নয়াদিল্লি, ১০ মার্চ, ২০১৫ প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ সেশেল্স, মরিশাস ও শ্রীলঙ্কা সফরের জন্য রওনা হলেন। যাত্রা শুরুর আগে তিনি জানান, ভারতের এই তিনটি দেশের সঙ্গেই দৃঢ়, বহুমুখী ও গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে, আর তিনটি দেশই ভারতের বিদেশ নীতিতে গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে। আজ, অর্থাৎ ১০ থেকে ১৪ মার্চ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী তিনটি দেশ পরিদর্শন করবেন। শ্রী মোদী বলেন, তিনটি ভারত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জ দেশে তাঁর সফর, ভারতের কাছের ও প্রতিবেশী দেশগুলির প্রতি বিদেশ নীতিগত প্রাধান্য প্রতিফলিত হয়। এই অঞ্চলের সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করার প্রতি ভারত বিশেষ গুরুত্ব দেয় কেননা ভারতের নিরাপত্তা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে এই অঞ্চল বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর প্রথম গন্তব্য হবে সেশেল্স। সে দেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক, পারস্পরিক আস্থা ও অভিন্ন মূল্যবোধের ভিত্তির ওপর সুপ্রতিষ্ঠিত। ১৯৮১-র পর এই প্রথম কোন প্রধানমন্ত্রী সেশেল্স সফরে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, তিনি সেশেল্স-এর রাষ্ট্রপ্রধান ও ভারতবন্ধু জেম্স মিশেলের সঙ্গে বৈঠকের অপেক্ষায় রয়েছেন। আগামীকাল ও ১২ তারিখ প্রধানমন্ত্রী থাকবেন মরিশাসে। ১২ মার্চ সে দেশের স্বাধীনতা দিবস উদেযাপন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ঐ দিনটি ভারতীয়দের পক্ষে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ কারণ ঐ দিনেই ১৯৩০ সালে মহাত্মা গান্ধী তাঁর ডান্ডি যাত্রা শুরু করেন। মরিশাসের সঙ্গে ভারতের সুপ্রাচীন সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ করার লক্ষ্যেই ‘ছোটা ভারত’-এ তাঁর এই সফর বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। প্রধানমন্ত্রী মরিশাসের সংসদে ভাষণ দেবেন। এছাড়া, ভারতে তৈরি উপকূল প্রহরা জাহাজ ব্যারাকুডার যৌথ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও প্রধানমন্ত্রী অংশ নেবেন। মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী স্যর অনিরুদ জগন্নাথের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক হবে যেখানে দু’দেশের অংশীদারিত্বমূলক সম্পর্ক আরও গভীর করার লক্ষ্যে আলোচনা হবে। এছাড়া, সে দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আলোচনায় বসবেন। শ্রীলঙ্কায় প্রধানমন্ত্রী মোদীর এবারের সফর ১৯৮৭-র পর ভারতীয় কোন প্রধানমন্ত্রীর ঐ দ্বীপ রাষ্ট্রে প্রথম সফর। শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি মৈত্রিপালা সিরিসেনার গত মাসের ভারত সফরের পর এক মাসের মধ্যে দুই রাষ্ট্রনেতার মধ্যে আবার বৈঠক হবে। তাঁর এই সফরকে প্রধানমন্ত্রী সবদিক থেকে, অর্থাৎ রাজনৈতিক, কৌশলগত, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং মানুষে মানুষে যোগাযোগের দিক থেকে দু’দেশের সম্পর্ককে আরও নিবিড় করবে বলে প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেছেন। এই সফর প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে নিরন্তর যোগাযোগ রাখার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর অভিপ্রায়ের অঙ্গ হিসেবেই দেখা হচ্ছে। ভারতের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী দেশ শ্রীলঙ্কায় সফরের সুযোগ পেয়ে প্রধানমন্ত্রী আনন্দিত বলে জানিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি মৈত্রিপালা সিরিসেনা ও প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিঙ্ঘের সঙ্গে বৈঠক ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী সে দেশের অন্য রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গেও আলোচনায় বসবেন। দু’দেশের মধ্যে নতুন অংশীদারিত্ব গঠনের উদ্দেশ্য নিয়েই আলোচনাগুলি হবে বলে প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদীকে শ্রীলঙ্কার সংসদে ভাষণ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তিনি এছাড়াও কলম্বোয় মহাবোধি সোসাইটি পরিদর্শন করবেন। এছাড়া , প্রধানমন্ত্রী যাবেন তালাইমান্নারের অনুরাধাপুরা এবং জাফনায়। জাফনায় ঐতিহাসিক জাফনা পাবলিক লাইব্রেরির পাশেই প্রধানমন্ত্রী জাফনা সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তরও স্থাপন করবেন। তিনি সেখানকার মানুষজনের সঙ্গেও আলাপ-আলোচনা করবেন। এই তিনটি দেশে প্রধানমন্ত্রীর সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অবস্থিত তিনটি দেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করতে সাহায্য করবে বলে প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন।