Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রেস বিবৃতি (১৫ জানুয়ারি, ২০১৮)

ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রেস বিবৃতি (১৫ জানুয়ারি, ২০১৮)

ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রেস বিবৃতি (১৫ জানুয়ারি, ২০১৮)


মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু,   

সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিবৃন্দ,   

প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু’র প্রথম ভারত সফরউপলক্ষে তাঁকে স্বাগত জানাতে পেরে আমি বিশেষভাবে আনন্দিত।  

(হে সুহৃদ, আপনাকে ভারতে স্বাগত!)   

প্রধানমন্ত্রী, আপনার এই সফর ভারত-ইজরায়েল মৈত্রীসম্পর্কের যাত্রাপথে এক বহু প্রতীক্ষিত মুহূর্ত।    

ভারত ও ইজরায়েলের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ২৫তম বর্ষেরএকটি স্মারক হিসাবে আপনার এই সফর সূচি যথার্থ বলেই আমরা মনে করি।   
২০১৮’তে আমাদের প্রথম সম্মানিত অতিথি হিসাবে আপনার এইসফর আমাদের নতুন বছরের বর্ষপঞ্জিতে এক উপলক্ষ বিশেষ। এটি আয়োজিত হয়েছে এমন একশুভক্ষণে, যখন সকল ভারতবাসী বসন্তের আগমন, পুনরুজ্জীবন, আশা এবং ফসল তোলার উৎসবকেআনন্দের সঙ্গে বরণ করে নিয়েছে। লোহরি, বিহু, মকর সংক্রান্তি এবং পোঙ্গল উদযাপনভারতের ঐক্য ও বৈচিত্র্যের এক উজ্জ্বল বহিঃপ্রকাশ।    

বন্ধুগণ,    

গত বছর জুলাই মাসে আমি ১২৫ কোটি ভারতবাসীর মৈত্রী ওঅভিনন্দন বার্তা বহন করে নিয়ে গিয়েছিলাম আমার বিশেষ তাৎপর্যময় ইজরায়েল সফরকালে।বিনিময়ে আমার বন্ধু বিবির নেতৃত্বে ইজরায়েলের জনগণের কাছ থেকে যে উদার উষ্ণতা ওভালোবাসা আমি লাভ করেছিলাম, তাতে আমি অভিভূত।  

সেই সফরকালে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এবং আমি পরস্পরেরপ্রতি এবং দু’দেশের জনসাধারণের কাছেও এক কৌশলগত অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতিদিয়েছিলাম। এই প্রতিশ্রুতি ছিল আশা ও আস্থার, বহুধা প্রসারিত অগ্রগতি ও ঘনিষ্ঠসহযোগিতার এবং যৌথ উদ্যোগ ও মিলিত সাফল্যের। বহু শতাব্দী ধরেই যে স্বাভাবিকভালোবাসা ও বন্ধুত্বের বন্ধনে আমরা আবদ্ধ ছিলাম, তা থেকেই আমাদের এই প্রতিশ্রুতিবা অঙ্গীকার জন্ম নিয়েছিল। প্রায় প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই পরস্পরের পাশে উপস্থিতথাকার বাধ্যবাধকতা থেকে বিভিন্ন প্রচেষ্টায় নিয়োজিত থেকেছি আমরা।     

সেই সফরকালের ছ’মাসের এক সংক্ষিপ্ত মুহূর্তের শেষেওআমাদের এই মিলিত উচ্চাশা ও অঙ্গীকার অমলিন থেকে গেছে। আপনার এই অনন্য সাধারণ ভারতসফর তারই পরিচয় বহন করে।  

আজ ও গতকাল প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এবং আমি দু’দেশেরসম্পর্কের বিকাশ ও অগ্রগতির বিষয়গুলি পর্যালোচনা করেছি। আমাদের সামনে যে সমস্তসুযোগ ও সম্ভাবনা রয়েছে, তার সদ্ব্যবহারের লক্ষ্যে পুনরায় আলাপ-আলোচনার কাজও আমরাশুরু করে দিয়েছি।    

আমাদের আলোচনার বিষয় ছিল ব্যাপক ও বহুধা প্রসারিত, যারমধ্যে আরও নতুন কিছু করার ইচ্ছাই প্রতিফলিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী, কাঙ্খিত ফললাভের জন্য আমি যে খুবই অধৈর্য্য, এই দুর্নাম বোধ হয় আমার রয়েছে।   

