Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

জাতির উদ্দেশে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘মন কি বাত ২’০, (২৪তম পর্ব)


নতুনদিল্লি, ৩০শে মে, ২০২১

 

আমার প্রিয় দেশবাসী, নমস্কার। আমরা দেখছি যে দেশ পুরো শক্তি নিয়ে কিভাবে কোভিড নাইনটিনের বিরুদ্ধে লড়ছে। গত একশো বছরের মধ্যে এটা সবথেকে বড় মহামারী আর এই মহামারীর মধ্যে ভারত অনেক প্রাকৃতিক বিপর্যয়েরও মোকাবিলা করেছে সাহসের  সঙ্গে। এর মধ্যে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান এসেছে, ঘূর্ণিঝড় নিসর্গ এসেছে, অনেক রাজ্যে বন্যা হয়েছে, ছোট বড়  অনেক  ভূমিকম্প হয়েছে, ভূ-স্খলন হয়েছে। এই সম্প্রতি গত দশ দিনের মধ্যে আবার দুটো বড় ঘূর্ণিঝড়ের সম্মুখীন হয়েছে আমাদের দেশ। পশ্চিম ঊপকূলে ঘূর্ণিঝড় তাউতে আর পূর্ব উপকূলে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। এই দুটো ঘূর্ণিঝড় বেশ কয়েকটি রাজ্যকে প্রভাবিত করেছে। দেশ আর দেশের জনতা এই দূয়ের সঙ্গে পূর্ণ শক্তি নিয়ে লড়েছে আর যতটা সম্ভব কম প্রাণহানি সুনিশ্চিত করেছে।  আমরা এখন এটা অনুভব করছি যে আগের বছরগুলোর তুলনায় অনেক বেশি প্রাণ বাঁচানো সম্ভব হচ্ছে। বিপর্যয়ের এই কঠিন ও অ-সাধারণ পরিস্থিতিতে ঘূর্ণিঝড় প্রভাবিত সব রাজ্যের মানুষ যেরকম সাহসের পরিচয় দিয়েছেন, এই সঙ্কটের সময় অনেক ধৈর্য নিয়ে, অনুশাসন মেনে মোকাবিলা করেছেন  তাতে আমি সমাদরে, হৃদয় থেকে সব নাগরিকের প্রশংসা করতে চাই। যে সব মানুষ এগিয়ে এসে ত্রাণ আর উদ্ধারের কাজে অংশ নিয়েছেন, এমন সব মানুষের যতই প্রশংসা করা যাক, তা কম হবে। আমি এদের সবাইকে স্যালুট জানাই। কেন্দ্র, রাজ্য সরকার, স্থানীয় প্রশাসন সবাই এক হয়ে এই বিপর্যয়ের মোকাবিলা করছে।  আমি সেই সব মানুষের প্রতি আমার সমবেদনা জানাই যাঁরা নিজেদের আপনজনদের হারিয়েছেন। আমরা সবাই এই কঠিন সময়ে দৃঢ়তা নিয়ে তাঁদের সঙ্গে রয়েছি যাঁরা এই বিপর্যয়ের ক্ষয়ক্ষতি সহ্য করেছেন।

আমার প্রিয় দেশবাসী, চ্যালেঞ্জ যতই বড় হোক, ভারতের জয়ের সঙ্কল্পও সবসময় ততই বড় থেকেছে। দেশের সমষ্টিগত শক্তি আর আমাদের সেবার মনোভাব, দেশকে সব ঝঞ্ঝা থেকে মুক্ত করেছে। সাম্প্রতিককালে আমরা দেখেছি যে কেমনভাবে আমাদের ডাক্তার, নার্স এবং সামনের সারির যোদ্ধারা – তাঁরা নিজেদের চিন্তা ছেড়ে দিনরাত কাজ করেছেন এবং আজও করছেন। এই সবের মাঝে কিছু মানুষ এমনও আছেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের বিরুদ্ধে লড়ার ক্ষেত্রে যাঁদের বড় ভূমিকা আছে। ‘মন কি বাত’-এর অনেক শ্রোতা নমো অ্যাপে চিঠি পাঠিয়ে এইসব যোদ্ধাদের সম্পর্কে আলোচনা করার জন্য আমাকে অনুরোধ করেছেন।

বন্ধুরা, যখন দ্বিতীয় ঢেউ এল, অক্সিজেনের চাহিদা হঠাৎ কয়েক গুণ বেড়ে গেল যা একটা চ্যালেঞ্জ ছিল। দেশের দূর দূর অংশে মেডিকেল অক্সিজেন পৌঁছে দেওয়া এমনিতেই ছিল বড় একটা চ্যালেঞ্জ। অক্সিজেন ট্যাঙ্কার অনেক বেশি গতিতে চলেছিল। ছোট একটা ভুল হলেও তাতে অনেক বড় বিস্ফোরণের ঝুঁকি ছিল। শিল্পের জন্য অক্সিজেন উৎপাদনের অনেক প্লান্ট দেশের পূর্ব অংশে রয়েছে, ওখান থেকে অন্যান্য রাজ্যে অক্সিজেন পৌঁছতে বেশ কয়েক দিন সময় লাগে। দেশের সামনে এই চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে দেশকে সাহায্য করে ক্রায়োজেনিক ট্যাঙ্কারের চালকরা, অক্সিজেন এক্সপ্রেস এবং বিমান বাহিনীর পাইলটরা। এইভাবে তাঁরা যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করে লক্ষ-লক্ষ মানুষের প্রাণ বাঁচিয়েছেন। আজ ‘মন কি বাতে’ আমাদের সঙ্গে এমনই এক বন্ধু যুক্ত হচ্ছেন – উত্তরপ্রদেশের জৌনপুরের নিবাসী শ্রীমান দীনেশ উপাধ্যায় মহোদয়।  

মোদী জি – দীনেশ জি, নমস্কার।

দীনেশ উপাধ্যায় জি – স্যার জি, প্রণাম।

মোদী জি – সবার আগে তো আমি চাইব যে আপনি নিজের ব্যাপারে অবশ্যই কিছু বলুন।

দীনেশ উপাধ্যায় জি – স্যার আমার নাম দীনেশ বাবুলনাথ উপাধ্যায়। আমি হসনপুর গ্রাম, ডাকঘর জমুয়া, জেলা জৌনপুরের নিবাসী স্যার। 

মোদী জি – উত্তর প্রদেশে থাকেন আপনি? 

দীনেশ উপাধ্যায় জি – হ্যাঁ হ্যাঁ স্যার।

মোদী জি – আচ্ছা

দীনেশ উপাধ্যায় জি – আর স্যার আমার এক ছেলে, দুই মেয়ে, স্ত্রী আর মা-বাবা আছেন। 

মোদী জি – আর, আপনি কী করেন?

দীনেশ উপাধ্যায় জি – স্যার আমি অক্সিজেনের ট্যাঙ্কার চালাই…তরল অক্সিজেনের। 

মোদী জি – ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া ঠিক মত হচ্ছে? 

