প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদির পৌরহিত্যে বুধবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভা দারিদ্র্য দূরীকরণের কর্মসূচি আরও সুনির্দিষ্টভাবে যাদের জন্য প্রয়োজন তাঁদের কাছে পৌঁছানোর জন্য গ্রামীণ কল্যাণ কর্মসুচিগুলিকে পরিবর্তনের অনুমোদন দিয়েছে| একই সঙ্গে জাতীয় শহুরে জীবিকা মিশন বা ন্যাশনাল রুরাল লাইভলিহুড মিশনের(এনআরএলএম)অধীনে আর্থিক সহায়তার সুযোগ আরও ১০০টি জেলায় বিস্তৃত করতে এবং দরিদ্র্য অংশের যুবক যুবতিদের আরও বেশি দক্ষ ও কর্মে নিয়োগ করতে হিমায়ত প্রকল্প ও দীন দয়াল উপাধ্যায় গ্রামীণ কৌশল যোজনার বরাদ্দ আরও নমনীয় করারও অনুমোদন দিয়েছে| তাছাড়া কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আসাম ছাড়া অন্য রাজ্যগুলিতে ২০২৩-২৪ সালের মধ্যে গ্রামীণ এলাকার প্রয়োজনীয় প্রতিটি বাড়িতে পৌঁছানোর জন্য অর্থ বরাদ্দের ক্ষেত্রে বর্তমান মানদণ্ড শিথিল করার জন্যও অনুমোদন দিয়েছে| যার মধ্যে রয়েছে—
ক) এনআরএলএম-এর রুপায়ণ কাঠামোয় পরিবর্তন:
১) আর্থ-সামাজিক ও জাতি ভিত্তিক সুমারি এবং এসইসিসি ডেটাবেস ব্যবহারের মাধ্যমে এবং অন্যান্য সামাজিক বিষয়ের প্রেক্ষাপটে দারিদ্র্য দূরীকরণে পরিকল্পনা| এসইসিসি ডেটাবেস সরকারকে গ্রামীণ এলাকায় দারিদ্র্য দূরীকরণের প্রকল্পগুলি আরও বেশি করে প্রকৃত সুবিধাভোগীদের কাছে পৌঁছে দেবে| এসইসিসি ডেটা ব্যবহারের মাধ্যমে এনআরএলএম-এ পঞ্চায়েতিরাজ সংস্থা ও স্ব-সহায়ক দলগুলিকে যুক্ত করে দারিদ্র্যমুক্ত পঞ্চায়েতের জন্য পরিকল্পনা নেওয়া হবে|
২) আরও ১০০টি জেলায় অর্থ সহায়তার বিস্তৃতি ঘটানো হবে| দেশের আরও ১০০টি জেলায় বর্তমান অর্থবর্ষ থেকে মহিলা পরিচালিত স্ব-সহায়ক দলকে বার্ষিক ৭ শতাংশ হারে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়া এবং দ্রুত পরিশোধের জন্য সরকার সুদের উপর অতিরিক্ত ৩ শতাংশ ছাড় দেবে ফলে কার্যকর সুদের হার ৪ শতাংশে নিয়ে আসার সুযোগ সম্প্রসারিত করা হবে| জেলা বাছাইয়ের ক্ষেত্রে মানদণ্ড হবে নিম্নরূপ:
অ) যেসব নতুন জেলাকে ইন্টিগ্রেটেড অ্যাকশন প্লান বা আইএপি হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে এবং এর মধ্যে যেগুলি আগের ১৫০ টি জেলার তালিকায় নেই, সেগুলি এবার যুক্ত হবে|
আ) বাকি জেলাগুলি ঠিক হবে রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের অনুপাতে| রাজ্যগুলি যোগ্য জেলা বাছাই করবে|
ই) রাজ্যগুলিকে দারিদ্র্য অনুপাত অনুযায়ী এনআরএলএম-র জন্য একটি মাত্র বরাদ্দ পাওয়ার শর্তটি নমনীয় করা হয়েছে|
৩) দীন দয়াল উপাধ্যায় গ্রামীণ কৌশল যোজনায় দক্ষতার উন্নয়নে আরও বেশি জোর দেওয়া| বর্তমানে দীন দয়াল উপাধ্যায় গ্রামীণ কৌশল যোজনায় বরাদ্দের ক্ষেত্রে এনআরএলএম বরাদ্দের সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ করার যে নিয়ম রয়েছে, তা উঠিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা| সহায়তার ক্ষেত্রকে আরও বিস্তৃত করতেই এই উদ্যোগ| যার মধ্যে রয়েছে বিদেশে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণের সময়সীমা আরও বৃদ্ধি করা, স্বীকৃত সংস্থার মাধ্যমে প্রশিক্ষণ, গ্রামীণ এলাকার দরিদ্র যুবক যুবতীর দক্ষতার মান বাড়ানো ইত্যাদি|
৪) এনআরএলএম-এর জন্য পেশাগত পরিচালনা খরচ (প্রশাসনিক খরচ)|
অ) এনআরএলএম-এর ক্ষেত্রে পেশাগত পরিচালনা খরচ (প্রশাসনিক ব্যয়) ৬ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি|
আ) দীন দয়াল উপাধ্যায় গ্রামীণ কৌশল যোজনায় দক্ষতা উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানকে এনআরএলএম-এর প্রশাসনিক ব্যয় হিসেবে দেখা হবে|
ই) এনআরএলএম-এর অধীনস্ত মানব সম্পদ উন্নয়ন অংশটি বিশ্বব্যাঙ্কের সঙ্গে এর রূপায়ন পরিকল্পনা ও আর্থিক চুক্তি অনুসারে উর্ধ সীমার আওতার বাইরে থাকবে|
খ) জম্মু ও কাশ্মীরের ‘হিমায়ত’ প্রকল্পে প্রয়োজনীয়তা অনুসারে অর্থ-বরাদ্দ| কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা হিমায়ত প্রকল্পের মোট ব্যয়ের বর্তমান ২৩৫.৩০ কোটি টাকার পরিবর্তে চাহিদা অনুসারে বরাদ্দের অনুমোদন দিয়েছে| এই প্রকল্প সার্বিকভাবে কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থ সহায়তায় হবে|
গ) আসাম ছাড়া উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অন্য রাজ্যগুলির সবগুলি ঝুঁকিপূর্ণ গ্রামীণ এলাকাকে ২০২৩-২৪ সালের মধ্যে এনআরএলএম-এর আওতাভুক্ত করতে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দের ক্ষেত্রে বর্তমান মানদণ্ড শিথিল করার অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভা| ঐরাজ্যগুলিতে এইধরণের ঝুঁকিপূর্ণ গ্রামের সংখ্যা ২০২৩-২৪ সালের মধ্যে মোট গ্রামাঞ্চলের তিন ভাগের দু’ভাগ হবে এবং এইধরণের সব গ্রামকে এনআরএলএম-এর আওতায় আনা হবে|