নয়াদিল্লি, ২৮ জানুয়ারি, ২০২৩
ভৌগোলিক, সাংস্কৃতিক, সামাজিক এবং আদর্শবাদের দিক থেকে ভারত বিভাজনের চেষ্টা করা হলেও কোনও শক্তিই ভারতকে পর্যুদস্তু করতে পারেনি। ভারতীয় সমাজের শক্তি ও প্রেরণাই জাতিকে অমরত্ব দান করেছে। দেশের অস্তিত্ব অক্ষুণ্ন থেকেছে এই বলেই বলীয়ান হয়ে।
রাজস্থানের ভিলওয়াড়ায় ভগবান শ্রী দেবনারায়ণজির ১১১১তম ‘অবতরণ মহোৎসব’-এ ভাষণদানকালে এই মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, ভগবান দেবনারায়ণজি যে পথের সন্ধান দিয়ে গেছেন তা হল, সকলকে সঙ্গে নিয়ে সকলের উন্নতির জন্য চেষ্টা করে যাওয়া। তাঁর এই পথই আজ অনুসরণ করে চলেছে আমাদের দেশ।
শ্রী মোদী বলেন, দেশের যে সমস্ত স্তরের মানুষ দীর্ঘকাল ধরে বঞ্চিত ও অবহেলিত থেকে গেছেন তাঁদের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যেই ভারত বর্তমানে চেষ্টা করে চলেছে। অন্যদিকে, জাতীয় প্রতিরক্ষা কিংবা সাংস্কৃতিক সংরক্ষণ – যাই হোক না কেন, গুর্জর সম্প্রদায় প্রতিটি যুগেই রক্ষাকর্তার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই মহোৎসবে তিনি যোগ দিয়েছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নয়, বরং একজন পূণ্যার্থী হিসেবে। কারণ তাঁর আন্তরিক বাসনাই হল ভগবান শ্রী দেবনারায়ণজির আশীর্বাদ কামনা করা।
যজ্ঞশালায় বিষ্ণু মহাযজ্ঞে পূর্ণাহুতি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পেরে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘দেবনারায়ণ’জি এবং ‘জনতা জনার্দন’ – উভয়েরই দর্শন লাভ করে তিনি নিজেকে আজ আশীর্বাদধন্য বলে মনে করছেন।
শ্রী মোদী বলেন, অন্যান্য পূণ্যার্থীজনের মতোই তিনিও আজ এখানে উপস্থিত হয়েছেন ভগবান শ্রী দেবনারায়ণজির আশীর্বাদ লাভের প্রত্যাশায় যাতে জাতির নিরন্তর বিকাশ এবং দরিদ্র সাধারণের কল্যাণ প্রচেষ্টায় তিনি নিয়োজিত থাকতে পারেন।
ভগবান শ্রী দেবনারায়ণের ১১১১তম ‘অবতরণ মহোৎসব’-এর বর্ণনা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিগত এক সপ্তাহ ধরে এখানে নানা ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজিত হচ্ছে। মহোৎসবের উদ্যোগ-আয়োজন ও অংশগ্রহণে গুর্জর সম্প্রদায়ের ভূমিকার সপ্রশংস উল্লেখও করেন তিনি।
সুপ্রাচীনকাল থেকেই ভারতের বিবেক ও চেতনার যে ভাবধারা আজও বহমান তার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত একটি ভূমিখণ্ড মাত্র নয়, বরং তা আমাদের সভ্যতা, সংস্কৃতি, সম্প্রীতি এবং অনন্ত সম্ভাবনারই এক বিশেষ দ্যোতক।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতীয় সভ্যতার সবদিক থেকেই এক বিশেষ পরিচিতি তথা স্বাতন্ত্র্য রয়েছে। অন্যান্য সভ্যতার মতো তা কখনই অনড় বা অনমনীয় থাকেনি বরং, পরিবর্তিত কাল ও পরিস্থিতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রক্ষা করে ভারতীয় সভ্যতার মূল প্রকৃতি হয়ে উঠেছে যথেষ্ট নমনীয় ও সহনশীল। ভৌগোলিক, সাংস্কৃতিক, সামাজিক তথা আদর্শগতভাবে ভারতকে শতভাগে বিভক্ত করার নানা প্রচেষ্টা সত্ত্বেও কোনও শক্তিই আজ পর্যন্ত ভারতকে পর্যুদস্তু করতে পারেনি।
শ্রী মোদী বলেন, এক উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার লক্ষ্যে বর্তমান সময়কালটিই হল ভারতের এক বিশেষ সূচনাকাল। এই প্রেরণার মূলে রয়েছে ভারতীয় সমাজের অবদান যা সমগ্র জাতিকে অমরত্ব দান করেছে। হাজার হাজার বছর ধরে ভারতের যাত্রাপথে শক্তি যুগিয়েছেন দেশের সমাজবদ্ধ মানুষ। প্রতিটি যুগে এবং প্রতিটি কালেই এই শক্তি পথ দেখিয়েছে ভারতকে।
