Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

মুম্বইয়ে আরবিআই-এর ৯০ বর্ষপূর্তির সূচনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ


নতুন দিল্লি, ০১ এপ্রিল, ২০২৪

 

মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল শ্রী রমেশ ব্যাস জি, মুখ্যমন্ত্রী শ্রী একনাথ শিন্ডে জি, আমার মন্ত্রিসভার সহকর্মী শ্রীমতী নির্মলা সীতারমন জি, ভগবৎ কারাড় জি ও পঙ্কজ চৌধারী জি, মহারাষ্ট্রের উপ মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র (ফড়নবীশ) জি ও অজিত (পাওয়ার) জি, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের আধিকারিকগণ, অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, ভদ্রমহোদয় ও ভদ্রমহোদয়াগণ,

ভারতের রিজার্ভ ব্যাঙ্ক আজ এক ঐতিহাসিক মাইলফলকে পৌঁছেছে। আরবিআই-এর ৯০ বছর পূর্ণ হয়েছে। একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে আরবিআই প্রাক-স্বাধীনতা এবং স্বাধীনতা পরবর্তী পর্ব, দুটিরই সাক্ষী থেকেছে। পেশাদারিত্ব এবং দায়বদ্ধতার দিক থেকে আরবিআই-এর স্বীকৃতি আজ বিশ্বজুড়ে। আমি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সমস্ত কর্মী এবং আধিকারিকদের অভিনন্দন জানাই। 

আমি মনে করি, এই সময়ে যাঁরা আরবিআই-এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন, তাঁরা অত্যন্ত ভাগ্যবান। আপনারা আজ যে নীতি প্রণয়ন করছেন, যে কাজ আপনারা করছেন, তা আগামী দশকের জন্য আরবিআই-এর দিকনির্দেশিকা নির্ধারণ করবে। সেইসঙ্গে এই দশক ‘বিকশিত ভারত’-এর ‘সংকল্প যাত্রা’র পক্ষে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বন্ধুগণ, 

আপনারা নিজেদের কাজের ক্ষেত্রে অত্যন্ত দক্ষ। দেশের অর্থনীতি এবং জিডিপি, আর্থিক সমন্বয় ও আর্থিক নীতির উপর নির্ভর করে। আমার মনে পড়ছে, ২০১৪ সলে আমি যখন আরবিআই-এর ৮০ তম বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলাম, তখন পরিস্থিতি একেবারে অন্যরকম ছিল। গোটা ভারতের ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্র নানা সমস্যা ও চ্যালেঞ্জের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল। ভারতের ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা এবং এর ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছিল। অবস্থা এতই শোচনীয় ছিল যে, দেশের আর্থিক অগ্রগতিতে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি উল্লেখযোগ্য কোনো ভূমিকা নিতে পারছিল না। আমরা সেখান থেকেই শুরু করেছিলাম। আজ ভারতের ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা বিশ্বের একটি শক্তিশালী ব্যবস্থা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা এখন লাভের ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে এবং ঋণদানের ক্ষেত্রে রেকর্ড গড়েছে। 

বন্ধুগণ, 

১০ বছরে এই গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন খুব একটা সহজ ছিল না। এটি সম্ভব হয়েছে আমাদের দৃঢ়তা এবং সৎ প্রয়াসের জন্য। আজ দেশের মানুষ দেখতে পারছেন, আমরা সঠিক নীতি নিয়েই এগোচ্ছি। নীতি ঠিক থাকলে, সঠিক ফলও মেলে।

আমরা চেষ্টার কোনো ত্রুটি রাখিনি। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির অবস্থার উন্নয়নে আমরা প্রায় ৩.৫ লক্ষ কোটি টাকা মূলধন বিনিয়োগ করেছি এবং বেশ কিছু সংস্কারের পথে হেঁটেছি। ২০১৮ সালে ব্যাঙ্কগুলির এনপিএ-র পরিমাণ ছিল ১১ শতাংশ, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যে তা ৩ শতাংশের নীচে নেমে এসেছে। 

বন্ধুগণ, 

গত ১০ বছরে আমরা কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক, ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা এবং তৃণমূল স্তরের মানুষের মধ্যে এক নিবিড় যোগসূত্র গড়ে তুলেছি। গরিব মানুষের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি একটি উল্লেখযোগ্য নজির হয়ে রয়েছে। দেশে এখন ৫২ কোটি জনধন অ্যাকাউন্ট রয়েছে, যার মধ্যে ৫৫ শতাংশের বেশি মহিলাদের। কৃষি এবং মৎস্যের মতো ক্ষেত্রেও একই ধরনের আর্থিক অন্তর্ভুক্তির প্রভাব লক্ষ্য করা গেছে। 

