Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

প্রধানমন্ত্রী বেঙ্গালুরুতে ১৪তম এরো ইন্ডিয়া ২০২৩-এর উদ্বোধন করেছেন

প্রধানমন্ত্রী বেঙ্গালুরুতে ১৪তম এরো ইন্ডিয়া ২০২৩-এর উদ্বোধন করেছেন

প্রধানমন্ত্রী বেঙ্গালুরুতে ১৪তম এরো ইন্ডিয়া ২০২৩-এর উদ্বোধন করেছেন


নয়াদিল্লি, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ বেঙ্গালুরুর ইয়েলেহঙ্কা বিমানবাহিনীর ঘাঁটিতে ১৪তম এরো ইন্ডিয়া ২০২৩-এর উদ্বোধন করেছেন। এবারের এরো ইন্ডিয়ার মূল ভাবনা – ‘কোটি কোটি সুযোগের অপেক্ষায়’। ৮০টির বেশি দেশের ৮০০টি প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম উৎপাদক সংস্থা এই প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছে। এদের মধ্যে ৭০০টি প্রতিষ্ঠানই ভারতীয়। প্রধানমন্ত্রীর ‘মেক ইন ইন্ডিয়া, মেক ফর দ্য ওয়ার্ল্ড’ (বিদেশের জন্য দেশে তৈরি সামগ্রী) ভাবনার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে এই প্রদর্শনীতে দেশে তৈরি বিভিন্ন সরঞ্জাম প্রদর্শিত হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে বিদেশি সংস্থার অংশীদারিত্বে এগুলি তৈরি করা হয়েছে। 

প্রদর্শনী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার সময় শ্রী মোদী বলেন যে বেঙ্গালুরুর আকাশ নতুন ভারতের দক্ষতার সাক্ষ্য বহন করছে। “এই নতুন উচ্চতাই নব-ভারতের বাস্তবতা।”

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ভারতের ক্রমবর্ধমান দক্ষতার এক জ্বলন্ত উদাহরণ হয়ে উঠেছে এরো ইন্ডিয়া, ২০২৩। এই কর্মসূচিতে ১০০টিরও বেশি দেশের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে সারা বিশ্বের ভারতের প্রতি আস্থা প্রকাশিত। তিনি বলেন, ভারতীয় অণু, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগ এবং নতুন উদ্যোগ বা স্টার্ট-আপ সংস্থাগুলির সঙ্গে বিশ্বের নামকরা সংস্থাগুলি এই প্রদর্শনীতে যোগ দিয়েছে। এরো ইন্ডিয়ার মূল ভাবনার প্রসঙ্গটি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আশা করেন যে আত্মনির্ভর ভারতের শক্তি প্রতিদিন বৃদ্ধি পাবে। 

এই প্রদর্শনীর সঙ্গে প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের কনক্লেভ এবং বিভিন্ন সংস্থার মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিকদের গোলটেবিল বৈঠকের কথা উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, সংশ্লিষ্ট সকলের সক্রিয় অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে এরো ইন্ডিয়ার সম্ভাবনা আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

কর্ণাটকে এই প্রদর্শনীর আয়োজন করার গুরুত্বের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই রাজ্য ভারতের প্রযুক্তির অগ্রগতির কেন্দ্র। কর্ণাটকের যুব সম্প্রদায়ের কাছে এই প্রদর্শনী বিমান চলাচল ক্ষেত্রের নতুন সুযোগ এনে দেবে। কর্ণাটকের যুব সম্প্রদায়ের দেশের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রকে শক্তিশালী করার জন্য তাদের কারিগরি দক্ষতাকে কাজে লাগানো উচিত।

