Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

‘বৃষ্টির জল ধরো’ অভিযানের শুভ সূচনা উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

‘বৃষ্টির জল ধরো’ অভিযানের শুভ সূচনা উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ


নয়াদিল্লি, ২২ মার্চ, ২০২১

 

আমার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সহযোগী শ্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াতজি, মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শ্রদ্ধেয় শিবরাজ সিং চৌহানজি, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী যোগী আদিত্যনাথজি, কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী শ্রী রতনলাল কাটারিয়াজি, ভিন্ন ভিন্ন রাজ্য এবং জেলার সমস্ত মাননীয় আধিকারিকগণ, দেশের বিভিন্ন গ্রাম থেকে যুক্ত হয়ে যাঁরা এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছেন এরকম অসংখ্য গ্রাম প্রধান পঞ্চায়েত সদস্যগণ, অন্যান্য সমস্ত জনপ্রতিনিধিগণ, আমার প্রিয় ভাই বোনেরা

 

আজ আমার সৌভাগ্য যে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে আমাদের গ্রামের নেতৃবৃন্দ যাঁরা প্রকৃতির জন্য, জলের জন্য, সেখানকার মানুষের সুখের জন্য সাধকের মতো সাধনা করছেন, সবাইকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন, তাঁদের সকলের কথা শুনেছি তাঁদের কথা শুনে নতুন প্রেরণা পেয়েছি, নতুন প্রাণশক্তি এবং কিছু নতুন ভাবনায় উজ্জীবিত হয়েছি আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আমাদের এই প্রতিনিধিদের সঙ্গে আজ যে বার্তালাপ হয়েছে, যারা এই বার্তালাপ শুনেছেন, প্রত্যেকেই কিছু না কিছু শিখেছেন, আমিও শিখেছি, আমাদের আধিকারিকরাও শিখেছেন, আর জনগণেশও তাতে অনেক কিছু শেখার উপকরণ পাবেন

 

আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে জলশক্তির প্রতি সচেতনতা বাড়ছে, জল সংরক্ষণের প্রচেষ্টা বৃদ্ধি পাচ্ছে আজ আন্তর্জাতিক জল দিবস উপলক্ষে গোটা বিশ্বে জলের গুরুত্ব নিয়ে জনসচেতনতামূলক অনুষ্ঠান চলছে এই উপলক্ষে আমরা দুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য একত্রিত হয়েছি আজ এমন একটি অভিযান শুরু হচ্ছে যার সম্পর্কে আমি আমারমন কি বাতঅনুষ্ঠানেও বলেছি কিন্তু আজ বিশ্বের সামনে এই যে উদাহরণ তুলে ধরতে পারছি, ভারতে জলের সমস্যা সমাধানের জন্যবৃষ্টির জল ধরোআন্দোলনের শুভ সূচনার পাশাপাশিকেন বেতবা লিঙ্কখালের জন্য অনেক বড় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে অটলজি উত্তরপ্রদেশ এবং মধ্যপ্রদেশের লক্ষ লক্ষ পরিবারের কল্যাণে যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, তাকে সাকার করার জন্য আজ চুক্তি হয়েছে আমার মনে হয়, এটা নিশ্চিতভাবেই অনেক বড় কাজ হয়েছে যদি আজ করোনা না হত, তাহলে ঝাঁসিতে গিয়ে, বুন্দেলখন্ডে গিয়ে উত্তরপ্রদেশ মধ্যপ্রদেশের যে কোনও স্থানে লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগমে এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পারতাম, আপনাদের সকলের আশীর্বাদ নিতে পারতাম; আজ এত গুরুত্বপূর্ণ একটা কাজ সম্পন্ন হতে চলেছে!

 

ভাই বোনেরা,

 

