আমার প্রিয় দেশবাসী, নমস্কার। আজ ২০২৫ এর প্রথম মন কি বাত হচ্ছে। আপনারা একটা বিষয় নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন, প্রতি বার মন কি বাত মাসের শেষ রবিবার হয়। কিন্তু এবার আমরা এক সপ্তাহ আগে, চতুর্থ রবিবারের পরিবর্তে তৃতীয় রবিবারই মিলিত হচ্ছি। কারণ আগামী রবিবার সাধারণতন্ত্র দিবস। আমি সমস্ত দেশবাসীকে সাধারণতন্ত্র দিবসের অগ্রিম শুভকামনা জানাই।
বন্ধুরা, এবারের সাধারণতন্ত্র দিবস বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এটি ভারতীয় গণতন্ত্রের ৭৫তম বর্ষপূর্তি। এ বছর সংবিধান প্রণয়নের ৭৫ বছর হচ্ছে। আমি সংবিধান সভার সেই সব মহান ব্যক্তিদের প্রণাম জানাই যারা আমাদের পবিত্র সংবিধান দিয়েছেন। সংবিধান সভা চলাকালীন নানা বিশয়ে দীর্ঘকালীন আলোচনা হয়েছে। সেই আলোচনা, সংবিধান সভার সদস্যদের বিচার বিবেচনা, তাঁদের উক্তি আমাদের অত্যন্ত মূল্যবান সম্পদ। আজ মন কি বাতে আমাদের প্রয়াস থাকছে কিছু মহান নেতাদের অরিজিনাল কণ্ঠস্বর ও বক্তব্য আপনাদের শোনানো।
বন্ধুরা, যখন সংবিধান সভা নিজেদের কাজ শুরু করেছিল তখন বাবা সাহেব আম্বেদকর পারস্পরিক সহযোগিতা প্রসঙ্গে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি কথা বলেছিলেন। তার এই উক্তি ইংরেজিতে রয়েছে। আমি তার একটি অংশ আপনাদের শোনাচ্ছি-
“So far as the ultimate goal is concerned, I think none of us need have any apprehensions. None of us need have any doubt, but my fear which I must express clearly is this, our difficulty as I said is not about the ultimate future. Our difficulty is how to make the heterogeneous mass that we have today, take a decision in common and march in a cooperative way on that road which is bound to lead us to unity. Our difficulty is not with regard to the ultimate; our difficulty is with regard to the beginning.”
“এখনো পর্যন্ত চূড়ান্ত লক্ষ্যের বিষয়ে আমাদের কারোরই কোন দ্বিধা বা সংশয় থাকার কথা নয়। স্পষ্ট করে বলতে গেলে ভবিষ্যতের চূড়ান্ত লক্ষ্যটা কঠিন নয়। যেটা কঠিন বলে আমার আশঙ্কা তা হল বর্তমানে কীভাবে বহুবিধ বৈশিষ্ট্য ও মতাবলম্বী আমাদের জনসাধারণকে একটা অভিন্ন, সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নেওয়ানো যাবে এবং পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে সেই পথে হাঁটা যাবে যা আমাদের ঐক্যের দিকে চালিত করবে। চূড়ান্ত লক্ষ্য নিয়ে আমাদের অসুবিধা নেই, আমাদের অসুবিধা সূচনা নিয়ে।”
বন্ধুরা, বাবা সাহেব এই কথায় জোর দিয়েছেন যে সংবিধান সভা যেন একসঙ্গে এক মতে হয় এবং সবাই মিলে সর্বসাধারণের কল্যাণের জন্য কাজ করে। আমি আপনাদের সংবিধান সভার আরো একটি অডিও ক্লিপ শোনাতে চাই। এই অডিও ডক্টর রাজেন্দ্র প্রসাদজির যিনি আমাদের সংবিধান সভার সভাপতি ছিলেন। আসুন ডঃ রাজেন্দ্র প্রসাদজির কথা শুনি –
আমাদের ইতিহাস একথা বলে আর আমাদের সংস্কৃতি এই শিক্ষা দেয় যে আমরা শান্তিপ্রিয় আছি এবং ছিলাম। আমাদের সাম্রাজ্য ও আমাদের জয়ের সাফল্য ভিন্ন ধরনের। আমরা অন্যদের লোহার বা সোনার কোন শৃঙ্খলেই বাঁধার চেষ্টা করিনি। আমরা অন্যদের নিজেদের সঙ্গে লৌহ শৃঙ্খলের থেকেও মজবুত অথচ সুন্দর ও সুখপ্রদ রেশম সুতোয় বেঁধেছি। সেই বন্ধন ধর্মের, সংস্কৃতির, জ্ঞানের। আমরা এখনো সেই পথেই চলতে থাকব এবং আমাদের একটাই ইচ্ছা ও অভিলাষ, আমরা পৃথিবীতে সুখ ও শান্তি বজায় রাখতে সাহায্য করতে পারব ও সারা বিশ্বের হাতে সত্য ও অহিংসার অব্যর্থ অস্ত্র তুলে দিতে পারব, যা আজ আমাদের স্বাধীনতা পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছে। আমাদের জীবন ও সংস্কৃতিতে এমন কিছু আছে যা সময়ের চপেটাঘাত সত্ত্বেও আমাদের বেঁচে থাকার শক্তি দিয়েছে। যদি আমরা আমাদের আদর্শকে সামনে রেখে এগোই তাহলে এই বিশ্বসংসারের প্রভূত সেবা আমরা করতে পারব।” বন্ধুরা, ডঃ রাজেন্দ্র প্রসাদজি মানবিক মূল্যবোধের প্রতি দেশের অঙ্গীকারের কথা বলেছেন। এবারে আমি আপনাদের ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির কণ্ঠস্বর শোনাচ্ছি। উনি সুযোগের সাম্যের কথা উত্থাপন করেছেন। ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী বলেছেন –
“I hope sir that we shall go ahead with our work in spite of all difficulties and thereby help to create that great India which will be the motherland of not this community or that, not this class or that, but of every person, man, woman and child inhabiting in this great land irrespective of race, caste, creed or community. Everyone will have an equal opportunity, so that he or she can develop himself or herself according to best talent and serve the great common motherland of India.”