দীনেশ উপাধ্যায় জি – হ্যাঁ স্যার, ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া হচ্ছে। দুই মেয়েও পড়ছে আর আমার ছেলেও পড়ছে।

মোদী জি – ওদের এই অনলাইন লেখাপড়াও ঠিকমত চলছে তো?

দীনেশ উপাধ্যায় জি – হ্যাঁ স্যার, ভালোভাবে করছে, এখন আমার মেয়েরা পড়ছে। অনলাইনেও পড়ছে স্যার। স্যার, ১৫ থেকে ১৭ বছর হয়ে গেল স্যার, আমি অক্সিজেনের ট্যাঙ্কার চালাই স্যার।

মোদী জি – আচ্ছা! আপনি এই ১৫-১৭ বছর ধরে শুধু অক্সিজেন নিয়ে যাচ্ছেন, মানে আপনি কেবল ট্রাক ড্রাইভার নন। আপনি এক অর্থে লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন বাঁচানোর কাজে যুক্ত আছেন।

দীনেশ – স্যার, আমাদের কাজই এরকম স্যার। আইনক্স নামে অক্সিজেন ট্যাঙ্কার-এর যে কোম্পানি আছে, সেটিও আমাদের লোকেদের খেয়াল রাখে। এবং আমরা প্রয়োজনে যে কোনো জায়গায় গিয়ে অক্সিজেন ট্যাঙ্কার খালি করতে পারলে খুশি হই স্যার। 

মোদীজি – তবে করোনার সময়ে আপনাদের দায়িত্ব অনেকটাই বেড়েছে।

দীনেশ – হ্যাঁ স্যার, অনেকটাই বেড়েছে।

মোদীজী – আপনি যখন ট্রাকের ড্রাইভিং সিটে থাকেন তখন আপনার মনে ঠিক কি চলে? আগের চেয়ে কতটা আলাদা সেই অনুভূতি? অনেকটা চাপে থাকতে হয় নিশ্চয়ই? মানসিক চাপ ও থাকে। পরিবারের চিন্তা, করোনার এরকম পরিস্থিতি, মানুষের থেকে আসা চাপ, তাদের বিভিন্ন চাহিদা। কত কিছুই চলে নিশ্চয়ই। 

দীনেশ – স্যার আমরা এসব নিয়ে চিন্তিত হইনা। আমরা শুধু এটাই ভাবি যে আমরা আমাদের কর্তব্য করছি এবং যদি সময়মতো আমরা অক্সিজেন পৌঁছে দিতে পারি, আর তাতে যদি কারো প্রাণ বাঁচে, সেটাই আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয়। 

মোদী জী – আপনি খুব সুন্দর করে আপনার অনুভূতি প্রকাশ করলেন। আচ্ছা,বলুন তো, আজ যখন লোকেরা এই মহামারী চলাকালীন আপনার কাজের গুরুত্ব বুঝছেন, আগে হয়তো তারা এতটা বুঝতে পারেন নি, কিন্তু এখন বুঝতে পারছেন, তখন আপনার প্রতি এবং আপনার কাজের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে কি কোনো বদল লক্ষ্য করেছেন? 

দীনেশ – হ্যাঁ স্যার! আগে বহুবার আমরা, মানে অক্সিজেন ট্যাঙ্কার চালকরা, জ্যামে আটকে থাকতাম। কিন্তু আজকের তারিখে, প্রশাসন আমাদের খুব সাহায্য করে। এবং আমরাও যখনি কাজে বেরোই আমাদের মনেও এটাই কাজ করে যে কত তাড়াতাড়ি পৌঁছে আমরা মানুষের জীবন বাঁচাতে পারি, স্যার। আমরা খাবার খাই বা না খাই, বা অন্যান্য যে কোনো সমস্যার মুখোমুখি হই না কেন,যখন সময়মতো অক্সিজেন ট্যাঙ্কার নিয়ে আমরা হাসপাতালে পৌঁছোই আর ওখানে উপস্থিত লোকজন, বিশেষ করে রোগীর পরিজনেরা আমাদের ‘ভি’ সাইন দেখায়।   

মোদীজি – ‘ভি’ সাইন মানে ভিকট্রি সাইনের কথা বলছেন?   

দীনেশ – হ্যাঁ স্যার! কেউ ‘ভি’ সাইন দেখায় কেউ আবার বুড়ো আঙুল দেখায়। এটাই ভেবে ভালো লাগে যে হয়তো আমরা এই জীবনে কিছু ভাল কাজ করেছি যে এমন মানব সেবার সুযোগ মিলেছে।

মোদীজি- এটা ভেবেই সব ক্লান্তি কেটে যায় নিশ্চয়ই?   

দীনেশ – হ্যাঁ স্যার!  হ্যাঁ স্যার!

মোদীজি- আপনি বাড়ি ফিরে বাচ্চাদের এসব বলেন?

দীনেশ – না স্যার। আমার বাচ্চারা গ্রামে থাকে । আমি তো এখানে আইএনওএক্স এয়ার প্রোডাক্টে, ড্রাইভার হিসাবে কাজ করছি। ৮-৯ মাস পর বাড়িতে যাই।  

মোদীজি- আপনি ফোনে বাচ্চাদের সঙ্গে কথা বলেন?

দীনেশ – হ্যাঁ স্যার! প্রায়ই কথা হয়। 

মোদীজি- তারাও নিশ্চয়ই বলে যে এরকম সময়ে সাবধানে থেকো বাবা ?   

দীনেশ – স্যার, ওরা বলে, বাবা কাজ করো তবে নিজের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে। আমরাও স্যার সাবধানতার সঙ্গেই কাজ করি, আমাদের মানগাঁও-তেও আমাদের প্ল্যান্ট আছে,  আর আমাদের অফিস আইনক্স আমাদের খুব সাহায্য করে।  

মোদীজি –  দীনেশবাবু, আমার খুব ভাল লাগল আপনার কথা শুনে এবং দেশও অনুভব করবে যে এই করোনার লড়াইয়ে – কীভাবে, কত কত মানুষ কাজ করে চলেছেন। আপনি ৯ মাস ধরে আপনার সন্তানের সঙ্গে দেখা করতে পারছেন না। শুধুমাত্র মানুষের প্রাণ বাঁচানোর জন্য আপনি আপনার পরিবারের সঙ্গেও দেখা করছেন না। যখন এই দেশ শুনবে তারা তখন গর্ব করবে যে দীনেশ উপাধ্যায়ের মত লক্ষ লক্ষ মানুষ নিরলস কাজ করে গেছেন বলেই আমরা যুদ্ধটা জিততে পারবো।

দীনেশ – স্যার জি! আমরা কোনও না কোনো দিন করোনাকে পরাজিত করবই, স্যার জি।

মোদীজী – দীনেশবাবু, আপনার চেতনাই দেশের শক্তি। অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই আপনাকে দীনেশবাবু। আপনার সন্তানদের জন্য আমার আশীর্বাদ রইলো।

