Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে ভারতীয় সম্প্রদায়ের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে ভারতীয় সম্প্রদায়ের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ


নয়াদিল্লি, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

 

ভারত মাতা কি – জয়!
ভারত মাতা কি – জয়!
ভারত মাতা কি – জয়!

নমস্তে আমেরিকা! এখন এমনকি আমাদের “নমস্তে” বহুজাতিক হয়ে গেছে। লোকাল থেকে গ্লোবাল হয়ে গেছে এবং তা আপনাদের জন্যই। প্রত্যেক ভারতীয় যাঁদের হৃদয়ের কাছাকাছি আছে ভারত, তাঁরাই এটিকে সম্ভব করে তুলেছেন।

বন্ধুগণ,

আপনারা এখানে এসেছেন অনেক দূর দূর থেকে। কেউ কেউ পরিচিত মুখ, আবার অনেকে নতুন। আপনাদের ভালোবাসা আমার কাছে অত্যন্ত সম্মানের। আমার সেইসব দিনের কথা মনে পড়ে যখন আমি প্রধানমন্ত্রী ছিলাম না, মুখ্যমন্ত্রীও ছিলাম না, আদৌ কোনো নেতাই ছিলাম না, সেই সময় আমি একজন আগ্রহী পর্যটক হিসেবে এখানে এসেছি এই দেশটাকে দেখতে, জানতে, মনে নানা প্রশ্ন নিয়ে। যখন আমার কোনো সরকারি পদ ছিল না, আমি তখনই আমেরিকার প্রায় ২৯টি রাজ্য ঘুরে ফেলেছি। পরে, যখন মুখ্যমন্ত্রী হলাম তখন আমি প্রযুক্তির মাধ্যমে আপনাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। প্রধানমন্ত্রী হিসেবেও আমি আপনাদের কাছ থেকে ভালোবাসা এবং আন্তরিকতা পেয়েছি। ২০১৪-য় ম্যাডিসন স্কোয়ারে; ২০১৫-য় সান জোস্-এ; ২০১৯-এ হাউস্টনে, ২০২৩-এ ওয়াশিংটনে এবং এখন ২০২৪-এ নিউ ইয়র্কে, প্রত্যেকবার আপনারা আগের বারের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছেন।

বন্ধুগণ,

আমি সব সময়ই ভারতীয় সম্প্রদায়ের শক্তিকে স্বীকার করেছি। যখন আমি কোনো সরকারি পদাধিকারী ছিলাম না, আমি বুঝেছি। আমি আজও এটাকে বুঝি। আপনারা সব সময় আমার কাছে ভারতের সবচেয়ে শক্তিশালী ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডার। সেজন্যই আমি আপনাদের ‘রাষ্ট্রদূত’ বলি। আপনারা আমেরিকাকে ভারতের সঙ্গে যুক্ত করেছেন এবং ভারতকে আমেরিকার সঙ্গে। আপনাদের দক্ষতা, মেধা এবং দায়বদ্ধতা অতুলনীয়। যদিও আপনারা সাত সমুদ্র পেরিয়ে এসেছেন, তবে কোনো সমুদ্রই এতটা গভীর নয় যে আপনাদের ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখবে। আপনাদের হৃদয়ে আছে ভারত। মা ভারতী আমাদের যা শিখিয়েছেন, আমরা কখনও তা ভুলব না। যেখানেই যাই আমরা প্রত্যেককে আমাদের পরিবার মনে করি। বৈচিত্র্যকে আগলে রাখি, বাস করি এবং আমাদের জীবনের সাথে সম্পৃক্ত করে নিই। এটাই আমাদের মূল্যবোধ, আমাদের জীবনের প্রথম থেকে। আমরা এমন একটি দেশ থেকে এসেছি যেখানে কয়েকশ’ ভাষা এবং উপ-ভাষা আছে। যেখানে সবরকম ধর্ম এবং শ্রেণী আছে। তথাপি আমরা এক এবং ঐক্যবদ্ধ হয়ে এগিয়ে যাই। এই হ’লে কেউ বা তামিল বলছেন, কেউ বা তেলুগু, মালয়ালাম, কন্নড়, পাঞ্জাবি, মারাঠি অথবা গুজরাটি। আমাদের ভাষা আলাদা হতে পারে, কিন্তু আমাদের মনোভাব এক : “ভারত মাতা কি জয়” – এটাই আমাদের ভারতীয়ত্বের প্রমাণ। বিশ্বের সঙ্গে সংযোগ গড়ে তোলার এটাই আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি। এই মূল্যবোধ স্বাভাবিকভাবেই আমাদের ‘বিশ্ব বন্ধু’ করে তোলে। আমাদের শাস্ত্রে বলেছে – তেন ত্যক্তেন ভূঞ্জীথাঃ’, যার অর্থ যিনি ত্যাগ করতে পারেন, তিনিই সত্যিকারের উপভোগ করতে পারেন। আমরা অপরের কল্যাণ করে এবং আত্মত্যাগ করে সুখ বোধ করি। যেখানেই আমরা থাকি, এই মনোভাবের কোনো পরিবর্তন হয় না। আমরা যে সমাজে থাকি সেখানে আমরাই সর্বোচ্চ অবদান রাখি। আমেরিকায়, সে চিকিৎসাবিদই হোক, গবেষক, প্রযুক্তিবিদ, বিজ্ঞানী অথবা অন্য কোন পেশা, আপনারা সেরা হয়েছেন। বিশ্ব সেটার সাক্ষী থেকেছে। এই কিছুদিন আগে এখানে টি-২০ ক্রিকেট বিশ্বকাপ আয়োজিত হল এবং আমেরিকা চমকপ্রদভাবে খেলল। বিশ্ব এও দেখল সেই দলে থাকা ভারতীয়দের অবদান।

