নয়াদিল্লি, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৩
আমার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সহকর্মীবৃন্দ,
মাননীয় অশ্বিনী বৈষ্ণবজী, রাজীব চন্দ্রশেখরজী, জিপিএআই – এর বিদায়ী অধ্যক্ষ, জাপানের মাননীয় মন্ত্রী হিরোশি ইয়োশিদাজী, অন্যান্য সদস্য দেশগুলির মন্ত্রীগণ, অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, ভদ্রমহিলা ও ভদ্রমহোদয়গণ।
জিপিএআই বা গ্লোবাল পার্টনারশিপ অন আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স – এর এই শীর্ষ সম্মেলনে আমি আপনাদের সকলকে স্বাগত জানাই। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে, আগামী বছর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বের এই শীর্ষ সম্মেলনের অধ্যক্ষতা করবে ভারত। এই শীর্ষ সম্মেলনটি এমন একটি সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন গোটা বিশ্বে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে একটি বড় বিতর্ক শুরু হয়েছে। এই বিতর্কের ফলে ইতিবাচক ও নেতিবাচক সব ধরণের পক্ষ সামনে উঠে আসছে। সেজন্য এই শীর্ষ সম্মেলনের সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেক দেশের অনেক বড় দায়িত্ব রয়েছে। বিগত দিনগুলিতে আমার অনেক রাজনৈতিক এবং শিল্প গোষ্ঠীর নেতাদের সঙ্গে মিলিত হওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে। তাঁদের সঙ্গেও আমার এই শীর্ষ সম্মেলন সম্পর্কে আলাপ-আলোচনা হয়েছে। বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে এড়িয়ে চলতে পারবে না। আমাদের অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে সাবধানে এগিয়ে যেতে হবে। আর সেজন্য আমি মনে করি যে, এই শীর্ষ সম্মেলন থেকে যে ভাবনাগুলি উঠে আসবে, যে পরামর্শগুলি আমরা পাবো –সেগুলি সমগ্র মানবতার মৌলিক মূল্যবোধগুলির রক্ষা এবং নতুন নতুন দিশা প্রদানের কাজ করবে।
বন্ধুগণ,
আজ ভারত বিভিন্ন ‘এআই ট্যালেন্ট’ বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সংক্রান্ত বিভিন্ন ভাবনার সবচেয়ে বড় ব্যবহারকারী। ভারতের নবীন প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা, গবেষকরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সীমাকে নতুনভাবে উদ্ভাবন করছে। ভারতে আমরা একটি অত্যন্ত উদ্দীপনাসম্পন্ন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা উদ্ভাবনের উৎসাহ দেখতে পাচ্ছি। এখানে আসার আগে আমার ‘এআই এক্সপো’তে যাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে। এই এক্সপো গেলে আপনারা দেখতে পাবেন কিভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মানুষের জীবনকে বদলে দিতে পারে। ‘যুবা এআই ইনিশিয়েটিভ’ – এর মাধ্যমে নির্বাচিত যুবকদের ভাবনার সীমা দেখে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। এটাই স্বাভাবিক। এই যুবক-যুবতীরা প্রযুক্তির মাধ্যমে নানা সামাজিক পরিবর্তনের চেষ্টা করছে। ভারতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে নানা সমস্যার সমাধান নিয়ে এখন গ্রামে গ্রামে আলোচনা চলছে। সম্প্রতি আমি কৃষি ক্ষেত্রে ‘এআই চ্যাট-বট’ -এর উদ্বোধন করেছি। এর মাধ্যমে কৃষকরা তাঁদের আবেদনের স্ট্যাটাস এবং লেনদেনের বিস্তারিত বিবরণ সহ বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত সমস্ত ‘আপডেট’ জানতে পারবেন। আমরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে ভারতে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রটিকে সম্পূর্ণ রূপান্তরণের লক্ষ্যে কাজ করে চলেছি। বিভিন্ন সুদূরপ্রসারী উন্নয়নের লক্ষ্য পূরণের ক্ষেত্রেও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
বন্ধুগণ,
