Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

উত্তর প্রদেশের বারাণসীতে স্বর্বেদ মহামন্দিরের উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রীর

উত্তর প্রদেশের বারাণসীতে স্বর্বেদ মহামন্দিরের উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রীর


নয়াদিল্লি, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৩

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ উত্তর প্রদেশের বারাণসীতে উমরাহাতে স্বর্বেদ মহামন্দিরের উদ্বোধন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী মহর্ষি সদাফল দেবজী মহারাজের মূর্তিতে শ্রদ্ধা জানান ও মন্দির চত্বর প্রদক্ষিণ করেন।

 

সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ তাঁর কাশী সফরের দ্বিতীয় দিন এবং কাশীতে কাটানো প্রতিটি মুহূর্ত তাঁর কাছে অবিশ্বাস্য অনুভূতি নিয়ে এসেছে। দু’বছর আগে অখিল ভারতীয় বিহঙ্গম যোগ সংস্থানের বার্ষিক উৎসবে সফরের কথা স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি এ বছরের শতবর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পেরে আনন্দ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, বিহঙ্গম যোগ সাধনা শতবর্ষ পুরনো ঐতিহাসিক সফরের কথা মনে করায়। মহর্ষি সদাফল দেবজী যোগ সাধনার কথা স্মরণ করেন। তিনি বলেন, লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনযাত্রার পরিবর্তনে বিগত শতকে যোগের ভূমিকা ছিল বিশেষ। পবিত্র এই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ২৫ হাজার কুন্ডিয়া স্বর্বেদ জ্ঞান মহায়াজনার সংস্থার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, মহায়াজনার প্রতি পূজার্চনা বিকশিত ভারতের সংকল্পকে মজবুত করবে। মহর্ষি সদাফল দেবজীকে প্রণাম জানান তিনি। পাশাপাশি, তাঁর চিন্তাভাবনাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে যাঁরা সাহায্য করেছেন, সেইসব সাধু-সন্তদের প্রতিও শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার সমাজ ও সন্ত সমাজের যৌথ প্রচেষ্টায় কাশীর পরিবর্তন হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বর্বেদ মহামন্দির এই যৌথ প্রয়াসের এক উদাহরণ। এই মন্দির বিশালত্ব ও ঈশ্বরবাদের অনন্য উদাহরণ। শ্রী মোদী বলেন, “স্বর্বেদ মন্দির ভারতের সামাজিক ও আধ্যাত্মিক ক্ষমতার আধুনিক প্রতীক”। তিনি আরও বলেন, এই মন্দিরের ধর্মীয় বিশালতা ও সৌন্দর্য্য উল্লেখযোগ্য। এটিকে তিনি ‘যোগ ও জ্ঞান তীর্থ’ বলে অভিহিত করেন।

 

ভারতের অর্থনৈতিক ও ধার্মিক ঐতিহ্যের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত সর্বদাই ভৌগোলিক সম্প্রসারণের জন্য বস্তুগত উন্নয়নকে গুরুত্ব দেয়নি। তিনি বলেন, “আমরা সর্বদাই বস্তুগত উন্নয়নকে ধর্মীয় ও মানবতার প্রতীক বলে মনে করি। এই প্রসঙ্গে তিনি ভাইব্রেন্ট কাশী, কোনার্ক মন্দির, সারনাথ ও গয়াস্তুপ এবং নালন্দা ও তক্ষশীলার মতো বিশ্ববিদ্যালয়গুলির কথা উল্লেখ করেন”। তিনি বলেন, “ভারতের স্থাপত্যকে এই ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলির নির্মাণ এক বিশেষ উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে।

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদেশি শক্তি বারবার ভারতের আস্থার উপর আঘাত হেনেছে। স্বাধীনতার পর আমাদের ঘুরে দাঁড়ানোর প্রয়োজন হয়ে ওঠে। নিজের ঐতিহ্যের প্রতি গর্ব অনুভব না করার এক প্রচেষ্টা দেখা দিয়েছিল। তবে, বর্তমানে তা থেকে মুক্ত হয়ে দেশের একতা ও সম্প্রীতি আরও মজবুত করা সম্ভব হয়েছে। এই প্রসঙ্গে তিনি স্বাধীনতার পর দশকের পর দশক অবহেলিত হয়ে থাকা সোমনাথ মন্দিরের উদাহরণ দেন। শ্রী মোদী বলেন, “বর্তমানে পুনরায় সময়ের চাকা ঘুরছে। দাসত্বের মানসিকতা থেকে মুক্ত হয়ে নিজের ঐতিহ্যের প্রতি গর্ব অনুভব করি আমরা”। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সোমনাথের যে কাজ শুরু হয়েছিল, বর্তমানে তা সম্পূর্ণ রূপে এক প্রচারাভিযানে পরিণত হয়েছে এবং এ প্রসঙ্গে তিনি কাশী বিশ্বনাথ মন্দির, মহাকাল মহালোক, কেদারনাথ ধাম এবং বুদ্ধ সার্কিটের উদাহরণ দেন। প্রধানমন্ত্রী রাম সার্কিটের চলতি কাজের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, অযোধ্যায় শীঘ্রই রামমন্দিরের উদ্বোধন হবে।