(স্যার, আশা করি আমরা সমস্ত বাধা-বিপত্তি সত্ত্বেও আমাদের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাব এবং এর মধ্যে দিয়ে সেই মহান ভারতের নির্মাণে সাহায্য করব যা শুধুমাত্র কোন একটি সম্প্রদায়ের বা শ্রেণীর নয়, বরং এই ভূখণ্ডে বসবাসকারী জাতি, ধর্ম, বর্ণ ও সম্প্রদায় নির্বিশেষে সকলের, প্রতিটি মানুষের, প্রতিটি পুরুষ, মহিলা ও শিশুর। এখানে প্রত্যেকের জন্য সমান সুযোগ থাকবে যাতে তাঁরা, তাঁদের প্রতিভার ‘সেরা’টা দিয়ে নিজেদের বিকশিত করতে পারেন, এবং এই মহান মাতৃভূমি ভারতের সেবা করতে পারেন।)
বন্ধুরা, আমি আশা করি, সংবিধান সভার debate-এর এই orginal audio শুনে আপনাদেরও ভালো লেগেছে। আমাদের দেশের নাগরিকদের এই চিন্তা-ভাবনায় অনুপ্রাণিত হয়ে এমনই ভারতবর্ষ নির্মাণের জন্য কাজ করতে হবে, যা নিয়ে আমাদের সংবিধান প্রণয়নকারীরাও গর্ব-বোধ করতে পারেন।
বন্ধুরা, সাধারণতন্ত্র দিবসের একদিন আগে, ২৫ শে জানুয়ারি, National Voters Day। এই দিনটা গুরুত্বপূর্ণ কারণ এই দিনই ‘ভারতের নির্বাচন কমিশন’ স্থাপিত হয়েছিল অর্থাৎ Election Commission। আমাদের সংবিধান প্রণেতারা সংবিধানে আমাদের নির্বাচন কমিশনকে, গনতন্ত্রে মানুষের অংশীদারিত্বকে অনেক বড় স্থান দিয়েছেন। দেশে যখন ১৯৫১-৫২-এ প্রথমবার নির্বাচন হয়েছিল, তখন কিছু মানুষের মনে দ্বিধা ছিল দেশে গণতন্ত্র আদৌ টিকে থাকবে কিনা! কিন্তু আমাদের গণতন্ত্র সমস্ত আশঙ্কাকে ভুল প্রমাণিত করেছে- কারণ সর্বোপরি ভারত Mother of Democracy।
বিগত দশকগুলোতেও দেশের গণতন্ত্র মজবুত হয়েছে, সমৃদ্ধ হয়েছে। আমি নির্বাচন কমিশনকেও ধন্যবাদ জানাবো, তারা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের মতদানের প্রক্রিয়াকে আধুনিক করে তুলেছেন, মজবুত করেছেন। নির্বাচন কমিশন জন-শক্তিকে আরো শক্তিশালী করতে প্রযুক্তির শক্তিকে ব্যবহার করেছে। নির্বাচনকে নিরপেক্ষ রাখার তাঁদের যে কমিটমেন্ট তার জন্য আমি নির্বাচন কমিশনকে শুভেচ্ছা জানাই। আমি দেশবাসীকে বলতে চাই যে, তাঁদের মতদানের যে অধিকার, তাঁরা যেন সেটার আরো বেশি করে সদ্ব্যবহার করেন, সব সময় করেন এবং দেশের Democratic Process এর অংশীদার হয়ে উঠে Process-টাকে যেন আরো মজবুত করে তোলেন।
আমার প্রিয় দেশবাসী, প্রয়াগরাজে, মহাকুম্ভর শুভারম্ভ হয়ে গিয়েছে। অবিস্মরণীয় জন-জোয়ার, অকল্পনীয় দৃশ্য, সম্প্রীতি এবং ঐক্যের এক অসাধারণ মেলবন্ধন। এবার কুম্ভে অনেক দিব্য যোগও তৈরি হচ্ছে।
কুম্ভের এই উৎসব বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যের উৎসবের উদযাপন। সঙ্গমের তটভূমিতে সারা ভারতের, সারা বিশ্বের মানুষ একত্রিত হন। হাজার হাজার বছর ধরে চলে আসা এই ঐতিহ্যে কোথাও কোন ভেদাভেদ নেই জাতিভেদ নেই। এখানে ভারতের দক্ষিণ থেকে মানুষ আসেন, ভারতের পূর্ব ও পশ্চিম থেকে মানুষ আসেন। কুম্ভোয় ধনী-দরিদ্র সবাই এক হয়ে যান। সমস্ত মানুষ সঙ্গমে স্নান করেন, একসঙ্গে ভান্ডারায় ভোজন করেন, প্রসাদ নেন- সেই জন্যই তো কুম্ভ ঐক্যের মহাকুম্ভ।
কুম্ভের আয়োজন আমাদের এটাও স্পষ্ট করে দেয় যে কিভাবে আমাদের ঐতিহ্য সারা ভারতকে একসূত্রে জুড়ে রাখে। উত্তর থেকে দক্ষিণ পর্যন্ত মানুষের বিশ্বাস ও আচার-উপচার যেন একই রকম। একদিকে প্রয়াগরাজ, উজ্জয়ন, নাসিক এবং হরিদ্বারে কুম্ভের আয়োজন হয়, ঠিক সেভাবেই দক্ষিণ ভূ-ভাগে গোদাবরী, কৃষ্ণা, নর্মদা আর কাবেরী নদীর তটে পুষ্করম হয়। এই দুই উৎসবই আমাদের পবিত্র নদীগুলির সঙ্গে, পবিত্র বিশ্বাসের সঙ্গে, জুড়ে রয়েছে। এভাবেই কুম্ভকোণম থেকে তিরুক্কডয়ুর, কূড়-বাসল থেকে তিরুচেরই অবধি এমন সব মন্দির আছে যার ঐতিহ্য কুম্ভের সঙ্গে জুড়ে আছে।
