Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

সাংগ্রী লা বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর মূল ভাষণ


প্রধানমন্ত্রী লী সিয়েন লুঙ,

আপনার বন্ধুত্ব, নেতৃত্ব, ভারত-সিঙ্গাপুর অংশীদারিত্ব এবং এই অঞ্চলের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রীগণ,

মিঃ জ্ঞান চিপমেন,

অন্যান্য অতিথিবৃন্দ ও মহোদয়গণ,

নমস্কার ও আপনাদের প্রত্যেককে শুভসন্ধ্যা।

ভারতের কাছে সুবর্ণভূমি হিসাবে পরিচিত এই অঞ্চলে ফিরে আসতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত।

আসিয়ান দেশগুলির সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক স্থাপনের এই বিশেষ বছরটিতে এখানে উপস্থিত হতে পেরে আমি আনন্দিত।

বছরের গোড়ায় জানুয়ারিতে আমাদের প্রজাতন্ত্র দিবস উদযাপনের দিন আসিয়ান দেশগুলির ১০ জন নেতাকে আমন্ত্রিত অতিথি হিসাবে সম্মান জানানোর সুযোগ পেয়েছিলাম। আসিয়ান দেশগুলির প্রতি আমাদের অঙ্গীকারের বাস্তব প্রতিফলন হ’ল আসিয়ান-ভারত শীর্ষ বৈঠক।

কয়েক হাজার বছর ধরেই ভারতীয়রা পূবের দেশগুলির প্রতি আকৃষ্ট হয়েছে। কেবল সূর্যোদয় দেখতেই তাঁরা সেখানে যাননি, বরং সমগ্র বিশ্বে সূর্যরশ্মী ছড়িয়ে দেওয়ার জন্যও তাঁরা প্রার্থনা জানিয়েছেন। সমগ্র মানবজাতি এখন পূর্বের উত্থান দেখছে কারণ, সমগ্র বিশ্বের ভাগ্য ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সার্বিক উন্নয়নের দ্বারা অনেকটাই প্রভাবিত হবে।

সিঙ্গাপুর আমাদের দেখিয়ে দিয়েছে যে, যখন সমুদ্রপথে সকলের প্রবেশ অবাধ, সমুদ্র নিরাপদ, প্রতিটি দেশ পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত তখন আইনের শাসন সফল হয়। সমগ্র অঞ্চলে স্থিতাবস্থা আসে। রাষ্ট্র আকারে বড় বা ছোট যাই হোক না কেন, স্বার্বভৌম দেশ হিসাবে সমৃদ্ধি লাভ করে। এমনকি, পছন্দ-অপছন্দের মধ্যেও কোনও ভয়-ভীতি থাকে না।

সিঙ্গাপুর আমাদের আরও দেখিয়েছে, যখন রাষ্ট্রগুলি নীতির পক্ষে সওয়াল করে, কোনও একটি শক্তির স্বার্থে নয়, তখন সেই রাষ্ট্রগুলি সমগ্র বিশ্বের শ্রদ্ধা আদায় করে নেয়। এমনকি, আন্তর্জাতিক বিষয়ের ক্ষেত্রে জোরালো সমর্থক হয়ে দাঁড়ায়।

ভারতের কাছে সিঙ্গাপুরের গুরুত্ব অনেক। এই মনোভাবের ফলেই সিঙ্ঘের মতো শক্তিমান একটি দেশ ও সমশক্তিমান একটি শহর ঐক্যবদ্ধ হয়ে রয়েছে। বহু শতাব্দী ধরে সিঙ্গাপুর ভারতের কাছে পূবের দেশগুলিতে যাওয়ার প্রবেশপথ। দু’হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে মৌসুমি বায়ু, সমুদ্রের স্রোত ও মানুষের প্রত্যাশার শক্তির ফলেই ভারত ও এই অঞ্চলের মধ্যে কালজয়ী যোগসূত্র গড়ে উঠেছে।

বিগত তিন দশক ধরে এই অঞ্চলে আমাদের ভূমিকা ও অংশীদারিত্ব অক্ষুণ্ন রাখতে আমরা সেই ঐতিহ্য পুনর্প্রতিষ্ঠা করেছি। ভারতের কাছে বিশ্বের আর কোনও অঞ্চল এতখানি গুরুত্ব পায়না।