বন্ধুগণ,

বিশ্বের কাছে এআই-এর অর্থ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি, এআই-এর অর্থ আমেরিকা-ইন্ডিয়া। এই আমেরিকা-ইন্ডিয়া মনোভাবই নতুন বিশ্বের এআই শক্তি যা বাড়িয়ে তুলেছে ভারত-আমেরিকা সম্পর্ক। আমি আপনাদের সকলকে প্রণাম জানাই।

বন্ধুগণ,

আমি বিশ্বের যেখানে যাই, সেখানে প্রত্যেক নেতার কাছ থেকেই ভারতীয়দের সম্পর্কে প্রশংসা ছাড়া আর কিছু শুনতে পাই না। এইতো কাল, রাষ্ট্রপতি বাইডেন ডেলাওয়্যারে তাঁর বাড়িতে আমাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। তাঁর আন্তরিকতা এবং আতিথেয়তা সত্যিই খুব মনোমুগ্ধকর। সেই সম্মান ১৪০ কোটি ভারতীয়র জন্য, আপনাদের কঠোর পরিশ্রমের জন্য, এখানে বসবাসকারী লক্ষ লক্ষ ভারতীয়র জন্য। আমি প্রেসিডেন্ট বাইডেন এবং আপনাদের সকলকে আমার কৃতজ্ঞতা জানাই।

বন্ধুগণ,

২০২৪ বছরটি বিশ্বের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একদিকে আমরা দেশে সংঘর্ষ উত্তেজনা দেখছি, অন্যদিকে কয়েকটি দেশ গণতন্ত্র উদযাপন করছে। গণতন্ত্রের এই উদযাপনে ভারত- আমেরিকা যৌথ অংশীদার। আমেরিকায় নির্বাচন আসন্ন। ভারতে ইতিমধ্যেই নির্বাচন হয়ে গেছে। ভারতের এই নির্বাচন মানব ইতিহাসে বৃহত্তম। আপনারা ভাবতে পারেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মোট জনসংখ্যার থেকে ভারতের ভোটদাতাদের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ। সমগ্র ইউরোপের জনসংখ্যার থেকে আমাদের ভোটদাতার সংখ্যা বেশি! অনেক বেশি সংখ্যায় মানুষ ভারতে ভোট দিয়েছেন। যখন আমরা ভারতের গণতন্ত্রের পরিমাপ দেখতে পাই, সেটা আমাদের গর্বে ভরিয়ে তোলে। তিনমাস দীর্ঘ ভোটদান প্রক্রিয়া, ১৫ মিলিয়ন ভোটকর্মী, ১ মিলিয়নের বেশি ভোটদান কেন্দ্র, ২,৫০০-র বেশি রাজনৈতিক দল, ৮ হাজারের বেশি প্রার্থী, বিভিন্ন ভাষায় কয়েক হাজার সংবাদপত্র, কয়েকশ’ বেতারকেন্দ্র, টিভি নিউজ চ্যানেল, কয়েক লক্ষ সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট, কয়েক লক্ষ্য সোশ্যাল মিডিয়া চ্যানেল – এইসবই ভারতের গণতন্ত্রকে প্রাণবন্ত করে তুলেছে। এটা মত প্রকাশের স্বাধীনতা সম্প্রসারণের যুগ এবং আমাদের নির্বাচনী প্রক্রিয়া এই স্তরে পর্যবেক্ষণের মধ্য দিয়ে চলেছে। 

এবং বন্ধুরা,

এই দীর্ঘ নির্বাচনী প্রক্রিয়া এবারে ভারতে কিছু অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটিয়েছে। কি হয়েছে? কি হয়েছে? কি হয়েছে? ‘আব কি বার -’, ‘আব কি বার -’, ‘আব কি বার -’।

