Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

বারাণসীতে পণ্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায় স্মৃতি কেন্দ্র জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ


হর হর মহাদেব!!

আপনাদের সবাইকে মহাশিবরাত্রি, বর্ণময় একাদশী এবং হোলি উৎসবের অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই।

এখানে বিপুল সংখ্যায় আগত আমার ভাই ও বোনেরা,

মা গঙ্গার তটে আজ এক অদ্ভুত সংযোগ গড়ে উঠেছে। অবধূত বাবা ভগবান রামের তপোস্থল এই তটে ছিল, আর এখন দীনদয়াল উপাধ্যায়ের সুরম্য স্মৃতি কেন্দ্রও এখানে গড়ে উঠেছে।

বন্ধুগণ, মা গঙ্গা যখন কাশীতে প্রবেশ করেন, তখন তিনি তাঁর দুই হাত দু’দিকে ছড়িয়ে দেন। এক হাত ছুঁয়ে ধর্ম, দর্শন এবং আধ্যাত্মের বিরাট সংস্কৃতি বিকশিত হয়েছে আর অন্য হাত এই পারে সেবা, ত্যাগ, সমর্পণ এবং তপস্যা মূর্ত হয়ে উঠেছে। এই তটে সিদ্ধযোগী অবধূত বাবা ভগবান রাম তপস্যা ও সাধনার পারম্পরিক রূপ বদলে একটি নতুন সেবার তপস্যা-স্থল গড়ে তুলেছেন। আজ এই অঞ্চলের দীনদয়ালজীর স্মৃতি কেন্দ্র যুক্ত হওয়া, ‘পঢ়াও’ বা শিবির নামকরণকে আরও সার্থক করে তুলেছে। এমন শিবির যেখানে সেবা, ত্যাগ, তিতিক্ষা ও লোকহিতের সম্মেলনে একটি দর্শনীয় স্থান রূপে বিকশিত হবে। আমার বিশ্বাস, এই স্থানটি জীবনের সত্যিকারের উদ্দেশ্য জানা, বোঝা এবং সংকল্প ভূমিতে পরিণত হবে।

বন্ধুগণ, আজকের দিনটি সেই কোটি কোটি ভারতবাসীর স্বপ্ন সাকার হওয়ার দিন, যাঁদের জীবনে দীনদয়াল উপাধ্যায়জী সর্বদাই প্রেরণার উৎস। এই শহরের কাছেই দেশের অন্যতম বৃহৎ রেল জংশনটির নাম আমরা ইতিপূর্বে তাঁর স্মৃতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেছি। এখন এখানে স্মৃতি কেন্দ্র ও উদ্যান গড়ে উঠেছে, তাঁর সুরম্য মূর্তি স্থাপিত হয়েছে। এগুলি দেখে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মানুষও দর্শন ও মানবসেবায় পণ্ডিত দীনদয়ালজীর অবদান থেকে প্রেরণা পাবেন।

ভাই ও বোনেরা, যাঁদের হৃদয়ে দলিত, পীড়িত, শোষিত, বঞ্চিত, নিপীড়িত সমাজের কোনও মানুষের জন্য দরদ ও অনুকম্পা রয়েছে, তাঁদের এই কেন্দ্র প্রেরণা যোগাবে। যাঁদের জীবনে দেশের স্থান দলের উপরে, ‘স্ব’ – এর জায়গায় যাঁরা ‘সমস্ত’ নিয়ে চিন্তা করেন, এমন দেশভক্ত কোটি কোটি মানুষের জন্য এই স্থান তীর্থক্ষেত্র, এখান থেকে তাঁরা দেশের জন্য বাঁচা, দেশের স্বার্থে সংঘর্ষ করা এবং জীবন উৎসর্গ করার প্রেরণা পাবেন। আজ আমি এই ভূমিকে প্রণাম জানাই। ঐ পুণ্যাত্মাকে প্রণাম জানাই। আমার বিশ্বাস, দীনদয়ালজীর আত্মা যেখানেই থাকুন না কেন, আমাকে নিরন্তর আশীর্বাদ করেন, প্রেরণা যোগান, যাতে আমি সমাজের শেষ প্রান্তে থাকা মানুষের জন্য, সমাজের অত্যাচারিত, দলিত, পীড়িত, শোষিত ও বঞ্চিত মানুষদের জন্য জীবন উৎসর্গ করে তাঁদের সেবার জন্য যে দায়িত্ব পেয়েছি, তা যেন সম্পূর্ণ রূপে পালন করতে পারি!

