওয়া যাচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা ভালো ফল পাবো না।

তাইআমাদের এই কাজকে এগিয়ে যেতে হলে বিশ্ববিদ্যালয়, ছাত্রছাত্রী এবং কৃৎকৌশল সহ একটিপথরেখা নির্মাণ করতে হবে। সম্ভবত এইসব বিষয় কোনও একটি জায়গায় ব্যবহারের উপযোগী হবেনা কিন্তু কিভাবে যেখানে প্রয়োজন সেখানে এগুলিকে ব্যবহারের উপযোগী করে তোলা যায়,তা আমাদের ভাবতে হবে।

আমরাখুব ব্যাপকভাবে মূল্য সংযুক্তির কাজ করতে পারি না। যখন আমরা গুজরাটে ২৪ ঘন্টাবিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য গ্রাম জ্যোতি যোজনার সূচনা করেছিলাম, তখন সারা দেশে এটিকেএক বৈপ্লবিক পদক্ষেপ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। ২৪ ঘন্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হলেগ্রামবাসীদের কি উপকার হবে ?  সে কি শুধু টেলিভিশন দেখার জন্য, বা রাত্রে আলোর জন্য ?  আমরা বিভিন্ন ধরনেরঅনুষ্ঠান করে তাদের বুঝিয়েছিলাম যে এই বিদ্যুতের ব্যবহার তাদের জীবনে পরিবর্তনআনতে পারে।

গান্ধীনগরেরকাছাকাছি একটি গ্রামে খুব ভালো লঙ্কার চাষ হয়। এখন আমাদের দেশে একটি সমস্যা রয়েছে।এটি হল, কোনও একজন চাষি একটি বিশেষ শস্য চাষ করলে এলাকার সব চাষি তার দেখাদেখি সেইশস্যটি, যেমন এখানে লঙ্কা, চাষ করতে শুরু করে দেন। ফলে ফসলের দাম পড়ে যায়।গ্রামের কোনও চাষি সব লঙ্কা বিক্রি করেও আয় ৩ লক্ষ টাকার বেশি হয় না। সেজন্যগ্রামের সব মানুষ মিলিয়ে একটি সমবায় সমিতি গঠন করার সিদ্ধান্ত নেয়। যেহেতু তাদেরজন্য ২৪ ঘন্টা বিদ্যুতের ব্যবস্হা করা হয়েছে, তাই বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে তারা ঐ লঙ্কাথেকে প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে লঙ্কার গুঁড়ো উৎপাদন করা শুরু করেন। সুন্দরভাবে তাপ্যাকেটে রেখে যে লঙ্কা থেকে মাত্র তিন লক্ষ টাকা আয় হতো, তিন-চার মাসেরপরিকল্পনার পর সেখান থেকে তারা ১৮ লক্ষ টাকা আয় করেন। যা আমি বলতে চাই, তা হল কৃষকদেরতাদের পণ্যের মূল্য সংযুক্তির বিষয়ে সুন্দরভাবে বোঝানো দরকার। আমদানি এবং রপ্তানিসারা বিশ্বজুড়ে দ্রুতগতিতে বেড়ে চলেছে। এই ধরনের জিনিসপত্র ঘাটতির জন্য বিভিন্নদেশ থেকে কেনা হয়।

ভারতএক বিশাল দেশ। ক্ষেত থেকে কোনও পণ্য বন্দরে নিয়ে যেতে গেলে বহু দূরত্ব অতিক্রমকরতে হয়। অথচ সেই পণ্য বিক্রির বাজারে খারিজ হয়ে যেতেও পারে। আপনারা হয়তো এসব বিষয়জানেন যে ভারত যদি খুব উচ্চমানের মাদুর তৈরি করে, তাহলে শিশু শ্রমিকরা সেগুলিনির্মাণ করছে এই অজুহাতে বিশ্বের বাজারে তা খারিজ করা হয়। তাই আমাদের বিভিন্নধরনের খোঁজ-খবর নিয়ে কাগজপত্র তৈরি করে এইসব বাধা অতিক্রম করতে হবে। আমাদেরকৃষকদের এইসব বিষয় বুঝিয়ে বলতে হবে। আমি বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে এইসব অবিচারেরবিরুদ্ধে লড়াই করছি। আমি তাদের বোঝানোর চেষ্টা করছি আমাদের কৃষকদের পণ্যদ্রব্যরপ্তানি করার ক্ষেত্রে তাদের নিয়ম-কানুন ভুল ভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। তাদেরব্যাখ্যা ভুল এবং তাদের ব্যাখ্যার ভিত্তিও ভুল।

এইকারণে আমাদের দেশের উৎপাদিত আম, অন্যদেশে রপ্তানি করতে আমাদের অনেক চেষ্টাচরিত্রকরতে হয়। আমাদের কৃষকদের এটা বোঝানো দরকার যে আন্তর্জাতিক বাজারে এই ধরনেরশক্তিশালী লবি কাজ করে। তাই আমাদের ব্যবস্হাকে এক মান্য ব্যবস্হায় রূপান্তরিত করতেহবে এবং প্রক্রিয়াকরণের কাজকে আন্তর্জাতিক মান-এ উন্নীত করতে হবে।