 

প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, এক সামগ্রিক উন্নয়ন তখনই সম্ভব, যখন দেশ সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিচয়কে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে চলে। তিনি বলেন, “বর্তমানে আমার তীর্থ ক্ষেত্রগুলির সজীবতা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং দেশে আধুনিক স্থাপত্যের নতুন অভিলেখ সৃষ্টি হয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি কাশীর উদাহরণ দিয়ে বলেন, বিগত সপ্তাহে সংস্কারের পর বিশ্বনাথ ধাম দু’বছর পূর্ণ করেছে। শ্রী মোদী বলেন, “বর্তমানে বারাণসীর অর্থ হ’ল – উন্নয়ন, আধুনিক সুযোগ-সুবিধার সঙ্গে বিশ্বাস ও স্বচ্ছতা এবং পরিবর্তন”। উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৪ – ৬ লেনবিশিষ্ট সড়ক, রিং রোড, রেল স্টেশনের সম্প্রসারণ, সংস্কার এবং নির্মাণ, গঙ্গাঘাট, গঙ্গা ক্রুজ, আধুনিক চিকিৎসালয়, নতুন ও আধুনিক দুগ্ধ উৎপাদন কেন্দ্র, প্রাকৃতিক কৃষি কাজ-সমূহ উন্নয়নে নতুন জোয়ার এনেছে। যুবক-যুবতীদের জন্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের সংস্কার ও রোজগার মেলার মাধ্যমে চাকরি প্রদানের প্রসঙ্গটিও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

 

আধ্যাত্মিক যাত্রার সঙ্গে আধুনিক উন্নয়নের ভূমিকার বিষয়ে আলোকপাত করে প্রধানমন্ত্রী বারাণসী শহরের বাইরে অবস্থিত স্বর্বেদ মন্দিরের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের কথাও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এই কেন্দ্র খুব শীঘ্রই বেনারসে আসা ভক্তদের জন্য অন্যতম এক কেন্দ্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে। এর ফলে, এর আশেপাশে থাকা গ্রামগুলির ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে এবং কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে।

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বিহঙ্গম যোগ সংস্থা আধ্যাত্মিক কল্যাণের পাশাপাশি, সমাজ সেবার কাজেও নিয়োজিত”। তিনি বলেন, মহর্ষী সদাফল দেবজী একজন যোগভক্ত সন্তের পাশাপাশি, স্বাধীনতা সংগ্রামীও ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী স্বাধীনতার অমৃতকালে নিজের সংকল্পগুলিকে এগিয়ে যাওয়ার উপর গুরুত্ব দেন। প্রধানমন্ত্রী ৯টি সংকল্পের উত্থাপন করে সেগুলি মেনে চলার আহ্বান জানান। প্রথমটি হ’ল – জল সংরক্ষণের প্রতি আরও সজাগ হওয়া, দ্বিতীয়টি হ’ল – ডিজিটাল লেনদেনের বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো, তৃতীয়ত – গ্রাম ও স্থানীয় শহরগুলিতে স্বচ্ছতা বাড়ানো, চতুর্থত – ভারতে নির্মিত সামগ্রীর প্রচার ও ব্যবহার, পঞ্চমত – ভারত ভ্রমণ ও অন্বেষণ, ষষ্ঠ – কৃষকদের মধ্যে প্রাকৃতিক কৃষির বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো, সপ্তমত – দৈনন্দিন জীবনে বাজরা বা শ্রী অন্নের ব্যবহার বৃদ্ধি, অষ্টমত – ক্রীড়া, ফিটনেস ও যোগাসনকে জীবনের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ করে তোলা এবং নবম তথা শেষ সংকল্পটি হ’ল – অন্তত একটি দরিদ্র পরিবারকে সাহায্য করা।

 

প্রধানমন্ত্রী গতকাল সন্ধ্যায় ও আজ বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রায় তাঁর অংশগ্রহণের প্রসঙ্গের কথা উল্লেখ করে প্রত্যেক ধর্মগুরুকেই এই সংকল্প যাত্রা  সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর আহ্বান জানান। শেষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এটি হওয়া উচিৎ আমাদের সকলের ব্যক্তিগত সংকল্প”।

 

উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী যোগী আদিত্যনাথ, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্রনাথ পান্ডে, সদ্গুরু আচার্য শ্রী স্বতন্ত্র্য দেওজী মহারাজ এবং সন্ত প্রবর শ্রী বিজ্ঞানদেওজী মহারাজ এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

 

 

PG/PM/SB