Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী রোজগার মেলায় কেন্দ্রীয় সরকারি দপ্তর এবং সংস্থায় নবনিযুক্তদের ৭১,০০০-এর বেশি নিয়োগপত্র বিতরণ করেছেন

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী রোজগার মেলায় কেন্দ্রীয় সরকারি দপ্তর এবং সংস্থায় নবনিযুক্তদের ৭১,০০০-এর বেশি নিয়োগপত্র বিতরণ করেছেন


নতুন দিল্লি, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রোজগার মেলায় ভাষণ দিয়েছেন এবং ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে আজ সরকারি দপ্তর এবং সংস্থায় নবনিযুক্তদের ৭১,০০০-এরও বেশি নিয়োগপত্র প্রদান করেছেন। রোজগার মেলা কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে অগ্রাধিকার দিতে প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুতির প্রতিরূপ। দেশ গঠনে অবদান রাখতে এবং স্বনির্ভরতার অর্থপূর্ণ সুযোগ দিতে এটি যুব সমাজকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে সাহায্য করবে।

সমাবেশে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি গতকাল অনেক রাতে কুয়েত থেকে ফিরেছেন, যেখানে ভারতীয় যুব সমাজ এবং পেশাদারদের সঙ্গে তাঁর বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। আর এটা খুব আনন্দের ঘটনা যে, ফেরার পরে তাঁর প্রথম কর্মসূচিটিই দেশের যুব সমাজের সঙ্গে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আজ দেশের কয়েক হাজার যুবক যুবতীর জীবনে নতুন সূচনা হচ্ছে। আপনাদের বহু বছরের স্বপ্ন সফল হয়েছে। বহু বছরের কঠোর পরিশ্রম মূল্য পেয়েছে। এই ২০২৪-এর শেষলগ্নটি আপনাদের কাছে নতুন খুশি বয়ে এনেছে। আমি আপনাদের সকলকে এবং আপনাদের পরিবারকে অভিনন্দন জানাই।”

প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন যে, সরকার রোজগার মেলার মতো উদ্যোগের মাধ্যমে ভারতে তরুণ প্রতিভার পূর্ণ সদ্ব্যবহারে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। গত ১০ বছরে বিভিন্ন মন্ত্রক এবং দপ্তরে সরকারি চাকরি দিতে সম্মিলিত প্রয়াস নেওয়া হয়েছে। আজ ৭১,০০০-এরও বেশি তরুণ তরুণীকে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। শ্রী মোদী বলেন, দেড় বছরে ১০ লক্ষের মতো স্থায়ী সরকারি চাকরি দেওয়া হয়েছে, যা একটি রেকর্ড। এই চাকরি দেওয়া হয়েছে সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা বজায় রেখে এবং নবনিযুক্তরা দেশের সেবা করছেন নিষ্ঠা এবং পরিশ্রমের সঙ্গে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের উন্নয়ন নির্ভর করে পরিশ্রম, সক্ষমতা এবং যুব সমাজের নেতৃত্বের উপর। ভারত ২০৪৭-এর মধ্যে উন্নত দেশ হওয়ার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সেই কারণে দেশের নীতি এবং সিদ্ধান্তগুলিতে জোর দেওয়া হয়েছে প্রতিভাধর তরুণ তরুণীদের ক্ষমতায়নের উপর। তিনি বলেন, গত এক দশকে মেক ইন ইন্ডিয়া, আত্মনির্ভর ভারত, স্টার্ট আপ ইন্ডিয়া, স্ট্যান্ডআপ ইন্ডিয়া এবং ডিজিটাল ইন্ডিয়ার মতো উদ্যোগ যুব সমাজকে সামনের সারিতে এগিয়ে দিয়েছে।