একবিংশ শতাব্দীর ভারতের জন্য পর্যাপ্ত জল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় প্রত্যেক বাড়িতে, প্রত্যেক খেতে জলের প্রয়োজন তো আছেই জীবনের অর্থনীতির প্রত্যেক পর্যায়ের জন্য জল অত্যন্ত জরুরি আজ যখন আমরা দ্রুতগতিতে উন্নয়নের কথা বলছি, প্রচেষ্টা চালাচ্ছি, তখন জল নিরাপত্তা ছাড়া, কার্যকর জল ব্যবস্থাপনা ছাড়া এই দ্রুতগতিতে উন্নয়ন সম্ভবই নয় ভারতের উন্নয়নের দূরদৃষ্টি, ভারতের আত্মনির্ভরতার দূরদৃষ্টি আমাদের উৎসগুলির ওপর নির্ভরশীল, আমাদের জল সংযোগ ব্যবস্থার ওপর নির্ভরশীল একথা গভীরভাবে উপলব্ধি করে কয়েক দশক আগে আমাদের এই লক্ষ্যে অনেক কিছু করার প্রয়োজন ছিল আর আমি আপনাদের গুজরাটের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, আমরা যদি পরিকল্পনা মাফিক গণঅংশীদারিত্বের মাধ্যমে জল সাশ্রয়ের উদ্যোগ নিই, তাহলে জল নিয়ে সমস্যায় পড়তে হবে না জল আমাদের জীবনে টাকাপয়সা থেকে অনেক বেশি মূল্যবান শক্তি হিসেবে উঠে আসবে কাজ অনেক আগেই হওয়া উচিৎ ছিল কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে যতটা হওয়া উচিৎ ছিল, যত ব্যাপকভাবে হওয়া উচিৎ ছিল, প্রত্যেকে মানুষের অংশীদারিত্বের মাধ্যমে হওয়া উচিৎ ছিল, তাতে অনেক ফাঁক রয়ে গেছে ফলস্বরূপ, ভারত যেভাবে উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলেছে, পাল্লা দিয়ে জল সঙ্কটও সমস্যা হিসেবে উঠে এসেছে দেশ যদি জল সাশ্রয়ের দিকে লক্ষ্য না দেয়, জলের অপচয় যদি থামানো না যায়, তাহলে আগামী দশকগুলিতে পরিস্থিতি অনেক বেশি বিগড়ে যাবে আর আমাদের পূর্বজরা আমাদের যত জল দিয়ে গেছেন, এটা আমাদের দায়িত্ব – আমাদেরকেও সমপরিমাণ জল আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে নিরাপদ রাখার জন্য দিয়ে যেতে হবে এর থেকে বড় পূণ্য আর কিছু নেই, আর সেজন্য আমাদের শপথ নিতে হবে, আমরা যেন এক বিন্দু জলও নষ্ট হতে দেব না, অপচয় হতে দেব না, জলের সঙ্গে পবিত্র সম্পর্ক রাখব আমাদের এই পবিত্রতাই জল বাঁচানোর ক্ষেত্রে কাজে লাগবে এটা দেশের বর্তমান প্রজন্মের দায়িত্ব, আগামী প্রজন্মের জন্য জল নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা

 

ভাই বোনেরা,

 

আমাদের বর্তমান পরিস্থিতি বদলাতে হবে ভবিষ্যৎ সঙ্কটের জন্য এখন থেকে সমাধান খুঁজতে হবে সেজন্য আমাদের সরকারওয়াটার গভর্ন্যান্সকে সরকারের নীতি সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিয়েছে বিগত ছয় বছরে আমরা এই লক্ষ্যে অনেক পদক্ষেপ নিয়েছিপ্রধানমন্ত্রী কৃষি  *****

সিঁচাই যোজনাথেকে শুরু করেপ্রত্যেক খেতে জল অভিযানকিংবাপ্রতি বিন্দুতে অধিক শস্য অভিযানবানমামী গঙ্গে মিশন’, ‘জল জীবন মিশনকিংবাঅটল ভূজল যোজনা’ – প্রতিটি ক্ষেত্রে দ্রুতগতিতে কাজ হচ্ছে

 

বন্ধুগণ,

 

এত চেষ্টার মাঝে এটাও চিন্তার বিষয় হয়ে উঠেছে যে আমাদের দেশে বর্ষার অধিকাংশ জল নষ্ট হয়ে যায় ভারত বর্ষার জলের ব্যবস্থাপনা যত ভালভাবে করবে, ততটাই ভূগর্ভস্থ জলের ওপর দেশের নির্ভরতা হ্রাস পাবে আর সেজন্যই আমাদেরবৃষ্টির জল ধরো মতো অভিযান শুরু করা এবং একে সফল করার অত্যন্ত প্রয়োজন রয়েছে এবারজল শক্তি অভিযান’- বিশেষভাবে শহর এবং গ্রামীণ ক্ষেত্র উভয়কেই সামিল করা হচ্ছে বর্ষা আসার এখনও কয়েক সপ্তাহ বাকি সেজন্য আমাদের এখন থেকেই জল সাশ্রয়ের জন্য প্রস্তুতি দ্রুতগতিতে এগিয়ে রাখতে হবে আমাদের প্রস্তুতিতে যেন কোনও ত্রুটি না থাকে বর্ষা আসার আগেই সমস্ত পুকুর, দীঘি, কুঁয়ো সংস্কার করে, পরিষ্কারপরিচ্ছন্ন করে রাখতে হবে জল সংরক্ষণের ক্ষমতা বাড়াতে হবে বর্ষার জল প্রবাহিত হয়ে এগুলিতে আসার পথে কোনও বাধা থাকলে সেগুলি সরিয়ে দিতে হবে এরকম সমস্ত কাজে আমাদের সম্পূর্ণ শক্তি দিয়ে এগিয়ে যেতে হবে এক্ষেত্রে তেমন বড় ইঞ্জিনিয়ারিংএর প্রয়োজন নেই এজন্য কোনও ইঞ্জিনিয়ারকে এসে কাগজের বড় বড় নকশা বানিয়ে দিতে হবে না গ্রামের মানুষরা এসব জানেন, সহজেই করে নেবেন শুধু কাউকে তদারকি করতে হবে এক্ষেত্রে যত বেশি প্রযুক্তির ব্যবহার করা যায় ততটাই ভালো আমি চাইব এমজিএনআরইজিএএর প্রতিটি টাকা বর্ষা আসার আগে এই একটি কাজেই ব্যবহার করা হোক

