প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে আজ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে ভারতীয় রেলে রূপান্তরমূলক সাংগঠনিক পুনর্গঠনের প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। সংস্কারের এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত রেলকে ভারতের বিকাশ যাত্রার চালিকাশক্তি হিসাবে পরিণত করবে। সংস্কারমূলক পদক্ষেপগুলির মধ্যে রয়েছে – রেলের ৮টি ‘গ্রুপ এ’ সার্ভিসকে সেন্ট্রাল সার্ভিসের সমতুল করা এবং নামকরণ করে ইন্ডিয়ান রেলওয়ে ম্যানেজমেন্ট সার্ভিস করা; ৪ জন সদস্য ও কয়েকজন নিরপেক্ষ সদস্য সহ রেল বোর্ডের চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে রেল বোর্ডের কাজকর্ম প্রক্রিয়ার পুনর্গঠন এবং বর্তমানে চালু ইন্ডিয়ান রেলওয়ে মেডিকেল সার্ভিসের নাম বদলে ইন্ডিয়ান রেলওয়ে হেলথ সার্ভিস করা।
ভারতীয় রেল সমগ্র রেল নেটওয়ার্কের আধুনিকীকরণে এক উচ্চাকাঙ্খী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। সেই অনুসারে, আগামী ১২ বছরে সুরক্ষা ও নিরাপত্তা, গতি ও যাত্রী পরিষেবার ক্ষেত্রে উৎকৃষ্ট মানের পরিষেবা প্রদানে ৫০ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রস্তাব রয়েছে। আজ মন্ত্রিসভার বৈঠকে যে সমস্ত সংস্কারের কথা ঘোষণা করা হয়েছে, সেগুলি কেন্দ্রীয় বাজেটের সঙ্গে মিশে যাওয়া রেল বাজেটেই উল্লেখ করা ছিল। এছাড়াও, রেলের জেনারেল ম্যানেজার ও ফিল্ড অফিসারদের আরও বেশি ক্ষমতা দেওয়ার বিষয়টিও বাজেট প্রস্তাবের মধ্যে ছিল।
বিভিন্ন ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও বর্তমান সমস্যাগুলি সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। সারা বিশ্বেই রেল ব্যবস্থাকে কর্পোরেট-চালিত করা হয়েছে। কিন্তু ভারতে এখনও রেল চলাচল ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণ সরাসরি সরকারের হাতে রয়েছে। রেলের বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে সংযুক্তিকরণ ঘটিয়ে রেল ব্যবস্থাকে আরও কার্যকর করে তোলা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়াকে আরও ত্বরান্বিত করতেই সরকারের এই উদ্যোগ। ভারতীয় রেলের সংস্কারের লক্ষ্যে গঠিত একাধিক কমিটি বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে অভিন্ন পরিষেবা দানের ক্ষেত্রে সংযুক্তিকরণের প্রস্তাব রেখেছিল। ২০১৫ সালে সর্বশেষ বিবেক দেবরায় কমিটির পক্ষ থেকেও একই প্রস্তাব দেওয়া হয়। কর্মীবর্গ ও প্রশিক্ষণ দপ্তরের সহায়তায় রেল মন্ত্রক বিভিন্ন পরিষেবার ক্ষেত্রে অভিন্নতা আনার জন্য প্রয়োজনীয় পন্থাপদ্ধতি ও তার রূপায়ণের বিষয় চূড়ান্ত করবে। সমগ্র প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও সততা বজায় রাখতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার পক্ষ থেকে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিকল্প এই ব্যবস্থার চূড়ান্ত রূপ দিতে সময় ধরা হয়েছে এক বছর।
রেল বোর্ড বিভিন্ন বিভাগের মাধ্যমে কার্য পরিচালনার পরিবর্তে চেয়ারম্যান নিয়োগ করে কাজকর্ম রূপায়ণের পরিকল্পনা করেছে। বোর্ডের এই চেয়ারম্যান মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক হিসাবে কাজ করবেন। তাঁকে সহায়তার জন্য থাকবেন আরও চার জন সদস্য, যাঁরা পরিকাঠামো, পরিচালনা ও ব্যবসায়িক কাজকর্ম, রোলিং স্টক এবং আর্থিক বিষয়গুলি দেখাশোনা করবেন। এছাড়াও, বোর্ডে কয়েকজন নিরপেক্ষ সদস্যও থাকবেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে নিরপেক্ষ সদস্য চূড়ান্ত করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে। তবে, সদস্যদের ৩০ বছরের সুদীর্ঘ অভিজ্ঞতার ভিত্তিতেই মনোনীত করা হবে। নিরপেক্ষ সদস্যরা রেল বোর্ডকে কৌশলগত রূপরেখা চূড়ান্ত করতে সাহায্য করবে। সংশ্লিষ্ট আধিকারিক ও সদস্যরা চূড়ান্ত হওয়ার পরই পুনর্গঠিত বোর্ডের কাজকর্ম শুরু হবে।
CG/BD/SB