বন্ধুগণ,

আমাদের সরকার তৃতীয়বারের জন্য পুনর্নিবাচিত হয়েছে। ভারতে গত ৬০ বছরে এ জিনিস হয়নি। ভারতের মানুষ আমাদের যে সমর্থন করেছেন তা বিশাল এবং উল্লেখযোগ্য। এই তৃতীয় দফায় আমাদের আরও বড় লক্ষ্য পূরণ করতে হবে। আমাদের তিনগুণ শক্তি নিয়ে, তিনগুণ গতি নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। আপনারা একটা শব্দ জানেন : ‘পুষ্প’। হ্যাঁ, এটা আপনারা ভেবে নিন পদ্ম। আমার কোনো আপত্তি নেই। পুষ্প, আর আমি যদি পুষ্পকে ব্যাখ্যা করি – ‘পি’ ফর প্রোগ্রেসিভ ভারত, ‘ইউ’ ফর আনস্টপেবল ভারত, ‘এস’ ফর স্পিরিচ্যুয়াল ভারত, ‘এইচ’ ফর হিউম্যানিটি ফার্স্ট ভারত এবং ‘পি’ ফর প্রসপারাস ভারত। সব মিলিয়ে ‘পুষ্প’-এর এই পাঁচটি পাঁপড়ি ‘বিকশিত ভারত’-এর রূপ নেবে। 

বন্ধুগণ,

স্বাধীনতার পরে জন্ম নেওয়া ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী আমি। স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় লক্ষ লক্ষ ভারতীয় স্বরাজ-এর জন্য তাঁদের প্রাণ বিসর্জন দিয়েছিলেন। তাঁরা তাঁদের ব্যক্তি স্বার্থ এবং স্বাচ্ছন্দের কথা ভাবেননি। তাঁরা সব ভুলে গিয়েছিলেন এবং লড়াই করেছিলেন ব্রিটিশের বিরুদ্ধে। কাউকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছিল, কাউকে গুলি করে মারা হয়েছিল, কেউ কারাগারে নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন এবং অনেকেই তাঁদের যৌবন কাটিয়েছিলেন কারান্তরালে। 

বন্ধুগণ,

আমরা দেশের জন্য মরিনি, কিন্তু আমরা তার জন্য বাঁচতে পারি। মৃত্যু আমাদের নিয়তি ছিল না, কিন্তু জীবন আমাদের নিয়তি। প্রথমদিন থেকে আমার মন এবং লক্ষ্য স্পষ্ট। আমি ‘স্বরাজ’-এর জন্য জীবন দিতে পারি। কিন্তু, আমি ‘সুরাজ’ এবং সমৃদ্ধ ভারতের জন্য জীবন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমার জীবনের একটা বড় অংশ কেটেছে বছরের পর বছর দেশের নানা জায়গায় ঘুরে। যেখানে যা পেয়েছি খেয়েছি। যেখানে শোবার জায়গা পেয়েছি শুয়েছি। সাগরের তটভূমি থেকে পাহাড়, মরুভূমি থেকে তুষারাচ্ছাদিত শৃঙ্গ – আমি সব অঞ্চলের মানুষের সঙ্গে মিশেছি, তাঁদের জেনেছি, বুঝেছি। আমি আমার দেশের জীবন, সংস্কৃতি এবং সমস্যাগুলির হাতেগরম অভিজ্ঞতা পেয়েছি। যদিও আমার পথ ভিন্ন, নিয়তি আমাকে রাজনীতিতে টেনে এনেছে। আমি কখনও মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার কথা ভাবিইনি। কিন্তু আমি গুজরাটের সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি, সে ১৩ বছরের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হয়েছি। আমি গুজরাটে ১৩ বছর মুখ্যমন্ত্রী ছিলাম এবং মানুষ আমাকে প্রধানমন্ত্রী পদে উত্তীর্ণ করেছেন। দেশের নানা প্রান্ত ঘুরে আমার যে শিক্ষা হয়েছে, তাই আমার প্রশাসনের মডেলে তৈরি করেছি, তা রাজ্য এবং কেন্দ্রেও। গত ১০ বছরে প্রশাসনের এই মডেল আপনাদের কাছে এবং বিশ্বের কাছে প্রকাশিত এবং এখন অনেক আস্থা নিয়ে ভারতের মানুষ আমাকে তৃতীয় দফা দিয়েছেন। আমি তিনগুণ দায়িত্ববোধ নিয়ে এই তৃতীয় দফা পালন করব।