আমিলালকেল্লার প্রাকার থেকে উৎপাদন ক্ষেত্রে  ‘ জিরো ডিফেক্ট, জিরো এফেক্ট ’  এর কথা বলেছিলাম।আমাদের বিশ্বমান মেনে চলতে হবে। সে কৃষি পণ্যেই হোক আর প্যাকেজিং-এর ক্ষেত্রেই হোকনা কেন। আমরা যদি জৈব কৃষির উৎপাদিত পণ্যদ্রব্য পরীক্ষা এবং সার্টিফিকেট প্রদানেরজন্য উপযুক্ত মানের গবেষনাগার এবং সংস্হা গড়ে তুলতে না পারি, তাহলে আমাদের দেশে উৎপাদিতজৈব পণ্যদ্রব্য, আন্তর্জাতিক বাজারে গৃহীত হবে না।

আমাকেআজ এখানে বলা হয়েছে যে আমাদের দেশের সুগন্ধী দ্রব্যের ব্যবসা ৪০ শতাংশ হারে বৃদ্ধিপাচ্ছে। এই বৃদ্ধির পুরোটাই কৃষিভিত্তিক। যেহেতু সুগন্ধী দ্রব্যের ব্যবসার মূলভিত্তি হচ্ছে কৃষিকাজ, তাই ভারতের মতো দেশে বহু মানুষ এই ক্ষেত্র থেকে কাজের সুযোগপেতে পারেন। আমরা বহু জিনিসকে এই সুগন্ধী দ্রব্যের সঙ্গে যুক্ত করতে পারি। আমারবিশ্বাস, ভারতে গন্ধদ্রব্যের ক্ষেত্রে বিচিত্র সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা গন্ধদ্রব্যেরক্ষেত্রে প্রাকৃতিক উপায়ে উৎপাদিত পণ্যদ্রব্য সরবরাহ করতে পারি। আন্তর্জাতিকবাজারের কথা মনে রেখে আমরা কি ভাবে কৃষকদের সহায়তা করতে পারি সেবিষয়ে চিন্তাভাবনাকরা দরকার। এই কিছুদিন আগেই উপসাগরীয় কয়েকটি দেশে বিভিন্ন মানুষজনের সঙ্গে কথাবলছিলাম। আমি তাঁদের কাছ থেকে জানতে চেয়েছিলাম তাঁরা কি ধরনের ফল ও সব্জি পছন্দকরেন। আমাদের কৃষকদের উৎপাদিত পণ্যের গুনমান যথাযথ রাখতে আমরা প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিএবং পদ্ধতি সরবরাহ করতে পারি। আমরা এ জন্য হিমঘর, গুদামঘর, পরিবহন ব্যবস্হা গড়েতুলে সমগ্র উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশে আমাদের কৃষকদের উৎপাদিত পণ্যদ্রব্য রপ্তানি করতেপারি।

আমিএখন বিভিন্ন দেশের লোকজনের সঙ্গে এইসব বিষয়ে আলোচনা করি। আমি আপনাদের বলতে চাই,আপনাদের কঠোর পরিশ্রম থেকে সুবিধা পাওয়া যাবে। আমি জানিনা, আগেকার পরিস্হিতি কেমনছিল। তাই আমি বিভিন্ন দপ্তরের আধিকারিকদের কাছ থেকে এ বিষয়ে জানতে চাই। তাঁরাআমাকে বলেন, এমন ঘটনা আগে কখনও ঘটেনি। এই প্রথম কৃষি অর্থনীতির সঙ্গে যুক্তমানুষজন, বিজ্ঞানী, কৃষিবীদ এবং নীতি নির্ধারকরা এতো বিস্তৃত বিষয় নিয়ে আলোচনা ওতর্ক-বিতর্ক চালিয়ে যাচ্ছেন।

আমারবিশ্বাস, সঠিক লক্ষ্যেই আমরা এগিয়ে চলেছি। কোনও একটা বিষয় রূপায়িত না হলে আপনারাহতাশ হবেন না। হয়তো তা রূপায়নের জন্য কিছুটা সময় লাগতে পারে। সরকারি শাসনযন্ত্র একবিরাট ব্যাপার। এমনকি আপনি যদি একটি ছোট্ট স্কুটার চালাতে চান, তাতে হয়তো বিশেষসময় লাগেনা। কিন্তু একটি বড় ট্রেন চালাতে গেলে তার জন্য অনেক সময় লাগে। তবেআপনারা নিশ্চিন্ত থাকুন যে আমরা নিশ্চয়ই সবাই মিলে এগিয়ে যেতে পারবো।

আপনাদেরসবাইকে মিলিয়ে এই কাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আমি আপনাদের দৃঢ় আস্হার সঙ্গে বলতেপারি যে আমরা লক্ষ্যপূরণ করবোই। আমরা আমাদের কৃষকদের আয় বৃদ্ধির জন্য সবাইমিলে কাজকরে যাবো। ২০২২ সালের মধ্যে দেশের কৃষকদের আয় দ্বিগুন করার লক্ষ্যমাত্রা আমাদেরঅর্জন করতেই হবে। সে কৃষিজাত পণ্য থেকেই হোক না কেন, পশুপালন থেকেই হোক না কেনঅথবা মিষ্টি বা নীল বিপ্লব থেকেই হোক না কেন, কৃষকদের আয় বাড়বেই। কৃষকদেরউন্নয়নের লক্ষ্যে আমাদের সমস্ত পথ ও বাধাবিঘ্ন অতিক্রম করতে হবে। আমার এই এই আশারয়েছে। এই ক্ষেত্রে আপনাদের অবদানের জন্য আমি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ।

ধন্যবাদ

PG/ PB/NS/  SB