কারখানা ভিত্তিক উৎপাদন বা ম্যানুফেকচারিং দিক দিয়ে প্রবল শক্তিধর হতে চলেছে ভারত ।
‘মেক-ইন ইন্ডিয়া’ উদ্যোগ চারটি স্তম্ভের উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে | এর লক্ষ্য ভারতের শিল্প-উদ্যোগ ক্ষেত্রকে শক্তিশালী করা এবং তা শুধুমাত্র কারখানা ভিত্তিক উৎপাদন বা ম্যানুফেকচারিং-এর দিক দিয়েই নয়, অন্য কিছু ক্ষেত্রেও এর সুফল মিলবে।
নতুন উদ্যোগ:: ‘মেই ইন ইন্ডিয়া’র সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটাই বিষয় হলো ব্যবসায়ীরা যাতে খুব সহজে তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারেন। যাতে শিল্পোদ্যোগ প্রসার লাভ করতে পারে । ব্যবসার পরিবেশকে সহজতর করার জন্য ইতিমধ্যেই বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়েছে। যেমন লাইসেন্স ও নিয়ন্ত্রন প্রথা তুলে দেয়া হয়েছে, যাতে ব্যবসা করা সহজ হয়। ব্যবসার সার্বিক জীবনচক্রে লাইসেন্স বা নিয়ন্ত্রণ প্রথা থেকে শিল্পকে মুক্ত রাখার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।
নতুন পরিকাঠামো:: শিল্পের বিকাশে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় চাহিদা হলো সুবিধাজনক ও আধুনিক পরিকাঠামো প্রাপ্তির বন্দোবস্ত । সরকার এই কারণেই শিল্প করিডোর এবং স্মার্ট সিটি গড়ে তুলতে আগ্রহী | যাতে থাকবে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর পরিকাঠামো, সাথে আধুনিক হাইস্পিড তার-যোগাযোগ ব্যবস্থা ও অন্যান্য সহযোগী সুযোগ-সুবিধা সমূহ । শিল্প তালুকগুলোতে বর্তমানে যেসব পরিকাঠামো রয়েছে সেগুলোকেও উন্নত করে শক্তিশালী করা হচ্ছে।
নতুন ক্ষেত্র:: ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’য় কারখানা ভিত্তিক উৎপাদন ক্ষেত্র, পরিকাঠামো ও পরিষেবা বিষয়ক ২৫টি ক্ষেত্রকে চিহ্নিত করা হয়েছে । এবিষয়ে বিস্তারিত সবরকম তথ্য, যা দ্বিমুখীও বটে, পাওয়া যাবে ওয়েব পোর্টাল এবং পেশাদারীভাবে প্রস্তুত করা পুস্তিকায় বা ব্রোসিওরে ।
নতুন মানসিকতা:: শিল্পমহল সরকারকে নিয়ন্ত্রক হিসেবেই দেখে অভ্যস্ত। ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ এই ধারণাকে আমূল বদলে দিতে অভিপ্রায়ী । তা করা হবে সরকার শিল্প পক্ষের সাথে যে পদ্ধতিতে মত-বিনিময় করে সে কাঠামোরই পরিবর্তন ঘটানোর মধ্য দিয়ে | দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সরকার শিল্পের সাথে শরিক হবে | আমাদের পথ হবে সুবিধাদাতার, নিয়ন্ত্রক হিসেবে নয়।
‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ ইতিমধ্যেই দারুন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে । এনিয়ে শুধু দেশের মধ্যে নয়, বিদেশী শিল্পপতি ও নেতৃত্বের মধ্যেও তৈরী হয়েছে প্রশংসাকারী ও অনুগামীর সংখ্যা। এই দিশারী পদক্ষেপে ভারতের সঙ্গে শরিক হবার জন্য আগ্রহী গোটা বিশ্ব |
ম্যানুফেকচারিং ক্ষেত্রে একমাত্র বৃহত্তম পদক্ষেপ নেবার জন্য আমরা একটি রূপরেখা প্রস্তুত করেছি | সাম্প্রতিক কালের ইতিহাসে একমাত্র দেশ হিসেবে এটা আমরা করতে পেরেছি | সরকারী-বেসরকারী সহযোগের রুপান্তরযোগ্য শক্তিই এতে প্রতিফলিত হয় | ভারতের এই পারস্পরিক সহযোগিতার নমুনা বা মডেল সাফল্যের সাথে প্রসারিত হয়েছে অন্যত্রও, যাতে ভারতের আন্তর্জাতিক শরিকদেরও একইসাথে অন্তর্ভুক্ত করা যায় |
খুবই অল্প সময়কালের মধ্যে অতীতের সেকেলে ও প্রতিবন্ধকতাময় কাঠামোকে বিদায় দিয়ে স্থাপন করা হয়েছে স্বচ্ছ্ব ও ব্যবহার-বান্ধব পদ্ধতি | যা বিনিয়োগের পক্ষে সাহায্য করছে, তেমনি উদ্ভাবনী ব্যাপারে উৎসাহের সঞ্চারে, দক্ষতার বিকাশে, মেধাস্বত্ব রক্ষায় এবং নিজ শ্রেণীতে সর্বোত্তম ম্যানুফেকচারিং পরিকাঠামো নির্মাণে সহায়তা করছে |
With the easing of investment caps and controls, India’s high-value industrial sectors – defence, construction and railways – are now open to global participation.Policy in Defence sector liberalised and FDI cap raised from 26% to 49%.Portfolio investment in Defence sector permitted upto 24% under the automatic route.100% FDI allowed in Defence sector for modern and state- of- the- art technology on case to case labels.100% FDI under automatic route permitted in construction, operation and maintenance in specified Rail Infrastructure projects.