শ্রী মোদী বলেছেন, “দেশ যখন নতুন ভাবনা, নতুন উদ্যোগে অগ্রসর হচ্ছে তখন দেশের বিভিন্ন ব্যবস্থাপনারও সেই নতুন ভাবনায় চালিত হওয়া উচিত।” নতুন ভারতের ভাবনার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এরো ইন্ডিয়া ২০২৩-এর পরিবর্তনের দিকটি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখন এই প্রদর্শনী শুরু হয়েছিল তখন এটি ছিল নিছকই এক প্রদর্শনী যেখানে অংশগ্রহণকারী সংস্থাগুলি তাদের উৎপাদিত পণ্যসামগ্রী ভারতে বিক্রির জন্য নিয়ে আসত। “আজ, এরো ইন্ডিয়া শুধুমাত্র একটি প্রদর্শনী নয়, প্রতিরক্ষা শিল্পের সম্ভাবনার প্রদর্শনী নয়, এটি আত্মনির্ভর ভারতের একটি উদাহরণ।” এই প্রদর্শনী প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রের বিভিন্ন সম্ভাবনাকেই শুধু তুলে ধরছে না, এর মাধ্যমে ভারতের স্বনির্ভর হয়ে ওঠাও প্রতিফলিত হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দক্ষতার মধ্য দিয়ে ভারতের সাফল্য প্রতিফলিত হচ্ছে। তেজস, আইএনএস বিক্রান্ত, সুরাট এবং তুমাকুরু শহরে অত্যাধুনিক সরঞ্জাম উৎপাদন কেন্দ্রের মধ্য দিয়ে আত্মনির্ভর ভারতের সম্ভাবনা আরও বিকশিত হয়েছে। এখানে বিশ্বের নতুন নতুন সম্ভাবনা ও বিকল্পগুলির সন্ধান পাওয়া যায়।  

শ্রী মোদী বলেছেন, “একবিংশ শতাব্দীর নতুন ভারত কোনও সুযোগকে যেমন হারাতে চায় না, পাশাপাশি কোনও উদ্যোগেও ঘাটতি রাখতে চায় না।” আজ সংস্কারের সাহায্যে প্রতিটি ক্ষেত্রে বিপ্লব সূচিত হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে ভারতের পরিচিতি ছিল প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম আমদানির সর্ববৃহৎ রাষ্ট্র হিসেবে। আজ দেশে উৎপাদিত প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ৭৫টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে। 

গত ৮-৯ বছর ধরে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সংস্কারের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২৪-২৫ সালের মধ্যে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধার্য হয়েছে ১৫০ কোটি থেকে ৫০০ কোটি ডলার। “বিশ্বের প্রথম সারির প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম উৎপাদক রাষ্ট্রের তালিকাভুক্ত হতে ভারত দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে এবং এর বাস্তবায়নে আমাদের বেসরকারি ক্ষেত্র ও বিনিয়োগকারীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন।” তিনি প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে বেসরকারি সংস্থাগুলিকে বিনিয়োগ করতে আহ্বান জানান। এর ফলে শুধু ভারতেই নয়, পৃথিবীর অন্যান্য দেশেও তাদের জন্য নতুন নতুন সুযোগ তৈরি হবে।  

শ্রী মোদী বলেছেন, “আজকের ভারত দ্রুততার সঙ্গে ভাবনা-চিন্তা করে, গভীরে ভাবনা-চিন্তা করে এবং যে কোনও সিদ্ধান্ত দ্রুত গ্রহণ করে।” অমৃতকালে ভারতের ভূমিকা অনেকটা যুদ্ধবিমানের পাইলটের মতো। এই ভারত আরও উঁচুতে উঠতে ভয় পায় না, উৎসাহ বোধ করে। তবে, যতই উঁচুতে ভারত উঠুক না কেন তার পা থাকে সব সময়েই মাটিতে।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “এরো ইন্ডিয়ার গগনভেদী আওয়াজ আসলে ভারতের সংস্কার, কার্যসম্পাদন করা এবং পরিবর্তনের বার্তাবাহক।” আজ ভারতে সহজে ব্যবসা করার জন্য যেসব সংস্কারগুলি কার্যকর করা হয়েছে, সারা বিশ্ব তা প্রত্যক্ষ করছে। এর ফলে ভারত সারা পৃথিবীর বিনিয়োগকারীদের কাছে আকর্ষণীয় গন্তব্যস্থল হয়ে উঠেছে। প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রেও এখন প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ করা যাচ্ছে। শিল্প সংস্থা গঠনের জন্য বিভিন্ন নিয়মের সরলীকরণের পাশাপাশি লাইসেন্স প্রদানের প্রক্রিয়াটিকেও সরল করা হয়েছে। এবারের বাজেটে উৎপাদনকারী সংস্থাগুলির জন্য কর ছাড়ের পরিমাণ বৃদ্ধি করা হয়েছে।

