আমাদেরদেশে রেল সাধারণ মানুষের জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে ছড়িয়ে থাকা একটি ব্যবস্থা।দরিদ্র থেকে দরিদ্রতম পরিবারের জন্যও রেল একটি অবলম্বন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশতঃ এইরেলকে তার ভাগ্যের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। গত ৩০ বছর ধরে দিল্লিতে জোট সরকার থাকায়বিভিন্ন দলের সদস্যদের খুশি রাখতে গিয়ে সরকার সমর্থক দলগুলির নেতাদের হাতে রেলেরদায়িত্ব তুলে দিয়েছে। অর্থাৎ, সরকার গঠনের জন্য রেল মন্ত্রককে ‘গাজর’ হিসেবেব্যবহার করা হয়েছে। এর পরিণামস্বরূপ যারা রেলেরদায়িত্ব পেয়েছেন, তারা শুধুই নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে এটিকে ব্যবহার করেছে।
বর্তমানসরকার রেলকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। রেলপথ সম্প্রসারিত করেছে। রেলে উন্নয়ন ওআধুনিকীকরণের মাধ্যমে এই পরিবহণ ব্যবস্থা যাতে সাধারণ মানুষের জীবনে একটি উৎকর্ষগতপরিবর্তন আনতে পারে সে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আপনারা গত আড়াই বছরে রেলের কাজকর্মদেখেছেন, আগের তুলনায় এর বাজেট দ্বিগুণ করে দেওয়া হয়েছে। আগে যে পথে সিঙ্গল লাইনছিল, সে পথে ডবল লাইন পাতার কাজ দুই থেকে তিনগুণ করা হয়েছে। মিটার গেজ থেকেব্রডগেজে উন্নয়নের কাজও আগের তুলনায় অনেকগুণ বাড়ানো হয়েছে। ডিজেল কিংবা কয়লারইঞ্জিনচালিত রেল পরিবেশের অনেক ক্ষতি করে। ডিজেল বিদেশ থেকে বেশি দাম দিয়ে আমদানিকরতে হয়। এই বিদেশি মুদ্রা বাঁচানো এবং পরিবেশ রক্ষার খাতিরে সারা দেশে রেলপথকেদ্রুত বিদ্যুতায়নের পথে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ইলেক্ট্রিক ইঞ্জিনের উৎপাদনও বাড়ানোহয়েছে। স্বাধীন ভারতে সবথেকে বড় প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ রেলের উন্নয়নে লাগানোহয়েছে। দুটো বড় লোকো ইঞ্জিন তৈরির কারখানায় এই প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ সুফলদায়কহয়েছে। ভবিষ্যতে এখান থেকে উৎপাদিত ইঞ্জিনগুলি সারা দেশের রেলগাড়িগুলিকে আরওগতিশীল করে তুলবে।
রেলগাড়িগুলিতেবায়ো-টয়লেট বৃদ্ধির কাজ দ্রুত করা হচ্ছে যাতে রেলপথ কম নোংরা হয়। এর পরিণামসুদূরপ্রসারী হবে।
স্বাস্থ্যেরদৃষ্টিতেই এই পরিবর্তনের চেষ্টা। পাশাপাশি, রেলের গতি বৃদ্ধি করতে ‘স্পেশাল মিশনমোড’-এ প্রযুক্তিগত পরিবর্তন আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলিতে রেলপরিচালনায় যে আধুনিকতম প্রযুক্তিগুলি ব্যবহার করা হয়, সেগুলি আমদানির মাধ্যমে আমাদেররেল নিরাপত্তা বৃদ্ধির চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
উন্নতদেশগুলিতে এত প্রযুক্তিগত পরিবর্তন এসেছে যে সেগুলিকে যথাযথ প্রয়োগ করতে পারলেআমরাও অনেক বেশি নিরাপদ রেলযাত্রা সুনিশ্চিত করতে পারব। সেজন্য অনেক বেশি টাকাবাজেট ধার্য করে আধুনিক মানের রেলের কামরা নির্মাণ করা হচ্ছে। সারা পৃথিবীতেই ৭০শতাংশ পণ্য পরিবহণ রেলের মাধ্যমে হয়, আর ৩০ শতাংশ হয় স্থলপথে। কিন্তু আমাদের দেশে১৫ থেকে ২০ শতাংশ পণ্য পরিবহণ রেলের মাধ্যমে হয় আর বাকিটা হয় স্থলপথে। স্থলপথে পণ্যপরিবহণে অনেক বেশি খরচ হয়। ফলে, জিনিসের দাম বেড়ে যায়। গুজরাটে উৎপন্ন লবণজম্মু-কাশ্মীরে স্থলপথে পাঠালে তার পরিবহণ খরচ এত বেড়ে যায় যে লবণের দাম সাধারণমানুষের ধরা-ছোঁয়ার বাইরে চলে যায়। সেজন্য আমরা চাইছি বেশি পরিমাণ পণ্য রেলেরমাধ্যমে দেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে পৌঁছে দিতে যাতে গরিব মানুষ সস্তায়সব জিনিস কিনতে পারেন।
