Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

ইকোসক চেম্বার-এ সমসাময়িক বিশ্বে মহাত্মা গান্ধীর প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে আলোচনা


বিশ্বশান্তি ও অহিংসার এক উজ্জ্বল ও বিরলতম ব্যক্তিত্ব মহাত্মা গান্ধীর জন্মের সার্ধশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী রাষ্ট্রসঙ্ঘের সদর দপ্তরের ইকোসক চেম্বারে রাষ্ট্রসঙ্ঘের ৭৪তম সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে এই উচ্চস্তরীয় বৈঠকের আয়োজন করেন।

এই বৈঠকে রাষ্ট্রসঙ্ঘের মহাসচিব মিঃ অ্যান্তোনিও গুতেরেস, কোরিয়া প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি মিঃ মুন জে-ইন, সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী মিঃ লি হিয়েন লুং, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী শেখ হাসিনা, জামাইকার প্রধানমন্ত্রী মিঃ অ্যান্ড্রু হোলনেস, নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মিস জেসিন্ডা আর্ডেন উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়াও বৈঠকে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী মিঃ লোটে শেরিং, কোরিয়া প্রজাতন্ত্রের ফার্স্ট লেডি মিসেস কিম জুং-সুক সহ রাষ্ট্রসঙ্ঘের উচ্চপদস্থ আধিকারিক ও সদস্য রাষ্ট্রগুলির কূটনীতিকরা উপস্থিত ছিলেন।

ভারতের বিদেশ মন্ত্রী ডঃ এস জয়শঙ্কর স্বাগত ভাষণ দেন। বৈঠকে অংশগ্রহণকারী বিশিষ্ট ব্যক্তিরা যৌথভাবে রাষ্ট্রসঙ্ঘের সদর দপ্তরে গান্ধী সৌর পার্ক (রাষ্ট্রসঙ্ঘকে ভারত সরকারের উপহার), ওল্ড ওয়েস্টবারিতে স্টেট ইউনিভার্সিটি অফ নিউ ইয়র্ক কলেজে গান্ধী শান্তি উদ্যানের উদ্বোধন করেন। এছাড়া, গান্ধীজির জন্মের ১৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষে রাষ্ট্রসঙ্ঘের ডাক বিভাগের পক্ষ থেকে একটি স্মারক ডাকটিকিটেরও আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করেন।

এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী বিংশ শতাব্দীতে মানুষের স্বাধীনতার স্বার্থে মহাত্মা গান্ধীর অসামান্য অবদানের কথা উল্লেখ করেন। সকলের কল্যাণ, বঞ্চিতদের ক্ষমতায়নের পাশাপাশি পরিবেশের বিলুপ্তি প্রতিরোধের ওপর গুরুত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী মহাত্মা গান্ধীর সকলের ইচ্ছার প্রতি আস্থা, অভিন্ন নিয়তি, নৈতিকতা, গণ-আন্দোলন এবং ব্যক্তিগত দায়বদ্ধতার বর্তমান প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দ্বন্দ্ব, সন্ত্রাসবাদ, আর্থিক বৈষম্য, আর্থ-সামাজিক বঞ্চনা ও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো ভয়াবহ বিপদগুলি সাধারণ মানুষ, রাষ্ট্র ও সমাজ জীবনের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। এই প্রেক্ষিতে এ ধরনের সমস্যাগুলির মোকাবিলায় যোগ্য নেতৃত্বদানের প্রয়োজন রয়েছে। গান্ধীজির মূল্যবোধ নেতৃত্বদানের ক্ষেত্রে বড় নৈতিকতার ভূমিকা পালন করতে পারে।

রাষ্ট্রসঙ্ঘের মহাসচিব মিঃ গুতেরেস বলেন, গান্ধীজি আমাদের যুক্তিসম্মত বিচার ও নীতি রূপায়ণে এক অলৌকিক ক্ষমতা দিয়েছিলেন। গান্ধীজির এই মূল্যবোধকে কাজে লাগিয়ে দরিদ্রতর মানুষের জীবন, মর্যাদা ও ভাগ্যে পরিবর্তন আনা যেতে পারে। শিক্ষা, লিঙ্গ সমতা, স্বচ্ছতা, মহিলাদের ক্ষমতায়ন, ক্ষুধা হ্রাস এবং উন্নয়নের জন্য অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার আদর্শের ওপর ভিত্তি করেই গান্ধীজির জীবন ও কর্ম পরিচালিত হয়েছিল। আজ আমরা যে সুস্থায়ী উন্নয়নের উদ্দেশ্য অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করেছি, তা গান্ধীজি অনেক আগেই উপলব্ধি করেছিলেন। প্রকৃত অর্থে সুস্থায়ী উন্নয়নের উদ্দেশ্যগুলি অর্জনের মধ্যে গান্ধীজির দর্শনতত্ত্ব লুকিয়ে রয়েছে।

বৈঠকে অংশগ্রহণকারী নেতৃবৃন্দ এই উপলক্ষে গান্ধীজির আদর্শের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, গান্ধীজির পরম্পরা বহু প্রজন্ম ধরে অক্ষুণ্ণ থাকবে। তাঁরা বলেন, গান্ধীজি জাতি, ধর্ম ও রাষ্ট্রের ভেদাভেদ ভেঙে দিয়ে একবিংশ শতাব্দীর ভবিষ্যৎ বক্তা হয়ে উঠেছিলেন। তিনি ছিলেন এক বহুমুখী ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব। তিনি একাধারে ছিলেন যতটা জাতীয়তাবাদী, ততটাই আন্তর্জাতিকতাবাদী। সমাজ সংস্কার ও পরিবর্তনে তাঁর সক্রিয় ভূমিকা তাঁকে জাতীয়তাবাদের বেড়া ভেঙে আন্তর্জাতিক মঞ্চে প্রতিষ্ঠিত করেছিল। সারা বিশ্ব মহাত্মাকে কেবল তাঁর অহিংসা ও মানবতাবাদের জন্যই নয়, তাঁর করুণা ও সহমর্মিতার জন্যও মনে রেখেছে।

******

CG/BD/DM