নতুন দিল্লি, ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ নতুন দিল্লির ভারত মন্ডপমে স্কুল অফ আলটিমেট লিডারশিপ (SOUL)-এর লিডারশিপ কনক্লেভের প্রথম সংস্করণের উদ্বোধন করেছেন। বিশিষ্ট নেতৃবৃন্দ এবং ভবিষ্যতের তরুণ নেতাদের স্বাগত জানিয়ে শ্রী মোদী বলেন, কিছু কিছু অনুষ্ঠান হৃদয়ের খুব কাছাকাছি হয়। আজ তেমনই এক আয়োজন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতি গঠনের জন্য উন্নত নাগরিক গড়ে তোলা প্রয়োজন। এর পাশাপাশি প্রতিটি ক্ষেত্রে অসাধারণ নেতা গড়ে তোলা দরকার। স্কুল অফ আলটিমেট লিডারশিপ, বিকশিত ভারতের উন্নয়ন যাত্রার এক গুরুত্বপূর্ণ মাইল ফলক। কেবল নামেই নয়, কাজেও এটি ভারতের সামাজিক জীবনের আত্মা হয়ে উঠবে। এর সঙ্গে আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতার নির্যাসও চমৎকারভাবে মিশে আছে। অদূর ভবিষ্যতে গুজরাটে গিফট সিটির কাছে SOUL-এর একটি বিস্তীর্ণ ক্যাম্পাস গড়ে তোলা হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ যখন SOUL তার প্রথম পদক্ষেপ ফেলছে, তখন এই প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যৎ গঠনে দেশকে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা স্মরণে রাখতে হবে। স্বামী বিবেকানন্দকে উদ্ধৃত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই দূরদর্শী নেতা চেয়েছিলেন, ভারতকে দাসত্বের শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করে ১০০ জন দক্ষ ও কর্মক্ষম নেতার মাধ্যমে এর রূপান্তর ঘটাতে। তাঁর মতো একইরকম উৎসাহ নিয়ে দেশকে এগিয়ে যেতে হবে। দেশের নাগরিকরা যখন একবিংশ শতকে বিকশিত ভারতের স্বপ্ন সাকার করতে সর্বক্ষণ কাজ করে চলেছেন, তখন ১৪০ কোটি মানুষের এই দেশে প্রতিটি ক্ষেত্রে সুযোগ্য নেতৃত্বের প্রয়োজন। স্কুল অফ আলটিমেট লিডারশিপ এমন নেতাদের জন্ম দেবে যারা রাজনীতি সহ প্রতিটি ক্ষেত্রে সারা বিশ্বে দাগ কেটে যাবেন। একটি দেশের উন্নয়নে মানবিক এবং প্রাকৃতিক দু ধরনের সম্পদেরই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এর মধ্যে মানবিক সম্পদের সম্ভাবনা অপরিসীম। গুজরাটে পর্যাপ্ত প্রাকৃতিক সম্পদের অভাব থাকলেও সুযোগ্য নেতৃত্বের মাধ্যমে মানব মূলধনের দক্ষ পরিচালনার কারণে এটি ভারতের প্রথম সারির রাজ্যগুলির অন্যতম হয়ে উঠেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেসব সম্পদের ক্ষেত্রে উদ্ভাবনী শক্তি এবং দক্ষতার পৃথকীকরণের পরিসর রয়েছে, একবিংশ শতকে সেগুলিরই কদর রয়েছে। নতুন নতুন দক্ষতা অর্জন করতে হলে নেতৃত্বদানের ক্ষমতার উন্নয়ন ঘটানো প্রয়োজন। কারণ, বৈজ্ঞানিক ও সুসংগঠিত দৃষ্টিভঙ্গি ছাড়া এইসব দক্ষতা অর্জন করা সম্ভব নয়। SOUL-এর মতো প্রতিষ্ঠানগুলির ভূমিকা এক্ষেত্রে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। শ্রী মোদী বলেন, নতুন জাতীয় শিক্ষানীতির কার্যকর রূপায়নের জন্য রাজ্য শিক্ষা সচিব, রাজ্য প্রকল্প অধিকর্তা ও অন্য আধিকারিকদের নিয়ে কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে। এর পাশাপাশি গুজরাটে মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ের কর্মীদের জন্য নেতৃত্বদানের ক্ষমতা উন্নয়নে একটি শিবিরেরও আয়োজন করা হয়। শ্রী মোদী বলেন, এটি সূচনা মাত্র। নেতৃত্বদানের বিষয়ে SOUL-কে বিশ্বের অগ্রণী প্রতিষ্ঠান হয়ে উঠতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত বিশ্বের শক্তি কেন্দ্র হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে। এই