বন্ধুগণ, দীনদয়াল উপাধ্যায়জী আমাদের ‘অন্ত্যোদয়’ – এর পথ দেখিয়েছিলেন। অর্থাৎ, যাঁরা সমাজের শেষ প্রান্তে রয়েছেন, তাঁদের উদয়। একবিংশ শতাব্দীর ভারত, এই ভাবনা থেকে প্রেরণা নিয়ে ‘অন্ত্যোদয়’ – এর জন্য উন্নয়নের কাজ করছে। যাঁরা উন্নয়নের নীচের ধাপে রয়েছেন, তাঁদের উন্নয়নের সর্বোচ্চ ধাপে তুলে ধরার কাজ চলছে। পূর্বাঞ্চল হোক, পূর্ব ভারত হোক, উত্তর-পূর্ব ভারত হোক কিংবা দেশের শতাধিক উচ্চাকাঙ্ক্ষী জেলাগুলিতে অভূতপূর্ব উন্নয়নযজ্ঞ চলছে। এই প্রক্রিয়াতেই আজকের পবিত্র অবসরে বারাণসী সহ সমগ্র পূর্বাঞ্চলের জন্য লাভজনক প্রায় ১ হাজার ২০০ কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগে নির্মিত কিংবা নির্মীয়মান প্রকল্পগুলির উদ্বোধন কিংবা শিলান্যাস করা হয়েছে। এতে রয়েছে, অত্যাধুনিক হাসপাতাল, বিদ্যালয় ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সড়কপথ, উড়ালপুল, জল প্রকল্প, পার্ক এবং নগর সৌন্দর্যায়নের নানা প্রকল্প। সাধারণ মানুষের জন্য স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পরিষেবা, আস্থা এবং কর্মসংস্থান প্রদানকারী এই সমস্ত প্রকল্পের জন্য আমি আপনাদের সবাইকে, বারাণসী তথা পূর্বাঞ্চলের জনগণকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই। এই প্রকল্পগুলি বিগত পাঁচ বছরে কাশী সহ সমগ্র পূর্বাঞ্চলে কায়াকল্পের সংকল্পের অভিন্ন অঙ্গ। এই পাঁচ বছরে বারাণসী জনপদে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকার কাজ ইতিমধ্যেই সম্পূর্ণ হয়েছে কিংবা দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। দেবী অহল্যাবাঈ হোল্করের সময়ের পর কাশী নগরীর উন্নয়নে এত ব্যাপক কাজ হচ্ছে; এর পেছনে মহাদেবের ইচ্ছা, বাবা ভোলের আশীর্বাদ রয়েছে। আমাদের সৌভাগ্য যে বাবা এই কাজগুলি করার দায়িত্ব আমাদের সকলকে দিয়েছেন। এর ফলে, বেনারস সহ গোটা পূর্বাঞ্চল লাভবান হচ্ছে। বিশেষ করে, পরিকাঠামো উন্নয়ন, সড়কপথ, মহাসড়ক, রেলপথ, জলপথ উন্নয়নকে সরকার অগ্রাধিকার দিয়েছে। পূর্বাঞ্চল এক্সপ্রেসওয়েতে যোগীজীর টিম দ্রুতগতিতে কাজ করছে। অতি শীঘ্রই সমগ্র এলাকা এর মাধ্যমে লাভবান হবে।

