Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

ইন্ডিয়ান মোবাইল কংগ্রেস – এ প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের মূল অংশ


নয়াদিল্লি, ০৮ ডিসেম্বর, ২০২০
 
 
কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার আমার সহকর্মী শ্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ, টেলিকম শিল্পের উদ্যোগপতি এবং অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ,
 
ইন্ডিয়ান মোবাইল কংগ্রেস ২০২০-তে আপনাদের সামনে ভাষণ দিতে পেরে আমি অত্যন্ত আন্দিত। আজ এখানে টেলিযোগাযোগ ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত তরুণ মেধাবীরা একত্রিত হয়েছেন। এই তরুণ মেধাবীদের মধ্যে এমন অনেকেই রয়েছেন, যাঁরা টেলিকম ক্ষেত্রের পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন এবং সাম্প্রতিক অতীতে জটিল পরিস্থিতিতে নিষ্ঠার সঙ্গে কর্তব্য পালন করেছেন। তাই এটা আশা করাই যায় যে, এরা সকলেই আরও সমৃদ্ধ ও উজ্জ্বল ভবিষ্যতের পথে ভারতকে নেতৃত্ব দেবেন।
 
 
 
বন্ধুগণ,
 
আমরা একদিকে যেমন যোগাযোগ ব্যবস্থার অগ্রগতিতে গতিময়তার অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি, তেমনই আমরা এটাও জানি যে, গতিময়তার সূচনা হয়েছে সবে মাত্র। প্রথম যখন টেলিফোনে কল করা হয়েছিল, তখন থেকে আমরা অনেক পথ পেরিয়ে এসেছি। প্রকৃতপক্ষে, এমনকি ১০ বছর আগেও এটা কল্পনার অতীত ছিল যে, আমাদের দেশে, সমাজে এবং বিশ্বে মোবাইল বিপ্লবের প্রভাব কি হতে চলেছে! আমাদের সামনেই যে ভবিষ্যৎ রয়েছে, তা অচিরেই বর্তমান ব্যবস্থাকেও অতীত করে তুলবে। এই প্রেক্ষিতে এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে, কিভাবে আমরা আসন্ন প্রযুক্তির সুফলগুলিকে কাজে লাগাতে পারি, সে ব্যাপারে চিন্তাভাবনা ও পরিকল্পনা করা হয়েছে। একই সঙ্গে, আমরা প্রযুক্তিগত বিপ্লবকে উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবা, গুণগত মানের শিক্ষা, বিশ্বাসযোগ্য তথ্য আদান-প্রদান তথা আমাদের কৃষকদের জন্য আরও সুযোগ-সুবিধা ও শিল্পোদ্যোগীদের স্বার্থে বাজার ব্যবস্থার সুবিধা গড়ে তুলতে পারি এবং এই লক্ষ্য পূরণে কিভাবে আমরা একযোগে অগ্রসর হতে পারি।
 
 
 
বন্ধুগণ,
 
এটা আপনাদের উদ্ভাবন ও প্রচেষ্টার ফলেই সম্ভব হয়েছে, যখন মহামারীর সময়ও স্বাভাবিক ছন্দ অক্ষুণ্ণ থেকেছে। এটা আপনাদের প্রচেষ্টার ফলেই সম্ভব হয়েছে, যখন একজন ছেলে তার মায়ের সঙ্গে অন্য এক শহরে যোগাযোগ রাখতে পেরেছে। একজন পড়ুয়া তার শিক্ষকের কাছে শ্রেণীকক্ষে উপস্থিত না হয়েও শিক্ষা গ্রহণ করেছে। একজন রোগী বাড়িতে থেকেই চিকিৎসকের পরামর্শ পেয়েছেন। এমনকি, ভৌগোলিক তারতম্য সত্ত্বেও একজন ব্যবসায়ী তাঁর গ্রাহকের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরেছেন।
 
