Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

শ্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী

১৯৯৬, ১৬ মে থেকে ১৯৯৬, ১ জুন | ভারতীয় জনতা পার্টি

শ্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী


জননেতা এবং স্থিতপ্রজ্ঞ রাজনৈতিক শ্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী ১৯৯৯ সালের ১৩ অক্টোবর পর পর দ্বিতীয়বারের জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বভার নেন। জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট নামে এক নতুন কোয়ালিশন সরকারের প্রধান হিসাবে তিনি এই পদে নির্বাচিত হন। এর আগে, ১৯৯৬ সালেও স্বল্প সময়ের জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। পণ্ডিত জওহরলাল নেহরুর পর তিনিই প্রথম প্রধানমন্ত্রী যিনি পরপর দু’বারের জন্য জনাদেশ পেয়ে এই পদে আসীন হন।

খ্যাতনামা সংসদবেত্তা হিসাবে তাঁর রাজনৈতিক জীবন চার দশকের বেশি সময়ের শ্রী বাজপেয়ী লোকসভায় নয় বার নির্বাচিত হন এবং রাজ্যসভায় দু’বার নির্বাচিত হন। এটি একটি রেকর্ড।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী, বিদেশ মন্ত্রী, বিরোধী দলনেতা, সংসদের বহু গুরুত্বপূর্ণ স্থায়ী কমিটির প্রধান হিসাবে তিনি স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ভারতের অভ্যন্তরীণ এবং বিদেশ নীতির রূপরেখা নির্ধারণে অত্যন্ত সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছেন।

জাতীয় রাজনীতিতে শ্রী বাজপেয়ীর প্রথম অভিজ্ঞতা হয় তাঁর ছাত্র জীবনে। ১৯৪২ সালে যে আন্দোলন ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের সমাপ্তিকে ত্বরান্বিত করেছিল সেই আন্দোলনে যোগ দিয়ে তিনি প্রথম রাজনীতির সংস্পর্শে আসেন। রাষ্ট্র বিজ্ঞান ও আইনের ছাত্র হিসাবে কলেজ জীবনে তিনি বিদেশ সংক্রান্ত বিষয়ে বিশেষভাবে আকৃষ্ট হন। তাঁর এই আকর্ষণ পরবর্তী সময়ে পরিণত হয় এবং পরে বহু পাক্ষিক এবং দ্বিপাক্ষিক একাধিক মঞ্চে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করতে গিয়ে দক্ষতার সঙ্গে তাঁকে তিনি ব্যবহার করেন।

শ্রী বাজপেয়ী সাংবাদিক হিসাবে তাঁর জীবন শুরু করেন। ১৯৫১ সালে আজকের ভারতীয় জনতা পার্টির পূর্ববর্তী সংগঠন ভারতীয় জনসঙ্ঘে যোগ দিয়ে তাঁর সাংবাদিক জীবন শেষ হয়। এই ভারতীয় জনতা পার্টিই জাতীয় গণতান্ত্রিক জোটের প্রধান শরিক হয়ে ওঠে। পণ্ডিত জনের প্রশংসাধন্য এক কবি শ্রী বাজপেয়ী এখনও তাঁর ব্যস্ত জীবন থেকে সময় বের করে সঙ্গীত উপভোগ করেন এবং বিশেষ রান্নার কাজে সময় দেন।

১৯২৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর তৎকালীন গোয়ালিয়র দেশীয় রাজ্যে (এখনকার মধ্যপ্রদেশের অঙ্গ) এক সাধারণ স্কুল শিক্ষকের পরিবার তাঁর জন্ম হয়। জনজীবনে শ্রী বাজপেয়ীর উত্থান, একই সঙ্গে তাঁর রাজনৈতিক বিচক্ষণতা এবং ভারতীয় গণতন্ত্রের মহিমাতেই তা সম্ভব হয়েছে। দশকের পর দশক ধরে তিনি বিশেষ শ্রদ্ধাভাজন এক নেতা হিসাবে পরিগণিত হয়েছেন, তাঁর উদার দৃষ্টিভঙ্গী এবং গণতান্ত্রিক আদর্শের প্রতি অবিচল আস্থার জন্য।

মহিলাদের ক্ষমতায়ন এবং সামাজিক সমতার জোরালো প্রবক্তা শ্রী বাজপেয়ী এক অগ্রগামী ও অগ্রবর্তী ভারতবর্ষের কথায়, যা বিশ্বের দেশগুলির মধ্যে আপন শক্তি ও সমৃদ্ধির জোরে নিজের জায়গা করে নেবে বলে বিশ্বাস করেন। তিনি এমন এক ভারতের আদর্শের পক্ষে মত প্রকাশ করেন যার সভ্যতার ইতিহাস পাঁচ হাজার বছরের প্রাচীন হলেও, আগামী এক হাজার বছরের জন্য যে কোনও চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় সর্বদা আধুনিক ও পুনরুজ্জীবিত হয়ে উঠছে ও নতুন শক্তিতে বলীয়ান হয়ে উঠছে।

অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময় ধরে তাঁর নিঃস্বার্থ দেশ ও সমাজসেবা, তাঁর প্রথম ও একমাত্র ভালোবাসা ‘ভারত’ – এর জন্য নিষ্ঠাবান কাজের স্বীকৃতিতে তাঁকে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অ-সামরিক সম্মান ‘পদ্মবিভূষণ’ প্রদান করা হয়েছে।

১৯৯৪ সালে তাঁকে ভারতের ‘শ্রেষ্ঠ সংসদবেত্তা’র পুরস্কার দেওয়া হয়। এই পুরস্কারের শংসাপত্রে বলা হয়েছে – তাঁর নামের প্রতি সুবিচারে, অটলজি একজন বিশিষ্ট রাষ্ট্রনেতা, বিচক্ষণ রাজনীতিবিদ, নিঃস্বার্থ সমাজসেবী, শক্তিশালী বক্তা, কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক এবং বহুমাত্রিক ব্যক্তিত্ব … অটলজি জনগণের আশা-আকাঙ্খার মূর্ত প্রতীক … তাঁর কাজের মধ্যে জাতীয়তাবাদের প্রতি পরিপূর্ণ নিষ্ঠার অনুরণন ঘটেছে।