দীনেশ – ঠিক আছে স্যার, প্রণাম । 

মোদীজি – ধন্যবাদ । 

বন্ধুরা, দীনেশবাবু যেমন বলছিলেন, সত্যি একজন ট্যাঙ্কার চালক যখন

অক্সিজেন নিয়ে হাসপাতালে পৌঁছান, মনে হয় যেন ঈশ্বরের প্রেরিত দুত । আমরা সবাই জানি কতটা দায়িত্বপূর্ণ এই কাজ এবং কাজটা করতে গিয়ে কতটা মানসিক চাপের মধ্যে থাকতে হয়। বন্ধুরা,  এরকম সংকটপূর্ণ সময়ে অক্সিজেনের পরিবহনকে সহজ করতে ভারতীয় রেল এগিয়ে এসেছে। অক্সিজেন এক্সপ্রেস এবং অক্সিজেন রেল, অক্সিজেন ট্যাঙ্কার-এর চেয়েও দ্রুত সময়ে এবং অনেক বেশি পরিমাণে অক্সিজেন দেশের কোনায় কোনায় পৌঁছে দিয়েছে। মা-বোনেদের এটা শুনে গর্ব হবে যে একটি অক্সিজেন এক্সপ্রেস তো শুধুমাত্র মহিলারাই চালাচ্ছেন। দেশের প্রত্যেকটি নারীর এটা শুনে গর্ব হবার কথা। শুধুমাত্র নারীরাই নন প্রত্যেক ভারতবাসীর এটা শুনে গর্ব হবে। আমি অক্সিজেন এক্সপ্রেসের লোকো পাইলট শিরিষা গজনি জীকে ‘মন কি বাত’ এ আমন্ত্রন জানিয়েছিলাম। 

মোদী জি –  নমস্কার শিরিষা জি।

শিরিষা জি –  নমস্কার স্যার, কেমন আছেন স্যার? 

মোদী জি –  আমি ভালই আছি। শিরিষা জি, আমি শুনেছি আপনি রেলওয়ে পাইলট হিসেবে কাজ করছেন এবং  আমাকে জানানো হয়েছে যে, আপনার পুরো মহিলাদের দ্বারা গঠিত একটি দল আছে যাঁরা এই অক্সিজেন এক্সপ্রেস চালায়। শিরিষা জি আপনি অসাধারণ কাজ করছেন। করোনা কালে আপনার মত বহু মহিলা এগিয়ে এসে করোনার সঙ্গে যুঝতে দেশকে শক্তি দিয়েছে। আপনি নারী শক্তির একটি বিশাল নিদর্শন।  আমি জানতে চাই আপনি কোথা থেকে এই অনুপ্রেরণা পান?  

শিরিষা জি –  স্যার আমার অনুপ্রেরণা আমার বাবা-মা’র থেকে আসে স্যার। আমার বাবা সরকারী কর্মচারী স্যার। আসলে আমার দুই বড় দিদি আছে। আমরা তিন মেয়ে, কিন্তু বাবা আমাদের কাজে খুব উৎসাহ দেন, আমার বড় দিদি ব্যাংকে সরকারি কর্মী আর আমি রেলে কাজ করি। আমার বাবা-মা ই আমার অনুপ্রেরণা।

মোদী জি –  আচ্ছা শিরিষা জি আপনি সাধারণ সময়েও রেলওয়ের সেবা করেছেন। ট্রেনকে স্বাভাবিকভাবে চালিয়েছেন। কিন্তু যখন একদিকে অক্সিজেনের এত চাহিদা এবং যখন আপনি অক্সিজেন নিয়ে আসছেন তখন কাজটা আরও কিছুটা দায়িত্বের হয়ে যায়, তখন আপনার দায়িত্বও কিছুটা বেড়ে যায়। সাধারণ পণ্য নিয়ে যাওয়া এক রকম ব্যাপার, অক্সিজেন খুব স্পর্শকাতর জিনিষ, আপনার অভিজ্ঞতা কীরকম শুনতে চাই।

শিরিষাঃ আমার খুব ভালো লাগে এই কাজ করার সময়। অক্সিজেন স্পেশাল ট্রেনের সময় সব কিছু দেখভাল করেছি, সুরক্ষার ক্ষেত্রে, ফরমেশনের ক্ষেত্রে, লিকেজ আছে কি না? এ ছাড়াও ভারতীয় রেল খুব সাহায্য করে স্যার। এই অক্সিজেন এক্সপ্রেস চালানোর জন্য আমায় গ্রিনপাথ দেওয়া হয়। এই গাড়ি নিয়ে ১২৫ কিমি. আমি দেড় ঘন্টায় অতিক্রম করি। এতটা দায়িত্ব রেলওয়েও নিয়েছে, আমিও নিয়েছি।

মোদী জি –  বাহ। শিরিষা জি আপনাকে অনেক অভিনন্দন এবং আপনার বাবা ও মাকে আলাদা ভাবে প্রনাম জানাচ্ছি, যাঁরা তিন মেয়েকে এতটা অনুপ্রেরণা দিয়েছেন এবং এত আগে নিয়ে গেছেন এবং এরকম সাহস জুগিয়েছেন। আমি এরকম মা-বাবা কে প্রণাম জানাই এবং আপনাদের তিন বোনকেও প্রণাম যারা এভাবে দেশের সেবা করেছেন এবং এরকম উৎসাহ দেখিয়েছেন। অনেক অনেক ধন্যবাদ শিরিষা জি।

শিরিষা জি – ধন্যবাদ স্যার, থ্যাঙ্ক ইউ স্যার। আপনার আশীর্বাদ চাই।  

মোদী জি – আপনার উপর ঈশ্বরের আশীর্বাদ সবসময় থাকুক, আপনার বাবা-মার আশীর্বাদ সর্বক্ষণ থাকুক, ধন্যবাদ। 

শিরিষা জি – ধন্যবাদ স্যার। 

বন্ধুরা,  আমরা শিরিষা জি’র কথা শুনলাম, ওঁর অভিজ্ঞতা আমাদের প্রেরণা জোগায়, আমাদের ভাবতে বাধ্য করে। বাস্তবে এই লড়াই এত বড়, এতে রেলওয়ের মতই আমাদের দেশ জল, স্থল, আকাশ তিন জায়গাতেই কাজ করছে। এক দিকে খালি ট্যাংকারগুলিকে বিমান বাহিনীর বিমানগুলি  অক্সিজেন প্লান্টস অব্দি পৌঁছে দিচ্ছে, অন্য দিকে নতুন অক্সিজেন প্লান্ট তৈরির কাজ-ও চলছে। এর পাশাপাশি বিদেশ থেকে অক্সিজেন, অক্সিজেন কন্সেন্ট্রেটর এবং ক্রায়োজনিক ট্যাঙ্কারও  দেশে আনা হচ্ছে। এই জন্য এই কাজে নৌ, বিমান ও সেনা বাহিনী এবং ডিআরডিও-র মত আমাদের সংস্থাগুলি যুক্ত রয়েছে। আমাদের বহু বৈজ্ঞানিক, শিল্প সংস্থার বিশেষজ্ঞ এবং প্রযুক্তিবিদরা যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করছে।

