Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘‘মন কি বাত’’, (১০৪ তম পর্ব) অনুষ্ঠানের বাংলা অনুবাদ


নতুনদিল্লি, ২৭শে আগস্ট, ২০২৩ 

 

 

আমার পরিবারবর্গ, নমস্কার। ‘মন কি বাত’-এর এই আগস্ট মাসের পর্বে আপনাদেরকে স্বাগত জানাই। আমার ঠিক মনে পড়ছে না, যে কখনো শ্রাবণ মাসে, দু -দু বার মন কি বাত এর অনুষ্ঠান হয়েছে কিনা। কিন্তু এই বারে ঠিক এমনটাই ঘটছে। শ্রাবণ মানেই মহাশিবের মাস। উৎসব ও আনন্দের মাস। চন্দ্রযানের সাফল্য এই উৎসবের পরিবেশ ও আনন্দকে কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।  তিন দিনেরও বেশি হয়ে গেছে চন্দ্রযান চাঁদে পৌঁছেছে। এই সাফল্য এতটাই বড় যে এর যত চর্চা করব ততই যেন কম হয়ে যাবে। আজ যখন আপনাদের সঙ্গে কথা বলছি তখন আমার লেখা একটি কবিতার কিছু অংশ মনে পড়ে যাচ্ছে-  

দিগন্তে কার উচ্চশির?
মেঘের মুলুক ধরছে চির 
ঊষার লালীর শপথ নিয়ে।   
দিনমণি ওই যে এলো।  

অটল হয়ে এগিয়ে চলা। 
সংকটেরে দমন করা। 
ঘন আধার রুখে দিতে। 
দিনমণি ওই যে এলো। 

দিগন্তে কার উচ্চ শির? 
মেঘের মুলুক ধরছে চির 
দিনমণি ওই যে এলো। 
 
আমার পরিবারবর্গ, তেইশে আগস্ট ভারত এবং ভারতের চন্দ্রযান এই কথাটি প্রমাণ করে দিয়েছে যে সংকল্পের অরুণোদয় চাঁদেও হতে পারে। মিশন চন্দ্রযান নবভারতের সেই চেতনার প্রতীক,  যে  প্রতিটি পরিস্থিতিতেই জিততে চায়, এবং যেকোনো পরিস্থিতিতে জয়লাভ করতে পারে।  
      বন্ধুরা, এই মিশনের এমন একটি দিকও আছে যেটি নিয়ে আজকে আমি বিশেষভাবে আপনাদের সঙ্গে চর্চা করতে চাই। আপনাদের হয়তো মনে আছে যে এইবার লালকেল্লা থেকে বলেছিলাম যে আমাদের মহিলাদের নেতৃত্বে উন্নয়নকে রাষ্ট্র চরিত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত  করতে হবে। যেখানে নারীর শক্তি সামর্থ্যর সঙ্গে জুড়ে যায়, সেখানে অসম্ভবকে সম্ভব করে তোলাটাও কঠিন হয় না। ভারতের মিশন চন্দ্রযান, নারীশক্তিরও একটি জীবন্ত  দৃষ্টান্ত। এই গোটা মিশনে  বহু মহিলা বিজ্ঞানী ও ইঞ্জিনিয়াররা সরাসরি ভাবে যুক্ত আছেন। এঁরা আলাদা আলাদা  সিস্টেমের প্রজেক্ট ডাইরেক্টর, প্রজেক্ট ম্যানেজারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দক্ষতার সঙ্গে পালন করেছেন । ভারতবর্ষের মেয়েরা অনন্ত মহাকাশকেও চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে। কোন দেশের কন্যা সন্তানেরা যখন উচ্চাকাঙ্ক্ষী  হয়ে যায় তখন সেই দেশের সাফল্যকে কে আটকাতে পারে? 

          বন্ধুরা, এই বিশাল উড়ান এই জন্যই সফল হয়েছে কারণ আমাদের স্বপ্নগুলো বড় ছিল আর তাই অনেক বেশি পরিশ্রমও করতে হয়েছে । চন্দ্রযান-তিন এর সাফল্যের পেছনে আমাদের বৈজ্ঞানিকদের সঙ্গে আরো অন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সমস্ত অংশ ও প্রযুক্তিগত চাহিদাগুলিকে মেটানোর জন্য বহু দেশবাসীর এখানে ভূমিকা রয়েছে। যখন সকলে  একজোট হয়ে  চেষ্টা করেছেন, তখন সাফল্যও  পেয়েছি। চন্দ্রযান-তিনের এটাই সবচেয়ে বড় সার্থকতা ! আমি প্রার্থনা করি আগামীদিনে আমাদের মহাকাশ ক্ষেত্র সকলের প্রচেষ্টায়  এভাবেই  অজস্র সাফল্য অর্জন করবে!  
 
