Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

গুজরাটের সুরাটে ‘সুরাট ফুড সিকিউরিটি স্যাচুরেশন’ অভিযানের উদ্বোধনে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

গুজরাটের সুরাটে ‘সুরাট ফুড সিকিউরিটি স্যাচুরেশন’ অভিযানের উদ্বোধনে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ


নয়াদিল্লি, ৭ মার্চ, ২০২৫

মঞ্চে উপস্থিত গুজরাটের জনপ্রিয় মুখ্যমন্ত্রী শ্রী ভূপেন্দ্রভাই প্যাটেল, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় আমার সঙ্গী শ্রী সি আর পাটিলজি, রাজ্য সরকারের মন্ত্রীগণ, এখানে উপস্থিত সমস্ত জনপ্রতিনিধি এবং আমার সুরাটের ভাই ও বোনেরা!

আপনারা সবাই কেমন আছেন? ভালো আছেন তো?

আমার সৌভাগ্য যে আজ দেশের জনগণ আর গুজরাটের জনগণ আমাকে তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন। এরপর, এটি আমার সুরাটবাসীর সঙ্গে প্রথম সাক্ষাৎ। গুজরাট যাকে গড়ে তুলেছে, তাকে দেশ ভালোবাসা দিয়ে আপন করে নিয়েছে। আমি সর্বদা আপনাদের প্রতি ঋণী থাকব। আমার জীবন গঠনে আপনাদের অনেক বড় অবদান রয়েছে। আজ যখন সুরাট এসেছি, তখন সুরাটের সেই আত্মাকে স্মরণ করবো না, দেখতে পাবো   না, এটা কেমন করে সম্ভব? কর্ম এবং দান – এই দুটি এমন জিনিস যা সুরাটকে বৈশিষ্ট্যপূর্ণ করে তোলে। পরস্পরকে সাহায্য করা, সকলের উন্নতিতে আনন্দ করা, এটাই আমাদের সুরাটের প্রত্যেক মনে দেখা যায়। আজকের এই অনুষ্ঠান সুরাটের এই ভাবনাকেই এগিয়ে নিয়ে যাবে।

বন্ধুগণ,

সুরাট অনেক ক্ষেত্রে গুজরাট তথা দেশের অগ্রণী শহর। এখন সুরাট গরিব, বঞ্চিত, খাদ্য এবং পুষ্টি সুরক্ষার আন্দোলনকেও এগিয়ে নিয়ে যাবে। এখানে সুরাটে যে খাদ্য নিরাপত্তা সম্পৃক্ত করার অভিযান শুরু হয়েছে, তা দেশের অন্যান্য জেলাকেও প্রেরণা যোগাবে। এই সম্পৃক্তায়ন সবাই ১০০ শতাংশ পেলে তবেই সম্ভব। কোনওরকম বৈষম্য না রেখে এটাই সুনিশ্চিত করতে হবে। কাউকে বেশি দিলাম, কাউকে ঠকালাম, সেটা চলবে না। তুষ্টিকরণের ভাবনা ছেড়ে সকলের সন্তুষ্টিকরণের পবিত্র ভাবনাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। যখন সরকারই সুবিধাভোগীদের দরজায় যাচ্ছে, তখন কেউ কিভাবে বাদ পড়বে। কেউ যদি বাদ না পড়ে, তাহলে কেউ রাগও করবে না, বঞ্চিতও হবে না। আর যখন সবাই লাভবান হবে, তখন যারা ঠগ তারা দূরে পালাবে। 

বন্ধুগণ,

এই সম্পৃক্তায়নের ভাবনা নিয়ে এখানকার প্রশাসন ২ লক্ষ ২৫ হাজারেরও বেশি নতুন সুবিধাভোগীকে চিহ্নিত করেছে। এর মধ্যে অধিক সংখ্যায় আমাদের বয়স্ক মা ও বোন, বয়স্ক ভাই ও বোন, বিধবা মা ও বোন এবং আমাদের দিব্যাঙ্গদের যুক্ত করা হয়েছে। আর এভাবে আমাদের নতুন পরিবারের সদস্যরাও বিনামূল্যে রেশন পাবেন, পুষ্টিকর খাদ্য পাবেন। আমি সমস্ত সুবিধাভোগীদের অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই।