প্রাক্‌-বৈদিক যুগ থেকেই ভারতীয় মননে মহাসাগরের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। হাজার হাজার বছর আগে সিন্ধু সভ্যতার সময় এবং ভারতীয় উপদ্বীপেও নৌ-বাণিজ্যের প্রচলন ছিল। বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন গ্রন্থ বেদ-এ মহাসাগর ও জলের দেবতা বরুণের উল্লেখ রয়েছে। প্রচীন পুরানেও ভারতের ভৌগলিক সীমানার সঙ্গে সমুদ্রের যোগসূত্রের কথা বর্নিত হয়েছে।

আমার নিজের রাজ্য গুজরাটে এক সময়ে বিশ্বের অন্যতম পুরনো বন্দর ছিল, যার নাম লোথাল। আজও তার ভগ্নাবশেষ দেখতে পাওয়া যায়। ভারতের ইতিহাসের রূপদানের ক্ষেত্রে অনেকখানি অংশ জুড়ে রয়েছে ভারত মহাসাগর। বর্তমান ভারতের ভবিষ্যৎ এই মহাসাগরের ওপর অনেকখানি নির্ভরশীলএই মহাসাগর দিয়েই ভারতের ৯০ শতাংশ বাণিজ্য পরিচালিত হয়। শক্তিরও অন্যতম উৎস এই মহাসাগর। বিশ্ব বাণিজ্যের অন্যতম জীবন রেখা এটি।

পূবের দিকে মালাক্কা প্রণালী ও দক্ষিণ চিন সাগর ভারতকে প্রশান্ত মহাসাগরের সঙ্গে জুড়েছে। এই অঞ্চলেই রয়েছে আমাদের অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ অংশীদ্বার। আমাদের বাণিজ্য এই অঞ্চলে দ্রুত বাড়ছে। এমনকি, বিদেশি বিনিয়োগের একটা বড় অংশ এই পথ দিয়েই আসছে। বিনিয়োগের পরিমাণের দিক থেকে আসিয়ানের অংশ ২০ শতাংশ।

এই অঞ্চলের সঙ্গে আমাদের স্বার্থ ও সম্পর্কের ভিত্তি অনেক গভীর। ভারত মহাসাগর অঞ্চলে আমাদের সম্পর্ক ক্রমশ জোরদার হচ্ছে। আমাদের বন্ধু ও অংশীদার রাষ্ট্রগুলিতে আর্থিক সক্ষমতা গড়ে তুলতে ও নৌ নিরাপত্তা বাড়াতে আমরা সাহায্য করছি। ভারত মহাসাগরীয় নৌ সম্মেলনের মতো ফোরামের মাধ্যমে আমরাও সমবেত নিরাপত্তা প্রসারের লক্ষ্যে কাজ করছি।

ভারত মহাসাগরীয় সংগঠনের মাধ্যমে আঞ্চলিক সহযোগিতার এক সুসংহত লক্ষ্য নিয়ে আমরা অগ্রসর হচ্ছি। সমুদ্রপথে সমগ্র বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ যাতে শান্তিপূর্ণ থাকে ও সকলে যাতে অবাধ যাতায়াত করতে পারে, সে লক্ষ্যেও আমরা ভারত মহাসাগর অঞ্চলের বাইরের দেশগুলির সঙ্গে কাজ করে চলেছি।

তিন বছর আগে মরিশাসে আমি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গী এক কথায় ব্যাখ্যা করেছিলাম – সাগর, হিন্দিতে যার অর্থ মহাসাগর। যে কোনও অঞ্চলের নিরাপত্তা এবং সমৃদ্ধির জন্য সমুদ্রের ভূমিকা অনস্বীকার্য।এই অঞ্চলে সাগরের অর্থ হ’ল – সকলের নিরাপত্তা ও বিকাশ। এই একই নীতি আমরা পূবের দেশগুলির ক্ষেত্রেও অনুসরণ করি।

জল ও স্থল উভয় দিক থেকেই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া আমাদের প্রতিবেশি। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রতিটি দেশের সঙ্গে আমাদের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত সম্পর্ক বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিগত আড়াই দশক ধরে আমরা আসিয়ান দেশগুলির কৌশলগত অংশীদার হয়ে উঠছি। বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন ও ৩০টি বৈঠকে আলোচনার মাধ্যমে আমাদের সম্পর্ক এগিয়ে চলেছে।