        আমার পরিবারবর্গ, সেপ্টেম্বর মাস ভারতের সামর্থের সাক্ষী হতে চলেছে। আগামী মাসে আয়োজিত জি-২০ গোষ্ঠীর নেতৃবৃন্দের শীর্ষ সম্মেলনের জন্য ভারত সম্পূর্ণ প্রস্তুত। এই আয়োজনে অংশ নেওয়ার জন্য ৪০টি দেশের রাষ্ট্র প্রধান এবং অনেক আন্তর্জাতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা রাজধানী দিল্লিতে আসছেন। জি-২০র শীর্ষ সম্মেলনের ইতিহাসে এখনও পর্যন্ত এটি সবচেয়ে বেশিসংখ্যায় অংশগ্রহণ। ভারত নিজের সভাপতির দায়িত্ব পালনের সময় জি-২০ গোষ্ঠীকে আরো বেশি সমন্বয়ের মঞ্চ হিসেবে গড়ে তুলেছে। ভারতের নিমন্ত্রণেই আফ্রিকান ইউনিয়ন জি-২০র সঙ্গে যুক্ত হয়েছে এবং আফ্রিকার মানুষের কণ্ঠ পৃথিবীর এই অতি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম পর্যন্ত পৌঁছেছে। বন্ধুরা, গত বছর, বালিতে ভারত জি-20র সভাপতিত্ব পাওয়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত এত কিছু হয়েছে যে তা আমাদের গর্বে ভরিয়ে দেয়। দিল্লিতে বড় বড় অনুষ্ঠান আয়োজন করার ভাবনা থেকে সরে এসে আমরা একে দেশের ভিন্ন ভিন্ন শহরে নিয়ে গিয়েছি। দেশের প্রায় ৬০টি শহরে এর সঙ্গে জড়িত প্রায় ২০০টি বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে। জি-20-র প্রতিনিধিরা যেখানেই গিয়েছেন, সেখানেই মানুষ তাঁদের উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়েছে। এইসব প্রতিনিধি আমাদের দেশের বৈচিত্র্য দেখে, আমাদের প্রাণবন্ত গণতন্ত্র দেখে যথেষ্ট প্রভাবিত হয়েছেন।  ভারত ঠিক কতটা সম্ভাবনাময়, সেটি তাঁরা বুঝতে পেরেছেন।      
বন্ধুরা, জি-20 তে আমাদের সভাপতিত্ব হল মানুষের নেতৃত্বে সভাপতিত্ব— পিপলস প্রেসিডেন্সি, যেখানে জনসাধারণের অংশগ্রহণের ভাবনা সবার আগে স্থান পায়। জি-20 তে যে ১১টি বিভিন্ন বিষয়ের গোষ্ঠী ছিল তার মধ্যে শিক্ষা জগত, সুশীল সমাজ, যুবক, মহিলা, আমাদের সাংসদ, শিল্পোদ্যোগী, পুর প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত বহু মানুষ গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করেছেন। একে নিয়ে দেশজুড়ে যে আয়োজন চলছে, তার সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে দেড় কোটির চেয়েও বেশি মানুষ যুক্ত আছেন। জনগণের যোগদানের আমাদের এই প্রচেষ্টায় একটা নয়, দু-দুটো বিশ্ব রেকর্ডও হয়ে গেছে। বারাণসীতে আয়োজিত জি-20 কুইজ প্রতিযোগিতায় ৮০০টি স্কুলের এক লাখ পঁচিশ হাজার ছাত্রছাত্রীর অংশগ্রহণ এক নতুন বিশ্বরেকর্ড তৈরি করেছে। ওদিকে, লম্বানি কারিগরেরাও কামাল করেছেন। ৪৫০ জন কারিগর প্রায় ১৮০০ নতুন ধরণের নকশা কাপড়ের উপর ফুটিয়ে তুলে আশ্চর্যজনক কালেকশন বানিয়ে নিজেদের প্রতিভা এবং কারুশিল্পে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। জি-20 তে অংশগ্রহণকারী প্রত্যেক প্রতিনিধি আমাদের দেশের শৈল্পিক বৈচিত্র্য দেখে যথেষ্ট বিস্মিত হয়েছেন। সুরাতে এমনই এক সুন্দর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে আয়োজিত ‘শাড়ি ওয়াকাথন’ এ ১৫ টি রাজ্যের ১৫ হাজার মহিলা অংশ নিয়েছিল। এই অনুষ্ঠান সুরাতের বস্ত্র শিল্পকে যেমন উৎসাহিত করেছিল, তেমনই ‘ভোকাল ফর লোক্যাল’ ভাবনাও শক্তি সঞ্চয় করে এবং স্থানীয় পণ্যের আন্তর্জাতিক বাজারে পৌছানোর পথও তৈরি হয়। শ্রীনগরে জি-20 বৈঠকের পর কাশ্মীরের পর্যটক সংখ্যায় যথেষ্ট বৃদ্ধি ঘটেছে। আমি, সমস্ত দেশবাসীকে বলতে চাই যে আসুন, সবাই মিলে জি-20 সম্মেলনকে সফল করি, দেশের সম্মান বাড়াই। 

