Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ সভার ৭৪-তম অধিবেশনে ক্লাইমেট অ্যাকশন সামিট-২০১৯এ প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ


 

বিশ্ব জলবায়ু শীর্ষ সম্মেলন আয়োজন করার জন্য আমি রাষ্ট্রসঙ্ঘের মহাসচিবকে ধন্যবাদ জানাই।

 

গত বছর চ্যাম্পিয়ন অফ্ দ্য আর্থ পুরস্কার পাওয়ার পর, রাষ্ট্রসঙ্ঘে ভাষণ দেওয়ার এটাই আমার কাছে প্রথম সুযোগ। নিউ ইয়র্কে আমার সফরে প্রথম বৈঠক জলবায়ু নিয়ে হওয়ার জন্য আমি অত্যন্ত আনন্দিত।

 

মহামহিমগণ,

 

জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলায় বিভিন্ন দেশ একাধিক পদক্ষেপ নিচ্ছে।

 

আমাদের একথা স্বীকার করতেই হবে যে, জলবায়ু পরিবর্তনের মতো জটিল সমস্যা মোকাবিলায় যদি আমাদের জয়ী হতে হয়, তাহলে আমরা বর্তমানে যে সমস্ত পদক্ষেপ নিয়েছি তা যথেষ্ঠ নয়।

 

জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলায় আজ প্রয়োজন এক সুসংবদ্ধ প্রয়াস। এই প্রয়াসের মধ্যে শিক্ষা থেকে মূল্যবোধ, জীবনশৈলি থেকে উন্নয়নমূলক আদর্শের বিষয়গুলিকেও অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এখন আমাদের আচার-আচরণগত পরিবর্তন আনার জন্য বিশ্বব্যাপী গণ-আন্দোলন গড়ে তোলার প্রয়োজন রয়েছে।

 

প্রকৃতির প্রতি শ্রদ্ধা প্রর্দশন, সম্পদের যুক্তিগ্রাহ্য ব্যবহার, আমাদের দৈনন্দিন চাহিদা হ্রাস করা এবং সীমিত সম্পদ কাজে লাগিয়ে জীবনযাপন সবক্ষেত্রেই আমাদের পরম্পরা ও বর্তমান সময়ের যাবতীয় প্রয়াসের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। নির্লোভ থাকাই আমাদের আদর্শ।

 

ভারত আজ এখানে জলবায়ু পরিবর্তনের মতো জটিল বিষয়ে কেবল কিছু কথা বলার জন্যই নয়, বরং এক বাস্তবসম্মত প্রয়াস ও সুচিন্তিত পরিকল্পনা নিয়ে উপস্হিত হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি উপদেশ-পরামর্শ দেওয়ার চেয়ে সঠিক পন্হা-পদ্ধতি মেনে চলা অনেক বেশি কার্যকর।

 

ভারতে আমরা জীবাশ্ম বর্হিভূত জ্বালানী ব্যবহারের পরিমাণ বাড়ানোর লক্ষ্যে অগ্রসর হচ্ছি। ২০২২ সালের মধ্যে পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি উৎপাদনের পরিমাণ ১৭৫ গিগাওয়াটের বেশি বাড়ানোর পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে। পরে, তা আরও বাড়িয়ে ৪৫০ গিগাওয়াট করা হবে।

 

ভারতে আমরা ই-মবিলিটি বা বৈদ্যুতিক যানবাহনের মাধ্যমে পরিবহণ ব্যবস্হাকে দূষণমুক্ত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি।

 

পেট্রোল ও ডিজেলে জৈব-জ্বালানী মিশ্রণের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যহারে বাড়ানোর ব্যাপারে ভারতে আমরা কাজ করছি।

 

আমরা ১৫ কোটি পরিবারের কাছে পরিচ্ছন্ন রান্নার গ্যাস পৌঁছে দিয়েছি।

 

জল সংরক্ষণ, বৃষ্টির জল সংরক্ষণ এবং জল সম্পদের উন্নয়নের জন্য আমরা জল জীবন মিশন শুরু করেছি। এই মিশনে আমরা আগামী কয়েক বছর প্রায় ৫০ বিলিয়ন ডলার খরচের পরিকল্পনা নিয়েছি।

 

আন্তর্জাতিক পর্যায়ে, প্রায় ৮০টি দেশ আন্তর্জাতিক সৌরজোট অভিযানে সামিল হয়েছে। অন্যান্য অংশীদারদের নিয়ে ভারত ও সুইডেন ইন্ডাস্ট্রি ট্রানজিসন ট্র্যাকের আওতায় লিডারশিপ গ্রুপের সূচনা করতে চলেছি। এই উদ্যোগ প্রযুক্তি উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে সহযোগিতার লক্ষ্যে সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রের জন্য এক উপযুক্ত মঞ্চ প্রদান করবে। শিল্প সংস্হাগুলিকে কার্বন নির্গমন কমাতেও এই উদ্যোগ সাহায্য করবে।

 

বিপর্যয় প্রতিরোধী পরিকাঠামো গড়ে তোলার জন্য ভারত এক জোটের সূচনা করতে চলেছে। আমি সদস্য রাষ্ট্রগুলিকে এই জোটে সামিল হওয়ার আমন্ত্রণ জানাই।

 

এবছর ১৫ আগস্ট ভারতের স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের দিন, আমরা একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বর্জনে গণ-আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছি। আমি আশা করি, একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বর্জনের লক্ষ্যে ভারতের এই উদ্যোগ প্লাস্টিকের ক্ষতিকারক প্রভাবগুলি সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী সচেতনতা গড়ে তুলবে।

 

মহামহিমগণ,

 

আমি একথা ঘোষণা করে আনন্দিত যে, আমরা আগামীকাল রাষ্ট্রসঙ্ঘ ভবনের ছাদে সৌর প্যানেলের উদ্বোধন করতে চলেছি। এই সৌর প্যানেল বসানোর জন্য ভারত ১০ লক্ষ মার্কিন ডলার তহবিল সহায়তা দিয়েছে।

 

কথা বলার সময় পেরিয়ে গেছে, এখন সময় এসেছে বিশ্বব্যাপী কাজ করার।

 

ধন্যবাদ, অনেক অনেক ধন্যবাদ।

 

 

CG/BD/NS