পূর্ব এশিয়া শীর্ষ সম্মেলন, এআরএফ-এর মতো আসিয়ান পরিচালিত বৈঠকগুলির সক্রিয় অংশীদার আমরা। বিমস্টেক এবং মেকঙ্গ-গঙ্গা অর্থনৈতিক করিডরেরও আমরা অংশীদার।

জাপানের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অর্থনৈতিক থেকে কৌশলগত ক্ষেত্রে পুরোপুরি বদলে গেছে। এই সম্পর্ক দৃঢ় ও স্থায়ী ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত। কোরিয়া প্রজাতন্ত্রের সঙ্গে আমাদের সহযোগিতায় ব্যাপক গতি সঞ্চার হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার পাশাপাশি নিউজিল্যান্ডের সঙ্গেও আমাদের সম্পর্কে নতুন শক্তি সঞ্চারিত হয়েছে।

আমাদের বহু অংশীদারের সঙ্গে তিন বা তার বেশি উপায়ে আমরা বৈঠকে মিলিত হয়ে থাকি। তিন বছরের কিছু সময় আগে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্রগুলির সঙ্গে সম্পর্কের এক সফল নতুন অধ্যায় শুরু করার লক্ষ্যে আমি ফিজি গিয়েছিলাম। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্র সহযোগিতা ফোরামের বৈঠকগুলির মাধ্যমে ভৌগলিক দূরত্ব থাকা সত্তেও পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে সেতু গড়ে উঠেছে।

পূর্ব ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার বাইরেও আমাদের অংশীদারিত্ব মজবুত হচ্ছে ও ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের কৌশলগত নীতির এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য যে, রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের কৌশলগত অংশীদারিত্ব বিশেষ সহযোগিতার স্তরে উন্নীত হয়েছে।

১০ দিন আগে সোচিতে রাষ্ট্রপতি পুতিনের সঙ্গে ঘরোয়া বৈঠকে আমি বর্তমান সময়ের চ্যালেঞ্জগুলি মোকাবিলার জন্য এক মজবুত বহু মেরু বিশ্ব ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছিলাম। একই সঙ্গে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের বিশ্ব কৌশলগত অংশীদ্বারিত্ব ইতিহাসের দ্বিধাদ্বন্দ্ব অতিক্রম করে গভীর থেকে গভীরতর হয়ে চলেছে। এই সম্পর্ক ক্রমপরিবর্তনশীল বিশ্বে নতুনভাবে গুরুত্ব পাচ্ছে। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে স্থিতিশীলতা, নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধির লক্ষ্যে আমাদের অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গীই এই সম্পর্কের গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। চিনের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কে যতগুলি স্তর রয়েছে, তা আর অন্য কোনও সম্পর্কের মধ্যে নেই। আমরা বিশ্বের সবচেয়ে বেশি দুই জনবহুল দেশ। দ্রুত বিকাশশীল অর্থনীতিও বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাণিজ্যও বাড়ছে। বিভিন্ন সমস্যা ও সীমান্তে শান্তি বজায় রাখতে আমরা যথেষ্ট ধৈর্য্য ও সময়-জ্ঞানের পরিপক্কতার পরিচয় দিয়েছি।

এপ্রিলে চীনের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ঘরোয়া বৈঠক আমাদের বোঝাপড়াকে মজবুত করতে এবং বিশ্ব শান্তি ও অগ্রগতির জন্য দুই দেশের মধ্যে সুদৃঢ় ও স্থিতিশীল সম্পর্কের গুরুত্ব বোঝাতে সাহায্য করেছে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে, ভারত ও চিন যখন আস্থা, বিশ্বাস ও পারস্পরিক স্বার্থের বিশয়গুলিতে সংবেদনশীল হয়ে একযোগে কাজ করবে তখন এশিয়ার পাশাপাশি বিশ্বেরও উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত হবে।

আফ্রিকার সঙ্গে ভারতের অংশীদারিত্ব ক্রমবর্ধমান। ভারত-আফ্রিকা শীর্ষ ফোরামের বৈঠকে এই অংশীদ্বারিত্ব মজবুত হচ্ছে। অবশ্য, এর নেপথ্যে রয়েছে আফ্রিকার চাহিদা ও প্রয়োজনীয়তার ওপর ভিত্তি করে সহযোগিতার প্রসার, এক সুপ্রাচীন ইতিহাস ও পারস্পরিক শ্রদ্ধা।