আমি যদি খোলাখুলিভাবেই একটি গোপন কথা আজ আপনার সামনেপ্রকাশ করি, তা হলে আমি জানি, আপনিও তাতে সায় দেবেন।     

গত বছর তেল আভিভে আমলাতান্ত্রিক দীর্ঘ সূত্রিতা কমিয়েআনার ইচ্ছা আপনি প্রকাশ করেছিলেন।    

প্রধানমন্ত্র্‌ আমি আপনাকে একথা জানাতে পেরে খুবইআনন্দিত, যে ঠিক ঐ কাজটি আমরা ভারতে করতে চলেছি। পূর্বে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলিরবাস্তবায়নের জন্য আমরা দু’জনেই যে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি – একথাও আমরা ব্যক্তকরেছি পরস্পরের কাছে।    

বাস্তবের জমিতে এর সুফলও আমরা লক্ষ্য করেছি। আজ আমাদেরআলোচনা ও মতবিনিময়ের উল্লেখযোগ্য দিকটি হ’ল, আমাদের যৌথ কর্মপ্রচেষ্টায় আরও গতিসঞ্চার এবং অংশীদারিত্বের সম্পর্কের উন্নয়ন প্রচেষ্টা।     

তিনটি ভিন্ন ভিন্ন উপায়ে এই পথ অনুসরণের সিদ্ধান্তনিয়েছি আমরা  :  

প্রথমত, আমাদের দু’দেশের জনসাধরণের জীবনকে স্পর্শ করেযায়, এ ধরণের ক্ষেত্রগুলিতে আমাদের সহযোগিতার স্তম্ভগুলিকে আরও শক্তিশালী করেতুলব। এই ক্ষেত্রগুলি হ’ল – কৃষি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং নিরাপত্তা।  

কৃষি সহযোগিতার মূল ভিত্তি হিসাবে চিহ্নিত উৎকর্ষকেন্দ্রগুলিকে আরও উন্নত করে তুলতে আমরা পরস্পরের সঙ্গে মতবিনিময় করেছি। এই লক্ষ্যপূরণে ইজরায়েলের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও পন্থাপদ্ধতিকে আমরা অনুসরণ করে যাব।   

প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে বিকাশের লক্ষ্যে ইজরায়েলিসংস্থাগুলিকে আমি আমন্ত্রণ জানিয়েছি, আমাদের উদার প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ নীতিরসুযোগ গ্রহণ করে ভারতের সংস্থাগুলির সঙ্গে আরও বেশি করে সহযোগিতাবদ্ধ হওয়ার জন্য।     

দ্বিতীয়ত,   

তেল ও গ্যাস, সাইবার নিরাপত্তা, চলচ্চিত্র এবং স্টার্টআপ-এর মতো অপেক্ষাকৃত কম আবিষ্কৃত ক্ষেত্রগুলিতে আরও বেশি মাত্রায় যৌথ প্রচেষ্টাগড়ে তুলতে আমরা উদ্যোগী হয়েছি। যে চুক্তি বিনিময় পর্ব কিছুক্ষণ আগেই সম্পন্নহয়েছে, তার মধ্যেই আমাদের এই প্রচেষ্টার প্রতিফলন দেখতে পাওয়া যাবে। বিভিন্নক্ষেত্রে বহুধা প্রসারিত কর্মপ্রচেষ্টা গড়ে তুলতে আমরা যে বিশেষভাবে আগ্রহী তারপরিচয় পাওয়া যাবে এর অনেকগুলি ক্ষেত্রেই।    

এবং তৃতীয়ত,    

আমাদের এই ভৌগোলিক অবস্থানের মধ্যে সাধারণ মানুষ এবংতাঁদের চিন্তাভাবনা বিনিময়ের লক্ষ্যেও আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এজন্য প্রয়োজন নীতিগতসুযোগ-সুবিধা, পরিকাঠামো, যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং সরকারি সাহায্য ও সমর্থনের বাইরেওঅন্যান্য ক্ষেত্রগুলিকে উৎসাহদান।    