ভারতে আমাদের উন্নয়নের মন্ত্র হ’ল ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’। আমরা ‘সকলের জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা’ – এই ভাবনা থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে সরকারের নানা নীতি ও প্রকল্প প্রস্তুত করছি। বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়ন এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক বৃদ্ধির জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার নানা ক্ষমতার সম্পূর্ণ সাহায্য নেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি। ভারত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দায়িত্বসম্পন্ন এবং নীতিসঙ্গত ব্যবহারের জন্য সম্পূর্ণ রূপে দায়বদ্ধ। আমরা ‘ন্যাশনাল প্রোগ্রাম অন আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স’ চালু করেছি। আমরা ভারতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অভিযানও শুরু করতে চলেছি। এই অভিযানের লক্ষ্য – ভারতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সঞ্জাত শক্তির পর্যাপ্ত ক্ষমতা স্থাপন করা। এর মাধ্যমে ভারতের সমস্ত স্টার্টআপ এবং উদ্ভাবকরা বিভিন্ন উন্নত পরিষেবা পাবেন। এই অভিযানের মাধ্যমে কৃষি, স্বাস্থ্য পরিষেবা এবং শিক্ষার মতো ক্ষেত্রেও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগ বাড়ানো হবে। আমরা নিজেদের আইটিআই বা শিল্প শিক্ষণ কেন্দ্রগুলির মাধ্যমে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় দক্ষতাকে টিয়ার-২ এবং টিয়ার-৩ শহরগুলিতে পৌঁছে দিচ্ছি। আমাদের ‘ন্যাশনাল এআই পোর্টাল’ রয়েছে, যা দেশের মধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা উদ্যোগগুলিকে উৎসাহ যোগায়। আপনারা হয়তো ‘ঐরাবত’ উদ্যোগ সম্পর্কে শুনেছেন। অতি শীঘ্রই সমস্ত রিসার্চ ল্যাব ইন্ডাস্ট্রি এবং স্টার্টআপ-গুলি এই কমন প্ল্যাটফর্মের ব্যবহার করতে পারবে।
বন্ধুগণ,
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে আমরা একটি নতুন যুগে প্রবেশ করছি। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিস্তার প্রযুক্তির যে কোনও একটি টুল বা সরঞ্জাম থেকে অনেক বেশি। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আমাদের নতুন ভবিষ্যৎ গড়ার সবচেয়ে বড় ভিত্তি হতে চলেছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার একটি বড় শক্তি হ’ল – জনগণকে যুক্ত করার ক্ষমতা। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে দেশের আর্থিক প্রগতি যেমন সুনিশ্চিত হয়, তেমনই এর মাধ্যমে সাম্য ও সামাজিক ন্যায়ও প্রতিষ্ঠিত হয়। অর্থাৎ, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে সার্বিক অন্তর্ভুক্তিমূলক করে গড়ে তুলতে হবে এবং সমস্ত ভাবনাগুলিকে আপন করে নিতে হবে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা উন্নয়ন যাত্রা যতবেশি অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে, এর পরিণামও তত বেশি অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে।
আমরা দেখেছি যে, বিগত শতাব্দীতে প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে অসাম্যের কারণে আমাদের সামাজিক বৈষম্যগুলি আরও বেড়ে গিয়েছিল। এখন আমাদের সমগ্র মানবতাকে এ ধরনের ভুল থেকে বাঁচাতে হবে। আমরা জানি যে, প্রযুক্তির সঙ্গে যখন বিভিন্ন গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে যুক্ত করা হয়, তখন তা অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যে বহু গুণীতক ফলদায়ী হয়ে ওঠে। সেজন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভবিষ্যতের লক্ষ্যও মানবিক মূল্যবোধের উপর, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের উপর সম্পূর্ণ রূপে নির্ভর করবে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আমাদের দক্ষতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। কিন্তু আমাদের উপর নির্ভর করবে আমরা কিভাবে আমাদের আবেগগুলিকে সঞ্জীবিত রাখবো। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আমাদের কার্যকরিতা বৃদ্ধির ক্ষমতা রাখে। কিন্তু, আমাদের নীতি মেনে চলতে হবে। এই লক্ষ্যে এই মঞ্চটি বিভিন্ন দেশের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সহায়ক হয়ে উঠতে পারে।
