Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

সিঙ্গাপুর সফরকালে প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রেস বিবৃতি


মাননীয় প্রধানমন্ত্রী

লি সিয়ন লুঙ্গ,

মাননীয় প্রতিনিধিবৃন্দ,

সংবাদ মাধ্যমের সদস্যগণ,

সবার আগে আমি প্রধানমন্ত্রী লি-কে তাঁর আতিথেয়তা এবং সৌহার্দ্যের জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই। ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করার ক্ষেত্রে তিনি সর্বদাই সচেষ্ট। ব্যক্তিগত বন্ধুত্বের ক্ষেত্রেও তিনি সর্বদাই হাত বাড়িয়ে রেখেছেন।

ভারত ও সিঙ্গাপুরের সম্পর্ক সদর্থকভাবে পারস্পরিক, সামরিক সহযোগিতার ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে রয়েছে। আমাদের সম্পর্কে রয়েছে শুধু উষ্ণতা, সৌহার্দ্য ও বিশ্বাস। প্রধানমন্ত্রী লি-র সঙ্গে আমার আজকের বৈঠকে আমরা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অগ্রগতিকে পুনর্মূল্যায়ন করেছি এবং ভবিষ্যতের রোডম্যাপ নিয়ে আলোচনা করেছি।

আমি বিশেষভাবে আমাদের সংহত অর্থনৈতিক সহযোগিতা চুক্তির দ্বিতীয়বার পুনর্মূল্যায়ন করতে পেরে অত্যন্ত খুশি। কিন্তু, আমরা দু’জনেই সহমত যে, এই দ্বিতীয় পুনর্মূল্যায়ন আমাদের  লক্ষ্য নয়, একটি স্তর মাত্র। আমাদের আধিকারিকরা শীঘ্রই এই সমঝোতা নিয়ে আলোচনা শুরু করবেন।

ভারতের জন্য সিঙ্গাপুর প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগে একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস। আর বিদেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের জন্যও এর স্থান সর্বাগ্রে। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে, ভারতীয় কোম্পানিগুলি সিঙ্গাপুরকে আসিয়ান অঞ্চল ও অন্যান্য দেশে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ‘স্প্রিং বোর্ড’-এর মতো ব্যবহার করে। সিঙ্গাপুরের কোম্পানিগুলি ভারতে বিনিয়োগ ক্রমাগত বাড়িয়ে চলেছে। ভারতের উন্নতি সিঙ্গাপুরকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে অতুলনীয় ভারত সম্পর্কে উন্নত ধারণা এনে দিয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় সিঙ্গাপুরের গুরুত্বপূর্ণ কোম্পানিগুলির সিইও-দের সঙ্গে গোলটেবিল বৈঠকের সময়ে তাঁদের মনে ভারতের প্রতি আস্থা দেখে অত্যন্ত আনন্দিত হয়েছি।

ভারত ও সিঙ্গাপুরের মধ্যে বিমান যাতায়াতের হার দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। উভয়পক্ষ শীঘ্রই বিমান পরিষেবা চুক্তির সমীক্ষা শুরু করবে।

আমরা উভয়েই পারস্পরিক ডিজিটাল অংশীদারিত্ব নিয়ে অত্যন্ত আনন্দিত। এর অপার সম্ভাবনার পাশাপাশি, প্রাকৃতিক অংশীদারিত্বের ক্ষেত্রও রয়েছে। রুপে, ভীম এবং ইউপিআই-ভিত্তিক ‘রেমিটেন্স অ্যাপ’-এর ব্যবহার গতকাল সন্ধ্যা থেকে সিঙ্গাপুরে আন্তর্জাতিক ‘লঞ্চ ডিজিটাল ইন্ডিয়া’ আমাদের পারস্পরিক অংশীদারিত্বে আধুনিকতার ভাবনাকে সুনিশ্চিত করেছে। ডিজিটাল ইন্ডিয়ার মাধ্যমে আমরা ভারতে একটি তথ্য কেন্দ্র সংক্রান্ত নীতি নিরূপণ করব। আজ আমি নানইয়াং প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশ কয়েকটি সমঝোতাপত্র সাক্ষর হতে দেখব, যা উচ্চ শিক্ষা, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে আমাদের সহযোগিতা বৃদ্ধির সহায়ক হবে। দক্ষতা উন্নয়ন, পরিকল্পনা এবং নগরোন্নয়নের ক্ষেত্রে আমাদের সহযোগিতা অনেক নিবিড় হয়েছে।