আজ ৭ কোটির বেশি কৃষক, মৎস্যজীবী এবং গবাদি পশুর মালিকদের কৃষক ক্রেডিট কার্ড রয়েছে। এটি আমাদের গ্রামীণ অর্থনীতিতে গতি এনেছে। গত ১০ বছরে সমবায় ক্ষেত্রেও গতি এসেছে। ইউনিফায়েড পেমেন্ট ইন্টারফেস (ইউপিআই) এখন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠেছে। এখন আমরা সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক ডিজিটাল কারেন্সি (সিবিডিসি)-র উপর কাজ করছি। এক দশকের মধ্যে আমরা এক নতুন ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা, এক নতুন অর্থনীতি এবং এক নতুন মুদ্রা ব্যবস্থায় পৌঁছে গিয়েছি। এখনও অনেক কাজ বাকি রয়েছে, দেশকে আমাদের আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।

বন্ধুগণ,

আগামী ১০ বছরের জন্য আমরা সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য চিহ্নিত করেছি, যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থার সম্ভাবনাকে ছড়িয়ে দিতে আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে। ডিজিটাল পেমেন্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচার (ডিপিআই)-এর ক্ষেত্রে ভারতকে বিশ্বের নেতৃত্বের আসনে বসাতে হলে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উপর আমাদের ধারাবাহিকভাবে কাজ করে যেতে হবে। আগামী দিনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কী কী প্রয়োজন রয়েছে, তা আরবিআই-কে আগাম বুঝতে হবে এবং সেই প্রয়োজন অনুযায়ী, সক্রিয় পদক্ষেপ নিতে হবে। করোনা সঙ্কটের সময়ে আমরা সাধারণ মানুষের জীবনকে অগ্রাধিকার দিয়েছিলাম। সেই কারণে ভারতের দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত শ্রেণী এখন আর্থিক অগ্রগতির চালিকাশক্তি হয়ে উঠেছে। আরবিআই আন্তর্জাতিক স্তরে ভারতের সাফল্যকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। 

বন্ধুগণ, 

আগামী ১০ বছরের জন্য লক্ষ্যমাত্রা স্থির করার ক্ষেত্রে আমাদের অবশ্যই ভারতের তরুণদের আশা-আকাঙ্ক্ষার দিকে নজর দিতে হবে। ভারত এখন বিশ্বের অন্যতম তরুণ প্রজন্মের দেশ। গত ১০ বছরে সরকারি নীতির ফলে নতুন নতুন ক্ষেত্র উঠে এসেছে, দেশের তরুণদের জন্য নতুন নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে। সরকার এখন সৌর শক্তি এবং গ্রিন হাইড্রোজেনের মতো ক্ষেত্রের উপর জোর দিচ্ছে। ডিজিটাল প্রযুক্তির ক্ষেত্রে ভারত এখন গুরুত্বপূর্ণ দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। এখন আমরা ৫জি প্রযুক্তির উপর কাজ করছি। 

ভারতীয় অর্থনীতি এবং উৎপাদন ক্ষেত্রের মেরুদণ্ড হল এমএসএমই। কোভিড অতিমারির সময়ে এমএসএমই-গুলির জন্য ক্রেডিট গ্যারন্টি প্রকল্প চালু করা হয়েছিল, যা এই ক্ষেত্রকে মজবুত করেছে। 

বন্ধুগণ, 

একুশ শতকে উদ্ভাবন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে সরকার রেকর্ড পরিমাণ বিনিয়োগ করেছে। সাম্প্রতিক অন্তর্বর্তী বাজেটে গবেষণা খাতে ১ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। একইভাবে মহাকাশ ক্ষেত্রেও নতুন নতুন স্টার্টআপ গড়ে উঠছে। তাদের কী ধরনের ঋণ সহায়তার প্রয়োজন রয়েছে, তা আমাদের দেখতে হবে। আরেকটি ক্ষেত্র দ্রুত উঠে আসছে, তা হলো পর্যটন ক্ষেত্র। এখন গোটা বিশ্ব ভারতে আসতে চায়, ভারতকে দেখতে চায় এবং ভারতকে বুঝতে চায়। পর্যটক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগামী দিনে অযোধ্যা ধর্মীয় পর্যটনের ক্ষেত্রে বিশ্বের বৃহত্তম রাজধানী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে। যেহেতু নতুন নতুন ক্ষেত্র উঠে আসছে, তাই আমাদের বিশেষজ্ঞ তৈরির উপর জোর দিতে হবে।

আগামী ১০০ দিন আমি নির্বাচনী কাজে ব্যস্ত থাকবো। তাই আপনাদের সামনে ভাবনাচিন্তা করার অফুরন্ত সময় রয়েছে। কারণ, ভবিষ্যতে প্রচুর কাজ করতে হবে। আজ ভারত বিশ্বের অগ্রগতির ইঞ্জিন হয়ে উঠেছে। বর্তমানে বিশ্বের জিডিপি-র হারে ১৫ শতাংশ অংশীদার রয়েছে ভারতের।

২০৪৭ সালের মধ্যে ‘বিকশিত ভারত’ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে আপনাদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।

আমি আবার আপনাদের সবাইকে শুভেচ্ছা জানাই।

ধন্যবাদ! 

 

PG/MP/SKD