ভগবান শ্রী দেবনারায়ণজির উদ্দেশে শ্রদ্ধা নিবেদন করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনকল্যাণে দেবনারায়ণজি সেবার এক বিশেষ পরাকাষ্ঠা স্থাপন করে গেছেন। সাধারণ মানুষের কল্যাণ প্রচেষ্টায় তিনি ছিলেন একনিষ্ঠ সাধক। সকলকে সঙ্গে নিয়ে সকলের জন্য কল্যাণ ও উন্নতির পথ দেখিয়ে গেছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ৮-৯ বছর ধরে দেশের প্রতিটি স্তরের মানুষের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে সরকার নানাভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বঞ্চিতদের কল্যাণে দৃষ্টান্ত স্থাপনই আমাদের উদ্দেশ্য।
প্রধানমন্ত্রী অতীতের স্মৃতিচারণ করে বলেন যে দেশের দরিদ্র মানুষকে এক সময় রেশনের পরিমাণ ও গুণমান সম্পর্কে অনিশ্চয়তার মধ্যে থাকতে হত। কিন্তু বর্তমানে প্রতিটি সুফলভোগীই বিনামূল্যে পূর্ণ রেশনের সুযোগ লাভ করেছেন। রোগ ও অসুখ-বিসুখের চিকিৎসার ক্ষেত্রে তাঁরা সুযোগ গ্রহণ করছেন ‘আয়ুষ্মান ভারত’ কর্মসূচির। শুধু তাই নয়, বাসস্থান, শৌচাগার, বিদ্যুৎ ও রান্নার গ্যাসের সংযোগের ক্ষেত্রে দরিদ্র সাধারণ মানুষ দীর্ঘকাল বঞ্চিত থেকে গেছেন। কিন্তু আমরা এখন ঐ সমস্যাগুলির নিরসনে যথেষ্ট তৎপরতা দেখিয়েছি। সর্বসাধারণের আর্থিক অন্তর্ভুক্তির প্রসঙ্গটিও উঠে আসে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে। তিনি বলেন, ব্যাঙ্কের দ্বার এখন সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত।
জলের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে স্বাধীনতার পর বহু দশক অতিক্রান্ত হলেও নিয়মিতভাবে জল সরবরাহের সুযোগ পেতেন দেশের মাত্র ৩ কোটি পরিবার। কিন্তু ১৬ কোটি পরিবারকে জলের জন্য হাহাকার করতে হত। তবে, গত সাড়ে তিন বছরে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রচেষ্টায় ১১ কোটিরও বেশি পরিবারে পাইপলাইনের মাধ্যমে জলের যোগান পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। এমনকি, কৃষিক্ষেত্রেও জলের যোগানে যাতে কোনও অভাব না থাকে তা নিশ্চিত করতেও সার্বিকভাবে কাজ শুরু করা হয়েছে। চিরাচরিত পদ্ধতিতেই হোক বা নতুন প্রযুক্তির প্রয়োগেই হোক, জলসেচের ক্ষেত্রে কৃষকদের যাতে কোনভাবেই অসুবিধার সম্মুখীন হতে না হয় সেজন্য সর্বতোভাবে প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে। ‘প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি’ কর্মসূচির আওতায় রাজস্থানের কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১৫ হাজার কোটি টাকা সরাসরি সুফল হস্তান্তরের মাধ্যমে জমা করে দেওয়া হয়েছে বলে প্রসঙ্গত উল্লেখ করেন তিনি।
সমাজসেবা এবং সামাজিক ক্ষমতায়নের একটি মাধ্যম হিসেবে ভগবান শ্রী দেবনারায়ণজির ‘গো সেবা’ আদর্শের কথাটিও এদিন তাঁর বক্তব্যে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, এই আদর্শকে অনুসরণ করে দেশে ‘রাষ্ট্রীয় কামধেনু আয়োগ’ এবং ‘রাষ্ট্রীয় গোকুল মিশন’ স্থাপন করা হয়েছে কারণ, গ্রামীণ অর্থনীতির মূল অঙ্গই হল ‘পশুধন’, অর্থাৎ গো-সম্পদ। শুধু তাই নয়, আমাদের ঐতিহ্য ও ধর্মীয় আদর্শ তথা ভাবাবেগের সঙ্গে গো-মাতা যুক্ত রয়েছে অঙ্গাঙ্গীভাবে। দেশে পশুপালনের সঙ্গে যুক্ত মানুষদের জন্যও কিষাণ ক্রেডিট কার্ডের সুযোগ-সুবিধা সম্প্রসারিত হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। অন্যদিকে, বর্জ্যকে সম্পদে রূপান্তরিত করতে রূপায়িত হচ্ছে ‘গোবর্ধন’ কর্মসূচিটি।