এদের সবার কাজ জানার, সমর্থন করার ইচ্ছে প্রত্যেক দেশবাসীর মনে রয়েছে। এই কারণে আমাদের সঙ্গে আমাদের বিমান বাহিনীর গ্রুপ ক্যাপ্টেন পটনায়ক জি যুক্ত হচ্ছেন।

মোদী জি –  পটনায়ক জি জয় হিন্দ।

গ্রুপ ক্যাপ্টেন –  স্যার জয় হিন্দ। স্যার আমি গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ কে পটনায়ক। বায়ুসেনা স্টেশন হিন্ডন থেকে কথা বলছি।

মোদী জি –  পটনায়ক জি, করোনার সঙ্গে লড়াইয়ের সময় আপনি বিশাল বড় দায়িত্ব পালন করছেন। সারা পৃথিবী ঘুরে ট্যাংকার আনা, ট্যাংকার এখানে পৌছনো। আমি জানতে চাইব একজন সৈনিক হিসেবে আপনি একটি ভিন্ন প্রকৃতির কাজ করেছেন। মরতে বা জীবন দিতে আপনি দৌড়দৌড়ি করেন। আজ আপনি জীবন বাঁচানোর জন্য দৌড়চ্ছেন। আপনার অভিজ্ঞতা কেমন জানতে চাই।  

গ্রুপ ক্যাপ্টেন –  স্যার, এই সঙ্কট কালে আমাদের দেশবাসী কে সাহায্য করতে পারা আমাদের জন্য ভীষণ সৌভাগ্যের কাজ, স্যার। এবং যা যা মিশন আমরা পেয়েছি তা আমরা সফল ভাবে সম্পূর্ণ করছি। আমাদের প্রশিক্ষণ  এবং সহায়ক ব্যবস্থা, আমাদের সম্পূর্ণ সাহায্য করছে। এবং সবচেয়ে বড় ব্যাপার স্যার এতে আমরা কাজ করে যে আনন্দ পাচ্ছি তা খুবই উচ্চ স্তরের এবং এই কারণেই আমরা নিরলসভাবে কাজ  করতে পারছি।

মোদী জি- ক্যাপ্টেন, আপনারা এই কয়েকদিনে যে বিশেষ প্রচেষ্টা করেছেন, খুব কম সময়ের মধ্যে সবকিছু করতে হয়েছে। কেমন ছিল সেই দিনগুলো?

গ্রুপ ক্যাপ্টেন- স্যার, গত এক মাসে আমরা ক্রমাগত অক্সিজেন ট্যাংকার এবং তরল অক্সিজেন কন্টেনার দেশের এবং বিদেশের গন্তব্য౼ দু জায়গা থেকে তুলে আনছি। প্রায় ১৬০০ সরটিস  থেকেও বেশি বিমান পরিবহণ করে এবং প্রায় তিন হাজারেরও বেশি ঘন্টা ধরে উড়েছি এবং ১৬০ টি আন্তর্জাতিক মিশন সম্পন্ন করেছি। এই কারণে আমরা দেশের মধ্যে বিভিন্ন স্থানে যেখানে অক্সিজেন ট্যাঙ্কারগুলো পৌঁছে দিতে দুই থেকে তিন দিন লাগতো, স্যার আমরা সেখানে দুই থেকে তিন ঘন্টার মধ্যে পৌঁছে দিতে পেরেছি। আন্তর্জাতিক মিশনের ক্ষেত্রেও ২৪ ঘন্টা অনবরত এই কাজ করেছি। সকল বায়ু সেনার সদস্যরা  এই কাজে যুক্ত থেকেছেন যাতে অত্যন্ত দ্রুত আমরা অনেক ট্যাংকার আনতে পারি এবং দেশকে সাহায্য করতে পারি স্যার।

মোদি জি- ক্যাপ্টেন আপনাকে দেশের বাইরে কোন কোন জায়গায় যেতে হয়েছে?

গ্রুপ ক্যাপ্টেন- স্যার, কম সময়ের মধ্যে  আমরা সিঙ্গাপুর, দুবাই, বেলজিয়াম, জার্মানি এবং বৃটেনের মত জায়গায় পৌঁছেছি। এই সব জায়গায় বিমান বাহিনীর বিভিন্ন বিমান যেমন IL-76, C-17 ছাড়াও অন্যান্য বিমান পৌঁছেছিল। এছাড়াও  C-130ও খুবই কম সময়ের মধ্যে এই মিশনে অংশ নিয়েছে। আমাদের প্রশিক্ষণ এবং উদ্যমের জন্য আমরা সময়মতো এই মিশন সম্পন্ন করতে পেরেছি স্যার।

মোদি জি- দেখুন, এবারে দেশ গর্ব অনুভব করছে যে জলে, স্থলে, আকাশে আমাদের সেনারা এই করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে গেছে। ক্যাপ্টেন আপনিও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন যার জন্য আপনাকে আমি অনেক অভিনন্দন জানাচ্ছি।  

গ্রুপ ক্যাপ্টেন- স্যার অনেক ধন্যবাদ। আমরা মনপ্রাণ দিয়ে চেষ্টা করছি আর আমার সঙ্গে আমার মেয়েও আছে, অদিতি।

মোদি জি- আরে বাহ!

অদিতি- নমস্কার মোদীজি।

মোদি জি- নমস্কার বেটি, নমস্কার। অদিতি আপনার বয়স কত?

অদিতি- আমার বয়স ১২ বছর আর আমি ক্লাস এইটে পড়ি।

মোদীজি-  তা বাবা যখন বাইরে যান, ইউনিফর্ম পরেন।

অদিতি- হ্যাঁ, ওঁর জন্য আমি খুব গর্বিত। খুব গর্ব অনুভব করি যে উনি এতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ করছেন। সকল করোনা-আক্রান্ত মানুষদের এমন সাহায্য করছেন, এতগুলো দেশ থেকে অক্সিজেন ট্যাংকার্স নিয়ে আসছেন, কন্টেনার্স নিয়ে আসছেন। 

মোদি জি- কিন্তু মেয়ে তো বাবাকে খুব মিস করে নিশ্চয়ই?

