Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

উত্তর প্রদেশের গোরখপুরে গোরক্ষনাথের মন্দিরে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর ভাষণ

উত্তর প্রদেশের গোরখপুরে গোরক্ষনাথের মন্দিরে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর ভাষণ

উত্তর প্রদেশের গোরখপুরে গোরক্ষনাথের মন্দিরে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর ভাষণ


এখানে উপস্থিত সকল প্রাতঃস্মরণীয় সম্মানিত গুরুজন,সন্ন্যাসী এবং সকল ভক্তবৃন্দ ।

আমার সৌভাগ্য যে আজ আমাদের সবার প্রেরণা-পুরুষ পরমপূজ্যঅবৈদ্যনাথজী মহারাজের মর্মর-প্রতিমা উন্মোচনের সুযোগে আপনাদের সকলের আশীর্বাদ পাওয়ারঅবকাশ পেয়েছি । এই ভূমির বৈশিষ্ট্য হল এই যে, যুগে যুগে বুদ্ধ, মহাবীর, কবীর-এর মতো মনীষীদের সঙ্গেকোনও না কোনওভাবে অটুট সম্পর্ক রয়েছে । গোরক্ষনাথ একটি মহান পরম্পরা, যা কেবল ব্যক্তিরউন্নতি নয়, ব্যক্তির উন্নতির পাশাপাশি সমাজের উন্নতির মহান লক্ষ্য নিয়ে এই পরম্পরাপ্রবহমান ।

অনেকবার এরকম হয়েছে, যখন সমাজে কোনও পরম্পরা দীর্ঘকালধরে চলতে থাকে, তখন ধীরে ধীরে এর মধ্যে কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি ও সমস্যা জন্ম নিতে শুরুকরে । কিন্তু, যখন সেই পরম্পরার আদর্শগুলিকে, নিয়মগুলিকে নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করা হয়,তখন সেই পরম্পরাগুলিকে পরিস্থিতির চাপ থেকে মুক্ত রাখা যেতে পারে । আমি গোরক্ষনাথ দ্বারাপ্রচলিত এই পরম্পরায় …… কারণ, যখন আমি গুজরাটে ছিলাম, সেখানেও অনেক জায়গায় এ ধরনেরঅনুষ্ঠানে যাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে, একবার তো অবৈদ্যনাথজীর সঙ্গেও একই মঞ্চে বসার সুযোগহয়েছে । অবশ্য, রাজনীতিতে যোগদান করার আগে থেকেই তাঁর সঙ্গে আমার যোগাযোগ ছিল । এই গোটা ব্যবস্থাকিভাবে সঞ্চালিত হয়, নিয়ম-নীতি কিভাবে পালন করা হয়, এই পরম্পরা প্রসূত সন্ন্যাসীরাযেখানেই থাকুন না কেন, তাঁদের খোঁজখবর কিভাবে রাখা যেতে পারে, তাঁদের যে কোনও আর্থিকসঙ্কটে কিভাবে সাহায্য করা যায়, তার সুনিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থা রয়েছে । আমি একবার মহন্তজীরকাছে শুনেছিলাম, আর সেই পরম্পরা আজও চালু রয়েছে । সেজন্য এই সিংহাসনেযে মহাপুরুষদের সেবা করার সৌভাগ্য হয়েছে, তাঁদের সকলেরই গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে । তাঁদের মধ্যে মহন্তঅবৈদ্যনাথজী স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণ থেকে শুরু করে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর, সমাজেরপুনর্নিমাণের কাজ কিংবা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় তীর্থস্থানের মাধ্যমেও সাধারণ মানুষকেকিভাবে সামাজিক চেতনায় উদ্বুদ্ধ করা যায়, পরিবর্তিত পরিস্থিতিকে কিভাবে কাজে লাগানোযায় – এই সবকিছু নিয়ে তিনি সবসময় ভাবতেন । এই চিন্তাপ্রক্রিয়াঅনুসারে, কাজ করে তিনি এই ব্যবস্থায় নতুন মাত্রা যোগ করেছেন, যে মাত্রা আজ যোগীজী উন্নতিরপথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন ।

কখনও কখনও চারপাশে অনেক ভ্রম তৈরি হয় । কিন্তু আমি দেখেছি যে আমাদের দেশে যত সন্ন্যাসী পরম্পরা রয়েছে, সবকটাতেই একটি বিষয়সমান, কখনও কোনও গরিব ব্যক্তি, ক্ষুধার্ত মানুষ তাদের দরজা থেকে খালি পেটে ফিরে যেতেপারবেন না । নিজের কাছে থাকুক কিম্বা না থাকুক, সন্ন্যাসী যদি কোনও কুঁড়েঘরেও বসে থাকেন, আপনাকেপ্রথম প্রশ্নই করবেন, প্রসাদ খেয়ে যাবে তো? এই মহান ঐতিহ্য সমাজের প্রতি এই সংবেদনশীলতাতেইপ্রকট হয় । এই ঐতিহ্যই সমাজকে শ্রদ্ধা-ভক্তি করতে শেখায়, সমাজের কল্যাণসাধনে ব্যবস্থাকে গড়েতুলতে চায় । সেজন্য এই ব্যবস্থা চিরঞ্জীবী হয় ।