গত বছর স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে জাতির উদ্দেশে ভাষণদানকালে ‘পঞ্চপ্রাণ’-এর উল্লেখ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেই প্রসঙ্গের অবতারণা করে আজ তিনি বলেন যে দেশবাসীর উচিৎ সমস্ত রকম দাসত্বের মানসিকতাকে পরিহার করে জাতি গঠনের কাজে মনেপ্রাণে নিয়োজিত হওয়া। তিনি বলেন যে রাজস্থান হল একটি ঐতিহ্যমণ্ডিত রাজ্য যেখানে সৃজনশীলতার পাশাপাশি উৎসব উদযাপনের মুহূর্তগুলিও স্মরণীয় হয়ে রয়েছে। এখানে শ্রম ও সাহসিকতার মাধ্যমে দুটি বিশেষ সেবার নিদর্শনকে আমরা চাক্ষুষ করতে পেরেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমগ্র বিশ্ব বর্তমানে এক বিরাট প্রত্যাশা নিয়ে তাকিয়ে রয়েছে ভারতের দিকে। বিশ্বমঞ্চের প্রতিটি ক্ষেত্রে ভারতের স্থির ও অবিচল আত্মবিশ্বাস বিশেষ পরিচিতি লাভ করেছে। ভারত বিশ্বমঞ্চে অন্যান্য দেশের উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরে। তাই, সুনির্দিষ্ট সঙ্কল্প পূরণের মাধ্যমে বিশ্ববাসীর প্রত্যাশা পূরণের লক্ষ্যে আমাদের নিরন্তরভাবে কাজ করে যাওয়া উচিৎ বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
পরিশেষে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে ভগবান শ্রী দেবনারায়ণজি আবির্ভূত হয়েছিলেন একটি পদ্মাসনে। ভারতের জি-২০-র সভাপতিত্বকালে যে থিমটিকে বেছে নেওয়া হয়েছে তার মধ্যেও পদ্মকে পৃথিবীর ধারক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী শ্রী অর্জুন রাম মেঘওয়াল, মালাসেরি ডুগরির প্রধান পুরোহিত শ্রী হেমরাজজি গুর্জর এবং সাংসদ শ্রী সুভাষ চন্দ্র বাহেরিয়া উপস্থিত ছিলেন অন্যান্যদের মধ্যে।
PG/SKD/DM/
भीलवाड़ा में भगवान श्री देवनारायण जी के 1111वें अवतरण महोत्सव समारोह में उपस्थित होना मेरे लिए सौभाग्य की बात है। https://t.co/4FZMOuoXWw
— Narendra Modi (@narendramodi) January 28, 2023
भगवान देवनारायण और जनता जनार्दन, दोनों के दर्शन करके मैं धन्य हो गया हूं: PM @narendramodi in Bhilwara, Rajasthan pic.twitter.com/UQRYUMc1DW
— PMO India (@PMOIndia) January 28, 2023
भारत सिर्फ एक भूभाग नहीं है, बल्कि हमारी सभ्यता की, संस्कृति की, सद्भावना की, संभावना की एक अभिव्यक्ति है। pic.twitter.com/6t9gDge8tv
— PMO India (@PMOIndia) January 28, 2023
भारत की हजारों वर्षों की यात्रा में समाजशक्ति की बहुत बड़ी भूमिका रही है। pic.twitter.com/FGUhCV9RpZ
— PMO India (@PMOIndia) January 28, 2023
बीते 8-9 वर्षों से देश समाज के हर उस वर्ग को सशक्त करने का प्रयास कर रहा है, जो उपेक्षित रहा है, वंचित रहा है। pic.twitter.com/fNAjuP7ZJZ
— PMO India (@PMOIndia) January 28, 2023
हम सभी अपनी विरासत पर गर्व करें, गुलामी की मानसिकता से बाहर निकलें और देश के लिए अपने कर्तव्यों को याद रखें। pic.twitter.com/FPWwXlRlts
— PMO India (@PMOIndia) January 28, 2023
आज पूरी दुनिया भारत की ओर बहुत उम्मीदों से देख रही है।
— PMO India (@PMOIndia) January 28, 2023
हमें अपने संकल्पों को सिद्ध कर दुनिया की उम्मीदों पर खरा उतरना है। pic.twitter.com/P8cez7pL0B