প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে আজ জাতীয়স্বাস্থ্য মিশনের আওতায় বিভিন্ন কর্মসূচি রূপায়ণের অগ্রগতির বিষয়টি পর্যালোচনা করাহয়।জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের এক বিশেষ ক্ষমতাবিশিষ্ট কর্মসূচি কমিটি (ইপিসি) এবংমিশন স্টিয়ারিং গ্রুপ (এমএসজি)-র সিদ্ধান্তগুলি সম্পর্কেও প্রসঙ্গত অবহিত করা হয়কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভাকে।
উল্লেখ্য,জাতীয় গ্রামীণ স্বাস্থ্য মিশনের আনুষ্ঠানিক সূচনা হয় ২০০৫-এর এপ্রিলে। পরবর্তীকালেঅর্থাৎ, ২০১৩-তে শহরাঞ্চলের জন্য জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন (এনইউএইচএম) চালু করার ফলেএই কর্মসূচিটির নতুন নামকরণ হয় জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন। এরপর থেকে এনআরএইচএম এবংএনইউএইচএম – এই দুটি কর্মসূচি এনএইচএম-এর আওতায় দুটি পৃথক কর্মসূচি বলে চিহ্নিতকরা হয়েছে।
কেন্দ্রীয়মন্ত্রিসভা আজ জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের বিভিন্ন কর্মসূচি রূপায়ণের অগ্রগতিপর্যালোচনাকালে এমএমআর, আইএমআর, ইউ৫এমআর এবং টিএফআর উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছেবলে জানা যায়। যক্ষ্মা, ম্যালেরিয়া, কুষ্ঠ ইত্যাদি বিভিন্ন রোগের নিয়ন্ত্রণে যে যেক্ষেত্রে অগ্রগতি সম্ভব হয়েছে তাও আজ খতিয়ে দেখে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা।পর্যালোচনাকালে জানা যায় যে –
· জাতীয়স্বাস্থ্য মিশনের কার্যকালে ইউ৫এমআর হ্রাস পেয়েছে প্রায় দ্বিগুণ।
· এমএমআর-এরহার হ্রাস পাওয়ার ফলে এমডিজি৫-এর লক্ষ্যমাত্রা পূরণের পথে আরও এগিয়ে গেছে ভারত।
· ম্যালেরিয়া,যক্ষ্মা এবং এইচআইভি/এড্স-এর নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচিও উল্লেখযোগ্য সাফল্য লাভ করেছে।
· ২০১০সালে কালাজ্বর প্রবণ এলাকাগুলিতে প্রতি ১০ হাজার জনপ্রতি কালাজ্বরে আক্রান্ত হওয়ারঘটনা লক্ষ্য করা গিয়েছিল ২৩০টির মতো ব্লকে। কিন্তু ২০১৬-তে এক্ষেত্রে ব্লকেরসংখ্যা হ্রাস পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৯৪-এ।
· পিপিআইইউসিডিপদ্ধতি সম্পর্কিত পরিষেবা প্রসারের জন্য উৎসাহ ভাতা দেওয়া হয় ১৫০ টাকা করে।আবার, এইকাজে উদ্বুদ্ধ করার জন্য আশা কর্মীদেরও দেওয়া হত ১৫০ টাকা করে। এই পদ্ধতিগ্রহীতাদের জন্যও অনুরূপ উৎসাহ ভাতাদানের একটি প্রস্তাব পেশ করা হয় এমএসজি-র কাছেএবং তাতে অনুমোদনও দেওয়া হয়।
· ১০লক্ষ জনসংখ্যা প্রতি একটি করে এমএমইউ-এর নীতিটিকেও শিথিল করা হয়েছে।
· বয়ঃসন্ধিতেউপনীত কিশোরীদের ঋতুস্রাবকালীন স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য ছ’টি স্যানিটারি ন্যাপকিনেরএক একটি প্যাকের জন্য বাজেট সহায়তার পরিমাণ ৮ টাকা থেকে ১২ টাকায় উন্নীত করার একটিপ্রস্তাবও পেশ করা হয়েছে।যে ১৯টি রাজ্য এই কর্মসূচি এখনও গ্রহণ করেনি, প্রথমবছরেতাদের জন্য এই বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে।
· জাতীয়স্বাস্থ্য মিশনের আওতায় কর্মসূচি পরিচালনার জন্য বাজেট সংস্থান বর্তমানের ৬.৫শতাংশ থেকে ৯.৫ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে। বড় বড় রাজ্যগুলির বার্ষিককার্যপরিকল্পনার নিরিখেই হার বৃদ্ধির বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। অন্যদিকে,অপেক্ষাকৃত ছোট রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির জন্য বার্ষিক কর্মপরিকল্পনার ক্ষেত্রেবৃদ্ধির হার ১১ শতাংশ থেকে ১৪ শতাংশে উন্নীত করা হচ্ছে।
· সরকারিও বেসরকারি বিদ্যালয়গুলিতে জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের আওতায় স্বাস্থ্য সংক্রান্তকর্মসূচি রূপায়ণকে আরও জোরদার করে তোলার প্রস্তাব করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় মানবসম্পদবিকাশ মন্ত্রকের সঙ্গে সমন্বয় ও সহযোগিতার মাধ্যমেই এই কর্মসূচি রূপায়িত হচ্ছে।
· মায়েদেরনিয়ে বৈঠক আয়োজনের ব্যবস্থা করার জন্য আশা কর্মীদের প্রতি মাসে ১০০ টাকা করে উৎসাহভাতা দেওয়ারও ব্যবস্থা হয়েছে। সন্তানদের স্তন্যপান করানোর জন্য মায়েরা যাতে উৎসাহিতহন সেজন্য স্তন্যদানের সুফলগুলি তাঁদের কাছে ব্যাখ্যা করার জন্য এই ধরনের বৈঠকেরআয়োজন করা হয়।
জাতীয়স্বাস্থ্য মিশনের আওতায় কর্মসূচি রূপায়ণের জন্য যে কৌশল বর্তমানে অবলম্বন ও অনুসরণকরা হয়, তার মধ্যে রয়েছে :
· সকলেরজন্য উন্নতমানের স্বাস্থ্য পরিষেবার প্রসার।
· স্বাস্থ্যপরিষেবা প্রসারের কাজে কেন্দ্র, রাজ্য এবং স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন সংস্থাগুলির মধ্যেএক অংশীদারিত্বের বাতাবরণ গড়ে তোলা।
· প্রাথমিকস্বাস্থ্য পরিষেবা কর্মসূচি এবং পরিকাঠামোগত ব্যবস্থার ক্ষেত্রে পঞ্চায়েতি রাজপ্রতিষ্ঠান এবং সমষ্টিকে যুক্ত করার জন্য একটি উপযুক্ত মঞ্চ গড়ে তোলা।
· সমতাএবং সামাজিক ন্যায় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধার প্রসার।
· স্থানীয়ও আঞ্চলিক পর্যায়ের উদ্যোগগুলির ক্ষেত্রে রাজ্যগুলির জন্য এক বিশেষ নমনীয় পদ্ধতিঅবলম্বন করা।
· স্বাস্থ্যপরিষেবা এবং প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্য ব্যবস্থার প্রসারে এক বিশেষ কাঠামোগত ব্যবস্থাগড়ে তোলা।
সকলের কাছে সমতারভিত্তিতে সুলভ এবং উন্নত মানের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার প্রসার সম্ভব করে তোলাইসরকারের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।
PG/SKD/DM/