বন্ধুগণ,
যে কোনও ব্যবস্থাকে টেকসই করে তুলতে তাকে রূপান্তরযোগ্য, স্বচ্ছ এবং বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে হয়। এতে কোনও সন্দেহ নেই যে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা রূপান্তরযোগ্য। কিন্তু, এর ব্যবহার কতটা স্বচ্ছ হবে, তা আমাদের উপর নির্ভর করে। যদি আমরা এক্ষেত্রে ব্যবহার্য অ্যালগরিদমগুলিকে স্বচ্ছ ও পক্ষপাত মুক্ত করে তুলতে পারি, তা হলে একটি খুব ভালো সূত্রপাত হতে পারে। আমাদের সারা বিশ্বের মানুষকে আশ্বস্ত করতে হবে যে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তাঁদের লাভের জন্যই, তাঁদের ভালোর জন্যই। আমাদের বিশ্বের বিভিন্ন দেশকেও আশ্বস্ত করতে হবে যে, এই প্রযুক্তির উন্নয়ন যাত্রায় কাউকে পেছনে ফেলে রাখা হবে না। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উপর বিশ্ববাসীর আস্থা তখনই বৃদ্ধি পাবে, যখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সংক্রান্ত সমস্ত নীতি, অর্থনীতি ও সামাজিক দুশ্চিন্তাগুলির প্রতি লক্ষ্য রাখা হবে। উদাহরণ-স্বরূপ, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যদি ‘আপ-স্কিলিং’ এবং ‘রিস্কিলিং’ – এর ক্ষেত্রে ‘গ্রোথ কার্ভ’ – এর অংশ হয়ে ওঠে, তা হলেই নবীন প্রজন্মের মনে আস্থা জন্মাবে যে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তাঁদের ভবিষ্যতকে উজ্জ্বল করবে। যদি ডেটা বা তথ্য নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা যায়, তাহলেই তাঁরা বিশ্বাস করতে পারবে যে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তাঁদের ব্যক্তিগত জীবনে উঁকি-ঝুঁকি না দিয়েই উন্নয়নকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। যদি গ্লোবাল সাউথ এটা বুঝতে পারে যে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উন্নয়নে তাঁদের অনেক বড় ভূমিকা থাকবে, তা হলেই তাঁরা একে ভবিষ্যতের একটি পথ হিসেবে স্বীকার করে নিতে পারবে।
বন্ধুগণ,
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অনেক ইতিবাচক দিক রয়েছে। কিন্তু, এর নেতিবাচক দিকগুলি নিয়েও দুশ্চিন্তার কারণ রয়েছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা একবিংশ শতাব্দীতে উন্নয়নের বড় হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে। আবার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, সর্বনাশের ক্ষেত্রেও সবচেয়ে বড় ভূমিকা নিতে পারে। ‘ডীপ ফেক’ – এর চ্যালেঞ্জ আজ গোটা বিশ্বের সামনে প্রবল। এছাড়া, সাইবার নিরাপত্তা লঙ্ঘন, তথ্য চুরি এবং সন্ত্রাসবাদীদের হাতে বুদ্ধিমত্তার হাতিয়ার চলে গেলে অনেক বড় বিপদ হতে পারে। সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলির হাতে যদি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সঞ্চালিত হাতিয়ার চলে যায়, তা হলে তা আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিঘ্নিত করবে। আমাদের এই বিষয়টি নিয়ে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা রচনার প্রয়োজন রয়েছে; কিভাবে আমরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভুল ব্যবহারকে আটকাতে পারবো! সেজন্য জি-২০ সভাপতিত্বের সময়কালে আমরা দায়িত্ববান মানবতা-কেন্দ্রিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রশাসনের ফ্রেমওয়ার্ক রচনার প্রস্তাব রেখেছি। জি-২০ নিউ দিল্লি ডিক্লারেশনে ‘এআই প্রিন্সিপালস্’ বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সংক্রান্ত নীতিমালার প্রতি সকল দেশ দায়বদ্ধতার অঙ্গীকার করেছে। এক্ষেত্রে সকল সদস্য দেশ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের বিপদগুলি নিয়ে একটি বোঝাপড়ায় এসেছে। যেভাবে আমরা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিষয়ের ক্ষেত্রে সমঝোতা করি, সেই কূটনৈতিক আদর্শগুলি মেনেই আমাদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জন্য নীতিসম্পন্ন ব্যবহার সুনিশ্চিত করতে সবাই মিলে একটি