আমরাসরকারে এসেই রেল দপ্তরকে বলেছি রেলের কন্টেনারের ওজন কমাতে। এমনিতে রেলেরকন্টেনারের ওজন ১৬ টন। তাতে লবণ তোলা যায় ২-৩ টন। আমি চাই কন্টেনারের ওজন হোক ৬টনের নিচে আর তাতে যেন ১২ টন লবণ পরিবহণ করা যায়। এই পরিকল্পনা ফলপ্রসূ হলে সারাদেশে লবণের দাম কমবে কিন্তু লবণ উৎপাদনকারীরা আগের তুলনায় বেশি রোজগার করবেন। রেলদপ্তর ইতিমধ্যেই এই নতুন ধরনের কন্টেনারের নকশা তৈরি করেছে। অর্থাৎ, সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্মভাবেপ্রত্যেকটি জিনিসের ইতিবাচক পরিবর্তন আনার কাজে রেল এগিয়ে চলেছে।
আমারদৃঢ় বিশ্বাস, দ্রুত গোটা রেল পরিষেবাই বদলে যাবে। এতে সাধারণ মানুষের সুবিধা হবে,রেলপথ দূর-দূরান্তে পৌঁছে যাবে, ভারতের সামুদ্রিক বন্দরগুলির সঙ্গে রেলপথে যোগাযোগবাড়বে। খনি অঞ্চলগুলির সঙ্গে রেল যোগাযোগ বাড়বে। আরেকটি কথা, রেল স্টেশনের অবস্থানহয় প্রত্যেক শহরের কেন্দ্রে। কাজেই সেখানকার জমির মূল্য হয় আকাশছোঁয়া। সেজন্যইআমরা প্রত্যেক স্টেশনকে বহুতল বাড়িতে পরিণত করতে চাই। শহরের প্রয়োজন অনুসারে ১০তলা থেকে ২৫ তলা বাড়ি বানিয়ে এর মধ্যে শপিং মল, প্রেক্ষাগৃহ, হোটেল, বাজার গড়েতুলে সেগুলির ভাড়া বাবদ রেলের আমদানি বাড়তে পারে। রেলে বিনিয়োগ বাড়বে। আমরা আগেইগুজরাটে বাসস্ট্যান্ডগুলিকে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে উন্নীত করেছি। আজ দরিদ্রথেকে দরিদ্রতম মানুষও প্রত্যেক বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে সেসব পরিষেবা উপভোগ করতে পারেনযা বড়লোকেরা বিমানবন্দরে গিয়ে উপভোগ করেন। গুজরাট এটা আগেই করে দেখিয়েছে।
আগামীদিনেভারতে যে কয়েক হাজার রেলস্টেশন রয়েছে সেগুলি এভাবে উন্নত হতে পারে। আপনাদের হয়তোমনে আছে, যেদিন এই মহাত্মা মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলাম, ২০১০ সালে তখনগুজরাটের সুবর্ণ জয়ন্তী বর্ষ চলছিল। সেদিন ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে এসে আমিবলেছিলাম যে , আমি স্পষ্ট দেখতেপাচ্ছি একদিন এই মহাত্মা মন্দিরে বিশ্বের গুণীজন এসে বিশ্ব শান্তির সপক্ষে আলোচনাকরবেন।
মহাত্মাগান্ধীর নামের সঙ্গে যুক্ত এই মহাত্মা মন্দির। আমরা এর নির্মাণ প্রক্রিয়াকেত্বরান্বিত করে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ মানুষেরা যাতে এসে এখানে বসে শান্তির সপক্ষেআলোচনা করতে পারেন তার উপযোগী করে তুলেছি। এই রেলস্টেশনের ওপরে যে অত্যাধুনিকহোটেল গড়ে উঠছে, আগামীদিনে স্বাভাবিকভাবেই এটি মহাত্মা মন্দিরের কনভেনশন সেন্টারহয়ে উঠবে। এখানে থেকে, বৈঠক সেরে তারপর সংলগ্ন হেলিপ্যাড থেকে হেলিকপ্টারে করেনিকটবর্তী বিমানবন্দরে যেতে পারবেন। এভাবে মহাত্মা মন্দিরকে ব্যবসা-বাণিজ্যেরক্ষেত্রেও একটি চৌম্বক ক্ষেত্র করে গড়ে তোলার সম্ভাবনা আমি দেখতে পাচ্ছি। এতদিন এইরেলের জমি এমনিই পড়ে থাকত। রেলের পরিকাঠামো অনাদরে বিনষ্ট হত। আমরা সেগুলিকেইব্যবহার করে এই মহাত্মা মন্দির গড়ে তুলেছি যা ৩৬৫ দিনের মধ্যে ৩০০ দিনই ব্যস্তথাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এখানে যদি বিশ্বস্তরের অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়, তাহলে তারপ্রয়োজনে রেলের আধুনিকীকরণও অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠবে।