বিনিয়োগের উর্দ্ধসীমা ও বিধি নিয়ন্ত্রণ সহজতর করার মধ্য দিয়ে ভারতের বহু মূল্যবান শিল্পক্ষেত্র – প্রতিরক্ষা, নির্মাণ ও রেলওয়ে – এখন গোটা বিশ্বের অংশগ্রহনের জন্য উন্মুক্ত । প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে নীতি উদারীকরণ করা হয়েছে এবং প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগের উর্দ্ধসীমা ২৬ % থেকে বাড়িয়ে ৪৯% করা হয়েছে । প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে পোর্টফোলিও বিনিয়োগের হার স্বাভাবিক ক্ষেত্রে ২৪% পর্যন্ত অনুমতি দেয়া হয়েছে। প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আধুনিক এবং সর্বোত্তম প্রযুক্তির জন্য ১০০% এফ ডি আই-এ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, তবে তা একটি একটি করে প্রস্তাব ভিত্তিক হবে | এছাড়া নির্মাণ কাজ, রেল পরিকাঠামো ও তার রক্ষনাবেক্ষনের জন্যেও স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় ১০০ % এফ ডি আই-এর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে |
পণ্য আমদানি ও রপ্তানীর ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট বা দলিলের সংখ্যা কমিয়ে মাত্র তিনটে করা হয়েছে | ভারত সরকারের ১৪টি পরিষেবাকে এক জানালা ব্যবস্থাপনায় আনা হয়েছে যা এখন সুলভ ই-বীজ (eBiz) পোর্টালে। লগ্নিকারকদের পথ-প্রদর্শন, সহায়তা ও তাদের মদত দিতে তৈরী করা হয়েছে লগ্নিকারক সুবিধা প্রদানকারী বিভাগ । শিল্প গড়ার লাইসেন্স ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল এন্টারপ্রেনার মেমোরেন্ডাম এর জন্য আবেদন করার প্রক্রিয়াকে অনলাইন করা হয়েছে, যা ২৪x৭ ধরে সুলভ থাকছে ই-বীজ (eBiz) পোর্টালে | শিল্পের লাইসেন্সের বৈধতা তিন বছর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। প্রতিরক্ষা সামগ্রী বিষয়ক উৎপন্ন পণ্যের তালিকার মধ্য থেকে বৃহৎ সামগ্রীগুলোকে শিল্পের লাইসেন্স নেবার প্রক্রিয়ার বাইরে রাখা হয়েছে | বিদ্যুতের নতুন সংযোগ স্থাপনের জন্য নো-অবজেকশন-সার্টিফিকেট বা কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেবার শর্তটি তুলে দেওয়া হয়েছে।
বম্যানুফেকচারিং ক্ষেত্রকে চাঙ্গা করার জন্য এবং ভারতকে বিশ্বের মধ্যে ম্যানুফেকচারিং গন্তব্য-দেশ হিসেবে উপস্থাপিত করতে সরকার সারা দেশ জুড়ে পঞ্চমুখী করিডোর তৈরী করছে |
মেক ইন ইন্ডিয়া পদক্ষেপের সূচনালগ্নে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ এখানে শুনুন