বন্ধুগণ,

আমাদের অঞ্চলের কথায় ফিরে আসি। ভারতের ক্রমবর্ধমান সম্পর্ক ও সহযোগিতার পিছনে রয়েছে গভীর অর্থনৈতিক ও প্রতিরক্ষাগত সহযোগিতা। বিশ্বের অন্য যে কোনও অঞ্চলের তুলনায় এই অঞ্চলে আমাদের অনেক বেশি সংখ্যায় বাণিজ্যিক চুক্তি রয়েছে। সিঙ্গাপুর, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে আমাদের সুসংহত অর্থনৈতিক অংশীদ্বারিত্ব চুক্তি রয়েছে।

আসিয়ান গোষ্ঠিভুক্ত দেশ ও থাইল্যান্ডের সঙ্গে আমাদের অবাধ বাণিজ্য চুক্তি রয়েছে। সুসংহত আঞ্চলিক অংশীদ্বারিত্ব চুক্তিকে চূড়ান্ত রূপ দিতে আমরা সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছি। ভারতের ৯০ নটিক্যাল মাইল দূরের প্রতিবেশি ইন্দোনেশিয়ায় সদ্য আমার প্রথম সফর শেষ করেছি। আমার বন্ধু রাষ্ট্রপতি উইডোডো ও আমি ভারত-ইন্দোনেশিয়া সম্পর্ককে এক সুসংহত কৌশলগত অংশীদ্বারিত্বে উন্নীত করেছি। একাধিক অভিন্ন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ের মধ্যে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নৌ বাণিজ্য সহযোগিতার ক্ষেত্রেও আমাদের একই ধরণের দৃষ্টিভঙ্গী রয়েছে। ইন্দোনেশিয়া থেকে ফেরার সময় আমি সংক্ষিপ্ত সফরে মালয়েশিয়ায় গিয়েছিলাম। সেখানে আসিয়ান দেশগুলির অন্যতম বর্ষীয়ান নেতা প্রধানমন্ত্রী মহাথীর-এর সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হয়েছি।

বন্ধুগণ,

ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখার পাশাপাশ মানবিক সাহায্য ও দুর্যোগে ত্রাণ বন্টনের জন্য ভারতীয় সেনাবাহিনীগুলি বিশেষ করে নৌ-বাহিনী এই অংশে অংশীদারিত্ব গড়ে তুলেছে। এই অঞ্চলে ভারতীয় নৌ-বাহিনী অন্যান্য দেশের নৌ বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে, যৌথ মহড়া চালাচ্ছে এবং সৌজন্য মিশনে যাচ্ছে। সিঙ্গাপুরের সঙ্গে আমাদের সুদীর্ঘ ২৫ বছর ধরে নৌ-মহড়া চলছে।

সিঙ্গাপুরের সঙ্গে আমরা শীঘ্রই ত্রি-পাক্ষিক মহড়া শুরু করব। আমাদের প্রত্যাশা অন্যান্য আসিয়ান দেশগুলির সঙ্গেও এ ধরণের মহড়া আয়োজিত হবে। পারস্পরিক সক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্যে আমরা ভিয়েতনামের মতো অংশীদার দেশের সঙ্গে কাজ করছি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের সঙ্গে ভারত মালাবার নৌ-মহড়া চালিয়েছে। একাধিক আঞ্চলিক দেশ ভারত মহাসাগরে ভারতের মিল নৌ-মহড়ায় সামিল হয়েছে। এশিয়া ও সিঙ্গাপুরের মতো শহরে জলদস্যু মোকাবিলা ও অস্ত্রশস্ত্রের চোরাচালানের বিরুদ্ধে আঞ্চলিক সহযোগিতা চুক্তি গড়ে তোলার ব্যাপারে আমরা সক্রিয় রয়েছি। এখানে উপস্থিত শ্রোতাদের ও দেশে আমাকে যাঁরা শুনছেন, তাঁদের জানাতে চাই, আমাদের মূল লক্ষ্য হ’ল ২০২২-র মধ্যে এক নতুন ভারত গড়ে তোলা।