 

জল সংরক্ষণের জন্য প্রস্তুতি নিতেই হবে এনজিএনআরইজিএএর টাকা আর কোথাও যেন না যায় তা দেখতে হবে সেজন্য সমস্ত দেশবাসীর সহযোগিতা চাই সমস্ত গ্রাম প্রধান, দায়িত্বপ্রাপ্ত সমস্ত জেলার জেলাশাসক এবং অন্যান্য বন্ধুদের এক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করতে হবে আমাকে বলা হয়েছে, আজ এজন্য বিশেষ গ্রামসভারও আয়োজন করা হয়েছে এবং সর্বত্রইজল শপথ নেওয়া হচ্ছে এইজল শপথপ্রত্যেক নাগরিকের সঙ্কল্প হয়ে উঠতে হবে প্রত্যেকের স্বভাবে জল সাশ্রয়কে রপ্ত করতে হবে জলের প্রতি যখন আমাদের ব্যবহার বদলাবে, তখনই প্রকৃতি আমাদের সঙ্গে দেবে আমরা অনেকবার শুনেছি, মূলত সেনাবাহিনীর জন্য একথা বলা হয় যে শান্তির সময় সেনাবাহিনীর সদস্যরা যত বেশি ঘাম ঝরাবেন, যুদ্ধের সময় তাঁদের তত কম রক্ত ঝরাতে হবে আমার মনে হয় জলের ক্ষেত্রেও একথা প্রযোজ্য যদি আমরা বর্ষার আগে পরিশ্রম করে পরিকল্পনা মাফিক জল সাশ্রয়ের কাজ করি তাহলে খরার জন্য যত কোটি কোটি টাকা খরচ হয়, অন্য সব কাজ আটকে যায়, সাধারণ মানুষের জীবনে নানা সমস্যা আসে, পশুদের পালিয়ে যেতে হয়এই সবকিছু থেকে জনজীবনকে রক্ষা করা যাবে সেজন্য শান্তির সময় বেশি করে ঘাম ঝরিয়ে যুদ্ধের সময় কম রক্তক্ষরণের মন্ত্র বর্ষা আসার আগে জীবনরক্ষার জন্য পরিশ্রমের মাধ্যমে পালন করলে আমরা উপকৃত হব

 

ভাই বোনেরা,

 