বন্ধুগণ, 

বর্তমানে ভারত বিশ্বে তরুণতম দেশ। ভারত প্রাণশক্তি এবং স্বপ্নে ভরপুর। প্রতিদিন নতুন নতুন রেকর্ড তৈরি হচ্ছে। প্রতিদিন নতুন খবর। এই তো আজই আমরা একটা বড় খবর পেয়েছি। ভারত দাবা অলিম্পিয়াডে পুরুষ এবং মহিলা বিভাগে সোনা জিতেছে। তবে আপনাদের একটা কথা জানাই যা আরও অভিনন্দিত হবে। ১০০ বছরে এই প্রথম এটি ঘটেছে। গোটা দেশ এবং প্রতিটি ভারতীয় আমাদের দাবাড়ুদের জন্য গর্বিত। আরও একটি আছে, সেটি হল এআই-চালিত ভারত। সেটা কি? ‘এ’ মানে অ্যাসপিরেশনাল এবং ‘আই’ হল ভারত। অ্যাসপিরেশনাল ভারত। এটি আমাদের নতুন প্রাণশক্তি। লক্ষ লক্ষ ভারতীয়র প্রত্যাশা চালিত করছে ভারতের অগ্রগতিকে। প্রতিটি প্রত্যাশা নতুন সাফল্য আনছে এবং প্রতিটি সাফল্য নতুন প্রত্যাশার জন্ম দিচ্ছে। মাত্র এক দশকে ভারত ১০ থেকে বেড়ে পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি হয়ে উঠেছে। আজ প্রত্যেক ভারতীয় চান ভারত যেন দ্রুত তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হয়ে ওঠে। আজ ভারতের মানুষের একটি বড় অংশ তাঁদের মৌলিক সুবিধা মেটানোর সুযোগ পেয়েছেন। গত ১০ বছরে কোটি কোটি মানুষ স্বচ্ছ রান্নার গ্যাস, জলবাহিত জল, বিদ্যুৎ এবং শৌচাগার পেয়েছেন। এই কোটি কোটি মানুষ এখন আরও ভালো জীবনযাপনের প্রত্যাশা করছেন।

বন্ধুগণ,

এখন ভারতের মানুষ শুধুমাত্র রাস্তা চাইছেন না; তাঁরা চাইছেন দুর্দান্ত এক্সপ্রেসওয়ে। এখন ভারতের মানুষ শুধু রেল যোগাযোগ চাইছেন না; তাঁরা চাইছেন দ্রুতগতির ট্রেন। ভারতের প্রত্যেকটি শহর মেট্রো পরিষেবার প্রত্যাশা করছে এবং প্রত্যেকটি শহর চায় তাদের নিজেদের বিমানবন্দর হোক। প্রত্যেক নাগরিক, সে গ্রামেরই হোক বা শহরের, চাইছেন বিশ্বমানের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য। আর আমরা এইসবই দেখছি প্রত্যাশার ফল হিসেবে। ২০১৪-য় ভারতের মাত্র পাঁচটি শহরে মেট্রো পরিষেবা ছিল। আজ ২৩টি শহরে মেট্রো চলছে। ভারত এখন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মেট্রো নেটওয়ার্কের দেশ। আর এটা প্রতিদিনই বাড়ছে।

বন্ধুগণ,

২০১৪-য় ভারতের মাত্র ৭০টি শহরে বিমানবন্দর ছিল; আর আজ ১৪০টির বেশি শহরে বিমানবন্দর আছে। ২০১৪-য় ১০০টিরও কম গ্রাম পঞ্চায়েতে ব্রডব্যান্ড সংযোগ ছিল; আজ ২ লক্ষের বেশি পঞ্চায়েতে এটি আছে। ২০১৪-য় ভারতে ছিল প্রায় ১৪০ মিলিয়ন এলপিজি গ্রাহক; আজ ওই সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩১০ মিলিয়নের বেশি, যা সাধারণত কয়েক বছর লাগে সম্পূর্ণ হতে, তা এখন কয়েক মাসেই সম্পূর্ণ হচ্ছে। ভারতের মানুষের মধ্যে এখন নতুন আত্মবিশ্বাস, লক্ষ্যে পৌঁছনোর দৃঢ়মনস্কতা। ভারতে উন্নয়ন এখন মানুষের আন্দোলনে পরিণত হয়েছে এবং প্রতিটি ভারতীয় এই উন্নয়নের আন্দোলনে সমানভাবে অংশ নিচ্ছেন। তাঁরা বিশ্বাস করেন, ভারতের সাফল্যে এবং লক্ষ্য পূরণে।

বন্ধুগণ,

আজ ভারত সুবিধার ভূমি। ভারতকে আর এখন সুবিধার জন্য অপেক্ষা করতে হয় না। ভারত সুবিধা তৈরি করে। গত ১০ বছরে ভারত প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে সুযোগের লঞ্চিং প্যাড তৈরি করেছে। এদিকে দেখুন মাত্র গত দশকে। আর এটিকে আপনাকে গর্বিত করবে। ২৫ কোটি মানুষকে দারিদ্র্যসীমার বাইরে আনা হয়েছে। কি করে এটি ঘটল? এটি ঘটেছে কারণ আমরা পুরনো মনোভাব এবং কর্মধারাকে পরিবর্তন করেছি। আমরা দরিদ্রের ক্ষমতায়নে আলোকপাত করছি। আমরা ৫০০ মিলিয়নের বেশি মানুষকে ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত করেছি, ৫৫০ মিলিয়ন মানুষকে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা দিচ্ছি। ৪০ মিলিয়নের বেশি পরিবারকে সঠিক আবাসন দিয়েছি এবং জামানত ছাড়াই ঋণের মাধ্যমে আমরা কয়েক লক্ষ্য মানুষকে ঋণের সুবিধা দিয়েছি। এরকম অনেক উদ্যোগ মানুষকে দারিদ্র্য মুক্ত হতে সাহায্য করেছে। যাঁরা দারিদ্র্য মুক্ত হয়েছেন, তাঁরা এখন নব্য-মধ্যবিত্ত শ্রেণী তৈরি করছেন যা ভারতের উন্নয়নকে আরও দ্রুতগতিতে চালিত করছে।

