Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

ভবিষ্যতের লক্ষ্যে ভারতের উচ্চাশামূলক কয়েকটি লক্ষ্যের কথা স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে উল্লেখ করলেন প্রধানমন্ত্রী

ভবিষ্যতের লক্ষ্যে ভারতের উচ্চাশামূলক কয়েকটি লক্ষ্যের কথা স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে উল্লেখ করলেন প্রধানমন্ত্রী


নতুন দিল্লি, ১৫ আগস্ট ২০২৪

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী দেশের ৭৮তম স্বাধীনতা দিবসে ভবিষ্যতের কয়েকটি লক্ষ্যের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন। ভারতের উন্নয়ন ও অগ্রগতি, উদ্ভাবন প্রচেষ্টা এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশ্বের অন্যান্য অগ্রণী দেশের সঙ্গে ভারতকে সমান সারিতে নিয়ে আসার চিন্তাদর্শ থেকে প্রধানমন্ত্রী ভবিষ্যতের এই লক্ষ্যগুলি সকলের সামনে তুলে ধরেছেন। 
আজ ভারতের ৭৮তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে যে মূল বিষয়গুলির দিকে আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে তার মধ্যে রয়েছেন – জীবনযাত্রাকে সহজতর করে তোলা, নালন্দার শিক্ষা ভাবনা ও শক্তির পুনরুজ্জীবন, ভারতে চিপ-সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদনে প্রসার ও ব্যপ্তি, দক্ষ ভারত গঠন, শিল্পোৎপাদনের কেন্দ্র হিসেবে ভারতকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরা, ভারতের নিজস্ব ডিজাইনকে বিশ্বমানের করে তোলা, খেলাধূলার ক্ষেত্রে ভারতকে অগ্রণী একটি দেশ রূপে চিহ্নিত করা, পরিবেশবান্ধব কর্মসংস্থান ও গ্রীন হাইড্রোজেন মিশন, স্বাস্থ্য ভারত মিশন, রাজ্য পর্যায়ে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতামুখিনতা, ভারতীয় মানকে বিশ্বমানে উন্নীত করা, জলবায়ু পরিবর্তন সমস্যার কার্যকর মোকাবিলায় লক্ষ্য স্থির করে দেওয়া, চিকিৎসা শিক্ষার প্রসার এবং তরুণ যুব প্রজন্মকে রাজনীতি মনস্ক করে তোলা। 

এই লক্ষ্যগুলি সম্পর্কে বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী আজ তাঁর ভাষণে জীবনযাত্রাকে আরও সহজ করে তোলার প্রচেষ্টাকে একটি মিশন রূপে গ্রহণ করার জন্য সকলের কাছে আহ্বান জানান। দেশের শহরাঞ্চলে জীবনযাত্রার মানগত উন্নয়নের লক্ষ্যে পরিকাঠামো ও পরিষেবার উন্নয়ন ও প্রসারের ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি। 

সুপ্রাচীন নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ভাবনার শক্তি ও আদর্শকে ফিরিয়ে আনারও আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ভারতকে উচ্চতর শিক্ষা ও গবেষণার একটি পীঠস্থান রূপে গড়ে তোলার মাধ্যমে বিশ্বের কাছে একটি আদর্শ শিক্ষাভূমি রূপে পরিচিত করানো। এবছর নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্বোধন প্রসঙ্গের অবতারণা করে প্রধানমন্ত্রী এই আহ্বান জানান। 

অন্যদিকে, সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদন ক্ষেত্রে ভারতকে বিশ্বে এক নেতৃস্থানীয় অবস্থানে নিয়ে যেতে আগ্রহ প্রকাশ করেন তিনি। সেমিকন্ডাক্টর আমদানির ওপর নির্ভরতা কমিয়ে এনে প্রযুক্তিগত দিক থেকে ভারতকে স্বনির্ভর করে তোলাই যে তাঁর অন্যতম মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য একথাও আজ দৃঢ়তার সঙ্গে ব্যক্ত করেন তিনি। 

এদিনের ভাষণে ২০২৪-এর বাজেট প্রসঙ্গের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের যুবসমাজকে উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দানের মাধ্যমে দেশকে বিশ্বের সামনে দক্ষতা বিকাশের রাজধানী রূপে প্রতিভাত করতে তিনি বিশেষ ভাবে আগ্রহী। 

ভারতকে বিশ্বের একটি উৎপাদন কেন্দ্র রূপে গড়ে তোলারও চিন্তা-ভাবনা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর। এজন্য তিনি দেশের বিশাল সহায়সম্পদ এবং দক্ষ কর্মশক্তির মধ্যে মিলন ও সমন্বয় সাধনের আগ্রহ প্রকাশ করেন। 