        আমার পরিবারবর্গ, ‘মন কি বাত’-এর পর্বে, আমরা প্রায়ই আমাদের তরুণ প্রজন্মের  সক্ষমতা নিয়ে আলোচনা করি। আজ, খেলাধুলা এমন একটি ক্ষেত্র যেখানে আমাদের যুবসম্প্রদায় ক্রমাগত সাফল্যের নতুন উচ্চতা অর্জন করছে। আজ ‘মন কি বাত’-এ আমি এমন একটি ক্রীড়া প্রতিযোগিতার কথা বলব যেখানে সম্প্রতি আমাদের খেলোয়াড়রা জাতীয় পতাকার সম্মান বৃদ্ধি করেছে। কয়েকদিন আগে চীনে আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ বার এই প্রতিযোগিতার খেলাগুলিতে ভারত নিজের সবথেকে ভালো ক্রীড়া নৈপুণ্য দেখিয়েছে । আমাদের খেলোয়াড়রা মোট ২৬টি পদক জিতেছেন, যার মধ্যে ১১টি সোনা। আপনি জেনে খুশি হবেন যে ১৯৫৯ সাল থেকে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় প্রাপ্ত সমস্ত পদক যোগ করা হলেও এই সংখ্যাটি মাত্র ১৮-এ পৌঁছায়। বিগত দশকগুলিতে মাত্র ১৮টি, যেখানে আমাদের খেলোয়াড়রা এবার ২৬টি মেডেল জিতেছে। তাই, কয়েকজন তরুণ ক্রীড়াবিদ, যারা আসলে পড়াশোনা করছেন, আবার আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় পদক জিতেছেন তারা এই সময় আমার সঙ্গে ফোন লাইনে যুক্ত হয়েছেন। আমি প্রথমে তাদের সম্পর্কে কিছু বলতে চাই । উত্তর প্রদেশের বাসিন্দা প্রগতি তীরন্দাজীতে পদক জিতেছেন। আসামের অম্লান অ্যাথলেটিক্সে পদক জিতেছেন। উত্তর প্রদেশের বাসিন্দা প্রিয়াঙ্কা রেস ওয়াকে পদক জিতেছেন। মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা অভিদন্যা শ্যুটিংয়ে্ পদক জিতেছেন। 

মোদিজী – আমার প্রিয় যুব খেলোয়াড়রা, নমস্কার  
যুব খেলোয়াড়রা – নমস্কার স্যার। 
মোদিজী – আমার আপনাদের সঙ্গে কথা বলে খুব ভাল  লাগছে। আমি সবার আগে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি থেকে বেছে নেওয়া  খেলোয়াড়দের শুভেচ্ছা জানাতে চাই। আপনারা ভারতের নাম উজ্জ্বল  করেছেন, তার জন্য আপনাদের সকলকে অভিনন্দন। আপনারা  আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় যে নৈপুণ্য প্রদর্শন করেছেন তাতে প্রত্যেক দেশবাসীর মাথা গর্বে উঁচু হয়ে গেছে। আমি সবার আগে আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা  ও অভিনন্দন জানাই। 
প্রগতি, এই আলোচনা আমি আপনাকে দিয়ে শুরু করতে চাই। আপনি সবার আগে বলুন যে  যখন এখান থেকে দুটো মেডেল জিতে যান, তখন কি ভেবেছিলেন, এত বড় পদকপ্রাপ্তি সম্ভব?  এখন কেমন লাগছে আপনার?    
প্রগতিঃ- স্যার, আমি খুবই  গর্ব বোধ করছিলাম, আমার ভীষণ  আনন্দ  হচ্ছিল যে দেশের পতাকা সর্বোচ্চ জায়গায় উত্তোলন  করে আসতে পেরেছি।   গোল্ড ফাইটে পৌঁছেও হেরে গিয়ে আপশোষ হচ্ছিল।  কিন্তু তখনই  আমরা পণ করে নিই যে আর আমাদের ত্রিবর্ণ রঞ্জিত পতাকাকে নিচে নামতে দেওয়া যাবে না। সব অবস্থায়, আমাদের পতাকাকে সবার ওপরে রাখতে হবে। তারপর যখন আমরা জিতলাম, আমরা ওই পোডিয়ামে খুব ভালো ভাবে উদযাপন করি। ওই মূহুর্তটা খুব অমূল্য ছিল।  এত গর্ববোধ হচ্ছিল যে  বলা মুশকিল।  
মোদিজিঃ- প্রগতি, আপনাকে তো খুব বড়সড় শারীরিক  সমস্যার সসম্মুখীন হতে হয়েছিল। আপনি তা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হন। এটা দেশের যুবসম্প্রদায়ের জন্য খুবই প্রেরণাদায়ক। ঠিক  কি হয়েছিল আপনার?  
প্রগতিঃ স্যার ৫ই মে ২০২০ তে আমার ব্রেন হ্যামারেজ হয়। আমি ভেন্টিলেটরে ছিলাম।  এটাই নিশ্চিত ছিল না যে আমি আদৌ বাঁচবো কি না।  আর বেঁচে গেলেও কি অবস্থায় থাকবো। কিন্তু আমি সাহস হারাইনি।  আমার মনে দৃঢ় বিশ্বাস ছিল যে আমাকে আবার উঠে  দাঁড়াতে হবে,  তীর চালাতে মাঠে নামতে হবে। আমার জীবন রক্ষা করার জন্য আমি সবথেকে বেশি কৃতজ্ঞতা জানাই ভগবানকে, তারপর  ডাক্তারদের, এবং সবশেষে অবশ্যই তীরন্দাজীকে।  
আমাদের সঙ্গে অম্লানও আছে। অম্লান আমাদেরকে একটু বল অ্যাথলেটিক্স এর প্রতি তোমার এই আগ্রহ এলো কিভাবে। 
অম্লানঃ নমস্কার স্যার। 
মোদিজিঃ নমস্কার নমস্কার।    
অম্লানঃ স্যার অ্যাথলেটিক্স এর প্রতি শুরুতে তো অত আগ্রহ ছিল না।  আমার আগে ফুটবল ভালো লাগতো। আমার দাদার এক বন্ধু আছে সে আমাকে বলল, অম্লান তোমার অ্যাথলেটিক্সের নানা প্রতিযোগিতায় যাওয়া উচিত। আমিও ভাবলাম ঠিক আছে একবার চেষ্টা করে দেখি। প্রথমবার আমি যখন স্টেট মিটে খেলি আমি হেরে যাই। সেই হার আমাকে বড়ই কষ্ট দেয়।  তখন থেকে আমি মন দিয়ে খেলতে থাকি।  এভাবেই আমার অ্যাথলেটিক্সে আসা হয় স্যার। এখন তো স্যার এতেই আনন্দ হয়। 
মোদিজিঃ অম্লান আমাদের বল তুমি বেশিরভাগ অনুশীলন কোথায় করেছ?
অম্লানঃ আমি বেশিরভাগ অনুশীলন হায়দ্রাবাদে করেছি, সাই রেড্ডি স্যারের তত্ত্বাবধানে। তারপরে আমি ভুবনেশ্বরে শিফট হয়ে যাই সেখান থেকেই আমার পেশাদারী অনুশীলন শুরু হয় স্যার।  
আচ্ছা, আমাদের সঙ্গে  প্রিয়াঙ্কাও আছে। প্রিয়াঙ্কা, আপনি ২০ কিলোমিটার রেস
ওয়াক টিমের একজন সদস্য ছিলেন। সারা দেশ আজ আপনার কথা শুনছে, এবং তারা এই খেলা সম্পর্কে জানতে চায়। আপনি আমাদের এটা বলুন এর জন্য বিশেষ কি দক্ষতার প্রয়োজন? এবং আপনার ক্যারিয়ার কোথা থেকে কোথায় পৌঁছে গেছে? 