আমাদের দেশে, প্রত্যেক ব্যবস্থায় সময়ানুকূল পরিবর্তনহয়েছে । প্রত্যেক পরিবর্তনকে আমাদের সমাজ স্বীকার করে নিয়েছে । যেখানে নতুন বৈজ্ঞানিকউদ্ভাবনের প্রয়োজন হয়েছে, সেখানে বিজ্ঞানকেও স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে, যেখানে সামাজিকচিন্তাভাবনায় পরিবর্তন আনার প্রয়োজন অনুভূত হয়েছে, সেখানেও পরিবর্তন হয়েছে । এখন আমরা দেখি, অনেকসন্ন্যাসীরা যাঁরা কখনও আধ্যাত্মিক কাজে ব্যস্ত থাকেন, তাঁরাও সম্প্রতি পরিচ্ছন্নতারস্বার্থে নিজেদের ‘ স্বচ্ছ ভারতঅভিযান ’ -এ যুক্ত করেছেন । পরিচ্ছন্নতার অভিযানেঅনেক মূল্যবান সময় তাঁরা ব্যয় করছেন । আমি এরকম সন্ন্যাসীর কথাও জানি, যিনি শৌচাগার নির্মাণঅভিযানের নেতৃত্ব দিচ্ছেন । নিজের ভক্তদের বলছেন, মা-বোনদের সম্মান করতে শেখো,তাঁরা যাতে গৌরবময় জীবনযাপন করতে পারেন এবং সুস্থ সন্তান প্রতিপালন করতে পারেন, তানিশ্চিত করতে শৌচাগার নির্মাণ করো । এরকম অনেক সন্ন্যাসীকে দেখেছি, যাঁরা রেটিনা অপারেশনেরজন্য ক্যাম্প করেন এবং দরিদ্র থেকে দরিদ্রতর ব্যক্তিদের রেটিনা অপারেশনে যতটা সাহায্যকরা সম্ভব, তা করেন । অনেক সন্ন্যাসীকে দেখেছি, যাঁরা পশু চিকিৎসায় নিজের অনেকটা সময় ব্যয় করেন । শিক্ষা, স্বাস্থ্য,পরিষেবা প্রত্যেক ক্ষেত্রেই দেশের সর্বত্র আমাদের সন্ন্যাসীরা কোনও না কোনওভাবে যুক্তরয়েছেন । এখন সময়ের চাহিদা হল – দেশের লক্ষ লক্ষসন্ন্যাসী, সহস্রাধিক পরম্পরার অন্তর্গত হাজার হাজার মঠ ব্যবস্থা ভারতকে একটি আধুনিকদেশ হিসাবে গড়ে তুলতে, সম্পন্ন করে তুলতে দেশের প্রত্যেক মানুষের মনে উত্তম সংস্কারএবং সমর্পণভাব জাগিয়ে তুলতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন । অনেকেই এই দায়িত্বস্বতঃপ্রণোদিতভাবে পালন করছেন, আর দেশকে, দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে একটি মহান শক্তিহিসাবে গড়ে তুলছেন ।

মহন্ত অবৈদ্যনাথজী সর্বদাইসমাজের সুখ-দুঃখ নিয়ে কথা বলতেন । তাঁর সর্বক্ষণের চিন্তায় মানুষের দুঃখ-কষ্টের নিরাময়খোঁজার চেষ্টা ছিল । এক্ষেত্রে যাঁদেরকেই ভালো কিছু করতে দেখতেন, তাঁদেরকে তিনি উৎসাহ যোগাতেন, পুরস্কৃতকরতেন, যাতে তাঁরা সারা জীবন এ কাজে উৎসর্গীকৃত থাকেন । আজ আমার পরম সৌভাগ্যযে তাঁর মর্মর মূর্তি অনাবৃত হল । আমি সেই মূর্তিতে প্রথম পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ করতেপারলাম । এই ভূমি তপস্যার ভূমি, অখন্ড জ্যোতির ভূমি, অবিরত প্রেরণার ভূমি, সৎ ও নিষ্ঠাবানমানুষদের সর্বদা পুরস্কৃত করে এই ভূমি । আমি এই ভূমিকে প্রণাম করে আপনাদের সকলকে প্রণামজানিয়ে আমার বক্তব্য শেষ করছি ।

অনেক অনেক ধন্যবাদ ।

PG/SB/SB