বন্ধুগণ,

আমরা সবাই একটি লোকোক্তি শুনেছি – ‘রোটি, কাপড়া অউর মকান’। অর্থাৎ, রুটির বা খাদ্যের গুরুত্ব, কাপড় এবং বাড়ির থেকেও বেশি। আর যখন কোনও গরিব রুটির জন্য কাতরায়, তখন তাঁর যন্ত্রণা কিরকম, সেটা আমার বই পড়ে জানতে হয়নি, নিজস্ব অভিজ্ঞতা থেকে জানি। সেজন্য বিগত বছরগুলিতে আমাদের সরকার সবার আগে দরিদ্রদের রুটির চিন্তা করেছে, খাদ্যের চিন্তা করেছে। গরিবের ঘরে উনুন জ্বলবে না, বাচ্চারা অশ্রু পান করে শুয়ে পড়বে, এটা আজকের ভারত মেনে নিতে পারে না। সেজন্যই খাদ্য ও বাসস্থানের ব্যবস্থা করাকেই আমরা অগ্রাধিকার দিয়েছি। 

বন্ধুগণ,

আজ আমি আনন্দিত, আমাদের সরকার গরিবের বন্ধু হয়ে সেবক রূপে তাঁদের পাশে দাঁড়িয়ে আছে। কোভিডের সময় যখন দেশবাসীর সবচাইতে বেশি সাহায্যের প্রয়োজন ছিল, তখন ‘প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ যোজনা’ তাঁদের খাদ্যের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করেছে। এটা বিশ্বের সর্ববৃহৎ এবং অভিনব একটি প্রকল্প যা আজও চলছে। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে গুজরাট সরকার এই প্রকল্পকে বিস্তারীত করেছে। গুজরাট এই প্রকল্পের আয়সীমা বাড়িয়েছে যাতে অধিকাংশ সুবিধাভোগী এর দ্বারা লাভবান হতে পারেন। আজ প্রত্যেক বছর কেন্দ্রীয় সরকার এই বাবদ ২ লক্ষ ২৫ হাজার কোটি টাকা খরচ করে যাতে গরিবের রান্নাঘরে উনুন জ্বলতে থাকে। 

বন্ধুগণ,

উন্নত ভারতের যাত্রায় পুষ্টিকর খাদ্যের বড় ভূমিকা রয়েছে। আমাদের লক্ষ্য, দেশের প্রত্যেক পরিবারকে পর্যাপ্ত পুষ্টি যোগানো যাতে অপুষ্টি এবং রক্তাল্পতা থেকে দেশবাসী মুক্ত হতে পারে। ‘পিএম পোষণ স্কিম’-এর মাধ্যমে প্রায় ১২ কোটি স্কুলের বাচ্চাকে পুষ্টিযুক্ত খাদ্য দেওয়া হচ্ছে। সক্ষম অঙ্গনওয়াড়ি প্রকল্পের মাধ্যমে গর্ভবতী ও স্তনদায়ী মা ও ছোট ছোট শিশুদের পুষ্টির চিন্তা করা হয়েছে। ‘পিএম মাতৃ বন্দনা যোজনা’র মাধ্যমেও গর্ভবতী মহিলাদের পুষ্টিকর খাদ্যের জন্য হাজার টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। 

বন্ধুগণ,

পুষ্টি শুধুই ভালো খাওয়াদাওয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। পরিচ্ছন্নতাও এর গুরুত্বপূর্ণ দিক। সেজন্য আমাদের সরকার পরিচ্ছন্নতার ওপরও জোর দিচ্ছে। পরিচ্ছন্নতা নিয়ে সারা দেশে যে প্রতিযোগিতা আয়োজিত হয়, সুরাট সর্বদাই এর মধ্যে প্রথম কিংবা দ্বিতীয় স্থানে থাকে। সেজন্য সুরাটের জনগণকে অভিনন্দন জানাই। 