বন্ধুরা, এই বছর আপনারা সকলে দেখেছেন যে, কুম্ভ মেলায় যুবক-যুবতীরা কী ব্যাপক ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন আর এটা সত্যি যে, যখন যুবসমাজ নিজেদের সংস্কৃতির সঙ্গে গর্বের সঙ্গে যুক্ত হয়, তখন তাঁদের শিকড় আরও মজবুত হয় আর তখন তাঁদের স্বর্ণোজ্জ্বল ভবিষ্যতও সুনিশ্চিত হয়। আমরা এই বছর কুম্ভের ডিজিটাল ফুট প্রিন্টসও এত বড় স্কেলে দেখেছি। কুম্ভের এই বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা প্রত্যেক ভারতীয়ের জন্য গর্বের বিষয়।
বন্ধুরা, কয়েক দিন আগেই পশ্চিমবঙ্গে গঙ্গাসাগর মেলার বিরাট আয়োজন করা হয়েছে। সংক্রান্তির পবিত্র সময়ে এই মেলায় সারা বিশ্ব থেকে লাখ লাখ পুণ্যার্থীরা এসে গঙ্গা স্নান করেছেন। কুম্ভ, পুস্করম এবং গঙ্গাসাগর মেলা- আমাদের এই সব পর্ব, আমাদের সামাজিক মেলামেশাকে, সৌহার্দ্যকে, একতাকে বাড়িয়ে দেয়। এই সব আয়োজন ভারতের মানুষদের ভারতীয় সংস্কৃতির সঙ্গে একাত্ম করে আর যেমন আমাদের শাস্ত্রে সংসারের ক্ষেত্রে ধর্ম, অর্থ, কাম, মোক্ষ, এই চারটি বিষয়ের উপর জোর দেওয়া হয়েছে, তেমনি আমাদের সব উৎসব এবং সংস্কৃতিও আধ্যাত্মিক সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং আর্থিক ক্ষেত্রগুলিকে শক্তিশালী করে তোলে।
বন্ধুরা, এই মাসে আমরা পৌষ-শুক্ল দ্বাদশীর দিন রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠা পর্বের প্রথম বার্ষিকী পালন করেছি। এই বছর পৌষ-শুক্ল দ্বাদশী ১১ জানুয়ারি ছিল। এই দিন লাখ লাখ রামভক্ত অযোধ্যায় রামলালার সাক্ষাৎ দর্শন করে তাঁর আশীর্বাদ নিয়েছেন। প্রাণপ্রতিষ্ঠার দ্বাদশীর এই বিশেষ দিন ভারতের সাংস্কৃতিক চেতনার পুনর্জাগরণের দ্বাদশী। এই জন্য পৌষ-শুক্ল দ্বাদশীর দিনটি এক ধরনের প্রতিষ্ঠা দ্বাদশীর দিনে পরিণত হয়েছে। বিকাশের পথে চলতে চলতে আমাদের এ ভাবেই নিজেদের ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে এবং সেখান থেকে প্রেরণা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।
আমার প্রিয় দেশবাসী, ২০২৫-এর শুরুতেই ভারত মহাকাশের ক্ষেত্রেও অনেক ঐতিহাসিক সাফল্য অর্জন করেছে। আজ আমার এটা বলতে গিয়ে গর্ব হচ্ছে যে, একটি ভারতীয় স্পেস টেক স্টার্ট-আপ, বেঙ্গালুরুর পিক্সেল ভারতের প্রথম নিজস্ব স্যাটেলাইট কনস্টিলেশন ফায়ার ফ্লাই সাফল্যের সঙ্গে লঞ্চ করেছে। এই স্যাটেলাইট কনস্টিলেশন পৃথিবীর সবচেয়ে হাই রেজোলিউশন হাইপার স্পেকট্রাল স্যাটেলাইট কনস্টিলেশন। এই সাফল্য শুধুমাত্র ভারতকে আধুনিক স্পেস টেকনোলজিতে এগিয়ে দেয়নি, বরং এটা আত্মনির্ভর ভারতের লক্ষ্যে একটা বড় পদক্ষেপ। এই সাফল্য আমাদের নিজেদের স্পেস সেক্টরের বাড়তে থাকা শক্তি আর ইনোভেশনের প্রতীক। আমি এই সাফল্যের জন্য পিক্সেলের সদস্য, ইসরো এবং ইনস্পেসকে সমগ্র দেশের তরফ থেকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।
বন্ধুরা, কয়েক দিন আগে আমাদের বিজ্ঞানীরা স্পেস সেক্টরে আরেকটি বড় সাফল্য অর্জন করেছেন। আমাদের বিজ্ঞানীরা স্যাটেলাইটসের স্পেস ডকিং করিয়েছেন। যখন মহাকাশে দুটো স্পেসক্রাফ্ট কানেক্ট করা হয় তখন এই প্রক্রিয়াকে স্পেস ডকিং বলে। এই টেকনিক মহাকাশে স্পেস স্টেশনে সাপ্লাই পাঠানোর জন্য এবং ক্রু মিশনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভারত এমন চতুর্থ দেশ, যে এই সাফল্য অর্জন করেছে।
বন্ধুরা, আমাদের বিজ্ঞানীরা মহাকাশে উদ্ভিদ রোপণে এবং সেগুলি জীবিত রাখতে আপ্রাণ চেষ্টা করছেন। সেই জন্য ইসরোর বিজ্ঞানীরা লোবিয়ার বীজকে নির্বাচন করেছেন। ৩০ ডিসেম্বরে পাঠানো এই বীজগুলি মহাকাশেই অঙ্কুরিত হয়েছে। এটি একটি অত্যন্ত অনুপ্রেরণামূলক পরীক্ষা, যা ভবিষ্যতে মহাকাশে সব্জি উৎপাদনের পথ প্রশস্ত করবে। এই বিষয়টি অত্যন্ত ভেবে দেখার যে, আমাদের বিজ্ঞানীরা কত দূরের চিন্তাভাবনা করছেন।