এটা আপনাদের আন্তরিক প্রয়াসে সম্ভব হয়েছে যে, সরকার পরিচালনার অঙ্গ হিসাবে আমরা তথ্য প্রযুক্তি ও টেলিযোগাযোগ ক্ষেত্রের পূর্ণ সম্ভাবনাকে বাস্তবায়িত করার লক্ষ্যে কাজ করে চলেছি। নতুন পরিষেবা সংস্থাগুলির নীতি-নির্দেশিকা ভারতীয় তথ্য প্রযুক্তি পরিষেবা শিল্পে নতুন উচ্চতা অর্জনে সাহায্য করতে পারে। তথ্য প্রযুক্তি পরিষেবা ক্ষেত্রের অগ্রগতি মহামারী পরবর্তী সময়েও এই শিল্পের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। তথ্য প্রযুক্তি পরিষেবা ক্ষেত্রের উদারীকরণের এই উদ্যোগ সাহায্য করবে এবং পরিষেবাকে দেশের দূরবর্তী এলাকাতেও পৌঁছে দেবে।
 
 
 
বন্ধুগণ,
 
আজ আমরা মোবাইল অ্যাপের জগতে বাস করছি। মোবাইল অ্যাপের এই জগৎ মাত্র কয়েক বছরের পুরনো। বর্তমানে এই মোবাইল অ্যাপই কয়েক দশকের পুরনো সংস্থাগুলির মুনাফা অতিক্রম করেছে। অবশ্যই ভারতের কাছে এটি একটি শুভ লক্ষণ এবং আমাদের তরুণ উদ্ভাবকদের কাছেও ইতিবাচাক বার্তা দেয়। আমাদের যুবসম্প্রদায় এমন অনেক পণ্য পরিষেবা নিয়ে কাজ করছেন, যেগুলির ব্যাপক বিশ্বায়নের সম্ভাবনা রয়েছে।
 
এমন তরুণ টেকসেভি রয়েছেন, যাঁরা আমাকে বলেছেন, একটি পণ্য পরিষেবার বিশেষত্ব লুকিয়ে রয়েছে, তার কোড বা স্বতন্ত্র্য বৈশিষ্ট্যের ওপর কয়েকজন শিল্পোদ্যোগী আমাকে বলেছেন, তাঁদের কাছে পণ্য পরিষেবার ধ্যান-ধারণাই সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। লগ্নিকারীরা আবার বলে থাকেন, পণ্যের গুণমানের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হ’ল – মূলধন যোগান। কিন্তু প্রায়শই যে বিষয়টি সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে, তা হ’ল একটি পণ্য পরিষেবার ব্যাপারে যুবসম্প্রদায়ের বিশ্বাস। তাই, নবীন প্রজন্মের বন্ধুদের কাছে আমার বার্তা হ’ল – পণ্য পরিষেবার পাশাপাশি, তাঁদের সম্ভাবনার প্রতিও বিশ্বাস অটুট রাখা।
 
 
 
বন্ধুগণ,
 
বর্তমানে আমাদের দেশে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১০০ কোটিরও বেশি। আজ দেশে ১০০ কোটিরও বেশি এমন মানুষ রয়েছেন, যাঁদের প্রত্যেকেরই অভিনব ডিজিটাল পরিচিতি রয়েছে। আজ আমাদের দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৭৫ কোটিরও বেশি। আমাদের সমাজে ইন্টারনেটের অনুপ্রবেশের গতিময়তা কয়েকটি পরিসংখ্যান থেকেই সুস্পষ্ট হয়। ভারতে গত চার বছরে মোট ইন্টারনেট ব্যবহারকারী অর্ধেকের বেশি যুক্ত হয়েছেন। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর অর্ধেকই আমাদের গ্রামাঞ্চলের মানুষ। আমাদের ডিজিটাল পরিধি এবং ডিজিটাল পরিষেবার ক্ষেত্রে আমদের কৌতূহল অপ্রত্যাশিত। বিশ্বে কেবল আমাদের দেশেই ইন্টারনেট ব্যবহারের মাশুল সর্বনিম্ন। এমনকি, আমরা বিশ্বে দ্রুত বিকাশশীল মোবাইল অ্যাপ বাজার হয়ে উঠছে। আমাদের দেশে ডিজিটাল পরিষেবার সম্ভাবনা অতুলনীয়, সম্ভবত মানব সভ্যতার ইতিহাসেও নজির বিহীন।
 