বন্ধুগণ,

আমরা চেষ্টা করছি, দেশের প্রত্যেক শহর ও গ্রামকে পরিচ্ছন্ন করে তোলার কাজ নিয়মিত জারি রাখতে। আজ বিশ্বের অনেক বড় সংস্থা বলছে যে স্বচ্ছ ভারত অভিযানের ফলে ভারতের গ্রামগুলিতে রোগের প্রকোপ কমেছে। আমার সহকর্মী শ্রী সি আর পাটিলজি এখানে বসে আছেন। গোটা দেশের জল মন্ত্রকের দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁর নেতৃত্বেই সারা দেশে ‘হর ঘর জল’ অভিযান চলছে। এর মাধ্যমে দেশের সর্বত্র বাড়িতে বাড়িতে নলের মাধ্যমে জল পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। সেজন্য দেশে অনেক রোগের প্রকোপ কমেছে।

বন্ধুগণ,

আজ আমাদের বিনামূল্যে রেশন দেওয়ার প্রকল্প কোটি কোটি মানুষের জীবনকে সহজ করেছে। আজ প্রত্যেক উপযুক্ত ব্যক্তি সম্পূর্ণ রেশন পাচ্ছেন। কিন্তু ১০ বছর আগে পর্যন্ত এটা সম্ভব ছিল না। আপনারা কল্পনা করতে পারেন, আমাদের দেশে ৫ কোটিরও বেশি ভুতুড়ে রেশন কার্ড ছিল। আমাদের গুজরাটে এটিকে বলা হত ‘ভুতিয়া কার্ড’। এদের কখন জন্মই হয়নি, রেশন কার্ড তৈরি হয়ে গেছে। এখন সেই ভুতেদের আমরা সাফাই করে ফেলেছি। এই ৫ কোটি ভুতুড়ে নামকে সিস্টেম থেকে সরিয়েছি। সমস্ত রেশন কার্ডকে আধার কার্ডের সঙ্গে যুক্ত করেছি। এখন সরকারি রেশনের দোকানে গেলেই নিজের অধিকার অনুযায়ী সবাই রেশন পাবেন। এই রেশন কার্ডের সঙ্গে যুক্ত আরেকটি বড় সমস্যার আমরা সমাধান করেছি। আমাদের সুরাটে অন্যান্য রাজ্য থেকে অনেক শ্রমিক ভাই কাজ করতে আসেন ওড়িশা, অন্ধ্রপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, বিহার ও উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যগুলি থেকে। একটা সময় ছিল যখন এক জায়গার রেশন কার্ড অন্য জায়গায় চলত না। আমরা ‘ওয়ান নেশন, ওয়ান রেশন কার্ড’ চালু করে এই সমস্যার সমাধান করেছি। এখন রেশন কার্ড যেখানকারই হোক, সুবিধাভোগীরা দেশের যে কোন প্রান্ত থেকে রেশন তুলতে পারবেন। এর ফলে আমাদের সুরাটের অনেক শ্রমিকও লাভবান হয়েছেন। এথেকে বোঝা যায়, যখন সৎভাবে কোনো নীতি প্রণয়ন করা হয়, তখন এর মাধ্যমে গরিবরা অবশ্যই উপকৃত হন। 

বন্ধুগণ,

গত এক দশকে গোটা দেশে আমরা মিশন মোডে গরিবদের ক্ষমতায়নের কাজ করেছি। তাঁদের জন্য একটা সুরক্ষা কবচ বানিয়েছি যাতে তাঁদের কারোর সামনে হাত পাততে না হয়। পাকা বাড়ি, শৌচাগার, রান্নার গ্যাসের সংযোগ, নলের মাধ্যমে জলের সংযোগ ইত্যাদির ফলে গরিবদের মনে নতুন আত্মবিশ্বাস জেগেছে। এছাড়া, আমরা প্রত্যেকটি গরিব পরিবারকে আরেকটি রক্ষাকবচ দিয়েছি, তার নাম বিমা। এর ফলে, এই প্রথম দেশের ৫ কোটি মানুষ ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনামূল্যে চিকিৎসা করাতে পারছেন। জীবন বিমা এবং দুর্ঘটনা বিমা সম্পর্কে আগে তো গরিবরা ভাবতেই পারতেন না। আমাদের সরকার গরিব ও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের ৩৬ কোটিরও বেশি মানুষকে এই বিমার সুরক্ষা কবচও দিচ্ছে। এখন পর্যন্ত ১৬ হাজার কোটি টাকারও বেশি ক্লেম-এর টাকা এই গরিব পরিবারগুলি পেয়েছে। অর্থাৎ, বিপদের সময়ে এই টাকা গরিব পরিবারগুলির কাজে লেগেছে। 