আজ এখানে চৌকাঘাট – লহরতারা সড়কপথে নির্মিত সেতুটি উদ্বোধন হ’ল। আগের অবস্থা আপনারা জানেন ক্যান্ট রেল স্টেশন থেকে শুরু করে ‘ভূ’, বাসস্ট্যান্ড ও বিমানবন্দর থেকে আসা-যাওয়ার কত সমস্যা হ’ত, কেমন যানজট হ’ত। আজ থেকে এসব এলাকা যানজটমুক্ত হ’ল। এই চার লেনের সেতু লহরতারা – ইলাহাবাদ এবং চৌকাঘাট – দীনদয়াল উপাধ্যায় নগরের পথও এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। এছাড়া, ভিন্ন ভিন্ন গ্রামকে যুক্ত করা ১৬টি সড়কপথও আজ উদ্বোধন হয়েছে। এর ফলে, প্রয়াগরাজ, মির্জাপুর, জৌনপুর, গাজীপুর, আজমগড়, গোরখপুর বালিয়া হয়ে বিহারে যাতায়াতকারী মানুষ উপকৃত হবেন। যাঁরা সারনাথ সহ অন্য অনেক পর্যটন-স্থলে যেতে চান – এই রাস্তাগুলি তাঁদেরও সময় সাশ্রয় করবে।

বন্ধুগণ, কাশী সহ এই সমগ্র এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের কাজ আপনাদের পরিষেবা প্রদানের পাশাপাশি, অনেক মানুষের কর্মসংস্থানের উপায় হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে, পর্যটন-ভিত্তিক রোজগার, কাশী এবং পার্শ্ববর্তী অঞ্চলগুলিতে এর অপার সম্ভাবনা রয়েছে। পর্যটন একটি এমন ক্ষেত্র যেখানে প্রত্যেক স্তরের প্রত্যেক বর্গের মানুষ ন্যূনতম বিনিয়োগে অধিকতম উপার্জন করতে পারে। সেজন্যই আজ ভারতকে ৫ লক্ষ কোটি ডলার অর্থনীতির দেশে পরিণত করার জন্য বিবিধ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, পর্যটন এই উদ্যোগের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বৈচিত্র্যময় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি, ভারতের রয়েছে ‘হেরিটেজ ট্যুরিজম’ – এর অপার শক্তি, এগুলিকে একবিংশ শতাব্দীর উপযোগী পর্যটক পরিষেবা সমৃদ্ধ করে তোলার কাজ চলছে। বিশেষ করে, কাশী সহ আমাদের আস্থা ও আধ্যাত্মের সঙ্গে যুক্ত সমস্ত অঞ্চলগুলিকে নতুন প্রয়োজন অনুসারে, নতুন প্রযুক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে বিকশিত করা হচ্ছে। সারনাথের সৌন্দর্যায়ন, গঙ্গার ঘাটগুলির সৌন্দর্যায়নের ফলে আজ যে পর্যটক এবং শ্রদ্ধালুরা কাশীতে আসেন, প্রত্যেকেই একটি সুখকর অভিজ্ঞতা নিয়ে ফেরেন। কিছু দিন আগে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী এখানে এসেছিলেন। এখানকার অদ্ভুত আবহ, দিব্য অভিজ্ঞতা তাঁকে মন্ত্রমুগ্ধ করেছে। আপনারা অনেকে হয়তো দেখেছেন যে, এই অদ্ভুত অভিজ্ঞতার কথা তিনি সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করেছেন। কাশীবাসীর ভুয়সী প্রশংসা করেছেন।