অদিতি- হ্যাঁ আমি ওঁকে খুব মিস করি। উনি আজকাল বাড়িতে থাকতেই পারেন না, কারণ আন্তর্জাতিক বিমানে করে অনেক দেশে কন্টেইনার এবং ট্যাংকার তাদের উৎপাদন কেন্দ্র পর্যন্ত পৌঁছে দিচ্ছেন,  যাতে করোনা-আক্রান্ত মানুষরা সময়মত অক্সিজেন পায় এবং তাদের প্রাণ বাঁচে। 

মোদি জি- তাহলে বেটি, অক্সিজেনের মাধ্যমে মানুষের প্রাণ বাঁচানোর এই কাজ এখন প্রত্যেক বাড়িতে সকলেই জানতে পেরেছে।

অদিতি- হ্যাঁ, 

মোদি জি- যখন তোমার পরিচিত বন্ধু মহলে, তোমার সমবয়সী ছাত্র-ছাত্রীরা জানতে পারে যে তোমার বাবা অক্সিজেন পরিবহনের মাধ্যমে এমন সেবামূলক কাজে যুক্ত আছেন তখন তোমার প্রতিও তারা সম্ভ্রমসুলভ ব্যবহার করে, তাই না?   

অদিতি- হ্যাঁ আমার সব বন্ধুরা এটাই বলে যে তোমার বাবা এত গুরুত্বপূর্ণ কাজ করছেন আর তার জন্য আমিও খুব গর্বিত, তখন আমারও ভীষণ গর্ব  অনুভব হয়। আর আমার পুরো পরিবার, আমার দাদু-দিদা, ঠাকুমা সকলেই আমার বাবার জন্য গর্বিত। আমার মা এবং বাড়ির বাকি সকলেই ডাক্তার, তাঁরাও দিনরাত কাজ করে চলেছেন, আর পুরো বিমান বাহিনী, আমার বাবার স্কোয়াড্রনের সব কাকুরা , এছাড়াও আরো যে সেনারা রয়েছেন সকলেই অনেক কাজ করছেন আর আমার বিশ্বাস সকলের প্রচেষ্টার মাধ্যমে আমরা করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ অবশ্যই জিতবো। 

মোদীজি- আমাদের এখানে বলা হয় মেয়ে যখন কিছু বলে, তার সেই শব্দে স্বয়ং সরস্বতী বাস করেন, এখন অদিতি যখন বলছে যে আমরা অবশ্যই জিতবো, তাহলে এটা এক রকম ঈশ্বরেরই বাণী। আচ্ছা অদিতি, এখন নিশ্চয়ই অনলাইন পড়াশোনা করছ?  

অদিতি – হ্যাঁ, এখন আমাদের সব পড়াশোনা  অনলাইন  ক্লাসের মাধ্যমে হচ্ছে। আমরা ঘরেও সম্পূর্ণ সুরক্ষা নিচ্ছি। যদি কোথাও বাইরে যেতে  হয়, তখন দুটো মাস্ক পরে,  পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ও অন্যান্য সব সর্তক বিধি মানছি।

মোদীজি- আচ্ছা, তোমার  হবি কি? কি করতে ভাল লাগে তোমার?

অদিতি – আমার হবি হল সাঁতার কাটা আর বাস্কেটবল খেলা। কিন্তু সেসব ত এখন লকডাউনের জন্য বন্ধ। আমার রান্না করা আর বেকিং এর খুব শখ ছিল। এখন আমি অনেক রান্নাবান্না করি, বেকিং  করি। বাবা যখন অনেক কাজ করে বাড়ি আসে তখন আমি বাবার জন্য কেক আর কুকিজ বানিয়ে দিই।   

মোদীজি- বাহ, বাহ, খুব চমৎকার।  অনেক দিন পর বাবার সঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগ পেয়েছ। খুব ভাল লাগলো।  ক্যাপ্টেন আপনাকেও অনেক শুভেচ্ছা।  যখন আমি ক্যাপ্টেনকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি, তখন আমি শুধু একজন ব্যক্তিবিশেষকে নয়, আমাদের সমস্ত বাহিনী, নৌ, স্থল, বায়ু – সব বাহিনী যে ভাবে একজোট হয়ে কাজ করছে, তার জন্য সকলকে স্যালুট জানাচ্ছি। ধন্যবাদ ভাই।    

গ্রুপ ক্যাপ্টেন –  ধন্যবাদ স্যর.

বন্ধুরা, আমাদের এই জওয়ানরা, এই যোদ্ধারা যে কাজ করেছে তার জন্য দেশ এঁদের  স্যালুট জানায়। এভাবেই লাখো মানুষ কাজে ব্যস্ত, যা তাদের রুটিন কাজের অংশ নয়। এত বড় বিপর্যয়  একশো বছর পর এসেছে, এক শতাব্দী পর এসেছে এমন সংকট। এই জন্য কারও কাছে এই ধরনের কাজের কোন অভিজ্ঞতা নেই। এর পেছনে আছে দেশসেবার আবেগ ও অমোঘ সংকল্পশক্তি। এর দ্বারাই দেশ সেই কাজ করতে পেরেছে যা আগে কখনো হয়নি। আপনারা আন্দাজ করতে পারবেন – স্বাভাবিক সময়ে আমাদের এখানে এক দিনে ৯00 মেট্রিক টন চিকিৎসার কাজে ব্যবহৃত তরল অক্সিজেন উৎপাদন হত। এখন সেটা প্রায় দশগুনের চেয়েও বেশী বেড়ে প্রায় ৯৫00 metric টন প্রতিদিন  উৎপাদিত হয়। আর এই অক্সিজেন আমাদের যোদ্ধা-রা দেশের প্রত্যন্ত জায়গায় পৌঁছে দেয়।

আমার প্রিয় দেশবাসী, অক্সিজেন  পৌঁছে দেওয়ার কাজে এত মানুষ এগিয়ে আসেন, এত রকমের চেষ্টা হয়, একজন নাগরিক হিসেবে তা খুবই প্রেরণাদায়ক। একটা টিম হয়ে সকলে নিজের কর্তব্যপালন করেছেন। ব্যাঙ্গালোর থেকে উর্মিলাজি আমাকে জানিয়েছেন তাঁর স্বামী ল্যাব টেকনিশিয়ান এবং কিভাবে প্রতিকূলতার মধ্যেও তিনি নমুনা পরীক্ষার কাজ করে চলেছেন।

বন্ধুরা, করোনা শুরুর সময়ে দেশে কেবল একটি পরীক্ষাগার ছিল। কিন্তু আজ, আড়াই হাজার পরীক্ষাগার কাজ করছে। গোড়ার দিকে দিনে একশোটার মত নমুনা পরীক্ষা হত, এখন কুড়ি লাখেরও বেশী পরীক্ষা একদিনে হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত দেশে তেত্রিশ কোটির বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়ে গেছে।  এত বড় কাজ আমাদের এই বন্ধুদের জন্যই সম্ভব হচ্ছে। কতই না সামনের সারির কর্মী আছেন যাঁরা নমুনা সংগ্রহের কাজে যুক্ত আছেন। আক্রান্ত রোগীদের সংস্পর্শে আসা, তাদের নমুনা নেওয়া এটা অনেক বড় সেবার কাজ।  নিজেদের সুরক্ষার্থে এঁদের এত গরমেও সারাক্ষন পিপিই কিট পরে থাকতে হচ্ছে। তার পরই এই নমুনা পরীক্ষাগারে পৌঁছায়। এই জন্য যখন আমি আপনাদের প্রশ্ন, মতামত পড়ছিলাম, তখনই মনে হয় এই বন্ধুদেরও চর্চাও অবশ্যই হওয়া উচিৎ। এঁদের অভিজ্ঞতা থেকে আমরাও অনেক কিছু জানতে পারবো। আসুন, দিল্লিতে একজন ল্যাব টেকনিশিয়ান হিসেবে কর্মরত,  আমাদের বন্ধু প্রকাশ কান্ডপালের সঙ্গে কথা বলি।