বর্ষার জল সংরক্ষণের পাশাপাশি আমাদের দেশের নদীর জল ব্যবস্থাপনাও কয়েক দশক ধরে আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে আমরা দেখেছি জলের জায়গায় বাঁধ তৈরি হয়েছে কিন্তু ঠিকভাবে কিন্তুডিসল্টিংহয়নি আমরা যদি ঠিক সময়েডিসল্টিংকরি, ইঞ্জিনিয়ারদের পরিকল্পনা মাফিক চলি, তাহলেও অনেক বেশি জল আমরা সংরক্ষণ করতে পারব সংরক্ষণ করলে আমাদের মাটিতে বেশিদিন জল থাকবে সেজন্য আমাদের নদী খালগুলিতে পরিকল্পনা মাফিক কাজ করে যেতে হবে দেশকে জল সঙ্কট থেকে বাঁচাতে এই লক্ষ্যে দ্রুতগতিতে কাজ করা আমাদের সকলের দায়িত্ব  ‘কেন বেতবা লিঙ্ক প্রকল্প’- এই দূরদৃষ্টির ফসল আমি মধ্যপ্রদেশ উত্তরপ্রদেশ উভয় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, উভয় রাজ্য সরকার, আর দুই রাজ্যের জনগণকে যত শুভেচ্ছা জানাই, ততটাই কম পড়বে আজ এই দুই রাজ্যের নেতারা উভয় সরকার মিলেমিশে এত বড় কাজ করেছে যা ভারতের জলের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য সোনালী অক্ষরে লেখা থাকবে এটা সহজ কাজ নয় তাঁরা যে কাগজে চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেছেন এটি নিছকই স্বাক্ষর নয়, বুন্দেলখন্ডের ভাগ্যরেখাকে তাঁরা আজ একটি নতুন রূপে রাঙিয়ে দিয়েছেন বুন্দেলখন্ডের ভাগ্যরেখা বদলানোর কাজ করেছেন সেজন্য এই দুই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, উভয় রাজ্যের সরকার এবং জনগণ অনেক অভিনন্দনের যোগ্য কিন্তু আমার বুন্দেলখন্ডের ভাই বোনেরা, আপনাদেরও দায়িত্ব রয়েছে এই কাজ বাস্তবায়নে এতটাই লেগে পড়বেন যাতে কেন বেতবার কাজ আমাদের চোখের সামনেই সম্পূর্ণ হয়, আমরা এই জল চোখে দেখতে পাই আমাদের খেতগুলি যেন সবুজ হয়ে ওঠে আসুন, আমরা সবাই মিলেমিশে কাজ করি এই প্রকল্পের মাধ্যমে যে জেলাগুলির লক্ষ লক্ষ মানুষ, লক্ষ লক্ষ কৃষক জল পাবেন, থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ পাবেন, তাঁদের জীবনে তৃষ্ণা মেটার পাশাপাশি উন্নয়নও আসবে

 

ভাই বোনেরা,

 

এই প্রচেষ্টা ভগীরথ প্রচেষ্টার মতো বড়, আর এরকম ক্ষেত্রে সাফল্য অনিবার্য আজ আমরা দেশের  ‘জল জীবন মিশন’-এর ক্ষেত্রেও এমনটি হতে দেখছি মাত্র দেড় বছর আগে আমাদের দেশের ১৯ কোটি গ্রামীণ পরিবারের মধ্যে মাত্র সাড়ে তিন কোটি পরিবারে নলের মাধ্যমে জল সংযোগ ছিল আমি অত্যন্ত আনন্দিত যেজল জীবন মিশনশুরু হওয়ার পর এত কম সময়ে প্রায় কোটি নতুন পরিবারে নলের মাধ্যমে জল সংযোগ স্থাপিত হয়েছে এই অভিযানের সবচাইতে বড় বৈশিষ্ট্য হল, এর গোড়ায় রয়েছে গণঅংশীদারিত্ব মডেল হল স্থানীয় প্রশাসন আর আমি বলব, আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলব, এইজল জীবন মিশন’- যত বেশি সংখ্যক বোনেরা এগিয়ে আসবেন, দায়িত্ব নেবেন, তত বেশি সাফল্য আসবে জলের মূল্য মাবোনেরা যতটা বুঝতে পারেন, আর কেউ ততটা বুঝতে পারেন না বাড়িতে জল কম থাকলে কত না সমস্যা হয়! প্রত্যেক মায়ের হাতে যদি জলের সুবিধা থাকে, তাহলে দেখবেন তাঁরা এমন পরিবর্তন এনে দেবেন যে আপনারা ভাবতেই পারবেন না আপনারা সবাই, পঞ্চায়েতি রাজের সমস্ত বন্ধুরা খুব ভালভাবেই জানেন যে এই গোটা অভিযানটি গ্রামবাসীরাই সামলাচ্ছেন, গ্রামগুলিই এই অভিযান পরিচালনা করছে আমি আগেই বলেছি, আমাদের মহিলাদের নেতৃত্বে এই অভিযানকে এগিয়ে নিয়ে যান। তাহলে দেখবেন পরিণাম দ্রুত আসতে শুরু করবে আমি অত্যন্ত আনন্দিত, স্কুল থেকে শুরু করে অঙ্গনওয়াড়ি, আশ্রমশালা, হেলথ অ্যান্ড ওয়েলনেস সেন্টার, কমিউনিটি সেন্টার ইত্যাদি জায়গায় অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে নলের মাধ্যমে জল পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে

 

বন্ধুগণ,

 