বন্ধুগণ,

যাঁদেরকে কেউ দেখেনি, তাঁদেরকে মোদী পুজো করছে। আপনারা সেদিনকার কথা ভাবুন। কোনো কাজ শুরু করতে হলে গরিবদের ব্যাঙ্কের দরজা দিয়েও ঢুকতে দেওয়া হত না। তাঁদের কাছ থেকে গ্যারান্টি চাওয়া হত। কিন্তু গরিবরা গ্যারান্টি কোথা থেকে আনবেন। সেজন্য এই গরিব মায়ের সন্তান সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে প্রত্যেক গরিবকে মোদী গ্যারান্টি দেবে। আর সেজন্যই ‘মুদ্রা’ যোজনা শুরু করেছি। এর মাধ্যমে প্রায় ৩২ লক্ষ কোটি টাকা গরিবদের দেওয়া হয়েছে। যাঁরা আমাকে রোজ গালি দিত, তাঁরা ৩২-এর পর কতগুলি শূন্য লিখলে লক্ষ কোটি টাকা হয়, সেটাও জানেন না। কিন্তু মোদী গ্যারান্টি দিয়ে দিয়েছে। 

বন্ধুগণ,

ঠেলাওয়ালা, ফুটপাতের হকার এবং রেলপথের দু’পাশে যাঁরা পসরা সাজিয়ে বসেন, তাঁদেরকে সাহায্য করার কেউ ছিল না। সুদখোর মহাজনদের কাছ থেকে এক হাজার টাকা ধার করলে তাঁরা হাতে পেতেন ৯০০ টাকা। আর সারাদিন পরিশ্রম করে ফিরিয়ে দিতে হত হাজার টাকা। এই সামান্য রোজগার দিয়ে তাঁরা নিজেরা খাবেন না বাচ্চাদের খাওয়াবেন। আমাদের সরকার ‘স্বনিধি যোজনা’র মাধ্যমে তাঁদের জন্য ব্যাঙ্ক থেকে সাহায্যের ব্যবস্থা করেছে। আর তাঁদের জন্য একটি বিশেষ ক্রেডিট কার্ড দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেছে। আমাদের বিশ্বকর্মা সাথীরা, যাঁরা প্রত্যেক রাজ্যের গ্রাম ও শহরে কোনো না কোন পরিশ্রমের কাজে সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের কথা ভেবে এই ‘পিএম বিশ্বকর্মা যোজনা’ শুরু করা হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রশিক্ষণ প্রদান, বিভিন্ন আধুনিক সরঞ্জাম প্রদান এবং নতুন নতুন ডিজাইন শেখানো হচ্ছে। এই কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য তাঁদেরকে অর্থও দেওয়া হচ্ছে। এভাবে তাঁরা নিজেদের পরম্পরাগত পেশাকেই এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। এটাই তো ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’। এ ধরনের প্রচেষ্টার ফলে বিগত দশকে ২৫ কোটি ভারতবাসীকে দারিদ্র্যসীমার ওপরে তোলা সম্ভব হয়েছে। এর আগে ৫০ বছর ধরে ‘গরীবী হটাও’ – এই স্লোগান শুনে শুনে দেশবাসীর কান পচে গেছে। প্রত্যেকবার নির্বাচন এলেই এই ‘গরীবী হটাও’ স্লোগান শোনা যেত। কিন্তু দেশ থেকে দারিদ্র্য দূর হয়নি। আপনারা আমাকে এভাবে গড়ে তুলেছেন যে দায়িত্ব পেয়ে এমনভাবে কাজ করেছি যাতে আজ ২৫ কোটিরও বেশি দরিদ্র পরিবারের মানুষ দারিদ্র্যসীমার বাইরে বেরিয়ে এসেছেন। 