বন্ধুগণ, কাশী বিশ্বনাথ ধাম সংস্কার প্রকল্পগুলির কাজ কিভাবে এগোচ্ছে, সে সম্পর্কে আপনারা সবাই জানেন। আজও এখানে মন্দির পরিসরে নবনির্মিত ‘অন্নক্ষেত্র’ উদ্বোধন হয়েছে। এর ফলে, কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরে অসংখ্য তীর্থযাত্রীকে প্রসাদ বিতরণ এবং ভক্তদের ভোজনকালীন সমস্ত অসুবিধা দূর হয়েছে। কাশী বিশ্বনাথ ধামের অন্যান্য কাজও দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। অতি শীঘ্রই সবাই কাশী ধামের দিব্য প্রাঙ্গণকে একটি সুরম্য রূপে দেখতে পাবেন। এভাবে অযোধ্যায় শ্রীরাম জন্মভূমিতে সুরম্য মন্দির নির্মাণের জন্য ট্রাস্ট গঠন করা হয়েছে। এই ট্রাস্ট এখন দ্রুতগতিতে শ্রীরাম ধাম নির্মাণের কাজ শুরু করবে।

ভাই ও বোনেরা, সারা দেশে আস্থা ও আধ্যাত্ম কেন্দ্রগুলি সংস্কারের পাশাপাশি, তীর্থযাত্রী ও পর্যটকদের জন্য নানা আধুনিক পরিষেবার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। নিরন্তর যাতায়াতের উন্নত ব্যবস্থা গড়ে তোলা হচ্ছে। আজ যে বাবা বিশ্বনাথের নগরীর সঙ্গে ওমকারেশ্বর এবং মহাকালেশ্বরের সংযোগ স্থাপনকারী কাশী-মহাকাল এক্সপ্রেস ট্রেনটি সবুজ পতাকা দেখানো হয়েছে, তাও এই কর্মযজ্ঞেরই অংশ। এখন তীর্থযাত্রীরা কাশীতে বাবা বিশ্বনাথ দর্শনের পর সহজেই উজ্জয়িনীতে মহাকালেশ্বর দর্শন করতে পারবেন, আর তারপর আবার ইন্দোরে ওমকারেশ্বরকে শ্রদ্ধা জানাতে যেতে পারবেন। শুধু তাই নয়, এই রেল পরিষেবা প্রয়াগরাজ, লক্ষ্ণৌ, কানপুর, ঝাঁসী, বীনা, সন্ত হিরদারাম – এর মতো ধার্মিক এবং ঐতিহাসিক গুরুত্বসম্পন্ন স্থানগুলিকেও যুক্ত করবে। এটি মহাশিবরাত্রি উপলক্ষে বাবার ভক্তদের জন্য একটি বিশেষ উপহার।

ভাই ও বোনেরা, কাশী যুগ যুগ ধরে আস্থা ও আধ্যাত্মের পাশাপাশি, বিশ্বের প্রাচীনতম জ্ঞান কেন্দ্রগুলির অন্যতম। বিগত পাঁচ বছরে বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জ্ঞান-বিজ্ঞানের বৃহৎ কেন্দ্রটিকে আরও সম্প্রসারিত করা হয়েছে। আজ ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈদিক জ্ঞান-বিজ্ঞান থেকে শুরু করে আধুনিক চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত অনেক পরিষেবা উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ বারাণসী, পূর্বাঞ্চলের অনেক বড় ‘মেডিকেল হাব’ রূপে উঠে আসছে। এখানে ক্যান্সারের মতো কঠিন রোগের আধুনিক চিকিৎসার জন্য বেশ কয়েকটি হাসপাতাল গড়ে উঠেছে। আগে যেসব রোগের চিকিৎসার জন্য দিল্লি কিংবা মুম্বাইয়ের মতো বড় শহরে যেতে হ’ত, সেগুলির চিকিৎসা এখন এখানেই সম্ভব হচ্ছে। এর ফলে, উত্তর প্রদেশবাসীর পাশাপাশি পূর্ব ভারতের অনেক মানুষ উপকৃত হচ্ছেন। বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে আজ যে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের উদ্বোধন হয়েছে – এর শিলান্যাসও আমিই করেছিলাম ২০১৬ সালের শেষ দিকে। মাত্র ২১ মাসে নির্মিত ৪৩০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল কাশী তথা পূর্বাঞ্চলের মানুষের পরিষেবার জন্য প্রস্তুত। কবীরচৌরায় জেলা মহিলা চিকিৎসালয়ে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট প্রসূতি বিভাগ শহরের মহিলাদের উপকৃত করবে। আমি যোগীজী এবং তাঁর টিমকে এজন্য ধন্যবাদ জানাবো যে, গোটা উত্তর প্রদেশে মেডিকেল কলেজ এবং আয়ুষ্মান যোজনার মাধ্যমে হেলথ অ্যান্ড ওয়েলনেস সেন্টার চালু করাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, বিশুদ্ধ পানীয় জল এবং পরিচ্ছন্নতা সুনিশ্চিত করতে বিগত ২-৩ বছর ধরে যে কর্মযজ্ঞ চলছে, তা রাজ্যে এনসেফেলাইটিসের মতো অনেক রোগ প্রতিরোধে কার্যকরী ভূমিকা পালন করছে।