বন্ধুগণ,

আমরা মহিলাদের কল্যাণের পাশাপাশি মহিলাদের নেতৃত্বে উন্নয়নে অগ্রাধিকার দিয়েছি। সরকার নির্মিত কোটি কোটি বাড়ি মহিলাদের নামে নথিভুক্ত করা হয়েছে। কয়েক কোটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে যার অর্ধেকের বেশি মহিলাদের নামে। গত এক দশকে ১০ কোটি ভারতীয় মহিলা অতিক্ষুদ্র উদ্যোগপতি কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন। আমরা উল্লেখযোগ্য প্রয়াস নিয়েছি ভারতে কৃষিকে প্রযুক্তির সঙ্গে সংহত করার এবং আজ কৃষিকাজে ড্রোনের যথেচ্ছ ব্যবহার করা হচ্ছে। ড্রোন আপনাদের কাছে নতুন না হতে পারে, এতে আপনাদের অবাক হওয়ার কথা, কিন্তু আপনারা কি জানেন এর জন্য দায়িত্ব নিচ্ছে কে? গ্রামের মহিলারা। আমরা কয়েক হাজার মহিলাকে ড্রোন পাইলট হওয়ার প্রশিক্ষণ দিচ্ছি এবং কৃষিক্ষেত্রে এই প্রযুক্তিগত চমকপ্রদ বিপ্লব চালিত হচ্ছে গ্রামীণ মহিলাদের দ্বারা।

বন্ধুগণ,

এক সময়ের অবহেলিত অঞ্চলগুলি এখন জাতীয় অগ্রাধিকারভুক্ত হয়েছে। আগের তুলনায় ভারত এখন অনেক বেশি সংযুক্ত। আপনারা ভারতের ৫জি বাজারের বর্তমান আয়তন দেখে অবাক হতে পারেন। যদি বলি আপনারা কিছু মনে করবেন না তো? বর্তমানে ভারতের ৫জি বাজার আমেরিকার থেকেও বড় এবং এই সাফল্য এসেছে মাত্র দু’বছরে। এখন ভারত ‘মেড ইন ইন্ডিয়া ৬জি’ নিয়ে কাজ করছে। এটা কি করে ঘটল? এটা ঘটেছে কারণ আমরা এই ক্ষেত্রটিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে নতুন নীতি তৈরি করেছি। আমরা লগ্নি করেছি ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ প্রযুক্তিতে, সহজপ্রাপ্য তথ্যে এবং মোবাইল ফোন উৎপাদনে। বর্তমানে প্রায় বিশ্বের প্রত্যেকটি বড় মোবাইল ব্র্যান্ড এখন মেড ইন ইন্ডিয়া। ভারত বর্তমানে সারা বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম মোবাইল উৎপাদক দেশ। একটা সময় ছিল, আমার কার্যকালের আগে, তখন আমরা মোবাইল ফোন আমদানি করতাম। আর আজ আমরা তা রপ্তানি করছি।

বন্ধুগণ, ভারত আজ পিছিয়ে নেই। এখন ভারত নতুন ব্যবস্থা প্রবর্তন করছে এবং এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। ভারত সারা বিশ্বে ডিজিটাল পাবলিক ইনফ্রাস্ট্রাকচার (ডিপিআই)-এর নতুন ধারণার সূচনা করেছে। ডিপিআই সমতা এনেছে এবং দুর্নীতি হ্রাস করতে শক্তিশালী অস্ত্র হয়ে উঠেছে। ভারতের ইউপিআই এখন বিশ্বের নজর কাড়ছে। আপনার পকেটে ওয়ালেট থাকতে পারে। ভারতে মানুষের কাছে ওয়ালেট থাকার পাশাপাশি তাঁদের ফোনে ই-ওয়ালেটও আছে। অনেক ভারতীয়ই আর নথিপত্র বহন করেন না। যেহেতু তাঁরা এখন ডিজি লকার ব্যবহার করেন। বিমানবন্দর যাওয়ার সময় তাঁরা মসৃণভাবে ডিজিযাত্রা ব্যবহার করেন। এটি ডিজিটাল পাবলিক ইনফ্রাস্ট্রাকচার, উদ্ভাবন, কর্মসংস্থান এবং সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তির লঞ্চিং প্যাড হয়ে উঠেছে।