আজগান্ধীনগরে এ ধরনের প্রথম প্রকল্প শুরু হল। আগামীদিনে ভারতের অন্যান্য অঞ্চলওএগিয়ে আসবে। আমাদের রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভুজি রেলস্টেশনগুলিতে ওয়াইফাই পরিষেবাশুরু করেছেন। ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’র স্বপ্ন সফল করার লক্ষ্যে কাজ এগিয়ে চলেছে। আপনারাভারতের গরিব মানুষদের কি ভেবেছেন? শুনলে অবাক হবেন যে, রেলে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ যাত্রীঅনলাইন টিকিট কেনেন। এটাই ভারতের শক্তি। ওয়াইফাই যুক্ত হওয়ার ফলে আজ গুগ্ল কিংবাঅন্যান্য সংস্থার সমীক্ষা অনুযায়ী ভারতের রেলস্টেশনগুলিতে ওয়াইফাইয়ের ক্ষমতাবিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ। ফলে, অনেক ছাত্র যারা অনলাইনে পড়াশোনা করা পছন্দ করে,তারা রেলস্টেশনে অধিক সময় কাটিয়ে নিজের ল্যাপটপে বিনা খরচে পড়াশোনার কাজ চালিয়েযায়। যত খুশি ডাউনলোড করতে পারে। অর্থাৎ, সামান্য ব্যবস্থার পরিবর্তন কিভাবেসমাজকে প্রভাবিত করতে পারে, ভারতীয় রেল তার দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে।
এইপ্রক্রিয়াতেই আজ গুজরাটে গোটা দেশের উপযোগী একটি এমন প্রকল্প শুরু হতে যাচ্ছে যাআগামীদিনে দেশের অন্যান্য শহরেও হবে আর রেলকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেবে। সাধারণমানুষের জন্য রেলপথকে আরও সুগম করতে, দেশকে আরও গতি প্রদান করতে, রেলকে দেশেরউন্নয়নের বাহক করে তুলতে এই প্রকল্প যুগান্তকারী হয়ে উঠবে। আজ একটি স্পন্দনশীলশিখর সম্মেলনের পূর্ব সন্ধ্যায় গুজরাটের সাধারণ মানুষের হাতে এই উপহার তুলে দিতেএসে আমি অত্যন্ত গর্ব অনুভব করছি। আমি খুব খুশি।
অনেকঅনেক ধন্যবাদ।
Railways is connected with every citizen. The poorest of the poor benefit because of the Railways: PM @narendramodi
— PMO India (@PMOIndia) January 9, 2017
Earlier, railways was a sought after portfolio. Alliance partners joined governments on getting this portfolio. This is a bitter truth: PM
— PMO India (@PMOIndia) January 9, 2017
NDA government has accorded topmost priority to the railways and to make our rail network modern: PM @narendramodi
— PMO India (@PMOIndia) January 9, 2017
We want our railways to bring a qualitative difference in the lives of citizens: PM @narendramodi
— PMO India (@PMOIndia) January 9, 2017
Budget allocation has increased, doubling work, gauge conversion work is happening faster: PM @narendramodi
— PMO India (@PMOIndia) January 9, 2017
We are focussing on state of the art technology and on the issue of railway safety: PM @narendramodi
— PMO India (@PMOIndia) January 9, 2017
Railway gives 'Gati' and 'Pragati' to the nation: PM @narendramodi
— PMO India (@PMOIndia) January 9, 2017
PM @narendramodi performed the Bhomipujan of redevelopment project of Gandhinagar railway station. pic.twitter.com/2L8suhSKcX
— PMO India (@PMOIndia) January 9, 2017
Redevelopment project of Gandhinagar railway station will contribute to Gandhinagar's development. Performed Bhoomipujan of the project. pic.twitter.com/VMixqNc4Qd
— Narendra Modi (@narendramodi) January 9, 2017