বন্ধুগণ, বিগত পাঁচ – সাড়ে পাঁচ বছরে যেসব ক্ষেত্রে আমরা সাফল্য পেয়েছি, সেগুলিকে আরও দ্রুতগতিতে সম্প্রসারিত করার প্রয়োজন রয়েছে। পরিচ্ছন্নতা অভিযান একই গতিতে চালিয়ে যেতে হবে। তেমনই জল জীবন মিশনের মাধ্যমে আগামী পাঁচ বছরে প্রত্যেক বাড়িতে জল পৌঁছে দেয়ার অভিযান পূর্ণ উদ্যমে চালিয়ে যেতে হবে। আমি আপনাদের আশ্বস্ত করছি যে, এজন্য বাজেটে অর্থের যোগান কমবে না, সরকারের ইচ্ছাশক্তিও ফিকে হবে না। মহাদেবের ইচ্ছায় আমরা সবাই মিলে বেনারসের কায়াকল্প করবো।

ভাই ও বোনেরা,পরিবর্তিত ভারতে দেশের উন্নয়ন গাথায় বড় বড় মহানগর থেকে বেশি করে নতুন নতুন অধ্যায় লেখার কাজ করবে বারাণসীর মতো টিয়ার-২ কিংবা টিয়ার-৩ শহরগুলিই। দীনদয়ালজী যে অন্ত্যোদয়ের কথা বলতেন, সেরকমই দেশের ছোট শহরগুলির উন্নয়ন, দেশের উন্নয়নকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেবে। এই সব ছোট শহর কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পগুলির মাধ্যমে সবচাইতে বেশি লাভবান হয়েছে। এবারের বাজেটেও সরকার ঘোষণা করেছে, পরিকাঠামো উন্নয়নে ১০০ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি খরচ করা হবে। এর সিংহভাগ খরচ হবে ছোট ছোট শহরগুলির পরিকাঠামো উন্নয়নে।

বন্ধুগণ, দীনদয়ালজী বলতেন যে, আত্মনির্ভরতা এবং স্ব-সহায়তা। আমাদের সরকার তাঁর এই ভাবনাকে আমাদের কর্মসংস্কৃতিতে নিরন্তর প্রয়োগ করে চলেছে। আপনারা দেখুন, ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’র মূলে রয়েছে আত্মনির্ভরতা। আজ রেলের কামরা থেকে শুরু করে মোবাইল ফোন এবং সেনাবাহিনীর জন্য আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র ভারতেই নির্মিত হচ্ছে। গত পাঁচ বছরে পূর্বাঞ্চল সহ গোটা উত্তরপ্রদেশে অনেক নতুন কারখানা খুলেছে।