আমাদের বার্ষিক বিকাশ হার ৭.৮-৮ শতাংশে বজায় রয়েছে। আমাদের অর্থনীতি বৃদ্ধি পাচ্ছে, আমাদের আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক অখন্ডতা বৃদ্ধি পাবে। ৮০ কোটির বেশি যুবসম্প্রদায়ের দেশের মানুষ বোঝে যে, ভারতের আর্থিক বিকাশের মধ্যেই তাদের ভবিষ্যৎ নিরাপদ নয়, বরং বিশ্ব পর্যায়ে যোগাযোগের ক্ষেত্রে আরও গভীরতার ওপরেই তাদের আগামী সুরক্ষিত। অন্য যে কোনও অঞ্চলের তুলনায় এই অঞ্চলের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক আরও গভীরতর ও আমাদের উপস্থিতি ধীরে ধীরে বাড়বে। কিন্তু, আমরা এমন ভবিষ্যৎ চাই, যার জন্য প্রয়োজন স্থায়ী শান্তির। তবে, এটাই এখন দূর অস্ত।

বিশ্ব শক্তির পরিবর্তন ঘটছে, বিশ্ব অর্থনীতির বৈশিষ্ট্য পাল্টাচ্ছে এবং প্রযুক্তির পট পরিবর্তন হচ্ছে। বিশ্ব শৃঙ্খলার ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়ছে। ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত। আমাদের সকলের অগ্রগতির জন্য আমরা এখন অনিশ্চয়তার কিনারায় বাস করছি, আমাদের সামনে অসংখ্য প্রশ্ন, যার কোনও সমাধান নেই। অসংখ্য বিবদমান বিষয়; প্রতিযোগিতা ও দাবিদাওয়া।

আমরা ক্রমবর্ধমান পারস্পরিক অনাস্থা ও সামরিক ব্যয় বরাদ্দ বৃদ্ধির মতো বিষয় প্রত্যক্ষ করছি। অভ্যন্তরীণ কিছু বিষয় বৈদেশিক ক্ষেত্রে উত্তেজনার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বাণিজ্য ও প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে নতুন সীমারেখা টানা হচ্ছে। সর্বোপরি আন্তর্জাতিক নিয়মনীতির ওপর আমরা ক্ষমতার আস্ফালন দেখতে পাচ্ছি। এসবের মধ্যেই এমন কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যা আমাদের সকলকেই স্পর্শ করছে। এর অন্যতম একটি সন্ত্রাস ও উগ্রপন্থার বিরামহীন বিপদ। সৌভাগ্য ও ব্যর্থতার ওপর পারস্পরিক নির্ভরশীল এই বিশ্ব। কোনও দেশই নিজেকে নিরাপদ রাখতে পারে না।

বর্তমান এই বিশ্বে সমস্ত বিভেদ ও প্রতিযোগিতার ঊর্ধ্বে উঠে একসঙ্গে কাজ করার সময় এসেছে। কিন্তু এটা করা কি সম্ভব?

হ্যাঁ, এটা করা সম্ভব। এর প্রকৃত উদাহরণ হিসাবে আমি আসিয়ানের কথা উল্লেখ করছি। বিশ্বে আর কোনও দেশ-গোষ্ঠীর মধ্যে সংস্কৃতি, ধর্ম, ভাষা, সুপ্রশাসন ও সমৃদ্ধির বিবিধতা দেখা যায় না, যেটা আসিয়ান দেশগুলিতে নজরে পড়ে।

দক্ষিণ এশিয়া যখন বিশ্বে প্রতিযোগিতার অগ্রভাগে ও অনিশ্চয়তার মধ্যে ছিল, তখন আসিয়ানের উদ্ভব হয়। আর আজ একটি অভিন্ন উদ্দেশ্য নিয়ে ১০টি দেশের সংগঠন আসিয়ান। এই অঞ্চলের স্থায়ী ভবিষ্যতের জন্য আসিয়ানের একতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আমাদের প্রত্যেকেই একে সমর্থন করে। আমরা এর বিরোধিতা করি না। চারটি পূর্ব এশিয়া শীর্ষ সম্মেলনে আমি অংশ নিয়েছি। আমি নিশ্চিত যে, আসিয়ান আরও বেশি অঞ্চল জুড়ে অখন্ডতা বজায় রাখতে পারবে। বিভিন্ন দিক থেকে আসিয়ান ইতিমধ্যেই অগ্রণী ভূমিকা নিচ্ছে। এই ভূমিকা পালন করতে করতেই আসিয়ান ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ভিত্তি প্রতিষ্ঠা করেছে। পূর্ব এশিয়া শীর্ষ সম্মেলন ও আঞ্চলিক সুসংহত অর্থনৈতিক অংশীদ্বারিত্ব – আসিয়ানের গুরুত্বপূর্ণ এই দুই উদ্যোগ এই অঞ্চলের ভৌগলিক সীমাকে পরিপূর্ণতা দিয়েছে।