বন্ধুগণ,

ভারত থামবে না, ভারত মন্থর হবে না। ভারত একটা ভবিষ্যৎ দেখতে পাচ্ছে যেখানে যত বেশি সম্ভব আন্তর্জাতিক স্তরের যন্ত্রপাতি ব্যবহৃত হবে মেড ইন ইন্ডিয়া চিপ দিয়ে। আমরা ভারতে দ্রুতগতির উন্নয়নে ভিত্তি হিসেবে সেমি-কন্ডাক্টর ক্ষেত্র তৈরি করেছি। গত বছর জুনে সেমি-কন্ডাক্টর শিল্পের জন্য ভারত উৎসাহভাতা ঘোষণা করে। আর মাত্র কয়েক মাস পরেই মাইক্রনের প্রথম সেমি-কন্ডাক্টর কারখানাটির শিলান্যাস হয়। আজ পর্যন্ত ভারতে এই ধরনের পাঁচটি কারখানা অনুমোদিত হয়েছে। সেদিন দূরে নয়, যখন আমরা আমেরিকাতেও মেড ইন ইন্ডিয়া চিপ দেখতে পাব। ছোট চিপ উন্নয়নের পথে ভারতের যাত্রাকে উন্নীত করবে এক অভূতপূর্ব উচ্চতায় এবং সেটাই মোদীর প্রতিশ্রুতি।

বন্ধুগণ,

ভারতে আজ সংস্কারের সংকল্প এবং দায়বদ্ধতা অভূতপূর্ব। এর সবচেয়ে বড় প্রমাণ আমাদের ‘গ্রিন এনার্জি ট্রানজিশন’ কর্মসূচি। সারা বিশ্বের জনসংখ্যার ১৭ শতাংশ হওয়া সত্ত্বেও সারা বিশ্ব কার্বন নিঃসরণে ভারতের অবদান মাত্র ৪ শতাংশ। গ্রহের অপকারে আমাদের কোনো ভূমিকা নেই। বস্তুত, বিশ্বের বাকি অংশের তুলনায় আমাদের প্রভাব প্রায় কিছুই নয়। আমরাও আমাদের উন্নয়নকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি কার্বন নিঃসরণের ওপর ভরসা করে। কিন্তু আমরা বেছে নিয়েছি গ্রিন ট্রানজিশন, প্রকৃতির জন্য আমাদের দৃঢ়মূল শ্রদ্ধার দ্বারা চালিত। ফলে আমরা বিপুল পরিমাণে বিনিয়োগ করছি সৌর, বায়ু, জল, গ্রিন হাইড্রোজেন এবং পরমাণু বিদ্যুতে। জি-২০-তে ভারতই প্রথম দেশ যে প্যারিস জলবায়ু লক্ষ্য পূরণ করেছে। ২০১৪ থেকে আমাদের সৌরবিদ্যুৎ শক্তি বেড়েছে ৩০ গুণেরও বেশি। দেশের প্রত্যেকটি বাড়িকে সৌরবিদ্যুৎচালিত বাড়ি করার লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। এটি অর্জন করতে আমরা একটি বিস্তারিত রুফটপ সোলার মিশন-এর সূচনা করেছি। আজ আমাদের রেল স্টেশন এবং বিমানবন্দরগুলি সৌরবিদ্যুতে রূপান্তরিত হচ্ছে। বাড়ি থেকে রাস্তা – ভারত বিদ্যুৎ সাশ্রয়কারী আলোকের যাত্রাপথে চলেছে। এইসব প্রয়াস ভারতে বিশাল সংখ্যায় দূষণহীন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করছে। 

বন্ধুগণ,

একবিংশ শতাব্দীর ভারত এগোচ্ছে শিক্ষা, দক্ষতা, গবেষণা এবং উদ্ভাবনের মাধ্যমে। আপনারা সকলেই নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের সঙ্গে পরিচিত। খুব বেশিদিন আগে নয়, ভারতের প্রাচীন নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় নতুনভাবে সংস্কার করা হয়েছে। এটি আজ শুধু একটি বিশ্ববিদ্যালয়ই নয়, এটি সেই নালন্দার আদর্শ যার পুনর্জন্ম হয়েছে। আমরা একটি আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করছে যা সারা বিশ্ব থেকে ছাত্রদের আকর্ষণ করবে ভারতে আসতে এবং পড়তে। গত ১০ বছরে ভারতে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটেছে। এই সময়েই ভারতে প্রতি সপ্তাহে একটি করে নতুন বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হয়েছে। প্রতিদিন দুটি নতুন কলেজ স্থাপিত হয়েছে এবং প্রতিদিন একটি নতুন আইটিআই খুলেছে। এক দশকে আইআইআইটি-র সংখ্যা ৯ থেকে বেড়ে হয়েছে ২৫। আইআইএম ১৩ থেকে বেড়ে হয়েছে ২১ এবং এইম্স তিনগুণ বেড়ে হয়েছে ২২। মেডিকেল কলেজের সংখ্যাও এই একই সময়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। বর্তমানে এমনকি বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলি ভারতে আসছে। ভারত এখন খ্যাতনামা। বিশ্ব দীর্ঘদিন ধরে ভারতীয় নকশাকারদের শক্তির সাক্ষী থেকেছে। এখন বিশ্ব সাক্ষী থাকছে ‘ডিজাইন ইন ইন্ডিয়া’র উৎকর্ষতায়।

