Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের ১০৬তম অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনী ভাষণ

ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের ১০৬তম অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনী ভাষণ

ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের ১০৬তম অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনী ভাষণ

ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের ১০৬তম অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনী ভাষণ


প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের ১০৬তম অধিবেশনে উদ্বোধনী ভাষণ দেন।

এবারের বিজ্ঞান কংগ্রেসের মূল ভাবনা ‘ভবিষ্যতের ভারত : বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি’। এই বিষয়টি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশবাসীর সঙ্গে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের সংযোগ ঘটানোই হবে ভারতের প্রকৃত শক্তি।

অতীতের বিশিষ্ট ভারতীয় বিজ্ঞানী আচার্য জগদীশ চন্দ্র বোস, সিভি রমণ, মেঘনাদ সাহা, সত্যেন্দ্রনাথ বসু প্রমুখের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহান এই বিজ্ঞানীরা স্বল্প সম্পদ সত্ত্বেও কঠোর ও আন্তরিক পরিশ্রমের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের সেবা করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, শত শত ভারতীয় বিজ্ঞানীর জীবন ও কর্ম প্রযুক্তিগত উন্নয়ন ও জাতি গঠনের সঙ্গে যুক্ত গভীর মৌলিক দৃষ্টিভঙ্গীর এক অভিন্ন ইচ্ছাশক্তির পরিচয় বহন করে। আধুনিক বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রগুলির মাধ্যমে ভারত তার বর্তমানকে পরিবর্তনের এবং নিজের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে।

শ্রী মোদী প্রাক্তন দুই প্রধানমন্ত্রী শ্রী লালবাহাদুর শাস্ত্রী এবং শ্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর কথা স্মরণ করেন। তিনি বলেন, শাস্ত্রীজির শ্লোগান ছিল ‘জয় জওয়ান, জয় কিষাণ’। অটলজি বলেছিলেন, ‘জয় বিজ্ঞান’। এখন সময় এসেছে, ‘জয় অনুসন্ধান’ বলে আরেক কদম এগিয়ে যাওয়ার।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিজ্ঞানের প্রকৃত উদ্দেশ্য পূর্ণ হবে জ্ঞান সমৃদ্ধ প্রজন্ম গড়ে তোলা এবং আর্থ-সামাজিক স্বার্থে জ্ঞান ব্যবহারের মাধ্যমে।

বিজ্ঞান সাধনার জন্য এক অনুকূল বাতাবরণ গড়ে তোলার পাশাপাশি, আমাদের উদ্ভাবন ও স্টার্ট আপের ওপর জোর দিতে হবে বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিজ্ঞানীদের মধ্যে উদ্ভাবনমূলক কাজকর্মের প্রসারে অটল উদ্ভাবন মিশন চালু করা হয়েছে। বিগত চার দশকের তুলনায় শেষ চার বছরে একাধিক প্রযুক্তি-ভিত্তিক বিজনেস ইনক্যুবেটর স্থাপন করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সুলভ স্বাস্থ্য পরিচর্যা, আবাসন, দূষণমুক্ত বায়ু, জল ও শক্তি সহ কৃষি উৎপাদনশীলতা এবং খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের সঙ্গে যুক্ত সমস্যাগুলির সমাধানে বিজ্ঞানীদের আরও বেশি মনোনিবেশ করতে হবে। বিজ্ঞান সর্বজনীন হলেও স্থানীয় চাহিদা ও পারিপার্শ্বিক অবস্থার সঙ্গে যুক্ত সমস্যাগুলির সমাধানে প্রযুক্তিকে উপযুক্তভাবে সদ্ব্যবহার করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বিগ ডেটা অ্যানালিসিস’, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ব্লক চেন সংক্রান্ত প্রযুক্তিগুলিকে কৃষি ক্ষেত্রে, বিশেষ করে চাষিদের স্বার্থে কাজে লাগাতে হবে।