গ্লোবাল ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করতে হবে। এক্ষেত্রে উচ্চ ঝুঁকি অথবা ‘ফ্রন্টিয়ার এআই টুলস্’-গুলির টেস্টিং এবং ডিপ্লয়মেন্টের জন্য কূটনৈতিক আদর্শগুলিকেও মাথায় রাখতে হবে। এর জন্য চারটি সি (কনভিকশন, কমিটমেন্ট, কো-অর্ডিনেশন এবং কোলাবোরেশন) – এর সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। আমাদের মিলেমিশে এমন পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দায়বদ্ধতাসম্পন্ন ব্যবহার সুনিশ্চিত হতে পারে। আজ এই শীর্ষ সম্মেলনের মাধ্যমে ভারত সমগ্র বিশ্বকে আহ্বান জানায় যে, এই লক্ষ্যে আমাদের এক মুহূর্তও সময় নষ্ট করলে চলবে না। আর কিছুদিন পরই নতুন বছর আসতে চলেছে। এই বছরের আর কয়েকটি দিন মাত্র বাকি। আমাদের একটি নির্ধারিত সময়সীমার ভেতর গ্লোবাল ফ্রেমওয়ার্ক-কে সম্পূর্ণ করতে হবে। মানবতাকে রক্ষা করার জন্য এই পদক্ষেপ অত্যন্ত জরুরি।
বন্ধুগণ,
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিছকই একটি নতুন প্রযুক্তি নয়। এটি ইতিমধ্যেই একটি আন্তর্জাতিক আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। সেজন্য আমাদের সকলকে মিলেমিশে কাজ করতে হবে। আগামী দু’দিন ধরে আপনারা সবাই অনেক বিষয় নিয়ে কথা বলবেন। আমি তো যখনই কোনও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিশেষজ্ঞের সঙ্গে মিলিত হই, তখন তাঁকে নিজের মনে জেগে ওঠা অসংখ্য প্রশ্নবানে জর্জড়িত করে তুলি। আজও আপনাদের মতো বিশেষজ্ঞদের কাছে পেয়ে অনেক প্রশ্ন করার ইচ্ছে হচ্ছিল। আমাদের এটা ভাবতে হবে যে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ন্ত্রিত তথ্যের বিশ্বাসযোগ্যতা কিভাবে বাড়ানো যায়। এমন কিছু ‘ডেটা সেট’ কি হতে পারে, যেগুলির ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা তথ্য প্রযুক্তি সরঞ্জামগুলিকে প্রশিক্ষণ এবং তদারকির কাজে লাগাতে পারি। যে কোনও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সরঞ্জামকে বাজারজাত ও বাজারীকরণের আগে কত ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা উচিৎ, তা নিয়েও অবশ্যই ভাবতে হবে। আমরা কী কোনও সফট্ওয়্যার ওয়াটার মার্ক চালু করতে পারি, যা থেকে বোঝা যাবে যে এই তথ্য বা পণ্যটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সঞ্জাত। এর ফলে, যিনি এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সঞ্জাত তথ্য বা পণ্য ব্যবহার করবেন, তিনি এর সীমাবদ্ধতাগুলি সম্পর্কেও জানবেন।
আমি কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকারের বিশেষজ্ঞদেরও অনুরোধ করবো যে, সরকারের যে বিভিন্ন প্রকল্প সংশ্লিষ্ট নানা ধরনের তথ্য থাকে, আমরা কিভাবে প্রমাণ-ভিত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে এগুলিকে ব্যবহার করতে পারি – তা নিয়ে ভাবুন। আমরা কি এ ধরনের তথ্যকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সরঞ্জামগুলিকে প্রশিক্ষিত করার জন্য ব্যবহার করতে পারি? আমরা কি এমন একটি অডিট মেকানিজম স্থাপন করতে পারি, যেখানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সরঞ্জামগুলিকে তাদের ক্ষমতা-ভিত্তিক লাল, হলুদ কিংবা সবুজ ক্যাটাগরিতে ভাগ করা যায়। আমরা কি এমন প্রতিষ্ঠানগত ব্যবস্থা স্থাপন করতে পারি, যা স্থিতিস্থাপক কর্মচারী নিয়োগকে সুনিশ্চিত করবে? আমরা কি সারা পৃথিবীতে একটি সম-মানসম্পন্ন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শিক্ষা পাঠক্রম চালু করতে পারি? আমরা কি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ন্ত্রিত ভবিষ্যতের জন্য জনগণকে প্রস্তুত করতে বিভিন্ন ‘স্ট্যান্ডার্ড’ বা মাণক নির্ধারণ করতে পারি? এরকম অনেক প্রশ্ন নিয়ে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা অবশ্যই ভাবনাচিন্তা করবেন।
বন্ধুগণ,