প্রিয়াঙ্কা – আমার ইভেন্ট যথেষ্টই কঠিন কারণ ৫ জন বিচারক দাঁড়িয়ে থাকেন। আমরা যদি দৌড়েও যাই, তাও তাঁরা আমাদের বের করে দেবেন। যদি আমরা রাস্তা থেকে বেরিয়েও যাই বা লাফিয়েও পড়ি তাও তাঁরা আমাদের বার করে দেবেন। এমনকি হাঁটু মুড়লেও তাঁরা বাতিল করে দিতে পারেন। আমাকে তো দুবার তারা সতর্ক করেও দিয়েছেন। তারপর থেকে আমি আমার গতিকে এতটা নিয়ন্ত্রণ করেছি যাতে দলের জন্য এখান থেকে পদক পেতে পারি। কারণ আমরা এখানে দেশের জন্য খেলতে এসেছি আর শূন্য হাতে এখান থেকে ফিরব না। 
প্রধানমন্ত্রী- আপনার বাবা ও ভাই ভালো আছেন? 
প্রিয়াঙ্কা – হ্যাঁ সবাই ভালো আছেন। আমি তো সবাইকে বলি যে আপনি কিভাবে আমাদের অনুপ্রাণিত করেন। সত্যি বলছি স্যার, খুব ভালো লাগে। কারণ আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতার মত খেলা সম্পর্কে ভারতে কেউ তেমন জানেই না। কিন্তু এখন যা উৎসাহ আমরা পাচ্ছি, মানে আমরা টুইট দেখি যেখানে প্রচুর লোকে টুইট করেন, আমরা এত পদক জিতেছি তো বেশ ভালই লাগে যে অলিম্পিক্সের মত এখানেও অনেক উৎসাহ পাচ্ছি।  
প্রধানমন্ত্রী- ঠিক আছে প্রিয়াঙ্কাজী, আপনাকে আমার তরফ থেকে অনেক অভিনন্দন, আপনি দেশের মুখ উজ্জ্বল করেছেন। আসুন এবার আমরা অভিধন্যার সঙ্গে কথা বলি। 
অভিধন্যা- নমস্কার স্যার।
প্রধানমন্ত্রী- নিজের সম্পর্কে কিছু বলুন। 
অভিধন্যা- স্যার আমি মহারাষ্ট্রের কোলাপুর শহর থেকে এসেছি। আমি শুটিং-এ ২৫ মিটার স্পোর্টস পিস্তল এবং ১০ মিটার এয়ার পিস্তল- দুটি ইভেন্টেই অংশগ্রহণ করি। আমার বাবা-মা দুজনেই উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক। আমি, ২০১৫ সালে  শুটিং শুরু করেছি। যখন আমি শুটিং শুরু করি তখন কোলহাপুরে এত সুযোগ সুবিধে ছিলনা। বাসে যাতায়াত করে ওয়াডগাঁও থেকে কোলাপুর যেতাম, দেড় ঘণ্টা সময় লাগতো। ফেরার সময়ও দেড় ঘণ্টা সময় লাগতো। তার ওপর চার ঘণ্টা ধরে প্রশিক্ষণ। এভাবেই ৬-৭ ঘণ্টা যাতায়াত আর ট্রেনিংয়ে চলে যেত। আমার স্কুলও মিস হতো। তখন মা বাবা বললেন যে একটা কাজ করা যায়, আমরা তোমাকে শনি ও রবিবার শুটিং রেঞ্জে নিয়ে যাবো, বাকি দিনগুলো তুমি অন্য সব গেমস খেলো। তো আমি ছোটবেলায় অনেকগুলো খেলা খেলতাম কারণ আমার মা বাবা দুজনেরই খেলার প্রতি ঝোঁক ছিল। কিন্তু তাঁরা কিছু করতে পারেননি কারণ তখন অত আর্থিক সামর্থও ছিলনা আর তাঁদের কাছে সঠিক তথ্যও ছিলনা। তবে আমার মায়ের স্বপ্ন ছিল যে দেশের প্রতিনিধিত্ব করি এবং দেশের জন্য পদকও জিতি। সেজন্য আমি তার স্বপ্নপূরণ করতে ছোট থেকেই খেলাধুলাকে গুরুত্ব দেওয়া শুরু করি। তারপর আমি তাইকোন্ডাও শিখি, এতে আমি ব্ল্যাক বেল্ট পেয়েছি। এছাড়াও বক্সিং, জুডো, ফেন্সিং এবং ডিস্কাস থ্রো-এর মত খেলাধুলোতে অংশ নিয়ে তারপর ২০১৫ সালে আমি শুটিংয়ে আসি।  
তারপর দু-তিন বছর আমি অনেক লড়াই করেছি এবং প্রথমবার আমার ইউনিভার্সিটি চ্যাম্পিয়নশিপে মালয়েশিয়া সিলেকশন হয়েছে, আর সেখানে আমি ব্রোঞ্জ পেয়েছিলাম,  ওখান থেকেই আসলে আমি উদ্বুদ্ধ হয়েছি। তারপর আমার স্কুল থেকে আমার জন্য একটা শুটিং রেঞ্জ তৈরি করা হয়েছিল, আমি তখন সেখানেই প্রশিক্ষণ নিতাম আর ওঁরা আমায় তারপর পুণে পাঠায় ট্রেনিং করার জন্য। সেখানে গগন নারাঙ্গ স্পোর্টস ফাউন্ডেশনে ‘গান ফর গ্লোরি’ রয়েছে, সেখানেই আমি এখন প্রশিক্ষণ নিচ্ছি। গগন স্যার আমায় খুব সহযোগিতা করেন এবং আমায় খেলার জন্য অনুপ্রেরণা দেন।
