Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

চন্দ্রযান-৩-এর চাঁদে সফল অবতরণের পরে ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

চন্দ্রযান-৩-এর চাঁদে সফল অবতরণের পরে ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ


নয়াদিল্লি, ২৩ আগস্ট ২০২৩

 

 

আমার প্রিয় পরিবারের সদস্যগণ,

যখন আমরা চোখের সামনে এমন ইতিহাস তৈরি হতে দেখি, জীবন তখন ধন্য হয়ে যায়। এই ধরনের ঐতিহাসিক ঘটনা দেশের চিরন্তন চেতনা হয়ে দাঁড়ায়। এই মুহূর্তটি ভোলার নয়। এই মুহূর্তটি অভূতপূর্ব। এই মুহূর্তটি উন্নত ভারতের জয়ধ্বনি। এই মুহূর্তটি নতুন ভারতের জয়যাত্রা। এই মুহূর্তটি দুস্তর পারাবার পার হওয়ার মতো। এই মুহূর্তটি বিজয় পথে হাঁটার মতো। এই মুহূর্তটিতে আছে ১৪০ কোটি হৃদস্পন্দনের ক্ষমতা। এই মুহূর্তটি নতুন প্রাণশক্তি, নতুন বিশ্বাস এবং ভারতের নতুন চেতনার প্রতীক। এই মুহূর্তটি ভারতের ক্রমঊর্ধ্বমান নিয়তির আহ্বান। ‘অমৃতকাল’-এর ভোরে সাফল্যের প্রথম আলোটি পড়ল এ বছর। আমরা পৃথিবীতে যে সঙ্কল্প করেছিলাম, তা পূরণ করলাম চাঁদে। এবং আমাদের বিজ্ঞানীরাও বলছেন, “ভারত এখন চাঁদের ওপর।” আজ আমরা মহাকাশে নতুন ভারতের নতুন উড়ানের সাক্ষী থাকলাম। 

বন্ধুগণ,

আমি বর্তমানে ব্রিকস শিখর সম্মেলনে অংশ নিতে দক্ষিণ আফ্রিকায়। তবে, প্রত্যেক দেশবাসীর মতো আমার হৃদয় পড়ে ছিল চন্দ্রযান অভিযানের দিকে। যখন নতুন ইতিহাস তৈরি হচ্ছে, প্রত্যেক ভারতীয় উদযাপনে মগ্ন এবং প্রতিটি পরিবারে উৎসব শুরু হয়েছে। আমার দেশবাসী এবং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আমি মন থেকে উৎসাহের সঙ্গে যুক্ত হয়েছি। আমি ‘টিম চন্দ্রযান’, ইসরো এবং দেশের সকল বিজ্ঞানীকে যাঁরা এই মুহূর্তটির জন্য বছরের পর বছর ধরে নিরলস পরিশ্রম করেছেন, তাঁদের হার্দিক অভিনন্দন জানাই। আমি উৎসাহ-উদ্দীপনা, আনন্দ ও আবেগে সমৃদ্ধ এই সুন্দর মুহূর্তটির জন্য ১৪০ কোটি দেশবাসীকেও অভিনন্দন জানাই।

আমার পরিবারের সদস্যরা,

আমাদের বিজ্ঞানীদের কঠোর পরিশ্রম এবং মেধার দ্বারা ভারত চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে পৌঁছেছে যেখানে বিশ্বের কোনো দেশ এখনও পর্যন্ত পৌঁছতে পারেনি। এখন থেকে চাঁদের সঙ্গে সম্পৃক্ত রূপকথাগুলির পরিবর্তন হবে, গল্পগুলিও পালটে যাবে এবং আগামী প্রজন্মের জন্য প্রবাদবাক্যেরও পরিবর্তন হবে। ভারতে পৃথিবীকে আমরা ‘মা’ হিসেবে অভিহিত করি এবং চাঁদ আমাদের ‘মামা’। সাধারণত বলা হয়, “চাঁদমামা অনেক দূরের”। এবার এমন দিন আসবে যখন শিশুরা বলবে – “চাঁদমামা মাত্র একটুখানি দূরে যেখানে ঘুরতে যাওয়া যায়।”

বন্ধুগণ,

এই আনন্দময় ঘটনায় আমি বিশ্ববাসীকে, প্রত্যেক দেশ এবং অঞ্চলের মানুষকে বলতে চাই ভারতের সফল চন্দ্রাভিযান শুধুমাত্র ভারতের নয়। এই বছর সারা বিশ্ব প্রত্যক্ষ করছে ভারতের জি-২০ সভাপতিত্ব। আমাদের ‘এক বিশ্ব, এক পরিবার, এক ভবিষ্যৎ’ বাণীর প্রতিধ্বনি হচ্ছে বিশ্বজুড়ে। আমরা যে মানব-কেন্দ্রিক মনোভাব নিয়েছি, তাকে স্বাগত জানিয়েছে গোটা বিশ্ব। আমাদের চন্দ্রাভিযানও ঐ একই মানব-কেন্দ্রিক নীতির ওপর দাঁড়িয়ে আছে। সেজন্য এই সাফল্য সমগ্র মানব সমাজের সাফল্য। ভবিষ্যতে এটি অন্য দেশকে তাদের চন্দ্রাভিযানে সাহায্য করবে। আমার বিশ্বাস, ‘গ্লোবাল সাউথ’ সহ বিশ্বের সব দেশ এই লক্ষ্য পূরণে সক্ষম। আমরা সকলে চাঁদ এবং তাকে ছাড়িয়ে আরও দূরের অভিযানের দিকে তাকিয়ে আছি। 

আমার পরিবারের সদস্যরা,

চন্দ্রযান অভিযানের এই সাফল্য চাঁদের কক্ষ ছাড়িয়ে ভারতের যাত্রাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে। আমরা আমাদের সৌরজগতের সীমানা পরীক্ষা করব এবং মানবতার জন্য ব্রহ্মাণ্ডের অসীম সম্ভাবনা খোঁজার লক্ষ্যে কাজ করে যাব। ভবিষ্যতের জন্য আমরা অনেক বড় বড় উচ্চাশাযুক্ত লক্ষ্য রেখেছি। খুব শীঘ্রই ইসরো সূর্য নিয়ে নিবিড় গবেষণার জন্য ‘আদিত্য এল-১’  অভিযানের সূচনা করবে। এরপর, ইসরোর কর্মসূচিতে আছে শুক্র গ্রহও। ‘গগনযান’ অভিযানের মাধ্যমে দেশ মহাকাশে মানুষ পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। ভারত বারবার প্রমাণ করছে আকাশটাই সীমা নয়।

বন্ধুগণ,

আমাদের দেশের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের ভিত্তি বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি। সেজন্য দেশ এই দিনটি চিরকাল মনে রাখবে। এই দিনটি আমাদের সকলকে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করবে। এই দিনটি আমাদের সঙ্কল্প পূরণ করার পথ দেখাবে। পরাজয় থেকে শিক্ষা নিয়ে কিভাবে জয়কে ছিনিয়ে আনা যায়, এই দিনটি তার প্রতীক। আরও একবার আমার হার্দিক অভিনন্দন দেশের সকল বিজ্ঞানীদের এবং ভবিষ্যৎ অভিযানের জন্য শুভেচ্ছা। অনেক ধন্যবাদ!

প্রধানমন্ত্রী মূল ভাষণটি হিন্দিতে দিয়েছিলেন

AC/AP/DM