মোদীজি- প্রকাশজি নমস্কার।  

প্রকাশ- নমস্কার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জি। 

মোদি জি – প্রকাশজি, সবার আগে আপনি আমাদের ‘মন কি বাত’ এর সমস্ত শ্রোতাদের নিজের ব্যাপারে বলুন।  আপনি কতদিন ধরে এই কাজ করছেন এবং করোনার সময়ে আপনার কিরকম অভিজ্ঞতা হয়েছে? দেশের মানুষজন আপনাদের না টিভি তে দেখতে পান না খবরের কাগজে। তবু, এক ঋষির মতো পরীক্ষাগারে নিজের কাজে মগ্ন থেকেছেন। আমি চাই, আপনার  মাধ্যমে দেশ জানুক যে দেশে কাজ কিভাবে হচ্ছে।

প্রকাশজি – আমি দিল্লি সরকারের স্বায়ত্বশাসিত সংস্থা ইন্সটিটিউট অফ লিভার অ্যান্ড বাইলিয়ারি সায়েন্সেস নামে হাসপাতালে বিগত দশ বছর ধরে ল্যাব টেকনিশিয়ান হিসেবে কর্মরত। স্বাস্থ্যসেবা ক্ষেত্রে আমার অভিজ্ঞতা দীর্ঘ বাইশ বছরের।  ইন্সটিটিউট অফ লিভার অ্যান্ড বাইলিয়ারি সায়েন্সেস-এর আগে আমি দিল্লির অ্যাপোলো হাসপাতাল, রাজীব গান্ধী ক্যান্সার হাসপাতাল, রোটারি ব্লাড ব্যাঙ্কের মত প্রতিষ্ঠিত সংস্থায় কাজ করে এসেছি। স্যার, সব জায়গায় আমি রক্তকোষ বিভাগে আমার সেবা দিয়েছি কিন্ত গত বছর, পয়লা এপ্রিল ২০২০ থেকে আমি ইন্সটিটিউট অফ লিভার অ্যান্ড বাইলিয়ারি সায়েন্সেস-এর ভাইরোরোলোজি বিভাগের  কোভিড টেস্টিং ল্যাবে কাজ করছি। নিঃসন্দেহে কোভিড মহামারীর ফলে স্বাস্থ্য এবং স্বাস্থ্য সংক্রান্ত প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে অত্যধিক চাপ পড়েছে কিন্তু এই যুদ্ধের সময়টাকে আমি ব্যক্তিগত ভাবে নিজের জন্য এমন সুযোগ ভাবি যখন রাষ্ট্র, মানবজাতি ও সমাজ আমাদের কাছ থেকে অনেক বেশি দায়িত্ব, অনেক বেশি সহযোগিতা, অনেক বেশি সামর্থ্য আর আমাদের কাছ থেকে অনেকটা বেশি ক্ষমতা প্রদর্শন আশা করে। আর স্যার যখন আমরা ব্যক্তিগত স্তরে রাষ্ট্রের, মানবিকতার, সমাজের আশানুরূপ কাজ করতে পারি, যা কিনা শুধু মাত্র একটা বিন্দুরই মতো, সেটা যখন ঠিক করে করতে পারি, সেই পরীক্ষাটায় যখন উত্তীর্ণ হই তখন একরকম গর্ব হয়। কখনো যখন আমাদের পরিবারের লোকেরাও আশংকিত  হয়, বা একটু ভয় পায় সেই সময়ে  তাঁদের মনে করিয়ে দিই যে আমাদের দেশের সৈনিকরা যারা কিনা সবসময়েই পরিবার থেকে দূরে সীমান্তে ভীষণ এবং প্রতিকূল পরিস্থিতিতে  দেশ রক্ষার কাজ করছে, তাদের তুলনায় তো আমাদের ঝুঁকি অনেক টাই কম। তখন ওরাও ব্যাপারটা বোঝে আর আমার সঙ্গে সহযোগিতা করে, ওরাও তখন এই বিপদে, সমান ভাবে যেটুকু ওদের পক্ষে সম্ভব , সাহায্য করে।

মোদীজী –প্রকাশ জী একদিকে তো সরকার সবাইকে বলছে , দূরত্ব বজায় রাখুন, দূরত্ব বজায় রাখুন, করোনায় একে অপরের থেকে দূরে থাকো, কিন্তু আপনাকে তো একেবারে  সামনা-সামনি, করোনার জীবাণুদের মধ্যেই থাকতে হয়,তার সামনে দিয়েই যেতে হয়, তো এটা তো জীবনকে সংকটে ফেলবার মতোই একটা কাজ তাই পরিবারের চিন্তা হওয়া খুব স্বাভাবিক। কিন্তু এই ল্যাব টেকনিশিয়ান এর কাজ স্বাভাবিক সময়ে একরকম আর এই মহামারীর পরিস্থিতিতে  আলাদা, সেটাই আপনি করছেন। তাহলে কাজের  সময়ও তো বেড়ে গেছে? অনেক রাতে পরীক্ষাগারেই থাকতে হচ্ছে হয়তো? কারণ এতো কোটি কোটি লোকের নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে তার চাপও বাড়ছে, কিন্তু এরা আপনার সুরক্ষার ব্যবস্থা করে তো? নাকি? করে না?

প্রকাশজী – নিশ্চয় করে স্যর। আমাদের ইন্সটিটিউট অফ লিভার অ্যান্ড বাইলিয়ারি সায়েন্সেস  যে ল্যাবটা সেটা  বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার স্বীকৃত । তাই এখানকার সমস্ত বিধি নিয়ম আন্তর্জাতিক মানের। আমাদের ত্রিস্তরিয় পোষাক আছে সেই পরেই আমরা  ল্যাবে যাই আর কাজ করি। সম্পূর্ণ  নমুনা সংগ্রহ, লেবেল লাগানো এবং এটার নমুনা পরীক্ষার পুরো একটা  নিয়ম আছে , আমরা সেই  নিয়ম  মেনেই কাজ করি। স্যার এটাও ঈশ্বরের কৃপাই যে এখনো আমার পরিবার আর আমার পরিচিত অনেকেই এই সংক্রমণ থেকে সুরক্ষিত আছেন। এখানে একটা বিষয়, যদি আপনি সতর্ক ও সংযমী থাকেন তবে এর থেকে কিছুটা বেঁচে যাবেন।

