Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

কেরালার কোচিতে ৪ হাজার কোটি টাকার বেশি মূল্যের পরিকাঠামো প্রকল্প জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেছেন প্রধানমন্ত্রী

কেরালার কোচিতে ৪ হাজার কোটি টাকার বেশি মূল্যের পরিকাঠামো প্রকল্প জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেছেন প্রধানমন্ত্রী


নয়াদিল্লি, ১৭ জানুয়ারি, ২০২৪

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ কেরালার কোচিতে ৪ হাজার কোটি টাকার বেশি মূল্যের পরিকাঠামো প্রকল্প জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে – কোচিন শিপইয়ার্ড লিমিটেডের নিউ ড্রাই ডক (এনডিডি), সিএসএল-এর আন্তর্জাতিক জাহাজ মেরামতি সুবিধা (আইএসআরএফ) এবং ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন লিমিটেডের এলপিজি আমদানি কেন্দ্র। ভারতের বন্দর, জাহাজ ও অন্তর্দেশীয় জলপথ ক্ষেত্রকে উন্নত করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর যে স্বপ্ন, তা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে এই পরিকাঠামো প্রকল্পগুলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী আজ সকালে মন্দিরে ভগবান গুরুভাইয়ুরাপ্পান দর্শনের কথা উল্লেখ করেন। তিনি রামায়ণের সঙ্গে জড়িত কেরালার মন্দিরগুলির কথাও স্মরণ করেন। সম্প্রতি অযোধ্যা ধামে মহর্ষি বাল্মিকী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর উদ্বোধনের প্রসঙ্গটিও তাঁর ভাষণে তুলে ধরেন। অযোধ্যা ধামে প্রাণ প্রতিষ্ঠার মাত্র কয়েকদিন আগে রামস্বামী মন্দিরে পূজা ও দর্শন করতে পারার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেরালার শিল্পীদের অভূতপূর্ব প্রদর্শন তাঁকে আজ সকালে মুগ্ধ করেছে এবং কেরালাতেই অবোধ পুরীর অনুভূতি দিয়েছে। 

অমৃতকালে ‘বিকশিত ভারত’ হিসেবে ভারতকে গড়ে তোলার যাত্রাপথে প্রতিটি রাজ্যের ভূমিকার ওপর গুরুত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি দেশের বন্দরগুলির গুরুত্বের কথা তুলে ধরেন। বর্তমানে ভারত আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের অন্যতম মূল কেন্দ্র হয়ে উঠছে। সরকার দেশের বন্দরগুলির মানোন্নয়নে বিশেষ দৃষ্টি দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বন্দরের পরিকাঠামো উন্নয়ন এবং ‘সাগরমালা’ প্রকল্পের আওতায় বন্দরগুলির সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির মাধ্যমে বন্দরের ক্ষমতা বৃদ্ধি ও বিনিয়োগ আহ্বানের প্রসঙ্গটিও তুলে ধরেন। 

শ্রী মোদী আজ কোচি দেশের বৃহত্তম ড্রাই ডক হিসেবে যে তকমা পেয়েছে সেকথাও উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী কেরালায় এবং দেশের দক্ষিণাঞ্চলে এলপিজি রপ্তানি কেন্দ্র ও জাহাজ মেরামতি কেন্দ্র গড়ে তোলার প্রসঙ্গও উত্থাপন করেন। কোচি শিপইয়ার্ডের সঙ্গে একযোগে ‘ভারতে তৈরি’ বিমানবাহী আইএনএস বিক্রান্ত তৈরির বিষয়টিও উল্লেখ করেন। নতুন সুবিধাগুলি শিপইয়ার্ড ক্ষেত্রের ক্ষমতা কয়েকগুণ বাড়াতে সহায়ক হবে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বিগত ১০ বছরে বন্দর, জাহাজ চলাচল এবং অন্তর্দেশীয় জলপথ ক্ষেত্রে যে সংস্কার হয়েছে সে প্রসঙ্গ উল্লেখ করে ভারতের বন্দরগুলিতে নতুন বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির কথাও তুলে ধরেন করেন। তিনি বলেন, শাসন ব্যবস্থায় সংস্কার দেশে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে। অন্তর্দেশীয় জলপথের মাধ্যমে পণ্য পরিবহণ বর্তমানে ব্যাপক মাত্রায় উজ্জীবিত হয়েছে।

“সবকা প্রয়াস আরও উন্নত ফলাফল দেবে”। অর্থাৎ, সকলের প্রচেষ্টায় ভালো ফল পাওয়া যাবে বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, বিগত ১০ বছরে ভারতের বন্দরগুলি বার্ষিক দুই সংখ্যার হারে উন্নতি অর্জন করতে পেরেছে। “বর্তমানে পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়েছে” বলে উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, ভারত জাহাজ চলাচল ক্ষেত্রে বহু দেশকে পেছনে ফেলে দিয়েছে। 

“আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ক্ষেত্রে সমগ্র বিশ্ব এখন ভারতকে বিশেষ মর্যাদা দেয়” বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ভারতের সভাপতিত্বে জি-২০ চলাকালীন মধ্য-পূর্ব ইউরোপের অর্থনৈতিক পরিসরের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। ভারতের উপকূল অর্থনীতি বর্তমানে বিশেষভাবে উজ্জীবিত হচ্ছে এবং তা ‘বিকশিত ভারত’ গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। মেগা বন্দর, জাহাজ নির্মাণ ব্যবস্থাপনা ও জাহাজ মেরামতির পরিকাঠামো দেশে আরও উন্নত করার বিষয়ে সরকারি প্রচেষ্টার কথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

শ্রী মোদী বলেন, নতুন ড্রাই ডক দেশের গর্ব। এই ডকের মাধ্যমে কেবলমাত্র বড় ভেসেলগুলি নোঙরে থেকে রক্ষণাবেক্ষণের সুযোগ পাবে। কমবে বিদেশের প্রতি নির্ভরতা, সাশ্রয় হবে বিদেশি লেনদেনের ক্ষেত্রে।

আন্তর্জাতিক জাহাজ মেরামতি সুবিধাটি উদ্বোধনের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই ব্যবস্থাপনা কোচিকে ভারতের এবং এশিয়ার বৃহত্তম জাহাজ মেরামতির কেন্দ্র হিসেবে রূপান্তরিত করবে। বহু এমএসএমই আইএনএস বিক্রান্তের নির্মাণ কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিল, একথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই এমএসএমই-গুলির মাধ্যমে দেশে জাহাজ মেরামতির ক্ষেত্রটি আরও মজবুত হবে। তিনি আরও বলেন, নতুন এলপিজি আমদানি টার্মিনাল কোচি, কোয়েম্বাটোর, সালেম, কালিকুট, মাদুরাই এবং ত্রিচিতে এলপিজি-র চাহিদা পূরণে সহায়ক হবে। পাশাপাশি, এই অঞ্চলের শিল্পক্ষেত্রগুলিকে সহায়তা করবে। অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটবে, তৈরি হবে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোচি শিপইয়ার্ডের পরিবেশ-বান্ধব প্রযুক্তি ‘ভারতে তৈরি’ ভেসেলের ক্ষেত্রে বিশেষ সহায়ক হবে। কোচি জল মেট্রোর জন্য যে বৈদ্যুতিন ভেসেল তৈরি হচ্ছে, তিনি তার প্রশংসাও করেন। অযোধ্যা, বারাণসী, মথুরা এবং গুয়াহাটির জন্য বৈদ্যুতিন যাত্রীবাহী নৌকোগুলিও এখানে তৈরি হচ্ছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “কোচি শিপইয়ার্ড আধুনিক পরিবেশ-বান্ধব জলপথ যোগাযোগ ব্যবস্থাপনায় দেশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।” নরওয়ের জন্য বৈদ্যুতিন পণ্য ফেরী তৈরির প্রসঙ্গটিও উত্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “কোচি শিপইয়ার্ড হাইড্রোজেন জ্বালানি-ভিত্তিক পরিবহণে ভারতের প্রতিশ্রুতিবদ্ধতার অন্যতম পরিচায়ক। ভারত হাইড্রোজেন জ্বালানির মাধ্যমে ফেরি চলাচল শীঘ্রই শুরু করবে বলে আমি আশাবাদী।”

প্রধানমন্ত্রী দেশের নীল অর্থনীতি এবং বন্দর নেতৃত্বাধীন উন্নয়নে মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের ভূমিকার কথাও তুলে ধরেন। বিগত ১০ বছরে ‘প্রধানমন্ত্রী মৎস্য সম্পদ যোজনা’র আওতায় নতুন পরিকাঠামো প্রকল্পের মাধ্যমে মৎস্যোৎপাদন ও রপ্তানির পরিমাণ বেড়েছে। মৎস্যজীবীদের কিষাণ ক্রেডিট কার্ড প্রদানের মাধ্যমে এবং আধুনিক নৌকো প্রদান করার ফলে তাঁরা গভীর সমুদ্রে গিয়ে মাছ ধরতে পারছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমুদ্রজাত খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ক্ষেত্রে ভারতের ভূমিকা ক্রমশ অর্থবহ হয়ে উঠছে। এর ফলে মৎস্যজীবীদের আয় বাড়ছে, সহজ হচ্ছে তাঁদের জীবনযাত্রা। প্রধানমন্ত্রী কেরালার দ্রুত উন্নয়ন অব্যাহত রাখার কামনা করেন এবং নতুন পরিকাঠামো প্রকল্পগুলির জন্য এখানকার জনগণকে অভিনন্দন জানিয়ে তাঁর বক্তব্য শেষ করেন।

কেরালার রাজ্যপাল শ্রী আরিফ মহম্মদ খান, মুখ্যমন্ত্রী শ্রী পিনারাই বিজয়ন, কেন্দ্রীয় জাহাজ চলাচল, বন্দর ও জলপথ বিষয়ক মন্ত্রী শ্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

PG/PM/DM/