সাধারণ মানুষের জীবনযাপনের মানোন্নয়নে কাজ করার জন্য বিজ্ঞানীদের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ প্রসঙ্গে কম বৃষ্টিপাত বিশিষ্ট এলাকায় খরা মোকাবিলা, বিপর্যয়ের প্রেক্ষিতে আগাম সতর্কতা ব্যবস্থা, অপুষ্টি মোকাবিলা, শিশুদের মধ্যে রোগ-জ্বালা নিয়ন্ত্রণ, দূষণমুক্ত শক্তি, পরিশ্রুত পানীয় জল এবং সাইবার নিরাপত্তার মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলির কথা উল্লেখ করেন।

২০১৮-তে ভারতীয় বিজ্ঞান ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সাফল্যের কথাও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। এর মধ্যে রয়েছে – বিমানের জন্য জৈব জ্বালানি উৎপাদন; স্বল্প দৃষ্টিসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য ‘দিব্য নয়ন’; ক্যান্সার, যক্ষ্মা ও ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য স্বল্প মূল্যের বিভিন্ন উপকরণ; সিকিম – দার্জিলিং অঞ্চলে ভূমিধ্বসের আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা প্রভৃতি।

ত্তিনি বলেন, শিল্প পণ্যগুলির মাধ্যমে গবেষণা ও উন্নয়নের সাফল্যগুলিকে একত্রিত করতে বাণিজ্যিকীকরণের এক মজবুত মাধ্যমের প্রয়োজন।

প্রধানমন্ত্রী সমাজ বিজ্ঞান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি তথা শিল্প ও মানবতাবাদকে মিশিয়ে এক অনন্য গবেষণামূলক প্রয়াস গ্রহণের আহ্বান জানান।

গবেষণা ও উন্নয়ন ক্ষেত্রে আমাদের শক্তি জাতীয় স্তরে গুরুত্বপূর্ণ গবেষণাগার, কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, আইআইটি, আইআইএসসি, টিআইএফআর এবং আইআইএসইআই – এর মতো প্রতিষ্ঠানগুলির ওপর ভিত্তি করেই গড়ে ওঠে। এ প্রসঙ্গে শ্রী মোদি বলেন, রাজ্যের অধীন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলিতেও গবেষণার উপযুক্ত বাতাবরণ গড়ে তুলতে হবে।

কেন্দ্রীয় সরকার ইন্টার ডিসিপ্লিনারি সাইবার ফিজিক্যাল সিস্টেম সংক্রান্ত এক জাতীয় মিশন অনুমোদন করেছে। এই কর্মসূচি রূপায়ণে ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হবে বলে তিনি জানান। কর্মসূচিতে গবেষণা ও উন্নয়ন, প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, মানবসম্পদ ও দক্ষতা, উদ্ভাবন, স্টার্ট আপ ইকোসিস্টেম-সহ শিল্প সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক স্তরে সহযোগিতা গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে।

মহাকাশ ক্ষেত্রে অগ্রগতির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী কার্টোস্যাট-২ এবং অন্যান্য উপগ্রহের উৎক্ষেপণে সাফল্যের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, গগণায়ন কর্মসূচির মাধ্যমে ২০২২ সাল নাগাদ তিনজন ভারতীয়কে মহাকাশে পাঠানোর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। রক্তাল্পতাজনিত রোগের কার্যকর সমাধানে গবেষণার কাজ শুরু হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী জানান।

প্রধানমন্ত্রী বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন বিষয়ক পরিষদ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে উপযুক্ত নীতি প্রণয়নে সাহায্য করবে বলেও তিনি জানান। প্রধানমন্ত্রীর গবেষণা ফেলোশিপ প্রকল্পের আওতায় দেশের সেরা প্রতিষ্ঠানগুলির এক হাজার প্রতিভাবান পড়ুয়াকে আইআইটি এবং আইআইএসসি প্রতিষ্ঠানে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের জন্য সরাসরি ভর্তির সুযোগ দেওয়া হবে বলেও প্রধানমন্ত্রী জানান। এই প্রকল্প গবেষণা ক্ষেত্রের উৎকর্ষসাধনের পাশাপাশি, দেশের অগ্রণী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ঘাটতি মেটাতে সাহায্য করবে।

***

CG/BD/SB