আমরা ভারতে ১১৫টি উচ্চাভিলাসী জেলায় জল সরবরাহ সুনিশ্চিত করতে নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করতে দেখেছি। গতকাল ও আজ আমরা যে চুক্তি সম্পাদন করেছি, সেগুলি পারস্পরিক সহযোগিতাকে একটি নতুন স্তরে পৌঁছে দেবে। এই চুক্তিগুলি সারা ভারতে বিশেষ করে গ্রামীণ ভারতে নবীন প্রজন্মের জন্য অত্যন্ত লাভদায়ক হয়ে উঠবে।

আমরা পারস্পরিক সামরিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তাকে গুরুত্ব দিয়েছি। এই সম্পর্কে ধারাবাহিক উন্নতিকে আমরা স্বাগত জানাই। ‘সিমবেক্স’-এর ২৫তম বর্ষে ভারত ও সিঙ্গাপুরের নৌ-বাহিনীকে শুভেচ্ছা জানাই। অদূর ভবিষ্যতেই আমরা ত্রিপাক্ষিক নৌ-সামরিক মহড়া শুরু করব। এই মহড়া দু’দেশের নৌ-সেনার মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং ‘লজিস্টিক’ চুক্তি সম্পাদনে সহায়ক হয়েছে, একে আমি স্বাগত জানাই।

আগামীদিনে সাইবার নিরাপত্তা এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমাদের সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আমরা সন্ত্রাসবাদকে নিজেদের দেশের জন্য সবচেয়ে বড় বিপদ বলে মনে করি।

প্রধানমন্ত্রী লি এবং আমি আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সমস্যাগুলি নিয়ে পারস্পরিকভাবে মত আদান-প্রদান করেছি। উভয় দেশের সামুদ্রিক নিরাপত্তা নিয়ে নিজেদের চিন্তাভাবনা পুনর্মূল্যায়ন করেছি এবং নিয়মমাফিক আদেশ প্রদানের ক্ষেত্রে নিজেদের দায়বদ্ধতা প্রদর্শন করেছি।

আমরা উন্মুক্ত, স্থির এবং যথোচিত আন্তর্জাতিক, বাণিজ্যিক সম্পর্ক বজায় রাখার প্রয়োজনীয়তা নিজেও পারস্পরিকভাবে সহমত ব্যক্ত করেছি।

আমরা আসিয়ান অঞ্চলে নেতৃত্ব প্রদানকারী সংস্থাগুলির মাধ্যমে আসিয়ান ঐক্যের গুরুত্ব, আঞ্চলিক শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার গুরুত্ব নিয়েও আলোচনা করেছি। আমি ‘আরসিইপি’ চুক্তি দ্রুত সম্পাদনের ক্ষেত্রে ভারতের দৃঢ় প্রত্যাশা সম্পর্কে জানিয়েছি এবং যথোচিত চুক্তি সম্পাদনের আশা ব্যক্ত করেছি।

আজ সন্ধ্যায় সাংগ্রিলা আলাপ-আলোচনায় আমি ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় ক্ষেত্রে শান্তি ও সমৃদ্ধি বজায় রাখার ক্ষেত্রে ভারতের দৃষ্টিকোণকে তুলে ধরতে চাই। এই সাংগ্রিলা ডায়ালগে আমাকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী লি-কে ধন্যবাদ জানাতে চাই।

আমি প্রধানমন্ত্রী লি এবং তাঁর প্রতিনিধিদলকে সাফল্যের সঙ্গে ‘লিডারশিপ ট্রানজিশন’-এর জন্য শুভেচ্ছা জানাই। আমি জানি যে, সিঙ্গাপুরের নতুন নেতৃত্ব নিজেদের  ঐতিহ্যকে বজায় রাখবেন আর এই মহান দেশের জনগণের ভাবনাচিন্তা ও ঐতিহ্যকে গুরুত্ব দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।

ধন্যবাদ।

অনেক অনেক ধন্যবাদ।

SSS/SB/SB