মোদীজী-  প্রকাশ জী আপনার মতো হাজার হাজার মানুষ এক বছর ধরে পরীক্ষাগারে বসে আছেন আর এত পরিশ্রম করছেন, এত মানুষকে বাঁচাবার কাজ করছেন, যা আজ দেশ জানতে পারছে। কিন্তু প্রকাশ জী আপনার মাধ্যমে আমি আপনার কর্মজগতের সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই, দেশবাসীর পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাই আপনি সুস্থ থাকুন। আপনার পরিবার সুস্থ থাকুক। আমার অনেক শুভেচ্ছা রইল।

প্রকাশ জী- ধন্যবাদ প্রধানমন্ত্রী জী আমি আপনার কাছে কৃতজ্ঞ যে আপনি আমায় এই সুযোগ দিয়েছেন ।

মোদীজী- ধন্যবাদ ভাই ।   

বন্ধুরা, কথা তো আমি শুধু ভাই প্রকাশ জী’র সঙ্গেই বলেছি কিন্তু তাঁর কথায় হাজার হাজার ল্যাব টেকনিশিয়ানের সেবার সৌরভ আমাদের কাছে এসে পৌঁছল। এই কথাগুলোতে লক্ষ-লক্ষ মানুষের সেবার মনোভাব তো দেখা যায়ই এছাড়াও আমাদের সবার দায়িত্বের বোধও বাড়ে। যতটা পরিশ্রম ও নিষ্ঠা দিয়ে ভাই প্রকাশ জী আর আমাদের আরো সব বন্ধুরা কাজ করছেন, ততটাই নিষ্ঠার সঙ্গে তাদের সহযোগিতা  করোনাকে হারাতে সাহায্য করবে।      

আমার প্রিয় দেশবাসী,  এতক্ষণ আমরা করোনা যোদ্ধাদের নিয়ে আলোচনা করছিলাম, গত দেড় বছরে আমরা তাদের প্রচুর আত্মোৎসর্গ আর পরিশ্রম দেখেছি। কিন্তু এই যুদ্ধে দেশের আরো অনেক ক্ষেত্রের অনেক যোদ্ধাদেরও বড় ভূমিকা আছে। ভাবুন আপনারা আমাদের দেশে এত বড় একটা সংকট এলো, এর প্রভাব দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রের ওপর পড়ল। কৃষি নিজেকে এর থেকে অনেকটা সুরক্ষিত রেখেছে। শুধু সুরক্ষিতই রাখেনি প্রগতিও করেছে এগিয়েছেও। আপনারা কি জানেন যে এই মহামারীতেও আমাদের কৃষকেরা রেকর্ড উৎপাদন করেছে। কৃষকেরা রেকর্ড উৎপাদন করেছে তাই দেশও এবারে রেকর্ড ফসল কিনেছে। এবারে তো কোন কোন জায়গায় সরষের জন্য কৃষকরা ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের থেকেও বেশি দাম পেয়েছে। রেকর্ড খাদ্যশস্য উৎপাদনের কারণেই আমাদের দেশ প্রত্যেক দেশবাসীকে সাহায্য করতে পারছে। আজ এই সংকটের সময়ে আশি কোটি গরীব মানুষ কে বিনামূল্যে  রেশন দেওয়া হচ্ছে যাতে এমন কোন দিন না আসে যে গরীবের বাড়িতে উনুন না জ্বলে।

বন্ধুরা, আজ আমাদের দেশের কৃষকেরা বেশ কিছু ক্ষেত্রে নতুন ব্যবস্থার সুবিধে নিয়ে দারুণ কাজ করছেন। যেমন  আগরতলার কৃষকদের কথাই ধরুন, এঁরা খুব ভাল কাঁঠালের চাষ করেন। এর চাহিদা দেশে- বিদেশে সর্বত্র হতে পারে। তাই এবার আগরতলার কৃষকদের কাঁঠাল ট্রেনে করে গুয়াহাটী আনা হয়েছে। গুয়াহাটী থেকে এই কাঁঠাল লন্ডনে পাঠানো হবে। ঠিক তেমনই আপনারা বিহারের শাহী লিচুর কথাও শুনে থাকবেন । ২০১৮ সালে সরকার শাহী লিচুকে জিআই ট্যাগও দিয়েছিল যাতে এর পরিচয় ও মজবুত হয় আর কৃষকদেরও বেশি লাভ হয়। এবারে বিহারের শাহী লিচুও বিমানে লন্ডনে পাঠানো হয়েছে। পূর্ব থেকে পশ্চিম,  উত্তর থেকে দক্ষিণ আমাদের দেশ এরকমই অনন্য স্বাদ আর পণ্যে ভর্তি। দক্ষিন ভারতের বিজয়নগরমের আমের কথা আপনারা নিশ্চয়ই শুনেছেন, এখন এই আম কে না খেতে চাইবে? তাই এখন কিসান – রেল লক্ষ টন বিজয়নগরম আম দিল্লী পৌঁছে দিচ্ছে। দিল্লী আর উত্তর প্রদেশের লোকেরা বিজয়নগরমের আম খেতে পাবে আর বিজয়নগরমের কৃষকদের ভালো উপার্জন হবে। কিসান-রেল আজ অবধি প্রায় 2 লাখ টনের মতো পণ্যের পরিবহন করেছে। এখন কৃষকেরা খুব কম খরচে ফল সব্জী, তরি্তরকারি দেশের সুদুর প্রান্তে পাঠাতে পারছে ।

আমার প্রিয় দেশবাসী, আজ ৩০শে মে আমরা ‘মন কি বাত’ করছি আর ঘটনা ক্রমে এটা এই সরকারের ৭ বছর পূর্ণ হওয়ারও সময়। এই সময়ে দেশ ‘সব কা সাথ, সবকা  বিকাশ, সবকা বিশ্বাস’  এই মন্ত্রে চলেছে । দেশের সেবায় প্রতিটা মুহুর্ত সমর্পিত এই ভাবনায় আমরা সবাই কাজ করেছি। আমাকে অনেক বন্ধুরা চিঠি লিখেছেন আর  বলেছেন যে ‘মন কি বাত’ এ আমি এই ৭ বছরে আমার আপনার এই সহযাত্রার কথাও যেন বলি। বন্ধুরা এই  ৭ বছরে যা কিছু উপলব্ধি তা দেশের দেশবাসীর। এই বছরগুলোয় এক সঙ্গে মিলে আমরা কতো জাতীয় গৌরবময় মুহুর্ত কাটিয়েছি। যখন আমরা দেখি যে এখন ভারত অন্য দেশের কথায় আর তাদের চাপে নয়, নিজের সংকল্পে চলে তখন আমাদের গর্ব হয়। যখন আমরা দেখি যে ভারত তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদের মুখের ওপর জবাব দেয় তখন আমাদের আত্মবিশ্বাস আরো বাড়ে। যখন ভারত জাতীয় সুরক্ষার ব্যাপারে কোন আপোষ করেনা, তখন আমাদের সেনাদের শক্তি বাড়ে, তখন আমাদের মনে হয় যে হ্যাঁ আমরা সঠিক পথে আছি।      