দু’দেশের জনসাধারণ যাতে একে অপরের দেশে কাজের সূত্রে সফরকরতে পারেন, তা আরও সহজ করে তুলতেও ইজরায়েলের সঙ্গে আমরা ব্যবস্থাগত এক প্রক্রিয়ারসঙ্গে যুক্ত রয়েছি। প্রয়োজনে দীর্ঘকালের জন্য কাজের সুবাদে সফর করা প্রয়োজন হতেপারে। দু’দেশের জনসাধারণকে পরস্পরের আরও কাছে নিয়ে আসার জন্য ভারতীয় সাংস্কৃতিককেন্দ্র খুব শীঘ্রই কাজ শুরু করতে চলেছে ইজরায়েলে।   

বিজ্ঞান শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত ১০০ জনেরও বেশিতরুণ-তরুণীদের দ্বিপাক্ষিক বিনিময় সফর শুরু করারও আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি।     

বন্ধুগণ,    

এক বলিষ্ঠ অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার লক্ষ্যে দ্বিপাক্ষিকবাণিজ্য ও বিনিয়োগের প্রসার একটি অবশ্য পালনীয় শর্ত। এই লক্ষ্যে আরও বেশি করে কাজকরে যেতে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এবং আমি সহমত প্রকাশ করেছি। গত বছর তেল আভিভবৈঠকের পর দ্বিপাক্ষিক মঞ্চের আওতায় দু’দেশের সিইও-দের সঙ্গে আমরা দ্বিতীয়বার এবিষয়ে কথা বলব।    

প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু’র সঙ্গে যে এক বিরাটপ্রতিনিধিদল এদেশে এসেছেন আমি তাঁদেরও স্বাগত জানাই। প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এবংআমি আঞ্চলিক তথা বিশ্ব পরিস্থিতির বিভিন্ন প্রেক্ষাপট নিয়ে পরস্পরের মধ্যেমতবিনিময়ও করেছি।    

বন্ধুগণ,    

গতকাল ভারতের মাটি স্পর্শ করার পরপরই প্রধানমন্ত্রীনেতানিয়াহু আমার সঙ্গে গিয়েছিলেন নতুন নামাঙ্কিত তিন মূর্তি হাইফা চক-এ ভারতীয় বীরসেনানীদের স্মৃতির উদ্দেশে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য। ইজরায়েলের শতাব্দী প্রাচীনহাইফা যুদ্ধে তাঁরা তাঁদের জীবন বিসর্জন দিয়েছিলেন।     

ইতিহাস তথা বীর সেনানীদের কথা কখনই বিস্মৃত হয়নি আমাদেরএই দুটি দেশ। এই ক্ষেত্রটিতে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর এই বিশেষ মানসিকতা ওদৃষ্টিভঙ্গীর আমি বিশেষ অনুরাগী।   

ইজরায়েলের সঙ্গে আমাদের বর্তমান অংশীদারিত্বের ভবিষ্যতেরদিকে দৃষ্টিপাত করলে আশা ও আশাবাদ আমাকে উদ্বেলিত করে। প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুরমধ্যে আমি খুঁজে পেয়েছি এমনই এক ব্যক্তিত্বকে, যিনি ভারত-ইজরায়েল সম্পর্কেক্রমান্বয়ে নতুন নতুন মাত্রা এনে দিতে আমার মতোই অঙ্গীকারবদ্ধ।    

পরিশেষে, প্রধানমন্ত্রী, একদিন পরই আমার নিজের রাজ্যগুজরাটে আবার আপনার সঙ্গে মিলিত হওয়ার সুযোগ পাব – একথা চিন্তা করে আমি বিশেষভাবেআনন্দিত।    

সেখানে প্রতিশ্রুতি পূরণের আরও একটি সুযোগ অপেক্ষা করেরয়েছে আমাদের জন্য। কৃষি, প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনের মতো ক্ষেত্রগুলিতে আমাদেরপারস্পরিক সম্পর্কের সেখানে প্রসার ঘটতে চলেছে।     

প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু, শ্রীমতী নেতানিয়াহু এবং আগতপ্রতিনিধিদলের ভারতে অবস্থানকাল স্মরণীয় হয়ে থাকুক – এই প্রার্থনা জানাই।    

আপনাদের অসংখ্য ধন্যবাদ। তোড়া রাবা!  

  

   

PG/SKD/SB