শ্রী মোদী বলেছেন, যেখানে চাহিদা, দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা রয়েছে সেখানে শিল্পের বিকাশ অত্যন্ত সাধারণ একটি বিষয়। সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রকে আরও শক্তিশালী করার জন্য নানা উদ্যোগ নেওয়া অব্যাহত থাকবে বলে তিনি উপস্থিত সকলকে আশ্বস্ত করেছেন। 

অনুষ্ঠানে কর্ণাটকের রাজ্যপাল শ্রী থাওয়ারচাঁদ গেহলট, মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বাসবরাজ বোম্মাই, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী শ্রী রাজনাথ সিং, অসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রী শ্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া এবং প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী শ্রী অজয় ভাট সহ বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রেক্ষাপট

‘মেক ইন ইন্ডিয়া, মেক ফর দ্য ওয়ার্ল্ড’-এর ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে অনুষ্ঠানটি দেশীয় সরঞ্জাম / প্রযুক্তি প্রদর্শন এবং বিদেশী সংস্থাগুলির সঙ্গে অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সম্পর্ক স্থাপন করবে। ভারতীয় প্রতিরক্ষা খাতে আত্মনির্ভরতার উপর প্রধানমন্ত্রীর ভাবনা বাস্তবায়িত হবে, কারণ প্রতিরক্ষা মহাকাশ এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তি বিশ্বের দরবারে তুলে ধরা হচ্ছে। এছাড়াও, এই অনুষ্ঠানে লাইট কমব্যাট এয়ারক্রাফ্ট (এলসিএ)-তেজস, এইচটিটি-৪০, ডর্নিয়ার লাইট ইউটিলিটি হেলিকপ্টার (এলইউএইচ), লাইট কমব্যাট হেলিকপ্টার (এলসিএইচ) এবং অ্যাডভান্সড লাইট হেলিকপ্টার (এএলএইচ) এর মতো দেশীয় বিমানগুলি সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য তুলে ধরা হবে যার মাধ্যমে এগুলি রপ্তানির সুযোগ তৈরি হবে। অনুষ্ঠানটি দেশীয় অণু, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগ এবং স্টার্ট-আপগুলিকে বিশ্বব্যাপী সরবরাহ শৃঙ্খলে সংযুক্ত করার পাশাপাশি বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে সাহায্য করবে।

এরো ইন্ডিয়া ২০২৩-এ ৮০টিরও বেশি দেশ অংশগ্রহণ করেছে। প্রায় ৩০ টি দেশের মন্ত্রী এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রের ৬৫টি সংস্থার মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিকরা অংশগ্রহণ করেছেন।

এরো ইন্ডিয়া ২০২৩ প্রদর্শনীতে প্রায় ১০০টি বিদেশী এবং ৭00টি ভারতীয় কোম্পানি সহ ৮00টিরও বেশি প্রতিরক্ষা সংস্থার অংশগ্রহণ করেছে।  এয়ারবাস, বোয়িং, দাঁসো এভিয়েশন, লকহেড মার্টিন, ইজরায়েল এরোস্পেস ইন্ডাস্ট্রি, ব্রাহ্মস এরোস্পেস, এইচ সি রোবোটিক্স, সাব, সাফরান, রোলস রয়েস, লার্সেন অ্যান্ড টুব্রো, ভারত ফোর্জ লিমিটেড, হিন্দুস্তান এরোনেটিক্স লিমিটেড, ভারত ইলেক্ট্রনিক্স লিমিটেড, ভারত ডায়নামিক্স লিমিটেড এবং বিইএমএল লিমিটেডের মতো সংস্থাগুলি এই প্রদর্শনীতে উপস্থিত রয়েছে।
 

 

PG/CB/DM/