ভারতে বর্তমানে অনেক উৎপাদনেরই নতুন নতুন ডিজাইনই উদ্ভাবিত হচ্ছে। এই ভাবে দেশ-বিদেশের বাজারের দিকে লক্ষ্য রেখে উন্নত মানের পণ্য উৎপাদনের ওপর জোর দেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী মোদী আজ তাঁর ভাষণে বলেছেন যে ভারতে খেলাধূলার সাজসরঞ্জাম উৎপাদন ক্ষেত্রে ভারতের সমৃদ্ধ ও সুপ্রাচীন উত্তরাধিকার ও সাহিত্যকে কাজে লাগাতে হবে। কারণ তার মধ্যে এর সমস্ত কিছুরই উল্লেখ রয়েছে। ভারতীয় পেশাদারদের এবিষয়ে বিশ্বের বাজার দখলেরও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর মতে শুধুমাত্র খেলাধূলার জন্যই নয়, বরং নতুন নতুন ক্রীড়া ভাবনার জন্যও তা একান্ত জরুরী। প্রধানমন্ত্রীর মতে ভারতীয় খেলাধূলা সম্পর্কে সারা বিশ্বে আরও বেশি করে অগ্রহ জাগিয়ে তুলতে হবে। 

জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলায় ভারতের কর্ম প্রচেষ্টাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে পরিবেশবান্ধব কর্মসংস্থানের ওপরও জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, ভারতের মূল লক্ষ্য হল এখন পরিবেশবান্ধব সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি নিশ্চিত করার পাশাপাশি দূষণ মুক্ত পরিবেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা। তা একদিকে যেমন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির ক্ষেত্রে সহায়ক হবে, অন্যদিকে তেমনি পরিবেশ সুরক্ষার কাজেও উপকারে আসবে। 

এদিন, গ্রীন হাইড্রোজেন উৎপাদন ক্ষেত্রে বিশ্বের সামনে ভারতকে এক অগ্রণী স্থানে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে ভারতের অঙ্গীকারবদ্ধতার কথাও ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, পরিবেশ সংরক্ষণ এবং পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানি প্রচেষ্টার ক্ষেত্রে নিরন্তর কর্মসংস্থান এই মুহূর্তে উন্নয়নের একটি পূর্ব শর্ত হয়ে উঠতে পারে। 

আগামী ২০২৪ সালের মধ্যে ‘বিকশিত ভারত’-এর স্বপ্নকে সফল করে তুলতে আগ্রহী প্রধানমন্ত্রী। আজ তাই তাঁর ভাষণে শ্রী মোদী বলেন যে ‘সুস্থ ভারত’-এর চিন্তাদর্শের পথ আমাদের অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে। কারণ, রাষ্ট্রীয় পুষ্টি অভিযানের মধ্য দিয়ে ইতিমধ্যেই তার সূচনা হয়েছে। 

বিনিয়োগ আকর্ষণের লক্ষ্যে  সুস্পষ্ট লক্ষ্য স্থির করার জন্য রাজ্য সরকারগুলিকে আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এজন্য রাজ্যগুলির আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি তথা উন্নত প্রশাসনিক ব্যবস্থার ওপর বিনিয়োগকারীদের আস্থা ও বিশ্বাস গড়ে তুলতে রাজ্যগুলিকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি। 

শ্রী মোদী বলেন, ভারতীয় মানকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে আমাদের অবশ্যই অঙ্গীকার পালন করতে হবে। কারণ, এই বিষয়টিতে আমরা বরাবরই বিশেষ জোর দিয়ে আসছি। 

আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে ৫০০ গিগাওয়াট পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনের লক্ষ্য পূরণে ভারত একটি উচ্চাকাঙ্খী দেশ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। ভারত হল জি২০ ভুক্ত রাষ্ট্রগুলির মধ্যে একমাত্র দেশ যা প্যারিস চুক্তির লক্ষ্য পূরণে সাফল্য দেখিয়েছে। 

আগামী ৫ বছরে দেশে ৭৫,০০০ নতুন চিকিৎসা শিক্ষার আসন যুক্ত করার কথা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, ভারতে চিকিৎসা শিক্ষার সুযোগকে আরও সম্প্রসারিত করে তোলার ক্ষেত্রে তা এক বিশেষ অনুঘটকের কাজ করবে। শুধু তাই নয়, চিকিৎসকদের উত্তরোত্তও চাহিদা বৃদ্ধির বিষয়টি সামনে রেখে এই আসন বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। 

ভারতীয় রাজনীতিতে এক লক্ষ যুবককে যুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। যে সমস্ত পরিবার থেকে এতদিন পর্যন্ত কোন রাজনৈতিক কর্মী বা নেতা গড়ে ওঠেনি, সেই পরিবারগুলির যুবকদের রাজনীতি মনস্ক করে তোলার ডাক দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন যে বর্ণবিদ্বেষ ও সংকীর্ণতা দূর করতে এবং দেশের রাজনৈতিক আঙিনায় নতুন নতুন মুখ নিয়ে আসতে এই প্রচেষ্টা বিশেষ ভাবে কাজে আসবে। 

PG/SKD/AS