মোদী জি:- আচ্ছা আপনারা চারজন যদি আমায় কিছু বলতে চান তো আমি সেটা শুনতে চাই। প্রগতি, অম্লান, প্রিয়াঙ্কা এবং অভিদন্যা। আপনারা সকলেই আমার সঙ্গে এই মুহূর্তে রয়েছেন তাই কিছু বলতে চাইলে অবশ্যই আমি শুনবো । 
অম্লান:- স্যার আমার একটা প্রশ্ন আছে। 
মোদী জি:- বলুন। 
অম্লান:- আপনার কোন খেলা সবচেয়ে বেশি পছন্দ?  
মোদিজি:- খেলাধুলার জগতে ভারতের আরো প্রস্ফুটিত হওয়া উচিত আর এই জন্যই আমি এই বিষয়গুলোয় খুব উৎসাহ প্রদান করছি কিন্তু হকি, ফুটবল, কাবাডি, খো খো- এগুলো আমাদের মাটির সঙ্গে জুড়ে থাকা খেলা। তাই এগুলোয় আমাদের কখনোই পিছিয়ে পড়া উচিত নয় আর আমি  দেখছি যে তীরন্দাজীতে আমাদের খেলোয়াড়রা ভালো ফল করছে শুটিংয়েও ভালো ফল করছে। তৃতীয় আরেকটা বিষয় আমি লক্ষ্য করছি যে আমাদের  যুবকযুবতীদের মধ্যে, এমনকী তাদের পরিবারের মানুষদের মধ্যেও খেলার প্রতি আগে যে মনোভাব ছিল এখন তা আর নেই। আগে তো বাচ্চারা খেলতে গেলে তাদের আটকানো হতো কিন্তু এখন সময় অনেক পাল্টেছে, আপনারা যা সাফল্য নিয়ে আসছেন তা সব পরিবারকেই অনুপ্রাণিত করছে। আর যে খেলাতেই আমাদের ছেলেমেয়েরা যাচ্ছে, তারা দেশের জন্য কিছু না কিছু  করছে। এই খবর দেশে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে পরিবেশন করা হচ্ছে, দেখানো হচ্ছে আর স্কুল-কলেজেও এ বিষয়ে ক্রমাগত আলোচনা চলছে। যাই হোক, আমার এই বিষয়টা খুব ভালো লেগেছে তাই আমার তরফ থেকে আপনাদের সকলকে অনেক অনেক শুভকামনা।
যুব খেলোয়াড়েরা:- অনেক অনেক ধন্যবাদ। থ্যাঙ্ক ইউ স্যার। ধন্যবাদ। 
মোদিজি:- ধন্যবাদ জি। নমস্কার। 
        আমার পরিবারবর্গ, এই বছর ১৫ ই আগস্ট এর সময় দেশে ‘সবকা প্রয়াস’ প্রকল্পের সাফল্য দেখলাম। সকল দেশবাসীর প্রচেষ্টা হর ঘর তিরঙ্গা’ অভিযানকে বাস্তবে ‘হর মন তিরঙ্গা’  অভিযান হিসেবে রূপায়িত করেছে। এই অভিযানের সময়ে অনেক রেকর্ড গড়ে উঠেছে। দেশবাসীরা কোটি কোটি তেরঙা কিনেছেন। দেড় লক্ষ পোস্ট অফিসের মাধ্যমে প্রায় দেড় কোটি তেরঙ্গা পতাকা বিক্রি হয়েছে।  এতে আমাদের বিক্রেতা এবং যারা এই পতাকা তৈরি করেন বিশেষ করে মহিলারা কোটি কোটি টাকা রোজগার করতে পেরেছেন। পতাকার সঙ্গে নিজস্বী পোস্ট করার বিষয়েও দেশবাসী নতুন রেকর্ড তৈরি করেছেন। গতবছর ১৫ ই আগস্ট পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কোটি দেশবাসী তেরঙা পতাকার সঙ্গে সেলফি পোস্ট করেছিলেন। এই বছর এই সংখ্যা প্রায় ১০ কোটি অতিক্রম করেছে। 
    বন্ধুরা, এই সময় “আমার মাটি, আমার দেশ”, দেশাত্মবোধ প্রকাশ করার এই অভিযান
জোর কদমে চলছে। সেপ্টেম্বর মাসে দেশের গ্রামে-গ্রামে গিয়ে প্রতিটি বাড়ি থেকে
মাটি সংগ্রহ করার অভিযান চলবে। দেশের পবিত্র মৃত্তিকা হাজার-হাজার অমৃত
কলসে জমা করা হবে। অক্টোবরের শেষে এই হাজার-হাজার অমৃত কলস যাত্রা
করে দেশের রাজধানী দিল্লি পৌছবে। এই মৃত্তিকা দিয়েই দিল্লিতে অমৃতবাটিকা
নির্মাণ করা হবে। আমার বিশ্বাস, প্রতিটি দেশবাসীর উদ্যোগ এই অভিযানটিকেও
সাফল্যমন্ডিত করবে। 
        আমার পরিবারবর্গ, এবার আমি অনেক চিঠি সংস্কৃত ভাষায় পেয়েছি। এর কারণ