শ্রী মোদী বলেন, যে ভারত বর্তমানে বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি এবং তৃতীয় বৃহত্তম স্টার্টআপ পরিমণ্ডল। বর্তমানে ভারতীয় যুবারা নতুন আত্মবিশ্বাসে টগবগ করছে। তারা প্রতিটা ক্ষেত্রে ঔৎকর্ষ প্রদর্শন করছে। তরুণ উদ্যোগীরা যখন স্টার্ট আপ-এর সূচনা করছে, তারা সাহায্য পাচ্ছে শক্তিশালী সহায়ক ব্যবস্থার। একইরকমভাবে যেসমস্ত তরুণ তরুণীর ক্রীড়াকে কেরিয়ার হিসেবে বেছে নেওয়ার আত্মবিশ্বাস আছে, যারা মনে করেন যে, তারা ব্যর্থ হবেন না, কারণ তারা আধুনিক প্রশিক্ষণের সুবিধা এবং প্রতিযোগিতা অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশ বিভিন্ন ক্ষেত্রে রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। মোবাইল উৎপাদনে দ্বিতীয় বৃহত্তম হয়ে উঠেছে। ভারত বর্তমানে পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি, জৈব কৃষি, মহাকাশ, প্রতিরক্ষা, পর্যটন এবং সুস্থতার ক্ষেত্রে বড় পদক্ষেপ রেখেছে এবং প্রত্যেকটি বিষয়েই নতুন সুযোগ তৈরি হচ্ছে ও নতুন উচ্চতায় পৌঁছচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের অগ্রগতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে এবং নতুন ভারত গঠন করতে তরুণ প্রতিভার লাপনপালন জরুরি এবং এর দায়িত্ব শিক্ষা ব্যবস্থার। জাতীয় শিক্ষানীতি ভারতকে পথ দেখাচ্ছে আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থার যা ছাত্রছাত্রীদের নতুন সুযোগ দেবে। শ্রী মোদী বলেন, পূর্বে এই ব্যবস্থা ছিল নিয়ন্ত্রণমূলক। কিন্তু বর্তমানে অটল টিংকারিং ল্যাব এবং পিএম-শ্রীস্কুলের মতো উদ্যোগের মাধ্যমে উদ্ভাবনের পৃষ্ঠপোষকতা করছে। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “সরকার গ্রামীণ যুব সমাজ এবং প্রান্তিক সমাজে ভাষার বাধা দূর করেছে মাতৃভাষায় শিক্ষা এবং পরীক্ষার অনুমতি দিয়ে এবং ১৩টি ভাষায় চাকরির পরীক্ষা দেওয়ার সুবিধাদানের মাধ্যমে। এছাড়া, সীমান্ত অঞ্চলের যুব সমাজের জন্য সংরক্ষণ বৃদ্ধি করা হয়েছে। স্থায়ী সরকারি চাকরির জন্য বিশেষ নিয়োগ সমাবেশ করা হচ্ছে। আজ ৫০ হাজারের বেশি তরুণ তরুণী নিয়োগ পত্র পেয়েছে কেন্দ্রীয় সশস্ত্র বাহিনীর জন্য, যা একটি উল্লেখযোগ্য সাফল্য। ”

আজ চৌধুরীচরণ সিং-এর জন্মবার্ষিকী সম্পর্কে বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার এবছর তাঁকে ভারতরত্ন সম্মানে ভূষিত করতে পেরে গর্বিত। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা দিনটি কৃষক দিবস হিসেবেও পালন করি। সম্মান জানাই কৃষকদের, যাঁরা আমাদের খাদ্য দান করেন। চৌধুরীসাহেব বিশ্বাস করতেন যে, ভারতের অগ্রগতি নির্ভর করছে গ্রামীণ ভারতের উন্নতির উপর। আমাদের সরকারের নীতি গ্রামাঞ্চলে তৈরি করেছে নতুন কর্মসংস্থান এবং স্বনির্ভর হওয়ার সুযোগ, বিশেষ করে কৃষি ক্ষেত্রে।”

শ্রী মোদী বলেন, গোবরধন যোজনার মতো উদ্যোগ যাতে জৈব গ্যাসের কারখানা স্থাপন করা হয়েছে সেখানেও কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়েছে বিদ্যুৎ তৈরির পাশাপাশি। ই-এনএএম কর্মসূচি জুড়ে দিয়েছে কৃষি বাজারগুলিকে, খুলেছে নতুন কর্মসংস্থানের রাস্তা। ইথানল মিশ্রণ বৃদ্ধি হওয়ায় কৃষকরা উপকৃত হচ্ছেন। চিনির ক্ষেত্রেও কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিভাবে ৯ হাজারের কাছাকাছি ফার্মার প্রোডিউসার অর্গানাইজেশন (এফপিও) স্থাপনে বাজারের সুবিধা উপলব্ধ হয়েছে এবং গ্রামাঞ্চলে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও সরকার শস্য মজুতের জন্য কয়েক হাজার ওয়্যারহাউজ নির্মাণের বড় কর্মসূচি রূপায়ণ করছে, যাতে উল্লেখযোগ্যভাবে কর্মসংস্থান হবে এবং স্বনির্ভর হওয়ার সুযোগ মিলবে।