বন্ধুরা,  দেশের প্রতিটি জায়গা থেকে আমি কতো দেশবাসীদের বার্তা, চিঠি পাই, কতো লোক দেশকে ধন্যবাদ দেয় যে ৭০  বছর পরে তাদের গ্রামে প্রথম বার  বিদ্যুতের আলো পৌঁছেছে, তাদের ছেলে মেয়েরা আলোয় বসে পাখার তলায় বসে  পড়ছে। কতো লোক জানায় যে আমাদের গ্রামও এখন পাকা সড়ক পথে শহরের সঙ্গে যুক্ত হয়ে গেছে। আমার মনে আছে একটি আদিবাসী এলাকা থেকে কিছু বন্ধু আমায় বার্তা পাঠিয়েছিল যে রাস্তা হওয়ার পর প্রথম বার ওদের মনে হয়েছিল যে ওরাও বাকী পৃথিবীর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। এরকমই কেউ ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খোলার আনন্দ ভাগ করে নেয় তো কেউ আলাদা আলাদা পরিকল্পনার সাহায্যে যখন নতুন রোজগার শুরু করেন তো সেই আনন্দে আমাকেও আমন্ত্রন জানান। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার অন্তর্গত ঘর পাবার পরে গৃহপ্রবেশের আয়োজনে দেশবাসীদের কাছ থেকে কতো যে নিমন্ত্রণ আমার দেশবাসীর কাছ থেকে ক্রমাগত পাই। এই  ৭ বছরে সবার এরকম অনেক আনন্দে আমি সামিল হয়েছি। এই কিছু দিন আগেই গ্রামের একটা পরিবার আমায় জল জীবন মিশন এর অন্তর্গত ঘরে লাগানো জলের কলের একটা ছবি পাঠিয়েছে । ওঁরা সেই ছবিতে ক্যাপশন লিখেছেন – আমাদের গ্রামের জীবন ধারা। এরকম কতো পরিবার আছে। স্বাধীনতার পরে  ৭ দশক ধরে আমাদের দেশে মাত্র ৩ কোটি গ্রামীণ ঘরেই জলের ব্যাবস্থা ছিল।। কিন্তু গত ২১  মাসেই সাড়ে চার লক্ষ ঘরে পরিশ্রুত জলের কানেকশন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১৫ মাস তো করোনারই সময় ছিল। এরকমই এক নতুন বিশ্বাস দেশে আয়ুষ্মান ভারত যোজনা মাধ্যমেও এসেছে । যখন কোন গরীব মানুষ বিনামূল্যের চিকিৎসাতে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরে তখন তার মনে হয় যেন সে পুনর্জীবন লাভ করেছে। তার ভরসা হয় যে দেশ তার সঙ্গে আছে। এরকম কতো লোকের আশীর্বচন্, কতো মায়ের আশীর্বাদ নিয়ে আমাদের দেশ দৃঢ়ভাবে উন্নতির পথে এগিয়ে যাচ্ছে।

বন্ধুরা, এই ৭ বছরে ডিজিটাল আদান প্রদানের ক্ষেত্রে ভারত দুনিয়া কে নতুন পথ দেখানোর কাজ করেছে। আজ যেকোনো জায়গায় আপনি যত সহজে এক মুহুর্তে  ডিজ্যিট্যাল মাধ্যমে জিনিসের দাম দেন , তা এই করোনার সময়ে খুবই উপকারী প্রমাণিত হয়েছে। আজ পরিচ্ছন্নতার প্রতি দেশবাসীর  সতর্কতাও বেড়েছে । আমরা  রেকর্ড সংখ্যক কৃত্রিম উপগ্রহ উতক্ষেপন করেছি ও রেকর্ড সংখ্যক  রাস্তাও বানিয়েছি। এই  ৭  বছরে দেশের অনেক পুরোনো বিবাদের ও সম্পূর্ণ শান্তি  ও সৌহার্দ্য দিয়ে সমাধান করা গেছে।  উত্তর পূর্ব থেকে  থেকে কাশ্মীর পর্যন্ত শান্তি এবং উন্নতির এক নতুন আস্থা দেখা দিয়েছে। বন্ধুরা আপনারা কি কখনও ভেবেছেন যে কাজ দশক দশক ধরে হয়ে ওঠেনি তা এই ৭ বছরে কিভাবে  হলো?  সেটা সম্ভব হয়েছে কারণ এই ৭  বছরে আমরা সরকার এবং জনতা হিসেবে নয়,  সারা দেশে এক হয়ে কাজ করেছি,  একটা টিম এর মতো কাজ করেছি,  টিম ইন্ডিয়ার মতো কাজ করেছি । প্রত্যেক নাগরিকই দেশের অগ্রগতির জন্য এক পা এক পা   করে বাড়ানোর চেষ্টা করেছে । হ্যাঁ, যেখানে সাফল্য থাকে সেখানে পরীক্ষাও থাকে। এই  ৭  বছরে আমরা এক সঙ্গে  অনেক কঠিন পরীক্ষাও দিয়েছি আর প্রতিবার  সবাই আরো শক্তিশালী হয়ে বেরিয়েছি । করোনা  মহামারী নামের এত বড়ো একটা পরীক্ষা তো একনাগাড়ে চলছে। এতো এমন একটা সংকট যা পুরো পৃথিবীকে সমস্যায় ফেলেছে, যাতে কতো লোক তাদের আপনজনকে হারিয়েছে । বড় বড় দেশ ও এর ধ্বংসলীলা  থেকে বাঁচতে পারেনি। এই বিশ্ব মহামারীর মধ্যেও ভারত সেবা ও সহযোগিতার সংকল্প নিয়ে  এগিয়ে যাচ্ছে । আমরা  প্রথম ঢেউও পুরো বিশ্বাসের সঙ্গে লড়াই করেছিলাম। এবারেও ভাইরাসের বিরুদ্ধে এই লড়াইয়ে ভারতই বিজয়ী হবে। দু’গজের দুরত্ব হোক বা  মাস্ক পরবার নিয়ম বা টিকা, আমাদের নিয়ম ভাঙলে চলবে না । এটাই আমাদের  জেতার পথ । পরের বার ‘মন কি বাত’ এ যখন আবার আসব তখন দেশবাসীর সঙ্গে আরো কিছু প্রেরণাদায়ক উদাহরণের ব্যাপারে কথা বলব আর নতুন বিষয়ে আলোচনা করব । আপনারা এভাবেই  আপনাদের পরামর্শ আমায় পাঠাতে থাকুন । নিজেও সুস্থ থাকুন দেশকেও এভাবেই এগিয়ে নিয়ে চলুন। অনেক অনেক ধন্যবাদ ।

      

CG/CB/