বন্ধুরা, আমি আপনাদের আরও একটি অনুপ্রেরণামূলক উদ্যোগের কথা বলতে চাই। আইআইটি মাদ্রাজের ExTeM কেন্দ্র মহাকাশে ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের জন্য নতুন প্রযুক্তির উপর কাজ করছে। এই কেন্দ্রটি মহাকাশে 3D-printed buildings, metal foams এবং optical fibre-এর মতো প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা করছে। এই কেন্দ্র বিনা জলে কংক্রিট নির্মাণের মতো বৈপ্লবিক পদ্ধতি নিয়ে কাজ করছে। ExTeM-এর এই গবেষণা ভারতের গগনযান মিশন এবং ভবিষ্যতের স্পেস স্টেশনকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে সক্ষম হবে। এই ক্ষেত্রে ম্যানুফ্যাকচারিংয়ে আধুনিক প্রযুক্তির নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।
বন্ধুরা, এই সমস্ত কৃতিত্বই প্রমাণ করে যে, ভারতের বিজ্ঞানীরা এবং ইনোভেটররা ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জের সমাধান খুঁজতে কতটা visionary। আমাদের দেশ, আজ, মহাকাশ প্রযুক্তির ক্ষেত্রে নতুন মানদণ্ড স্থাপন করছে। আমি ভারতের বিজ্ঞানী, ইনোভেটর এবং যুবা উদ্যোক্তাদের সমগ্র দেশের হয়ে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।
আমার প্রিয় দেশবাসী, আপনারা হয়তো বহু বার মানুষ ও পশুদের মধ্যে আশ্চর্য বন্ধুত্বের ছবি দেখেছেন, আপনারা পশুদের আনুগত্যের গল্পও শুনে থাকবেন। গৃহপালিত প্রাণী হোক বা বন্য প্রাণী, মানুষের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক অনেক ক্ষেত্রেই অবাক করে তোলে। প্রাণীরা যদিও কথা বলতে পারে না, তবে তাদের আবেগ, তাদের শরীরী ভাষা, মানুষ ভাল করে বুঝতে পারে। পশুরাও বোঝে ভালোবাসার ভাষা, তেমনই ভালোবাসতেও পারে। আমি আপনাদের সঙ্গে আসামের একটি উদাহরণ ভাগ করে নিতে চাই, আসামে একটা জায়গা আছে যার নাম ‘নওগাঁও’। ‘নওগাঁও’ আমাদের দেশের মহান দার্শনিক শ্রীমন্ত শঙ্করদেবজির জন্মস্থানও। এই জায়গাটা খুবই সুন্দর। এখানে হাতিদের বেশ বড়সড় ডেরা আছে। এই এলাকায় অনেক ঘটনা এমন দেখা যাচ্ছিল, যেখানে হাতির দলের আক্রমণে ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল, কৃষকরা খুবই বিপাকে পড়েছিল, আশেপাশের প্রায় ১০০টি গ্রামের মানুষ খুবই চিন্তিত ছিল, কিন্ত গ্রামবাসীরাও হাতিদের এমন ব্যবহারের কারণ বুঝতে পারছিল। তারা জানত যে, হাতিরা তাদের খিদে মেটানোর জন্য চাষের ফসল নষ্ট করছে, তাই গ্রামবাসীরা একটি সমাধান খুঁজে বের করার কথা ভাবল। গ্রামবাসীদের নিয়ে একটি দল গঠন করা হয়, যার নাম ছিল ‘হাতি বন্ধু’। হাতির বন্ধুরা বুদ্ধির সঙ্গে প্রায় ৮০০ বিঘা অনুর্বর জমির উপর এক অনন্য প্রচেষ্টা চালায়। এখানে গ্রামবাসীরা নিজেদের একত্রিত করে Napier grass লাগিয়েছে। হাতিরা এই ঘাস খেতে খুবই পছন্দ করে। এর ফলে হাতিদের ক্ষেতের ফসলের দিকে যাওয়ার প্রবণতা কমে গিয়েছে। হাজার হাজার গ্রামবাসীর জন্য এটি একটি বড় স্বস্তির বিষয়। ওদের এই প্রচেষ্টা হাতিদেরও মনে ধরেছে।
বন্ধুরা, আমাদের সংস্কৃতি আর ঐতিহ্য আমাদের আশেপাশের পশু-পাখিদের সঙ্গে ভালোবেসে মিলেমিশে থাকতে শেখায়। এটা আমাদের সবার জন্য অনেক আনন্দের খবর যে, বিগত দুই মাসে আমাদের দেশে দুটি নতুন টাইগার রিজার্ভ অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। যার মধ্যে একটি হল ছত্তিশগড়ের গুরু ঘাসিদাস-তমোর পিংলা টাইগার রিজার্ভ আর অন্যটি হল মধ্যপ্রদেশে রাতাপানি টাইগার রিজার্ভ।