জল জীবন মিশন’-এর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক নিয়ে খুব কম আলোচনা হয় সেটি হল আমাদের দেশের জলে আর্সেনিক এবং অন্যান্য কিছু দূষিত রাসায়নিকের আধিক্য থেকেই অনেক ধরনের রোগ মানুষের জীবনে সর্বনাশ ডেকে আনে বিশেষ করে হাড়ের রোগ এই রোগগুলিকে আমরা যত প্রতিরোধ করতে পারব, তত বেশি জীবন বাঁচাতে পারব সেজন্য নিয়মিত জল পরীক্ষা অত্যন্ত জরুরি বেশি করে যদি আমরা বর্ষার জল বাঁচাতে পারি, তাহলে জলে দূষিত পদার্থের পরিমাণ অনুপাতে কমে যাবে স্বাধীনতার পর প্রথমবার জল পরীক্ষা নিয়ে কোনও সরকার এত গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে আর আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে জল পরীক্ষার এই অভিযানে আমাদের গ্রামে বসবাসকারী ভগিনী কন্যাদের যুক্ত করা হচ্ছে করোনার সঙ্কটকালেও . লক্ষেরও বেশি মহিলাকে জল পরীক্ষার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে প্রত্যেক গ্রামে কমপক্ষে পাঁচজন মহিলাকে জল পরীক্ষার প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছেওয়াটার গভর্ন্যান্স’- আমাদের বোন কন্যাদের ভূমিকা যত বেশি বাড়ানো যাবে, যত বেশি উৎসাহ দেওয়া যাবে, তত ভালো ফল পাওয়া যাবে

 

আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে গণঅংশীদারিত্বের মাধ্যমে গণসামর্থ্য দিয়ে আমরা দেশের জল সংরক্ষণ করব, আর দেশের ভবিষ্যতকে আমরা আরেকবার উজ্জ্বল করে তুলব আমি আরেকবার দেশের সমস্ত নবীন বন্ধুদের, সমস্ত মা বোনেদের, সমস্ত শিশুদের, সমস্ত স্থানীয় প্রশাসনকে, সামাজিক সংস্থাকে, সরকারের সমস্ত বিভাগকে, সমস্ত রাজ্য সরকারকে অনুরোধ জানাইজল শক্তি অভিযানকে সফল করে তুলতে আমাদের সবাইকে একটি শপথ নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে আগামী ১০০ দিন জল সংরক্ষণের জন্য প্রস্তুতি যেমন বাড়িতে বিশেষ অতিথি আসার আগে, যেমন গ্রামে বরযাত্রী আসার আগে প্রস্তুতি নিতে হয়, কয়েক মাস আগে থেকে প্রস্তুতি নিতে হয়, এবার বর্ষা আসার আগে তেমনভাবেই প্রস্তুতি নিতে হবে বর্ষা আসছে, জল বাঁচাতে হবে এক প্রকার উৎসাহ ও উদ্দীপনা নিয়ে এই কাজ শুরু করতে হবে তাহলেই আপনারা দেখবেন এক বিন্দু জলও নষ্ট হবে না আর যখন বর্ষা আসবে, ততদিনে অপচয়ের অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে আমার সকলের প্রতি অনুরোধ জল বাঁচানো যতটা প্রয়োজন, ততটাই বিবেকবুদ্ধি দিয়ে জলের ব্যবহার প্রয়োজনীয় এটা আমাদের কখনও ভুললে চলবে না

 

আমি আরেকবার বিশ্ব জল দিবস উপলক্ষে জল নিয়ে এই সচেতনতা অভিযানকে, আর যে গ্রাম প্রধানরা তৃণমূল স্তরে কাজ করছেন, যে নবীন প্রজন্মের ভাইবোনেরা জল সংরক্ষণকে আন্দোলনে পরিণত করেছেন, এরকম অসংখ্য মানুষকে প্রণাম  জানাই। আজ তো মাত্র পাঁচজনের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ হয়েছে, কিন্তু ভারতের কোণায় কোণায় এরকম অসংখ্য মানুষ রয়েছেন, তাঁদের ইচ্ছাশক্তিকে প্রণাম জানিয়ে আসুন, আমরা সবাই জল বাঁচানোর চেষ্টা করি, জল সংরক্ষণে সফল হই, আমাদের মাটিকে  সিক্ত করি, তাহলে জল আমাদের জীবনকে সিক্ত করবে, আমাদের অর্থনীতিকেও সিক্ত করবে, সমৃদ্ধ করবে আমরা একটি প্রাণশক্তিতে পরিপূর্ণ জাতি হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলে এগিয়ে যাব; এই কল্পনা নিয়ে আমার বক্তব্য সম্পূর্ণ করছি। আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ

***

 

 

CG/SB/DM