প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে আজ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে ২০২১ সালে জনগণনা পরিচালনা এবং জাতীয় জনসংখ্যা পঞ্জীতে নতুন তথ্য সংযোজনের প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। জনগণনা পরিচালনার জন্য খরচ ধরা হয়েছে ৮ হাজার ৭৫৪ কোটি ২৩ লক্ষ টাকা এবং জনসংখ্যা পঞ্জীতে সংশোধনের কাজে খরচ ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৯৪১ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকা।
মন্ত্রিসভার এই সিদ্ধান্তের ফলে সারা দেশে জনগণনার কাজ পরিচালিত হবে এবং আসাম বাদ দিয়ে দেশের বাকি অংশে জাতীয় নাগরিক পঞ্জীতে সংশোধনের কাজ হবে। উল্লেখ করা যেতে পারে, ভারতে জনগণনার কাজ বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বৃহৎ প্রশাসনিক ও পরিসংখ্যানগত কর্মযজ্ঞ। প্রত্যেক দশক-ভিত্তিক জনগণনার কাজ ২০২১ সালে পরিচালিত হবে। দুটি পর্যায়ে জনগণনার কাজ চলবে। প্রথম পর্যায়ে গৃহের তালিকাভুক্তি ও গণনা সংক্রান্ত কাজ চলবে ২০২০-র এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত। দ্বিতীয় পর্যায়ে জনগণনার কাজ চলবে ২০২১ সালের ৯ই ফেব্রুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
আসাম বাদ দিয়ে দেশের বাকি অংশে গৃহ তালিকাভুক্তি ও গণনা সংক্রান্ত কাজ চলার পাশাপাশি, জাতীয় নাগরিক পঞ্জীতে প্রয়োজনীয় সংশোধনের কাজও চলবে। বৃহৎ এই জনগণনা প্রক্রিয়ায় ৩০ লক্ষ কর্মী নিযুক্ত থাকবেন। জনগণনার কাজে তথ্য সংগ্রহের জন্য মোবাইল অ্যাপ এবং সমগ্র প্রক্রিয়ায় নজরদারির জন্য কেন্দ্রীয় স্তরে একটি পোর্টাল কাজে লাগানো হবে। জনসংখ্যা সম্পর্কিত তথ্য প্রচারের কাজ এমন ব্যবহার-বান্ধব পদ্ধতিতে করা হবে, যাতে সিদ্ধান্ত রচনার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় মাপকাঠি অনুযায়ী যাবতীয় তথ্য একটি বোতাম টিপলেই পাওয়া যাবে। দূর করা যায়। পরিষেবা হিসাবে জনগণনা বিভিন্ন মন্ত্রককে তাদের চাহিদা মতো সুস্পষ্ট ও সহজলভ্য বিভিন্ন তথ্য সরবরাহ করবে।
জনগণনা কেবল পরিসংখ্যান সংগ্রহের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। জনগণনার সমস্ত ফলাফল পরিবেশ-বান্ধব উপায়ে জনগোচরে আনা হবে। এ সম্পর্কিত সমস্ত তথ্য সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের ব্যবহারের জন্য রাখা হবে, যাতে প্রয়োজনে সিদ্ধান্ত প্রণয়নের ক্ষেত্রে সাহায্য পাওয়া যায়। জনসংখ্যা সম্পর্কিত তথ্য সরকারি নীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রে এক শক্তিশালী হাতিয়ার। অবশ্য, অন্যান্য প্রশাসনিক ও সমীক্ষাগত তথ্যের ভূমিকাও সমান প্রাসঙ্গিক।
দু’মাস ধরে বিরাট এই কর্মযজ্ঞের আরও একটি সুফল হ’ল জনগণনা প্রক্রিয়ায় সারা দেশে এমনকি, প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলিতেও পরোক্ষ কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। এই প্রক্রিয়ায় প্রত্যেকটি বাড়িতে জনগণনা কর্মীরা যাবেন এবং পৃথক পৃথক প্রশ্নমালা নিয়ে তাঁরা সাধারণ মানুষের উত্তর জানার চেষ্টা করবেন। ২০২১ সালের জনগণনায় নতুন উদ্যোগগুলির মধ্যে রয়েছে – তথ্য সংগ্রহের জন্য এই প্রথমবার মোবাইল অ্যাপের ব্যবহার। সমগ্র প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা ও নজরদারির জন্য কেন্দ্রীয় স্তরে পোর্টাল। জনগণনা প্রক্রিয়ার সময় সাধারণ মানুষের স্বার্থে নিজের নাম নিজেই অনলাইনে অন্তর্ভুক্ত করতে পারবেন। পাবলিক ফিনান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এবং প্রত্যক্ষ সুবিধা হস্তান্তর ব্যবস্থার মাধ্যমে জনগণনা প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেক কর্মীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে তাঁদের সাম্মনিক বা ভাতা পৌঁছে দেওয়া। জনগণনা প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য তৃণমূল স্তরে ৩০ লক্ষ কর্মীকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
উল্লেখ করা যেতে পারে, ১৮৭২ সাল থেকে নিয়মিতভাবে এক দশক অন্তর ভারতে জনগণনা হয়ে আসছে। ২০২১ সালের জনগণনা ভারতের ষোড়শ জনগণা এবং স্বাধীনতার পর অষ্টম। জনগণনা হ’ল এমন এক প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে গ্রাম, শহর, ব্লক এমনকি ওয়ার্ড স্তরে গৃহ, মৌলিক সুযোগ-সুবিধা, জনসংখ্যাগত বৈশিষ্ট্য, ভাষা, সাহিত্য ও শিক্ষা, অর্থনৈতিক কর্মকান্ড সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য পাওয়া যায়।
আরও উল্লেখ করা প্রয়োজন ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইন এবং ২০০৩ সালের সিটিজেনশিপ রুল – এর বিভিন্ন ধারার আওতায় ২০১০ সালে জাতীয় জনসংখ্যা পঞ্জী তৈরি করা হয়। ২০১৫ সালে আধার সংযুক্তিকরণ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে জনসংখ্যা পঞ্জীতে নতুন তথ্য সংযোজন করা হয়েছে।
CG/BD/SB……24_December_2019……(222)…..(1597350)