বন্ধুগণ,

এই সুরাটে অনেক বড় সংখ্যায় মধ্যবিত্ত পরিবার থাকে। দেশের উন্নয়নে মধ্যবিত্তদের অনেক বড় অবদান রয়েছে। সেজন্য বিগত দশকে মধ্যবিত্তদের ক্ষমতায়নের জন্য সরকার অনেক পদক্ষেপ নিয়েছে। এ বছরের বাজেটে এই ভাবনারই প্রতিফলন দেখা গেছে। আয়করে যে ছাড় দেওয়া হয়েছে তার ফলে ছোট ছোট দোকানদার, ব্যবসায়ী, কর্মচারীরা অনেক উপকৃত হবেন। এখন ১২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় করমুক্ত করা হয়েছে। এরকম কেউ ভাবেনওনি যা আমরা করে দেখিয়েছি। শুধু তাই নয়, যাঁরা চাকুরিজীবী, তাঁদেরকে তো এখন ১২ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা পর্যন্ত আয়ের ক্ষেত্রে কোনো কর দিতে হবে না। সমস্ত ট্যাক্স স্ল্যাবকে এখন নতুনভাবে বিন্যাস করা হয়েছে। প্রত্যেক করদাতা এক্ষেত্রে উপকৃত হবেন। সারা দেশের সঙ্গে গুজরাটের মধ্যবিত্ত পরিবারগুলির হাতেও এখন অনেক অর্থ সাশ্রয় হবে। এই অর্থ আপনারা বিশেষ প্রয়োজনে খরচ করতে পারবেন। সন্তানদের উন্নত ভবিষ্যতের জন্য সাশ্রয় করতে পারবেন।

বন্ধুগণ,

সুরাট শিল্পোদ্যোগীদের শহর। এখানে অনেক ছোট-বড় শিল্পোদ্যোগ রয়েছে, অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগ রয়েছে। এই শিল্পোদ্যোগগুলি লক্ষ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে। আমাদের সরকার আজ স্থানীয় সরবরাহ শৃঙ্খলকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করছে। সেজন্য অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগগুলিকে অনেক সাহায্য করা হচ্ছে। সবার আগে আমরা তাদের পরিভাষা বদলেছি। এর ফলে অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগগুলির বিস্তারের পথ খুলেছে। এ বছরের বাজেটে এই পরিভাষায় আরও সংস্কার করা হয়েছে। বিগত বছরগুলিতে আমরা অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগগুলির জন্য ঋণ গ্রহণের প্রক্রিয়া আরও সহজ করেছি। ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিশেষ ক্রেডিট কার্ড দেওয়ার ঘোষণা করা হয়েছে বাজেটে। এর ফলে, অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগগুলি লাভবান হবে। আমরা চেষ্টা করছি যাতে আমাদের তপশিলি জাতি ও তপশিলি জনজাতির অধিকাংশ যুবক-যুবতী শিল্পোদ্যোগী হয়ে ওঠেন। অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগ তৈরিতে সক্রিয় হন। এক্ষেত্রে আমাদের ‘মুদ্রা’ যোজনা বড় ভূমিকা পালন করেছে। এ বছরের বাজেটে প্রথমবার তপশিলি জাতি ও জনজাতির শিল্পোদ্যোগীদের জন্য ২ কোটি টাকা ঋণদানের ঘোষণা করা হয়েছে। দলিত এবং মহিলা শিল্পোদ্যোগীরাও ২ কোটি টাকা ঋণ পাবেন। এর ফলে সুরাট তথা গুজরাটের অনেক নবীন শিল্পোদ্যোগী লাভবান হতে পারেন। আমি আপনাদের আহ্বান জানাই, আপনারা নতুন নতুন শিল্পোদ্যোগ শুরু করুন। আমি আপনাদের পাশে দাঁড়িয়ে আছি।