প্রধানমন্ত্রী জানান, সরকার বীমা সখী যোজনার সূচনা করেছে প্রত্যেক নাগরিককে বীমার আওতায় আনার জন্য। এতেও গ্রামাঞ্চলে একাধিক কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়েছে। ড্রোন দিদি, লাখপতি দিদি, ব্যাঙ্ক সখী যোজনার মতো উদ্যোগ কৃষি এবং গ্রামাঞ্চলে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করছে। শ্রী মোদী আরও বলেন, “আজ কয়েক হাজার মহিলা নিয়োগপত্র পেয়েছেন এবং তাঁদের সাফল্য অন্যকে প্রেরণা যোগাবে। সরকার প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে মহিলাদের স্বনির্ভর করে তুলতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। ২৬ সপ্তাহ মাতৃত্বকালীন ছুটির ব্যবস্থায় লক্ষ লক্ষ মহিলার কর্মজীবন সুরক্ষিত হয়েছে।”

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কিভাবে স্বচ্ছভারত অভিযান মহিলাদের অগ্রগতিতে বাধা দূর করেছে। আগে আলাদা শৌচাগারের অভাবে অনেক ছাত্রীই মাঝপথে স্কুল ছেড়ে দিতো। তিনি বলেন, সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনা কন্যাদের শিক্ষায় আর্থিক সহায়তা নিশ্চিত করেছে। মহিলাদের জন্য ৩০ কোটি জনধন অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সরকারি কর্মসূচির সুবিধা সরাসরি দেওয়া হচ্ছে। শ্রী মোদী আরও বলেন, “মুদ্রা যোজনার মাধ্যমে মহিলারা এখন কোনো কিছু গচ্ছিত না রেখেই ঋণ পাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বেশিরভাগ বাড়ি মহিলাদের নামে দেওয়া হচ্ছে। পোষণ অভিযান, সুরক্ষিত মাতৃত্ব অভিযান এবং আয়ুষ্মান ভারতের মতো উদ্যোগ মহিলাদের আরও ভালো স্বাস্থ্য পরিষেবা দিচ্ছে।”

প্রধানমন্ত্রী মোদী জোর দিয়ে বলেন, নারী শক্তি বন্দন অধিনিয়ম বিধানসভা এবং লোকসভায় মহিলাদের জন্য সংরক্ষণ সুনিশ্চিত করেছে। যাতে দেশে মহিলাদের নেতৃত্বে উন্নতি ঘটতে পারে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ যেসমস্ত যুবা নিয়োগপত্র পাচ্ছেন তারা যোগ দিচ্ছেন নবরূপান্তরিত সরকারি ব্যবস্থায়। গত এক দশকে সরকারি কর্মীদের নিষ্ঠা ও কঠোর পরিশ্রমের ফলে সরকারি কার্যালয়গুলিতে কার্যকারিতা এবং উৎপাদনশীলতার উল্লেখযোগ্য উন্নতি ঘটেছে।

প্রধানমন্ত্রী জানান, নবনিযুক্তরা এই লক্ষ্যে পৌঁছেছেন, কারণ তাদের জানার ও উন্নতি করার আগ্রহ ছিল এবং সারা জীবনই এটি বজায় রাখা উচিত। তিনি আইগট কর্মযোগী প্ল্যাটফর্মে সরকারি কর্মীদের জন্য বিভিন্ন পাঠক্রমের কথা তুলে ধরেন এবং নবনিযুক্তদের তাদের সুবিধে মতো এই ডিজিটাল প্রশিক্ষণ মডিউল ব্যবহার করতে উৎসাহ দেন। সব শেষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আরও একবার আমি আজ যারা নিয়োগপত্র পেলেন সেইসব প্রার্থীদের অভিনন্দন জানাই।”

 

PG/AP/SKD