আমার প্রিয় দেশবাসী, স্বামী বিবেকানন্দজী বলেছিলেন, যে ব্যক্তির মধ্যে ভাবনা নিয়ে উন্মাদনা রয়েছে, সে-ই নিজের লক্ষ্যে পৌঁছতে পারে। কোনও ভাবনাকে সফল করার জন্য আমাদের প্যাশন এবং ডেডিকেশন সব থেকে বেশি জরুরি। সম্পূর্ণ মনোযোগ এবং উৎসাহ থাকলে ইনোভেশন, ক্রিয়েটিভিটি আর সফলতার পথ নিশ্চয়ই বেরিয়ে আসে। কিছুদিন আগে আমার স্বামী বিবেকানন্দজীর জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে ‘বিকশিত ভারত ইয়াং লিডারস ডায়লগ’-এর অংশীদার হওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিল। এখানে আমি দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা যুব-বন্ধুদের সঙ্গে গোটা দিনটা কাটাই। এই যুবরা স্টার্টআপ, কালচার, উইম্যান, ইয়ুথ আর ইনফ্রাস্ট্রাকচারের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্র নিয়ে নিজেদের ভাবনার কথা ভাগ করে নিয়েছিলেন। এই কার্যক্রম আমার জন্য খুব স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
বন্ধুরা, কিছুদিন আগে স্টার্টআপ ইন্ডিয়ার নয় বছর পূর্ণ হয়েছে। আমাদের দেশে নয় বছরে যত স্টার্টআপ তৈরি হয়েছে, তার মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি টায়ার টু আর ট্রায়ার থ্রি শহরে গঠিত আর এটা শুনে প্রত্যেক ভারতবাসীর মন আনন্দে ভরে ওঠে অর্থাৎ আমাদের স্টার্টআপ কালচার কেবলমাত্র বড় শহরেই সীমিত নয়। আর আপনারা এটা জেনে আশ্চর্য হবেন যে, ছোট শহরের এই স্টার্টআপের অর্ধেকের বেশির নেতৃত্ব আমাদের মেয়েরা দিচ্ছেন। যখন এটা শুনতে পাই যে, আম্বালা, হিসার, কাংরা, চেঙ্গেলপট্টু, বিলাসপুর, গোয়ালিয়ার এবং ওয়াশিমের মতো শহর স্টার্টআপের কেন্দ্র হয়ে উঠছে, তখন মন আনন্দে ভরে ওঠে। নাগাল্যান্ডের মতো রাজ্যে বিগত বছরের স্টার্টআপ রেজিস্ট্রেশন ২০০ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট, নন রিনিউয়েবল এনার্জি, বায়োটেকনোলজি আর লজিস্টিকস, এমন কতগুলি ক্ষেত্র, যার সঙ্গে জড়িত স্টার্টআপ গড়ে উঠতে দেখা যাচ্ছে সব থেকে বেশি। এগুলি কনভেনশনাল সেক্টর নয়, কিন্তু আমাদের যুব-বন্ধুরাও তো কনভেনশনাল এর থেকে এগিয়ে চিন্তাভাবনা করে থাকেন, এই জন্য ওঁরা সাফল্যও পাচ্ছেন।
বন্ধুরা, ১০ বছর আগে যখন কেউ স্টার্টআপের ক্ষেত্রে প্রবেশ করার কথা বলত, তখন তাকে নানা ধরনের কটূক্তি শুনতে হত। কেউ কেউ জিজ্ঞাসা করতেন যে, স্টার্টআপ আসলে কী? আবার কেউ বলতেন যে, এ সব করে কিছুই হবে না। কিন্তু এখন দেখুন, এক দশকে কত বড় পরিবর্তন এসেছে। ভারতে যে নতুন সুযোগের সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে, আপনাদেরও তার পূর্ণ সদ্ব্যবহার করা উচিত। যদি আপনাদের নিজেদের উপর বিশ্বাস থাকে, তাহলে আপনাদের স্বপ্নও ডানা মেলে উড়তে পারবে। আমার প্রিয় দেশবাসী, কোনও কাজ, ভালো উদ্দেশ্য এবং নিঃস্বার্থ ভাবনার সঙ্গে করা হলে, তা দূর-দূরান্ত পর্যন্ত আলোচিত হয়। এবং আমাদের মন কি বাত, এর খুব বড় একটি প্ল্যাটফর্ম। আমাদের এত বিশাল দেশে যদি কেউ প্রত্যন্ত অঞ্চলে থেকেও ভালো কাজ করে এবং কর্তব্যবোধকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়, তাহলে এটি তাঁর প্রচেষ্টাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি দুর্দান্ত প্ল্যাটফর্ম। অরুণাচল প্রদেশে দীপক নাবামজি সেবার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। দীপকজি একটি “লিভিং হোম” চালান, যেখানে মানসিক ভাবে অসুস্থ এবং শারীরিক ভাবে অক্ষম মানুষ ও বয়স্কদের সেবা করা হয়। সেখানে মাদকাসক্ত ব্যক্তিদেরও যত্ন নেওয়া হয়। দীপক নাবামজি কোনও সাহায্য ছাড়াই সমাজের বঞ্চিত মানুষ, হিংসায় জর্জরিত এবং গৃহহীন মানুষদের সহায়তা করার জন্য একটি অভিযান শুরু করেছিলেন। আজ তাঁর এই কর্মকান্ড একটি প্রতিষ্ঠানের রূপ নিয়েছে। সংস্থাটি অনেক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে। কে হিন্ডুম্ভিজি, যিনি লাক্ষাদ্বীপের কাভারতী দ্বীপে