বন্ধুগণ,

ভারতকে উন্নত করে তোলার জন্য অনেক ক্ষেত্রে সুরাটের বড় ভূমিকা রয়েছে। আমরা এটা সুনিশ্চিত করছি যাতে এখানকার বস্ত্র উদ্যোগ, রাসায়নিক এবং ইঞ্জিনিয়ারিং উদ্যোগগুলি বিস্তার লাভ করে। আমরা সুরাটকে এমন শহর বানাতে চাই যেখানে গ্লোবাল বিজনেস ফুটপ্রিন্ট হবে, খুব ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকবে। সেজন্য আমরা সুরাট বিমানবন্দরে নতুন ইন্টিগ্রেটেড টার্মিনাল বিল্ডিং তৈরি করিয়েছি। পাশাপাশি, ওয়েস্টার্ন ডেডিকেটেড ফ্রেট করিডর, দিল্লি-মুম্বাই এক্সপ্রেসওয়ে এবং আগামীদিনে বুলেট ট্রেন সুরাটকে সমৃদ্ধ করবে। সুরাট মেট্রোর মাধ্যমেও শহরের যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও উন্নত হবে। সুরাট দেশের সবচাইতে ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থাসম্পন্ন শহর হয়ে ওঠার দিকে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। এইসব প্রচেষ্টার ফলে সুরাটের জনগণের জীবন এখন যতটা সহজ হয়েছে, তার চাইতে আরও সহজ হবে, জীবনের উৎকর্ষও বাড়বে।

বন্ধুগণ,

আপনারা হয়তো জানেন, কিছুদিন আগে আমি দেশের নারীশক্তির কাছে তাঁদের সাফল্য, তাঁদের অভিজ্ঞতা এবং তাঁদের জীবনের প্রেরণাদায়ী যাত্রার কথা ‘নমো অ্যাপ’-এ শেয়ার করার অনুরোধ জানিয়েছিলাম। আপনারা শুনলে খুশি হবেন যে অনেক বোন ও মেয়ে তাঁদের কথা শেয়ার করেছেন। আগামীকাল নারী দিবস। সেই উপলক্ষে আমি আমার সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টকে এমন কয়েকজন প্রেরণাদায়ী বোন ও কন্যার হাতে তুলে দিতে চলেছি। এই মহিলারা ভিন্ন ভিন্ন ক্ষেত্রে দেশ ও সমাজের উন্নয়নে বড় ভূমিকা পালন করেছেন। তাঁরা দেশের অন্যান্য মা, বোন ও মেয়েদের প্রেরণা যোগাবেন। এই নারী দিবসকে নারীশক্তির অভিজ্ঞতাগুলি উদযাপন করার দিবস হিসেবে গড়ে তুলতে চাইছি। আমাদের দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে দেখতে পাচ্ছি কিভাবে মহিলারা নিজেদের অবদান রাখছেন। গুজরাট এক্ষেত্রে অনেক বড় ভূমিকা পালন করবে। আগামীকাল নওসারিতে আমি নারীশক্তির প্রতি সমর্পিত একটি বড় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে চলেছি। সুরাটে আজকের এই কর্মসূচিও মহিলাদের জন্য অনেক লাভজনক হয়ে উঠবে। আর আমি দেখেছি, এখানে অনেক বিপুল সংখ্যায় মা ও বোনেরা আমাকে আশীর্বাদ দিতে এসেছেন।

বন্ধুগণ,

সুরাট এমনই, মিনি ভারত রূপে বিশ্বের একটি উন্নত শহর হিসেবে যাতে গড়ে ওঠে, সে চেষ্টাই আমরা করতে থাকব। আর যেখানকার মানুষ এত ভালো, তাঁদের জন্য সবকিছুই ভালো হওয়া উচিত। আরেকবার সমস্ত সুবিধাভোগীদের অনেক অনেক শুভেচ্ছা। আমার সুরাটের ভাই-বোনেদের অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা জানাই। আবার দেখা হবে, রাম-রাম।

ধন্যবাদ!

প্রধানমন্ত্রী এই ভাষণের কিছু অংশ গুজরাটিতে এবং বাকিটা হিন্দিতে বলেছেন। 

SC/SB/DM