শ্রাবণ মাসের পূর্ণিমা, এই তিথিতে বিশ্ব সংস্কৃত দিবস উদযাপিত হয়।
“সর্বেভ্যঃ বিশ্ব-সংস্কৃত-দিবসস্য হার্দয়ঃ শুভকামনাঃ” 
আপনাদের সকলকে বিশ্ব সংস্কৃত দিবস উপলক্ষ্যে অনেক-অনেক অভিনন্দন
জানাই। আমরা সবাই জানি সংস্কৃত পৃথিবীর প্রাচীনতম ভাষাগুলির অন্যতম। একে
বহু আধুনিক ভাষার জননীও বলা হয়। সংস্কৃত নিজের প্রাচীনতা ছাড়াও তার
বৈজ্ঞানিক কাঠামো ও ব্যাকরণের জন্যও প্রসিদ্ধ। ভারতবর্ষের কত প্রাচীন
জ্ঞান হাজার হাজার বছর ধরে কেবল সংস্কৃত ভাষাতেই সংরক্ষিত ছিল। যোগ, আয়ুর্বেদ,
তথা দর্শনের মত বিষয়ে গবেষণা যাঁরা করেন তাঁরা অনেকেই সংস্কৃতের
অধ্যয়ন করছেন এখন। বহু প্রতিষ্ঠানেও এই ক্ষেত্রে অনেক ভাল-ভাল
কাজ হচ্ছে। যেমন সংস্কৃত প্রমোশন ফাউন্ডেশন, সংস্কৃত ফর যোগ, সংস্কৃত ফর আয়ুর্বেদ ও সংস্কৃত ফর বুদ্ধইজমের প্রতিষ্ঠানে বহু পাঠক্রম শুরু হয়েছে। 
সংস্কৃত ভারতী মানুষকে সংস্কৃত শেখানোর অভিযান চালায়। এখানে আপনি ১০ দিনের ‘সংস্কৃত সম্ভাষণ শিবিরে’ অংশগ্রহণ করতে পারেন। আজ মানুষের মধ্যে সংস্কৃত নিয়ে সচেতনতা ও গর্বের ভাব বেড়েছে দেখে আমার আনন্দ হয়। এর পিছনে গত কয়েক বছরে দেশের নানা পদক্ষেপের প্রভাব রয়েছে।  যেমন তিনটি সংস্কৃত ডিমড বিশ্ববিদ্যালয়কে ২০২০ সালে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করা হয়েছে। বিভিন্ন শহরে সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়গুলির নানা কলেজ ও সংস্থাও চলছে। আইআইটি ও আইআইএমের মত প্রতিষ্ঠানগুলিতেও সংস্কৃত কেন্দ্রগুলি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।  
বন্ধুরা, আপনারা অনেক সময়ই নিশ্চয় অনুভব করেছেন যে আমাদের শিকড়ের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার জন্য, আমাদের সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত হওয়ার জন্য আমাদের ঐতিহ্যের খুব বড় শক্তিশালী মাধ্যম হল আমাদের মাতৃভাষা। যখন আমরা আমাদের মাতৃভাষার সঙ্গে যুক্ত হই তখন খুব সহজেই আমরা নিজেদের সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত হতে পারি। আমরা তখন নিজেদের আচার-আচরণ, নিজেদের পরম্পরার সঙ্গে জুড়ে যেতে পারি, তখন আমরা আমাদের চির পুরাতন প্রাচীন, অপরুপ বৈভবের সঙ্গে যুক্ত হতে পারি। ভারতের এরকম আরেকটি মাতৃভাষা, গৌরবময় তেলুগু ভাষা। ২৯শে অগাস্ট তেলুগু দিবস পালিত হবে।
“অন্দরিকী তেলেগু ভাষা দিনোতসব শুভকাঁক্ষলু”।  
আপনাদের সকলকে তেলুগু দিবসের অনেক-অনেক অভিনন্দন জানাই। তেলুগু ভাষার সাহিত্য ও ঐতিহ্যে ভারতীয় সংস্কৃতির বহু অমূল্য রত্ন লুকিয়ে আছে। তেলুগুর এই ঐতিহ্যের সুফল সারা দেশ পেয়েছে। এর জন্য অনেক উদ্যোগও নেওয়া হচ্ছে। 
       আমার পরিবারবর্গ, ‘মন কি বাত’ এর বহু পর্বে আমরা পর্যটন নিয়ে কথা বলেছি। কোন স্থান বা বস্তুকে নিজের চোখে দেখা, বোঝা এবং কিছু সময় তার সঙ্গে কাটানো এক আলাদা অনুভূতি এনে দেয়। কেউ সমুদ্রের যত বিশদ বর্ণনাই করুক না কেন, আমরা সমুদ্রকে স্বচক্ষে না দেখলে তার বিশালতাকে উপলব্ধি করতে পারিনা। কেউ হিমালয় সম্বন্ধে যতই ব্যাখ্যা করুক না কেন, হিমালয়কে না দেখলে তার সৌন্দর্য অনুভব করা যায় না। এর জন্যই আমি সব সময় আপনাদের কাছে অনুরোধ জানাই, যখনই সুযোগ পাবেন তখনই আমাদের দেশের সৌন্দর্য, দেশের বৈচিত্রকে দেখতে বেরিয়ে পড়া উচিত। প্রায়শই আমরা আরো একটা জিনিস লক্ষ্য করি। আমরা হয়তো পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে বেড়াই কিন্তু নিজেদের শহর বা রাজ্যেরই বহু অপরূপ স্থান বা বস্তু আমাদের অগোচরেই থেকে যায়।  