একজন নার্স হিসেবে কাজ করেন, তাঁর কাজও খুবই অনুপ্রেরণাদায়ক। আপনারা জেনে অবাক হবেন যে ১৮ বছর আগে তিনি সরকারি চাকরি থেকে অবসর নিলেও এখনও আগের মতোই মমতা ও স্নেহের সঙ্গে মানুষের সেবা করে চলেছেন। লাক্ষাদ্বীপের কে জি মোহাম্মদজির প্রচেষ্টাও অত্যন্ত চমকপ্রদ। তাঁর কঠোর পরিশ্রমের ফলে মিনিকয় দ্বীপের মেরিন ইকোসিস্টেম আরও শক্তিশালী হচ্ছে। পরিবেশ সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করার জন্য তিনি অনেক গান লিখেছেন। তিনি লাক্ষাদ্বীপ সাহিত্য কলা একাডেমি থেকে সেরা লোকসঙ্গীতের পুরস্কারও পেয়েছেন। অবসর গ্রহণের পর, কে জি মোহাম্মদজি সেখানকার জাদুঘরের সঙ্গেও কাজ করছেন।
বন্ধুরা, আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ থেকে আরেকটি খুব ভালো খবর এসেছে। নিকোবর জেলার ভার্জিন নারকেল তেল সম্প্রতি জিআই ট্যাগ পেয়েছে। ভার্জিন নারকেল তেলকে জিআই ট্যাগ দেওয়ার পর, আরও একটি নতুন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই তেল উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত মহিলাদের সংগঠিত করে স্বনির্ভর গোষ্ঠী গঠন করা হচ্ছে। তাঁদের মার্কেটিং এবং ব্র্যান্ডিংয়ের ক্ষেত্রেও বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। আমাদের আদিবাসী সম্প্রদায়ের অর্থনৈতিকভাবে ক্ষমতায়নের দিকে এটি একটি বড় পদক্ষেপ। আমি নিশ্চিত যে ভবিষ্যতে, নিকোবরের ভার্জিন নারকেল তেল বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করবে। এবং এর পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান থাকবে আন্দামান ও নিকোবরের মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির।
আমার প্রিয় দেশবাসী, ক্ষণিকের জন্য আপনি একটি দৃশ্যের কথা ভাবুন- কলকাতায় জানুয়ারির সময়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ তার চরম সীমায় আর এ দিকে ভারতে ইংরেজদের বিরুদ্ধে অসন্তোষ বেড়েই চলেছে। সেই জন্য শহরের প্রতি প্রান্তে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কলকাতার মাঝামাঝি এক বাড়ির আশেপাশে পুলিশ খুব বেশি সক্রিয় হয়ে রয়েছে। এসবের মাঝে লম্বা Brown coat, pant ও কালো টুপি ধারী এক ব্যক্তি রাতের অন্ধকারে তার বাংলো থেকে গাড়ি করে বেরিয়ে যাচ্ছে। কঠোর নিরাপত্তা সম্পন্ন অনেক পুলিশ চেকপোস্ট পেরিয়ে তিনি গোমো রেলওয়ে স্টেশন পৌঁছে যান। এই স্টেশন এখন ঝাড়খন্ডে অবস্থিত। এখান থেকে তিনি train ধরে এগিয়ে যান। এরপর আফগানিস্তান হয়ে তিনি ইউরোপে পৌঁছে যান- আর তাও ইংরেজ শাসনের দুর্ভেদ্য গৃহবন্দি অবস্থায় থাকা সত্ত্বেও।
বন্ধুরা, এই গল্প আপনাদের হয়তো অনেকটা সিনেমার মতন মনে হতে পারে। আপনি ভাবছেন, এই নির্ভীক ব্যক্তি কোন মাটি দিয়ে তৈরি। আসলেই ব্যক্তি আর কেউ নন, আমাদের দেশের মহান মনীষী, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। 23শে জানুয়ারি অর্থাৎ তাঁর জন্মবার্ষিকীকে এখন আমরা ‘পরাক্রম দিবস’ রূপে পালন করি। সাহসিকতার এই কাহিনীতেও তাঁর পরাক্রমের আভাস দৃশ্যমান। কয়েক বছর আগে, আমি ওঁর ওই বাড়িতে গিয়েছিলাম যেখান থেকে তিনি ইংরেজদের চোখে ধুলো দিয়ে পালিয়েছিলেন। ওঁর সেই গাড়ি এখনো ওখানে রয়েছে। সেই অভিজ্ঞতা আমার কাছে খুবই মূল্যবান। সুভাষ বাবু একজন visionary ছিলেন। সাহস ওঁর সহজাত স্বভাব ছিল।