বন্ধুগণ,

ভারত-প্রশান্ত মহাসাগর এক প্রাকৃতিক অঞ্চল। এই অঞ্চলে বিশ্বের নানা সুযোগ-সুবিধা ও চ্যালেঞ্জ রয়েছে। প্রতিদিন আমার মধ্যে এই বিশ্বাস আরও দৃঢ় হচ্ছে যে, যাঁরা এই অঞ্চলে বসবাস করেন, তাঁদের ভাগ্য পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। বিভেদ ও প্রতিযোগিতার ঊর্ধ্বে উঠে আজ আমাদের একসঙ্গে কাজ করার জন্য আহ্বান জানানো হচ্ছে।

ভৌগলিক ও সভ্যতাগত উভয় দিক থেকেই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ১০টি দেশ দুই মহান মহাসাগরের সঙ্গে সংযুক্ত। ব্যাপকতা, উদারতা এবং আসিয়ানের কেন্দ্রীকতা ও একতা নিহিত রয়েছে নতুন গড়ে ওঠা ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের মধ্যে। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে একটি বিশেষ কৌশল কেন্দ্র বা সীমিত সংখ্যক সদস্যের গোষ্ঠী হিসাবে ভারত দেখতে চায় না।

আধিপত্য বজায় রাখতে চায়, এমন গোষ্ঠী হিসাবেও দেখতে চায় না ভারত। এমনকি, কোনও দেশের বিরুদ্ধে গড়ে তোলা মঞ্চ হিসাবেও আমরা একে বিবেচনা করতে চায় না। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ব্যাপারে ভারতের দৃষ্টিভঙ্গী অত্যন্ত ইতিবাচক এবং এর অনেক উপাদান রয়েছে।

এই অঞ্চল অবাধ, উন্মুক্ত ও সুসংহত। যেটি আমাদেরকে অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির অভিন্ন উদ্দেশে পরিচালিত করে।

এর কেন্দ্রে রয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া। সেই সঙ্গে এর ভবিষ্যৎ কেন্দ্রবিন্দুতে আসিয়ান থেকেছে এবং আগামীদিনেও থাকবে। এই আদর্শই সর্বদা ভারত’কে পথ দেখাবে। কারণ, আমরা এই অঞ্চলের শান্তও নিরাপত্তার স্বার্থে এক স্থপতু হিসাবে সহযোগিতা করতে চাই।

আমরা বিশ্বাস করি যে, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে আমাদের অভিন্ন সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তার বিষয়গুলি খুঁজে বের করতে হবে। এজন্য প্রয়োজন এক অভিন্ন আইন-ভিত্তিক ব্যবস্থার, যা সকলের ক্ষেত্রে সমানভাবে প্রযোজ্য হবে। এমনকি, সার্বভৌমত্ব ও ভৌগলিক অখন্ডতার প্রতিও ব্যবস্থার বিশ্বাস থাকবে। এই ব্যবস্থা ও নিয়মনীতি সকলের সম্মতিতে তৈরি হবে, কয়েকজনের ক্ষমতার ওপর ভিত্তি করে নয়। এত কিছু বলার অর্থ এই যে, রাষ্ট্রগুলি যখন আন্তর্জাতিক স্তরে কোনও অঙ্গীকার করবে, তখন তা মেনে চলার ব্যাপারেও উদ্যোগী হবে। আঞ্চলিকতা ও বহুপাক্ষিকতাবাদের প্রতি এটাই হ’ল ভারতের আস্থার ভিত্তি।

আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, আকাশ ও সমুদ্রের উন্মুক্ত অংশ ব্যবহারের ক্ষেত্রে আমাদের সকলের সমানাধিকার রয়েছে। যখন আমরা সকলেই এই বিধি মেনে চলব, তখন সমুদ্র আমাদের সমৃদ্ধির পথ ও শান্তির মাধ্যম হয়ে উঠবে। সেইসঙ্গে, আমরা সকলে নৌ-বাণিজ্য অপরাধ দমনে, সামুদ্রিক জৈব বৈচিত্র্য সংরক্ষণে, দুর্যোগ মোকাবিলায় এবং নীল অর্থনীতি থেকে সমৃদ্ধির লক্ষ্যে অগ্রসর হতে সক্ষম হয়ে উঠবে।