মোবাইল প্রযুক্তির কারণেই আজ আমরা বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার মূল্যের সমতুল সাহায্য লক্ষ লক্ষ মানুষের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে। আবার মোবাইল প্রযুক্তির প্রয়োগের ফলেই আমরা আজ মহামারীর প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও দরিদ্র ও অসুরক্ষিত শ্রেণীর মানুষের কাছে দ্রুত সাহায্য পৌঁছে দিয়েছি। মোবাইল প্রযুক্তির ফলেই কোটি কোটি টাকার নগদহীন লেনদেন হয়েছে এবং এই লেনদেনে স্বচ্ছতা বজায় থেকেছে। মোবাইল প্রযুক্তির ফলেই আমরা শীঘ্রই টোল-বুথগুলিতেও স্পর্শহীন লেনদেন ব্যবস্থা চালু করতে পারবো। এমনকি, মোবাইল প্রযুক্তির সুবাদে আমরা শীঘ্রই বিশ্বের বৃহত্তম কোভিড-১৯ টিকাকরণ অভিযানের সূচনা করবো।
 
 
 
বন্ধুগণ,
 
ভারতে আমরা মোবাইল উৎপাদনের ক্ষেত্রে অনেক সাফল্য পেয়েছি। ভারত মোবাইল উৎপাদনের ক্ষেত্রে অন্যতম আকর্ষণীয় কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। টেলিযোগাযোগ সরঞ্জাম উৎপাদনের বাড়াতে উৎপাদন সংযুক্ত উৎসাহ ভাতা কর্মসূচি শুরু করেছে। তাই আসুন, আমরা সকলে ভারতকে টেলি সরঞ্জাম, নক্‌শা নির্মাণ, উন্নয়ন ও উৎপাদনের ক্ষেত্রে ভারতকে গ্লোবাল হাব হিসাবে গড়ে তুলতে একযোগে কাজ করি।
 
আমরা আগামী ৩ বছরের মধ্যে হাইস্পীড ফাইবার-অপ্টিক যোগাযোগ ব্যবস্থার সঙ্গে প্রতিটি গ্রামকে জুড়ে ফেলতে এক বিরাট কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। ইতিমধ্যেই আমরা ফাইবার-অপ্টিক কেবল দিয়ে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তুলেছি। এর পাশাপাশি, আমরা উন্নয়েন আগ্রহী জেলা, উগ্র বামপন্থা অধ্যুষিত জেলা, উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য, লাক্ষাদ্বীপ দ্বীপপুঞ্জের মতো একাধিক জায়গায় ফাইবার-অপ্টিক পরিষেবা পৌঁছে দিতে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। সুস্থায়ী ব্রডব্যান্ড যোগাযোগ ব্যবস্থা ও পাবলিক ওয়াইফাই হটস্পটগুলির পরিধি আরও বাড়াতে আমরা উদ্যোগী হয়েছি।
 
 
 
বন্ধুগণ,
 
প্রযুক্তিগত মানোন্নয়নের ফলে আমরা এখন হামেশাই মোবাইল হ্যান্ডসেট ও বৈদ্যুতিন গেজেট বা উপকরণ পাল্টে ফেলছি। তাই, এ ধরনের বৈদ্যুতিন বর্জ্যের সুষ্ঠু পরিচালনা এবং তা থেকে এক চক্রাকার অর্থ-ব্যবস্থা গড়ে তোলার ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করতে একটি টাস্কফোর্স গঠনে শিল্প সংস্থাগুলি বিবেচনা করতে পারে।
 
 
 
বন্ধুগণ,
 
আমি আগেই বলেছি, এটা সূচনা মাত্র। দ্রুত প্রযুক্তিগত অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে ভবিষ্যৎ অত্যন্ত সম্ভাবনাময়। লক্ষ লক্ষ ভারতীয়র উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ ও ক্ষমতায়নে আমাদের ৫জি পরিষেবা সময় মতো চালু করতে একযোগে কাজ করা প্রয়োজন। আমি আশা করি, এই সম্মেলন থেকে উক্ত সমস্ত বিষয়ে যথাযথ চিন্তাভাবনা করা হবে এবং সেখান থেকে আশাব্যঞ্জক পরিণাম বেড়িয়ে আসবে, যা গুরুত্বপূর্ণ এই পরিকাঠামো ক্ষেত্রের উন্নয়নে আমাদের আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে।
 
আমি আপনাদের শুভ কামনা জানাই।
 
ধন্যবাদ।
 
 
***
 
 
 
CG/BD/SB