শুধু তাই নয় উনি একজন অত্যন্ত দক্ষ প্রশাসকও ছিলেন। মাত্র ২৭ বছর বয়সে উনি Kolkata Corporation এর Chief Executive Officer হলেন আর তারপরে উনি Mayor এর দায়িত্ব ও পালন করেন। একজন প্রশাসক হিসেবেও উনি অনেক বড় বড় কাজ করেছেন – বাচ্চাদের জন্য স্কুল, গরিব বাচ্চাদের জন্য দুধের ব্যবস্থা, আর স্বচ্ছতা ভিত্তিক অনেক প্রচেষ্টার কথা আজও স্মরণ করা হয়। নেতাজি সুভাষের radio র সঙ্গে এক গভীর সম্পর্ক ছিল। উনি আজাদ হিন্দ রেডিওর স্থাপনা করেন, যার মাধ্যমে ওর কথা শোনার জন্য জনগণ অধির আগ্রহে অপেক্ষা করতো। ওর ভাষণ, বিদেশি শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই কে এক নতুন শক্তি প্রদান করে। আজাদ হিন্দ রেডিওতে ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, বাংলা, মারাঠি, পাঞ্জাবি, পশতো আর উর্দু ভাষায় news bulletin এর সম্প্রচার হতো। আমি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস কে প্রণাম জানাই। সারা দেশের যুব বৃন্দের কাছে আমার অনুরোধ তারা যেন ওঁর সম্বন্ধে আরও বেশি করে পড়ে আর ওঁর জীবন থেকে নিরন্তর প্রেরণা অর্জন করে।
বন্ধুগণ, মন কি বাতের এই অনুষ্ঠানটি প্রত্যেক বার আমাকে রাষ্ট্রের সামগ্রিক প্রচেষ্টা দিয়ে আপনাদের সম্মিলিত ইচ্ছা শক্তির সঙ্গে যুক্ত করে। প্রত্যেক মাসে আমি বহুমাত্রায় আপনাদের পরামর্শ আপনাদের মতামত পাই আর এই ধরনের চিন্তাভাবনা দেখে বিকশিত ভারতের ওপর আমার বিশ্বাস আরো গাঢ় হয়ে ওঠে। এই ভাবেই আপনারা সবাই নিজেদের কর্মের মাধ্যমে ভারতবর্ষকে সর্বশ্রেষ্ঠ করে তোলার প্রয়াস করতে থাকুন। এই বারের মন কি বাতে আপাতত এইটুকুই, ভারতবাসীর উপলব্ধি, সংকল্প আর সাফল্য়ের নতুন গাথা নিয়ে আগামী মাসে আবার দেখা হবে – অনেক অনেক ধন্যবাদ। নমস্কার।
Tune in to the first #MannKiBaat episode of 2025 as we discuss a wide range of topics. https://t.co/pTRiFkvi5V
— Narendra Modi (@narendramodi) January 19, 2025
This year's Republic Day is very special as it is the 75th anniversary of the Indian Republic. #MannKiBaat pic.twitter.com/2ssQij11Ew
— PMO India (@PMOIndia) January 19, 2025
25th January marks National Voters' Day, the day the Election Commission of India was established. Over the years, the Election Commission has consistently modernised and strengthened our voting process, empowering democracy at every step. #MannKiBaat pic.twitter.com/6h1pT7MIZZ
— PMO India (@PMOIndia) January 19, 2025
‘कुंभ’, ‘पुष्करम’ और ‘गंगा सागर मेला’ - हमारे ये पर्व, हमारे सामाजिक मेल-जोल को, सद्भाव को, एकता को बढ़ाने वाले पर्व हैं। ये पर्व भारत के लोगों को भारत की परंपराओं से जोड़ते हैं। #MannKiBaat pic.twitter.com/i8RNjJ6cLc
— PMO India (@PMOIndia) January 19, 2025
In the beginning of 2025 itself, India has attained historic achievements in the space sector. #MannKiBaat pic.twitter.com/ZYi7SZpMnE
— PMO India (@PMOIndia) January 19, 2025
A unique effort by Assam's 'Hathi Bandhu' team to protect crops. #MannKiBaat pic.twitter.com/NdCHvMSrZD
— PMO India (@PMOIndia) January 19, 2025
It's a moment of great joy that in the last two months, India has added two new Tiger Reserves - Guru Ghasidas-Tamor Pingla in Chhattisgarh and Ratapani in Madhya Pradesh. #MannKiBaat pic.twitter.com/0nat38vlY4
— PMO India (@PMOIndia) January 19, 2025
Heartening to see StartUps flourish in Tier-2 and Tier-3 cities across the country. #MannKiBaat pic.twitter.com/I9v7scRghO
— PMO India (@PMOIndia) January 19, 2025
In Arunachal Pradesh, Deepak Nabam Ji has set a remarkable example of selfless service. #MannKiBaat pic.twitter.com/qGHjdqpCjb
— PMO India (@PMOIndia) January 19, 2025