বিশ্বায়নের ফলে আমরা সকলেই ও এই অঞ্চলও লাভবান হয়েছে। ভারতীয় খাবার এর অন্যতম দৃষ্টান্ত। কিন্তু পণ্য ও পরিষেবার ক্ষেত্রে বিদেশি শিল্প সংস্থার প্রতিযোগিতার দরুণ সংরক্ষণ নীতির দাবি জোরালো হচ্ছে। বিরোধিতার আড়াল থেকে এর সমাধান খুঁজে বের করা সম্ভব নয়। আমরা সকলের সমান অংশীদারিত্ব চাই। ভারত সর্বদাই অবাধ ও স্থিতিশীল আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ব্যবস্থার পক্ষে সওয়াল করেছে। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলেও আমরা আইন-ভিত্তিক উদার, সামঞ্জস্যপূর্ণ ও স্থিতিশীল বাণিজ্যিক পরিবেশের পক্ষে সওয়াল করব। আমাদের এই নীতি বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সকল দেশের স্বার্থবাহী হবে। আর ঠিক এটাই আমরা আঞ্চলিক সুসংহত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব থেকে চাই।

যোগাযোগ খুব গুরুত্বপূর্ণ। ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য ও সমৃদ্ধির থেকেও যোগাযোগ বজায় রাখা অনেক বেশি আবশ্যক। পারস্পরিক যোগাযোগ একটি অঞ্চলকে অখন্ড রাখে। আমরা যোগাযোগের উপকারিতা ও গুরুত্ব বুঝি। এই অঞ্চলে বেশ কিছু যোগাযোগমূলক উদ্যোগ রয়েছে। আর এই উদ্যোগগুলিকে সফল করে তুলতে গেলে কেবল পরিকাঠকামো নির্মাণ করলেই হবে না, সেই সঙ্গে পারস্পরিক আস্থার সেতুও গড়ে তুলতে হবে। উদ্যোগগুলি এমন হবে, যা সার্বভৌমত্বকে সম্মান জানাবে, ভৌগলিক অখন্ডতাকে স্বীকার করবে। সেইসঙ্গে স্বচ্ছতা, দায়বদ্ধতা ও স্থায়ীত্ব বজায় রাখতে সাহায্য করবে। তবে, কৌশলগত প্রতিযোগিতাকে উৎসাহ দেয় এমন উদ্যোগ থেকে বিরত থাকতে হবে। এই নীতিকে সামনে রেখে আমরা সকলের সঙ্গেই কাজ ক্রতে প্রস্তুত। ভারত তার নিজের দায়িত্ব পালন করে চলেছে। অংশীদার হিসাবে পাশে পেয়েছে জাপান, দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, আফ্রিকা, পশ্চিম এশিয়া ও অন্যান্য অঞ্চলকে। সেই সঙ্গে, আমরা নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক ও এশিয়া পরিকাঠামো উন্নয়ন ব্যাঙ্কের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।

এগুলি সবই সম্ভব হবে, যদি না আমরা শক্তি প্রদর্শনের যুগে ফিরে না যাই। একথা আমি আগেই বলেছি। দ্বন্দ্ব ও বিদ্বেষপূর্ণ এশিয়া আমাদের আরও পিছনের দিকে ঠেলে দেবে। সহযোগিতামূলক এশিয়া এই শতাব্দীকে আরও উজ্জ্বল করবে। প্রতিটি দেশকে নিজের কাছেই জানতে চাইতে হবে যে, তারা আরও বেশি ঐক্যবদ্ধ বিশ্ব গড়তে চায়, না বিভেদের পথ বেছে নিতে চায়। এই দায়িত্ব বর্তমান শক্তিধর ও উত্থানশীল শক্তিধর দেশ উভয়েরই। প্রতিযোগিতা থাকা স্বাভাবিক। কিন্তু তা যেন কখনও দ্বন্দ্বের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। মতপার্থক্য যেন কোনও ভাবেই বিবাদ না হয়ে ওঠে। অভিন্ন মূল্যবোধ ও স্বসার্থ নিয়ে অংশীদারিত্ব গড়ে ওঠা খুবই স্বাভাবিক। এজন্যই ভারতের এই অঞ্চলে ও তার বাইরে বহু অংশীদ্বার রয়েছে।