বন্ধুগণ,

বর্তমানে ভারতের অংশীদারিত্ব সারা বিশ্বেই বাড়ছে। আগে ভারত সম-দূরত্ব রাখার নীতি অনুসরণ করত। কিন্তু এখন সম-নৈকট্যের নীতিকে আপন করে নিয়েছে। আমরা গ্লোবাল সাউথ-এর শক্তিশালী কন্ঠস্বর হয়ে উঠছি। আপনারা দেখে থাকবেন হয়তো, ভারতের উদ্যোগেই আফ্রিকান ইউনিয়ন জি-২০ শিখর সম্মেলনে স্থায়ী সদস্যপদ পেয়েছে। আজ যখন ভারত আন্তর্জাতিক মঞ্চে কিছু বলে, বিশ্ব শোনে। খুব বেশি আগে নয় যখন আমি বলেছিলাম, “এটা যুদ্ধের যুগ নয়”। সেই কথার গুরুত্ব সারা বিশ্ব বুঝেছে।

বন্ধুগণ,

যখনই বিশ্বের কোন জায়গায় কোন সঙ্কট দেখা দেয়, ভারত প্রথম সেখানে সহায়তা করে। কোভিড-১৯ অতিমারীর সময় আমরা ১৫০টির বেশি দেশে টিকা এবং ওষুধ পাঠিয়েছি। কোন ভূমিকম্প, ঝড় বা গৃহযুদ্ধ – আমরা প্রথম সেখানে সাহায্য নিয়ে গিয়েছি। এটিই আমাদের পূর্বপুরুষদের দেওয়া শিক্ষা এবং মূল্যবোধের প্রতিফলন।

বন্ধুগণ,

ভারত আন্তর্জাতিক মঞ্চে নতুন অনুঘটক হিসেবে উঠে আসছে এবং তার প্রভাব বোঝা যাচ্ছে সব ক্ষেত্রেই। ভারতের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে আন্তর্জাতিক উন্নয়নের গতিতে, আন্তর্জাতিক শান্তির প্রসারে, জলবায়ু সংক্রান্ত ব্যবস্থাপনা এগিয়ে নিয়ে যেতে, বিশ্বে দক্ষতার ফারাক কমাতে, উদ্ভাবন বৃদ্ধি করতে এবং আন্তর্জাতিক সরবরাহ শৃঙ্খলে সুস্থিরতা আনতে।

বন্ধুগণ,

ভারতের জন্য শক্তি এবং সক্ষমতাকে ব্যাখ্যা করা যায় ‘জ্ঞানাইয়োদানায়চরক্ষণায়’, যার মানে জ্ঞান ভাগ করে নেওয়ার জন্য, সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণ করার জন্য এবং শক্তি রক্ষার জন্য। সেজন্য ভারতের অগ্রাধিকার প্রভাব বিস্তার করা নয়, প্রভাব বৃদ্ধি করা। আমরা আগুনের মতো নই যা পুড়িয়ে দেয়। আমরা সূর্য রশ্মির মতো যা আলো জ্বালায়। আমরা বিশ্বে প্রভাব খাটাতে চাই না, চাই তার সমৃদ্ধিতে অবদান রাখতে। সে যোগ-এর প্রসারই হোক, সুপার ফুড মিলেটের পক্ষে সওয়ালই হোক অথবা লাইফ আদর্শ মিশনের নেতৃত্ব দেওয়াই হোক, ভারত অগ্রাধিকার দেয়  জিডিপি-কেন্দ্রিক বৃদ্ধির পাশাপাশি মানব-কেন্দ্রিক বৃদ্ধিতেও। আমি আপনাদের সকলের কাছে আবেদন করছি, যতদূর সম্ভব ‘মিশন লাইফ’-এর প্রসার ঘটান। আমাদের জীবনশৈলীতে সামান্য একটু পরিবর্তন পরিবেশের ওপর গুরুত্বপূর্ণ ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। 

আপনারা শুনে থাকবেন হয়তো এবং আপনাদের মধ্যে কয়েকজন হয়তো ইতিমধ্যে অংশগ্রহণও করেছেন এমন একটি আন্দোলনে যা ভারতে ক্রমশ গতি পাচ্ছে। সারা দেশে মানুষ তাঁদের মায়ের নামে একটি করে গাছ রোপণ করছেন। যদি আপনার মা জীবিত থাকেন, তাহলে তাঁকে নিয়ে একটি গাছ রোপণ করুন। যদি তিনি না থাকেন তাহলে তাঁর স্মৃতিতে একটি গাছ রোপণ করুন, তাঁর ছবি সঙ্গে নিয়ে গাছ রোপণ করুন। এই আন্দোলন ভারতের প্রতিটি কোণে কোণে ঘটছে এবং আমি আপনাদের সবাইকে উৎসাহ দিই, এখানেও এই একইরকম অভিযানের সূচনা করার। এতে শুধুমাত্র যিনি আমাদের জীবন দিয়েছেন সেই মা-কে সম্মান জানানো হবে তাই নয়, আমাদের ধরিত্রী মা-কেও সম্মান জানানো হবে।