আপনারা জানেন যে, ভারতে শত শত ভাষা রয়েছে আর রয়েছে হাজার হাজার কথ্যভাষা। ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তিকরণকে বাড়াতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে স্থানীয় ভাষায় কিভাবে ডিজিটাল পরিষেবা চালু করা যেতে পারে, তা নিয়েও ভাবুন। এখন যে ভাষা বলা হয় না, সেই ভাষাকে কিভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে পুনরুজ্জীবিত করা যায়, তা নিয়েও চিন্তাভাবনা করুন। সংস্কৃত ভাষার জ্ঞান ভান্ডার ও সাহিত্য অত্যন্ত সমৃদ্ধ। এই ভাষার জ্ঞান ভান্ডার ও সাহিত্যকে সংরক্ষণ ও চর্চাকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে কিভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যেতে পারে, তা নিয়েও ভাবুন। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে বৈদিক গণিতের হারিয়ে যাওয়া খন্ডগুলিকে কিভাবে আবার ফিরিয়ে আনা যায়, তা নিয়েও চেষ্টা করা উচিৎ।
আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে, এই শীর্ষ সম্মেলন আমাদের সকলের ভাবনাচিন্তার আদান-প্রদানের উন্নত সুযোগ করে দেবে। আমি চাই যে, শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী প্রত্যেক প্রতিনিধির জন্য এই সম্মেলন একটি মহান শিক্ষার অভিজ্ঞতা প্রমাণিত হবে। আগামী দুই দিন ধরে আপনারা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিভিন্ন দিক নিয়ে অত্যন্ত গভীরভাবে আলাপ-আলোচনা করবেন। আশা করি, আমরা সুনির্দিষ্ট ফলাফল পাবো। আর সেই ফলাফলগুলির উপর ভিত্তি করে আমরা একটি দায়িত্বপূর্ণ ও সুদূরপ্রসারী ভবিষ্যৎ নির্মাণের পথ অবশ্যই সুদৃঢ় করবো। আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক শুভকামনা জানাই।
অনেক অনেক ধন্যবাদ।
নমস্কার!
(প্রধানমন্ত্রীর মূল ভাষণটি ছিল হিন্দিতে)
PG/SB/SB
AI has the potential to revolutionise India's tech landscape. Speaking at the Global Partnership on Artificial Intelligence Summit. https://t.co/sHGXrBreLh
— Narendra Modi (@narendramodi) December 12, 2023
We are working to ensure ‘AI for All’ with a focus on responsible and ethical usage of AI. pic.twitter.com/s8nR3MLpHe
— Narendra Modi (@narendramodi) December 12, 2023
Leveraging AI for furthering economic progress and social justice… pic.twitter.com/cKxrwUD6md
— Narendra Modi (@narendramodi) December 12, 2023
We will have to work with other nations and leverage AI for a better planet. pic.twitter.com/62z4HlE1gK
— Narendra Modi (@narendramodi) December 12, 2023
ग्लोबल समिट में भारत की ओर से वैश्विक जगत को एक आह्वान… pic.twitter.com/KG8R6mZEBs
— Narendra Modi (@narendramodi) December 12, 2023
आज AI की मदद से यह प्रयास भी होना चाहिए कि संस्कृत भाषा और वैदिक मैथमेटिक्स जैसे विषयों को आम लोगों के लिए कैसे आसान बनाया जा सकता है। pic.twitter.com/nmXPDXu5pK
— Narendra Modi (@narendramodi) December 12, 2023
In India, we are witnessing an AI innovation spirit. pic.twitter.com/NNMmyK0Ftw
— PMO India (@PMOIndia) December 12, 2023
AI for social development and inclusive growth. pic.twitter.com/RqUAh5FVze
— PMO India (@PMOIndia) December 12, 2023
India is committed to responsible and ethical use of AI. pic.twitter.com/Yt9gvK2UP7
— PMO India (@PMOIndia) December 12, 2023
With AI we are entering a new era. pic.twitter.com/zrby0f2T3l
— PMO India (@PMOIndia) December 12, 2023
AI is transformative. But it must be made as transparent as possible. pic.twitter.com/Q0VOPx6hU7
— PMO India (@PMOIndia) December 12, 2023
There are many positive aspects of AI, but the negative aspects related to it are also a matter of equal concern. pic.twitter.com/uZqsDOZNX1
— PMO India (@PMOIndia) December 12, 2023
We have to work together to prepare a global framework for the ethical use of AI. pic.twitter.com/oYtC2NgJpW
— PMO India (@PMOIndia) December 12, 2023