এক স্থিতিশীল ও শান্তিপূর্ণ অঞ্চল গড়ে তোলার জন্য আমরা তাদের সঙ্গে ব্যক্তিগত পর্যায়ে বা কখনও দুই বা তিন দেশ একসঙ্গে মিলে কাজ করতে চাই। কিন্তু আমাদের বন্ধুত্ব অন্য কোনও রাষ্ট্রের প্রভাব বিস্তার রোধ করার জোড় নয়। আমরা নীতি ও মূল্যবোধের পক্ষ এবং শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ বেছে নিয়েছি। সারা বিশ্ব জুড়ে আমাদের সম্পর্ক সে কথারই প্রতিফলন ঘটায়।

আমরা যখন একজোট হয়ে কাজ করব, তখন আমরা বর্তমান সময়ের প্রকৃত চ্যালেঞ্জগুলির মোকাবিলায় সক্ষম হয়ে উঠব। আমাদের এই গ্রহকে সুরক্ষিত রাখতে সক্ষম হয়ে উঠব। সন্ত্রাসবাদ ও সাইবার অপরাধ থেকেও আমরা আমাদের মানুষজনকে সুরক্ষিত রাখতে পারব।

পরিশেষে, আরও একবার বলতে চাই – ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ভারতের নিজস্ব সম্পর্ক ও যোগাযোগ হবে সুসংহত ও ব্যাপক। আমরা বেদান্ত দর্শনে বিশ্বাস করি। এটাই আমাদের সভ্যতার, বহুত্ববাদের, সহাবস্থানের, উদারতার ও আলাপ-আলোচনার ভিত্তি। গণতন্ত্রের যে আদর্শগুলি আমাদের জাতি হিসাবে পরিচিতি দিয়েছে, সেগুলিও বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনে দিশা দেখিয়েছে।

আমরা এমন এক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও আন্তর্জাতিক আইনের শাসনের পক্ষে, যেখানে ছোট বা বড় সমস্ত দেশ সমান ও সকলের সার্বভৌম রয়েছে। আমাদের সমুদ্র, মহাকাশ ও আকাশপথ অন্যান্যদের জন্য খোলা রাখতে আমরা সকলের সঙ্গেই কাজ করব। সন্ত্রাসবাদ ও সাইবার বিপদ থেকে সুরক্ষিত থাকতেও আমরা অন্যদের সঙ্গে কাজ করব। আমরা আমাদের অর্থনীতিকে উদার ও সম্পর্কের মধ্যে স্বচ্ছতা বজায় রাখব। বন্ধু ও অংশীদ্বারদের সঙ্গে আমরা আমাদের সম্পদ, বাজার ও সমৃদ্ধি ভাগ করে নেব। আমাদের গ্রহের জন্য আমরা এক সুস্থায়ী উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ চাই।

এভাবেই আমরা আমাদের পক্ষ থেকে এবং আমাদের অংশীদারদের পক্ষ থেকে সুবিস্তৃত এই অঞ্চল ও তার বাইরে অগ্রসর হতে চাই। এই অঞ্চলের প্রাচীন জ্ঞানই হ’ল আমাদের অভিন্ন ঐতিহ্য। ভগবান বুদ্ধের শান্তি ও করুণার বার্তা আমাদের সকলকে একত্রে সামিল করেছে। আমরা একসঙ্গে মানবসভ্যতাকে অনেক কিছু দিতে পারি। আমরা ক্ষমতার সীমা ও সহযোগিতার সুফল প্রত্যক্ষ করেছি।

এই বিশ্ব দুই রাস্তার সংযোগস্থলে দাঁড়িয়ে রয়েছে। ইতিহাসের খারাপ শিক্ষায় প্রলুব্ধ হওয়ার পথ যেমন রয়েছে, তেমনই জ্ঞানের পথও রয়েছে। এই জ্ঞানই আমাদের ক্ষুদ্রতর স্বার্থের দৃষ্টিভঙ্গী থেকে ওপরে ওঠার এবং সকল জাতির কল্যাণের স্বার্থে একযোগে কাজ করার দিশা দেখায়। আমি সকলকে এই পথ অনুসরণেরই আহ্বান জানাচ্ছি।

ধন্যবাদ।

অনেক অনেক ধন্যবাদ।

CG/BD/SB