অনেক সময় এমন হয় যে মানুষ নিজেদের শহরের ঐতিহাসিক স্থানগুলি সম্বন্ধেও তেমনভাবে জানেন না। এমনই একটি ঘটনা ধনপাল জি’র সঙ্গে ঘটেছে। ধনপাল জি বেঙ্গালুরুর ট্রান্সপোর্ট অফিসে ড্রাইভারের কাজ করতেন। প্রায় ১৭ বছর আগে তিনি সাইটসিইং উইং এর ভারপ্রাপ্ত হন। সেই বিভাগটিকে এখন মানুষ বেঙ্গালুরু দর্শিনী নামে জানেন। ধনপাল জি পর্যটকদের শহরের আলাদা আলাদা বিভিন্ন পর্যটন স্থলে নিয়ে যেতেন। এমনই কোন এক ট্রিপে এক পর্যটক তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন বেঙ্গালুরুতে ট্যাংককে সেঁকি ট্যাংক কেন বলা হয়। তার খুবই খারাপ লাগে কারণ এর উত্তর তিনি জানতেন না। এরপর তিনি নিজের জ্ঞান বাড়ানোর দিকে নজর দেন। নিজেদের ঐতিহ্যকে জানার এই সুতীব্র আগ্রহে তিনি অনেক পাথর এবং শিলালিপির সঙ্গে পরিচিত হন। এই কাজ ধনপাল জি’র কাছে এতটাই ভালোবাসার হয়ে ওঠে যে তিনি এপিগ্রাফি অর্থাৎ শিলালিপি সম্পর্কিত বিষয়ে ডিপ্লোমা করেন। এখন উনি অবসর নিয়েছেন, কিন্তু বেঙ্গালুরুর ইতিহাস সন্ধানে তার আগ্রহ এখনও অটুট। 
বন্ধুরা, আমার খুবই আনন্দ হচ্ছে ব্রায়ান.ডি.খারপ্রণের বিষয়ে বলতে। ইনি মেঘালয়ের অধিবাসী এবং স্পেলিওলজিতে ওঁর প্রবল আগ্রহ। সহজ ভাষায় বলতে গেলে স্পেলিওলজির অর্থ গুহা বিষয়ে অধ্যয়ন। অনেক বছর আগে বেশ কিছু গল্পের বই পড়ে উনি এই বিষয়ে আগ্রহী হন। ১৯৬৪ তে তিনি একজন স্কুল ছাত্র হিসেবে নিজের প্রথম অভিযান চালিয়েছিলেন। ১৯৯০ এ ব্রায়ান জি নিজের বন্ধুর সঙ্গে একটি সংগঠন তৈরি করেন এবং তার মাধ্যমে মেঘালয়ের অজানা গুহাগুলির বিষয়ে সন্ধান শুরু করেন। দেখতে দেখতে তিনি  নিজের দলের সঙ্গে মেঘালয়ের ১৭০০রও বেশি গুহায় সন্ধান চালিয়েছেন এবং নিজের রাজ্যকে ওয়ার্ল্ড কেভ ম্যাপে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। ভারতের দীর্ঘতম এবং গভীরতম গুহাগুলির কয়েকটি মেঘালয় রয়েছে। ব্রায়ান জি এবং ওঁর দলের সদস্যরা, কেভ ফনা(fauna) অর্থাৎ গুহার সেই জীবজন্তুদেরও তথ্যও নথিভুক্ত করেছেন যেগুলি পৃথিবীর আর কোথাও পাওয়া যায় না। আমি তাঁর দলের সকল সদস্যদের প্রয়াসকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। পাশাপাশি আমি আপনাদের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি যে মেঘালয়ের গুহাগুলিতে বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা অবশ্যই করবেন।    