Praiseworthy efforts by K. Hindumbi Ji and K.G. Mohammed Ji of Lakshadweep. #MannKiBaat pic.twitter.com/SWz9BeZbCO
— PMO India (@PMOIndia) January 19, 2025
Virgin coconut oil from the Nicobar has recently been granted a GI tag. #MannKiBaat pic.twitter.com/1c8DOJCixx
— PMO India (@PMOIndia) January 19, 2025
Tributes to Netaji Subhas Chandra Bose. He was a visionary and courage was in his very nature. #MannKiBaat pic.twitter.com/1s24iSzsJB
— PMO India (@PMOIndia) January 19, 2025
Began today’s #MannKiBaat with a tribute to the makers of our Constitution. Also played parts of speeches by Dr. Babasaheb Ambedkar, Dr. Rajendra Prasad and Dr. Syama Prasad Mookerjee. We will always work to fulfil the vision of the makers of our Constitution. pic.twitter.com/nrMR4mxVdQ
— Narendra Modi (@narendramodi) January 19, 2025
Highlighted how our collective spirit and proactive efforts by the Election Commission of India have made our democracy more vibrant. #MannKiBaat pic.twitter.com/43NA3HPCqU
— Narendra Modi (@narendramodi) January 19, 2025
StartUp India has given wings to the aspirations of so many youngsters. The good news is - small towns are increasingly becoming StartUp Centres. Equally gladdening is to see women take the lead in so many StartUps. #MannKiBaat pic.twitter.com/2FI7TZ6LUK
— Narendra Modi (@narendramodi) January 19, 2025
India will always remember the contribution of Netaji Subhas Chandra Bose. #MannKiBaat pic.twitter.com/O1B1yj0v2r
— Narendra Modi (@narendramodi) January 19, 2025
The last few days have been outstanding for the space sector! #MannKiBaat pic.twitter.com/q5WOHJvtpw
— Narendra Modi (@narendramodi) January 19, 2025
An effort in Assam’s Nagaon to reduce man-animal conflict has the power to motivate everyone. #MannKiBaat pic.twitter.com/18kcva0Tup
— Narendra Modi (@narendramodi) January 19, 2025
From helping misguided people in Arunachal Pradesh, boosting women empowerment in Andaman and Nicobar Islands to serving society and protecting local culture in Lakshadweep, India is filled with several inspiring life journeys. #MannKiBaat pic.twitter.com/avRnyANnBz
— Narendra Modi (@narendramodi) January 19, 2025
इस बार हम गणतंत्र दिवस की 75वीं वर्षगांठ मनाने जा रहे हैं। इस विशेष अवसर पर देश को समानता और सर्वहित से जुड़ा पवित्र संविधान देने वाली राष्ट्र विभूतियों को मेरा नमन! आइए, उनके विचारों से प्रेरणा लेकर एक ऐसे विकसित भारत का निर्माण करें, जिस पर हर किसी को गर्व हो। #MannKiBaat pic.twitter.com/9fhF3tKgUq
— Narendra Modi (@narendramodi) January 19, 2025
25 जनवरी को National Voters’ Day को देखते हुए देशवासियों से मेरा आग्रह है कि वे लोकतंत्र के उत्सव का हिस्सा जरूर बनें और Mother of Democracy को मजबूत करने के लिए हमेशा आगे आएं। #MannKiBaat pic.twitter.com/xa0jrxHd1l
— Narendra Modi (@narendramodi) January 19, 2025
प्रयागराज महाकुंभ में एक बार फिर एकता, समता और समरसता का अद्भुत संगम दिख रहा है। इसमें हमारी युवा पीढ़ी की बढ़-चढ़कर भागीदारी बताती है कि वो किस प्रकार अपनी परंपरा और विरासत के साथ आधुनिकता को अपनाकर देश की जड़ों से जुड़ रही है। #MannKiBaat pic.twitter.com/Odcqxuo4hq
— Narendra Modi (@narendramodi) January 19, 2025