ভাই ও বোনেরা, আমাদের সরকার সমাজের প্রান্তিক মানুষদের কাছে পৌঁছনোর জন্য, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলিতে উন্নয়নের সুফল পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে। আপনারাই বলুন, আজ আয়ুষ্মান ভারত যোজনার মাধ্যমে যে ৫০ কোটিরও বেশি দেশবাসীর জন্য ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনামূল্যে চিকিৎসা সম্ভব হচ্ছে, তাঁরা কারা? গত ৭০ বছর ধরে তাঁরা উন্নয়নের সবচাইতে নীচের ধাপেই তো ছিলেন। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ইতিমধ্যেই দেশের প্রায় ৯০ লক্ষ গরিব মানুষের রোগমুক্তি সম্ভব হয়েছে, এর মধ্যে উত্তর প্রদেশের ৩ লক্ষ, আর শুধু বারাণসীর ১৬ হাজার গরিব রোগীর নিরাময় হয়েছে। দেশে সেই ১১ কোটি বন্ধুও উন্নয়নের শেষের ধাপেই ছিলেন, যাঁদের বাড়িতে প্রথমবার শৌচালয় নির্মিত হয়েছে। দেশের সেই ৮ কোটি বন্ধুও উন্নয়নের শেষ ধাপে ছিলেন, যাঁদের রান্নাঘরে বিনামূল্যে রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার বিতরণ করা হয়েছে। সুবিধাভোগীদের মধ্যে কাশীর ২ লক্ষ আর সমগ্র উত্তর প্রদেশের দেড় কোটি মানুষ রয়েছেন। এই ২ লক্ষের মধ্যে ৫০ হাজার দলিত পরিবারের মানুষ।

দেশের প্রায় ২ কোটি বন্ধু পাকাবাড়ি পেয়েছেন, তাঁরাও উন্নয়নের অন্তিম ধাপে রয়েছেন। আজ যে ২৪ কোটি দেশবাসী ৪ লক্ষ টাকা পর্যন্ত দুর্ঘটনা এবং জীবন বিমার পরিষেবা পাচ্ছেন, তাঁরাও অন্তিম ধাপে ছিলেন। যে কোটি কোটি কৃষক, শ্রমিক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ৬০ বছর বয়সের পর মাসিক ৩ হাজার টাকা পেনশন পাওয়া সুনিশ্চিত হয়েছে, তাঁরাও উন্নয়নের শেষ ধাপে ছিলেন।

বন্ধুগণ, স্বাধীনতার পর এত দশক ধরে তাঁরা উন্নয়নের শেষ ধাপে ছিলেন, কারণ রাজনীতিবিদেরা তাঁদের সমস্যা সমাধান না করে তাঁদেরকে অনুন্নয়নের অন্ধকারে ফেলে রাখাকেই নিজেদের রাজনৈতিক লাভ বলে ভাবতেন। কিন্তু এখন পরিস্থিতি বদলাচ্ছে, দেশ বদলাচ্ছে, যাঁরা উন্নয়নের শেষ ধাপে ছিলেন, তাঁদেরকেই এখন উন্নয়নের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। মহাদেবের আশীর্বাদে দেশে আজ এমন সব সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে, যেগুলি সর্বদা এড়িয়ে যাওয়া হ’ত। জম্মু ও কাশ্মীর থেকে সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করা থেকে শুরু করে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন, অনেক বছর ধরে দেশবাসী এ ধরনের সিদ্ধান্তের প্রতীক্ষায় ছিলেন। দেশের স্বার্থে এই সিদ্ধান্তগুলি অত্যন্ত জরুরি ছিল আর দুনিয়ার যাবতীয় চাপ সত্ত্বেও আমরা এই সিদ্ধান্তে অনড় ও অটল থাকবো। আজ বাবা ভোলেনাথের নগরীতে, অবধূত বাবা ভগবান রামের সান্নিধ্যে, দীনদয়ালের স্মৃতিতে, আমি কাশীর মানুষকে, দেশের মানুষকে এই আশ্বাস দিচ্ছি যে, দেশের স্বার্থে আমাদের এই কর্মযজ্ঞ চলতে থাকবে।

আরেকবার আপনাদের সবাইকে এখানে এত বিপুল সংখ্যায় উপস্থিত হয়ে আমাকে আশীর্বাদ প্রদানের জন্য, অনেক অনেক ধন্যবাদ!!!

ভারতমাতার জয় !!!

ভারতমাতার জয় !!!

ভারতমাতার জয় !!!

******

CG/SB/SB