আমার পরিবারবর্গ, আপনারা সবাই জানেন যে দোহ অর্থাৎ ডেয়ারি সেক্টর আমাদের দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলির অন্যতম। আমাদের মা ও বোনেদের জীবনে বিরাট পরিবর্তন আনার ক্ষেত্রে এর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। কিছুদিন আগেই আমি গুজরাটের ‘বনাস ডেয়ারী’র একটি আকর্ষণীয় উদ্যোগের সম্পর্কে জানতে পারলাম। ‘বনাস ডেয়ারী’কে এশিয়ার সবচেয়ে বড় ডেয়ারী হিসেবে গণ্য করা হয়। এখানে প্রতিদিন গড়ে ৭৫ লাখ লিটার দুধ প্রকিয়াকরণের কাজ করা হয়। এর পরে এই দুধ অন্য রাজ্যেও পাঠানো হয়। এখান থেকে অন্য রাজ্যে সময়মতো দুধ সরবরাহ করার জন্য, এখনও পর্যন্ত ট্যাঙ্কার বা মিল্ক ট্রেন অর্থাৎ ট্রেনকে মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা হত। কিন্তু এর মধ্যেও প্রতিকূলতা কম ছিল না। প্রথমত, ট্রেনে দুধ তুলতে এবং নামাতে অনেক সময় লেগে যেত এবং কখনও কখনও দুধও নষ্ট হয়ে যেত। এই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে ভারতীয় রেল নতুন এক পরীক্ষা করল। রেলওয়ে পালনপুর থেকে নিউ রেবাড়ী পর্যন্ত ট্রাক অন ট্র্যাক সুবিধা শুরু করেছে। এতে সরাসরি ট্রেনে দুধের ট্রাকগুলিকে তুলে দেওয়া হয়। অর্থাৎ পণ্য পরিবহণের বিশাল সমস্যার সমাধান হয়েছে । ট্রাক অন ট্র্যাক সুবিধার ফলাফল খুবই সন্তোষজনক হয়েছে। আগে যে দুধ পৌঁছাতে ৩০ ঘন্টা লাগতো, তা এখন অর্ধেকেরও কম সময়ে পৌঁছে যাচ্ছে। এতে যেমন জ্বালানির কারণে হওয়া দূষণ কমেছে, আবার সেখানে জ্বালানির খরচও সাশ্রয় হচ্ছে।  ট্রাকের ড্রাইভারদেরও অনেক উপকার হয়েছে, তাঁদের জীবন সহজ হয়েছে।  
       বন্ধুরা, যৌথ উদ্যোগের জন্য আজ আমাদের দুগ্ধশিল্প আধুনিক চিন্তাধারার সঙ্গে এগিয়ে চলেছে। বনাস ডেয়ারী পরিবেশ রক্ষার দিকে কিভাবে এগিয়েছে, এর নিদর্শন সীডবল বৃক্ষরোপণ অভিযানের মাধ্যমে বোঝা যায়। বারাণসী মিল্ক ইউনিয়ন আমাদের দুধওয়ালাদের  আয় বাড়ানোর জন্য সার ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করছে। কেরালার মালাবার মিল্ক ইউনিয়ন ডেইরির প্রচেষ্টাও খুব অনন্য। এঁরা পশু রোগের চিকিৎসার জন্য আয়ুর্বেদিক ওষুধ তৈরিতে নিযুক্ত রয়েছে।    
        বন্ধুরা, আজকে অনেক মানুষ আছেন যাঁরা দোহ (ডেয়ারি)কে গ্রহণ করে নানা ধরণের বৈচিত্র্য আনছেন। অমনপ্রিত সিং রাজস্থানের কোটায় একটি ডেয়ারী ফার্ম চালাচ্ছেন, আপনাদের তাঁর সম্পর্কেও জানা উচিত। উনি ডেয়ারীর সঙ্গে সঙ্গে বায়োগ্যাসের ওপরেও গুরুত্ব দিচ্ছেন এবং দুটি জৈবগ্যাস প্ল্যান্ট স্থাপন করেছেন। যার জন্য ওঁর বিদ্যুতের খরচ প্রায় ৭০ শতাংশ কমে গেছে। ওঁর এই প্রচেষ্টা সারাদেশে দুগ্ধ শিল্পের সঙ্গে যুক্তদের অনুপ্রাণিত করবে। আজ অনেক বড় বড় ডেয়ারি, জৈবগ্যাস নিয়ে কাজ করছে। এই ধরনের সম্প্রদায়গত উদ্যোগের মাধ্যমে অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা খুবই উৎসাহব্যঞ্জক। আমি নিশ্চিত যে সারাদেশে এ ধরনের প্রবণতা বজায় থাকবে।
     আমার পরিবারবর্গ, ‘মন কি বাত’এ আজ এইটুকুই। এখন উৎসবের মরশুমও চলে এসেছে। রাখীবন্ধন উপলক্ষে আপনাদের সকলকে জানাই অগ্রিম শুভেচ্ছা। উৎসব উদযাপনের সময়, আমাদের ভোকাল ফর লোকালের মূলমন্ত্রটিও মনে রাখতে হবে। ‘আত্মনির্ভর ভারত’ এই অভিযান প্রতিটি দেশবাসীর নিজের অভিযান। আর যখন উৎসবের আবহ থাকে, তখন আমাদের আরাধনার জায়গা এবং আশপাশের এলাকা পরিষ্কার রাখতে হবে, তবে সবসময়ের জন্য। পরের বার আপনাদের সঙ্গে আবার ‘মন কি বাত’ হবে, কিছু নতুন বিষয় নিয়ে আসবো। দেশবাসীর নতুন কিছু উদ্যোগ ও তাদের সাফল্য নিয়ে মন ভরে আলোচনা করব। ততক্ষণ পর্যন্ত  বিদায় চাইছি। অনেক অনেক ধন্যবাদ। নমস্কার।  

 

 

AC/CB