গতিশক্তি ও দ্রুততা বাড়ানোর জন্য প্রতিটি ক্ষেত্রে বিশ্বস্তরের নেতা প্রয়োজন। SOUL-এর মতো নেতৃত্ব উন্নয়নকারী প্রতিষ্ঠানগুলি আজ পছন্দ-অপছন্দের মাত্রা ছাড়িয়ে প্রয়োজনীয়তায় রূপান্তরিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি ক্ষেত্রেই এমন প্রাণবন্ত নেতার দরকার যারা বিশ্বমঞ্চে দেশের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন জটিল সমস্যার সমাধানে উদ্যোগী হবেন। এঁদের দৃষ্টিভঙ্গি হবে আন্তর্জাতিক, মানসিকতা হবে স্থানীয়। এইসব নেতাদের ভারতের মন এবং আন্তর্জাতিক মানসিকতা দুই-ই বুঝতে হবে। কৌশলগত সিদ্ধান্তগ্রহণ, সঙ্কট সামাল দেওয়া এবং ভবিষ্যৎমুখী চিন্তাভাবনায় তাদের অগ্রণী হতে হবে। আন্তর্জাতিক বাজার এবং বিশ্বব্যাপী প্রতিষ্ঠানগুলির সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হলে এমন নেতাদের প্রয়োজন যাঁরা বিশ্ব বাণিজ্যের গতিশীলতা সম্পর্কে সম্পূর্ণ ওয়াকিবহাল। SOUL-এর দায়িত্ব হল এই ধরনের নেতাদের গড়ে তোলা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভবিষ্যতের নেতৃত্ব কেবল ক্ষমতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, উদ্ভাবনী শক্তি এবং প্রভাব বিস্তারের সক্ষমতাও তার মধ্যে থাকতে হবে। SOUL বিভিন্ন ব্যক্তির মধ্যে বিশ্লেষণী চিন্তাভাবনা, ঝুঁকি গ্রহণের সাহস এবং সমাধামুখী মানসিকতার প্রসার ঘটাবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাধারণ মানুষ বিশিষ্ট ব্যক্তিদের আচরণ অনুসরণ করেন। সেজন্য নেতৃত্বের কাজের মধ্য দিয়ে ভারতের জাতীয় দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন ঘটতে হবে। উন্নত ভারত গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি ও চেতনার প্রতিষ্ঠা করা SOUL-এর উদ্দেশ্য হওয়া উচিত। শক্তিশালী নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হলে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন ও সংস্কার স্বাভাবিকভাবেই আসবে।
জননীতি এবং সামাজিক ক্ষেত্রে শক্তি ও চেতনা প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডিপ-টেক, মহাকাশ, জৈব প্রযুক্তি, পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির মতো উদীয়মান ক্ষেত্রগুলির জন্য নেতৃত্বকে বিশেষভাবে তৈরি করা দরকার। খেলাধুলো, কৃষি, উৎপাদন, সামাজিক পরিষেবার মতো প্রথাগত ক্ষেত্রগুলির জন্যও নেতৃত্বকে তৈরি হতে হবে। উৎকর্ষের শিখরে পৌঁছবার আকাঙ্ক্ষাই যথেষ্ট নয়, ভারতকে প্রতিটি ক্ষেত্রে তা অর্জন করতে হবে। বিশ্বমানের নতুন উৎকর্ষ কেন্দ্র গড়ে তোলার ক্ষমতা রয়েছে, এমন নেতাদের ভারতের প্রয়োজন। ভারতের গৌরবজনক ইতিহাসে এমন বহু প্রতিষ্ঠানের উল্লেখ রয়েছে, সেই গৌরবজনক অতীতকে ফিরিয়ে আনতে হবে। এই অনুষ্ঠানে যাঁরা উপস্থিত রয়েছেন, তাঁদের অনেকের মধ্যেই সেই ক্ষমতা রয়েছে বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ যে ভিত্তি স্থাপন করা হলো, আগামী প্রজন্মের কাছে তা গর্বের উৎস হয়ে উঠবে।
কোটি কোটি ভারতীয়ের আকাঙ্ক্ষা ও স্বপ্নকে স্পষ্টভাবে বোঝার ক্ষমতা একটি প্রতিষ্ঠানের থাকতে হবে বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, প্রতিটি ক্ষেত্রেই যেসব প্রতিবন্ধকতা ও সম্ভাবনা রয়েছে তা সুস্পষ্টভাবে চিহ্নিত করতে হবে। অভিন্ন উদ্দেশ্য ও সম্মিলিত প্রয়াস নিয়ে এগোলে ফল অসাধারণ হতে বাধ্য। সম্মিলিত উদ্দেশ্যসাধনের জন্য যে যোগসূত্র স্থাপিত হয়, তার বন্ধন রক্তের চেয়েও শক্তিশালী। সম্মিলিত লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের থেকেই নেতৃত্ব এবং দলগত চেতনার জন্ম হয়। সম্মিলিত উদ্দেশ্যসাধানের প্রয়াস শুধু যে একজন ব্যক্তির সেরাটা বের করে আনে তাই নয়, বৃহত্তর লক্ষ্যের চাহিদামাফিক তার সক্ষমতাও বাড়িয়ে তোলে।
ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, সম্মিলিত উদ্দেশ্যসাধনের শ্রেষ্ঠ উদাহরণ হলো এই আন্দোলন। এর থেকে শুধু রাজনীতিতেই নয়, প্রতিটি ক্ষেত্রেই নেতার উদ্ভব হয়েছিল। স্বাধীনতা সংগ্রামের চেতনাকে ফিরিয়ে আনার এবং তা থেকে প্রেরণা নিয়ে এগিয়ে চলার পরামর্শ দেন তিনি।
একটি সংস্কৃত শ্লোক উদ্ধৃত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এমন কোনো শব্দ নেই যাকে মন্ত্রে পরিণত করা যায় না। এমন কোনো ভেষজ নেই, যা থেকে ওষুধ তৈরি হয় না। একইভাবে এমন কোনো মানুষ নেই, যার কোনো সক্ষমতা নেই। প্রয়োজন কেবল এমন পরিকল্পনাকারীর, যিনি সেই ব্যক্তিকে সঠিক পথে চালিত করবেন। SOUL সেই পরিকল্পকের ভূমিকা পালন করবে।
দেশে গত দশকে এবং একবিংশ শতাব্দীতে যাদের জন্ম হয়েছে, তারা এক নতুন সামাজিক ব্যবস্থার সূত্রপাত করেছেন বলে মন্তব্য করে শ্রী মোদী বলেন, এই প্রজন্ম প্রকৃত অর্থেই ভারতের প্রথম উন্নত প্রজন্ম। এদের তিনি ‘অমৃত প্রজন্ম’ বলে উল্লেখ করেন। SOUL-এর মতো নতুন প্রতিষ্ঠান এই ‘অমৃত প্রজন্ম’-এর মধ্যে নেতৃত্বদানের ক্ষমতা সঞ্চারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে তিনি আশাপ্রকাশ করেন। প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত সকলকে শুভেচ্ছা জানান প্রধানমন্ত্রী।
ভুটানের প্রধানমন্ত্রী দাশো শেরিং টোবগে, SOUL-এর বোর্ডের চেয়ারম্যান শ্রী সুধীর মেহতা, ভাইস চেয়ারম্যান শ্রী হাসমুখ আধিয়া প্রমুখ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। সেদিন ভুটানের রাজার জন্মদিন হওয়া সত্ত্বেও অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকায় শ্রী মোদী ভুটানের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।
SC/SD/SKD
Addressing the SOUL Leadership Conclave in New Delhi. It is a wonderful forum to nurture future leaders. @LeadWithSoul
— Narendra Modi (@narendramodi) February 21, 2025
https://t.co/QI5RePeZnV
The School of Ultimate Leadership (SOUL) will shape leaders who excel nationally and globally. pic.twitter.com/x8RWGSZsFl
— PMO India (@PMOIndia) February 21, 2025
Today, India is emerging as a global powerhouse. pic.twitter.com/RQWJIW1pRz
— PMO India (@PMOIndia) February 21, 2025
Leaders must set trends. pic.twitter.com/6mWAwNAWKX
— PMO India (@PMOIndia) February 21, 2025
Instilling steel and spirit in every sector. pic.twitter.com/EkOVPGc9MI
— PMO India (@PMOIndia) February 21, 2025
I commend SOUL for their endeavours to nurture a spirit of leadership among youngsters. pic.twitter.com/otSrbQ2Pdp
— Narendra Modi (@narendramodi) February 21, 2025
We in India must train our coming generations to become global trendsetters. pic.twitter.com/5L4AFfY3wF
— Narendra Modi (@narendramodi) February 21, 2025
With determined endeavours and collective efforts, the results of our quest for development will surely be fruitful. pic.twitter.com/s1lmEIGUMq
— Narendra Modi (@narendramodi) February 21, 2025