বন্ধুগণ,

ভারত এখন বড় স্বপ্ন দেখছে এবং সেই স্বপ্নকে সফল করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এই কয়েকদিন আগে প্যারিস অলিম্পিক শেষ হল। পরবর্তী আয়োজক দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। শীঘ্রই আপনারা ভারতে আয়োজিত অলিম্পিকের সাক্ষী থাকতে পারবেন। আমরা সর্বতো প্রয়াস চালাচ্ছি ২০৩৬-এ অলিম্পিক আয়োজন করার। সে খেলাই হোক, বাণিজ্য অথবা মনোরঞ্জন – ভারত এখন বিশ্বের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। বর্তমানে আইপিএল-এর মতো ভারতীয় লিগ বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় লিগগুলির অন্যতম এবং ভারতের চলচ্চিত্র আন্তর্জাতিক স্তরে তরঙ্গ সৃষ্টি করছে। আন্তর্জাতিক পর্যটনেও ভারত এগিয়ে চলেছে। বিভিন্ন দেশে ভারতীয় উৎসবগুলি উদযাপন করার আগ্রহ বাড়ছে। আমি দেখেছি যে, অনেক শহরেই নবরাত্রির গরবা শিখছেন অনেকেই – যা ভারতের প্রতি তাঁদের ভালোবাসার পরিচায়ক।

বন্ধুগণ,

বর্তমানে প্রত্যেকটি দেশ ভারত সম্পর্কে আরও জানতে চাইছে। আপনাদের আনন্দ হবে এমন কিছু আপনাদের বলতে চাই। এই গতকাল আমেরিকা ভারতকে ৩০০টি প্রাচীন পুঁথি এবং মূর্তি ফিরিয়ে দিল। তাদের কারোর কারোর বয়স ১৫০০ থেকে ২০০০ বছর যা ভারত থেকে এক সময় অপহরণ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে এরকম ৫০০টি শিল্পসামগ্রী ফিরিয়ে দিয়েছে। এটা শুধুমাত্র কিছু জিনিস ফিরিয়ে দেওয়া নয়, এটি হাজার হাজার বছরের মূল্যবান ঐতিহ্যের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য। এটি ভারত এবং আপনাদের সকলের জন্য গর্বের বিষয়। এই সৌজন্যের জন্য আমি মার্কিন সরকারের কাছে গভীরভাবে কৃতজ্ঞ।

বন্ধুগণ,

দিনে দিনে ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে অংশীদারিত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের সহযোগিতা বিশ্বের কল্যাণে। সবক্ষেত্রেই আমরা সহযোগিতা বৃদ্ধি করছি এবং আপনাদের সুবিধাও আমাদের বিবেচনার মধ্যে আছে। গত বছর আমি ঘোষণা করেছিলাম যে আমাদের সরকার সিয়াটলে নতুন বাণিজ্য দূতাবাস খুলবে যা এখন কাজ শুরু করে দিয়েছে। আরও দুটি বাণিজ্য দূতাবাস খোলার ব্যাপারে আমি আপনাদের পরামর্শ চেয়েছিলাম এবং আমি আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে আপনাদের পরামর্শমতো ভারত বস্টন এবং লস অ্যাঞ্জেলেসে আরও দুটি নতুন বাণিজ্য দূতাবাস খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

আমি হাউস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ে তামিল পড়ার জন্য থিরুভাল্লুভার চেয়ার স্থাপনের ঘোষণা করছি আনন্দের সঙ্গে। এতে বিশ্বের কাছে মহান তামিল সন্ন্যাসী থিরুভাল্লুভার-এর দর্শন পৌঁছে দেওয়ায় সহায়ক হবে।

বন্ধুগণ,

আপনাদের এই অনুষ্ঠান সত্যিই মনে রাখার মতো। এখানে যে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হল তা দুর্দান্ত। আমাকে জানানো হয়েছে যে কয়েক হাজার মানুষ এতে অংশ নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন কিন্তু, অনুষ্ঠানস্থলটি অত্যন্ত ছোট হওয়ায় যাঁদের সঙ্গে আমি দেখা করতে পারলাম না, তাঁদের কাছে আমি ক্ষমাপ্রার্থী। পরেরবার আপনাদের সঙ্গে মিলিত হওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকব অন্যকোন জায়গায়, অন্যকোন দিন। তবে, আমি জানি এই উৎসাহ একইরকম থাকবে এবং আপনাদের এই আবেগ কমবে না। আপনারা সকলে সুস্থ ও সমৃদ্ধশীল থাকুন এবং ভারত-মার্কিন বন্ধুত্বকে আরও জোরালো করুন। এই ইচ্ছার সঙ্গে সঙ্গে আমি আপনাদের সকলকে আমার আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।

আমার সঙ্গে বলুন :

ভারত মাতা কি জয়!
ভারত মাতা কি জয়!
ভারত মাতা কি জয়!

অনেক ধন্যবাদ।
প্রধানমন্ত্রী মূল ভাষণটি হিন্দিতে দিয়েছিলেন

 

PG/AP/DM