নয়াদিল্লি, ২৬ নভেম্বর, ২০২২
ভারতের প্রধান বিচারপতি বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী শ্রী কিরণজি, বিচারপতি শ্রী কিষাণ কৌলজি, বিচারপতি শ্রী এস আব্দুল নাজিরজি, কেন্দ্রীয় আইন প্রতিমন্ত্রী শ্রী এসপি সিং বাঘেলজি, অ্যাটর্নি জেনারেল শ্রী আর.কে. ভেঙ্কটরমনি জি, সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শ্রী বিকাশ সিংজি, উপস্থিত সমস্ত বিচারক, সম্মানিত অতিথি, ভদ্রমহিলা ও ভদ্রমহোদয়গণ, নমস্কার!
আপনাদের সবাইকে এবং সমস্ত দেশবাসীকে সংবিধান দিবসের অনেক আন্তরিক শুভেচ্ছা! ১৯৪৯ সালে আজকের দিনটিতেই স্বাধীন ভারত নিজের জন্য একটি নতুন ভবিষ্যতের ভিত্তি স্থাপন করেছিল। এবারের সংবিধান দিবস এজন্যেও বিশেষ, কারণ এবার ভারত তার স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্ণ করেছে, সেজন্য আমরা সবাই অমৃত মহোৎসব উদযাপন করছি।
আমি আজ বাবাসাহেব আম্বেদকর সহ যাঁরা আধুনিক ভারতের স্বপ্ন দেখেছিলেন, সংবিধান সভার সেই সকল সদস্যদের, সংবিধান প্রণেতাদের প্রতি আমি শ্রদ্ধার সাথে প্রণাম করছি। গত সাত দশকে সংবিধানের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের যাত্রায় আইনসভা, বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগের অগণিত মানুষ অবদান রেখেছেন। আমি দেশের পক্ষ থেকে তাঁদের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার এই সুযোগটি গ্রহণ করছি।
বন্ধুগণ,
আজ ২৬/১১, মুম্বাই সন্ত্রাসবাদী হামলার দিনও। ১৪ বছর আগে, ভারত যখন তার সংবিধান এবং তার নাগরিকদের অধিকারগুলির উৎসব উদযাপন করছিল, তখন মানবতার শত্রুরা ভারতে সবচাইতে বড় সন্ত্রাসবাদী হামলা চালিয়েছিল। মুম্বাই সন্ত্রাসবাদী হামলায় সেদিন যাঁরা নিহত হয়েছেন, তাঁদের সকলের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই।
বন্ধুগণ,
বর্তমান আন্তর্জাতিক পরিস্থিতিতে সারা বিশ্বের দৃষ্টি ভারতের দিকে রয়েছে। ভারতের দ্রুত বিকাশ, ভারতের দ্রুত বিকাশশীল অর্থনীতি এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ক্রমে শক্তিশালী হয়ে ওঠা ভারতের সামাজিক ও অর্থনৈতিক ছবি, আমাদের দিকে বিশ্ববাসীর অনেক প্রত্যাশাপূর্ণ দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। যে দেশটি তার স্বাধীনতা ধরে রাখতে পারবে না বলে আশঙ্কা ছিল, যে দেশটি দ্রুত ভেঙে যাবে বলে অনেকেই ভেবেছিল, সেই দেশ আজ তার সমস্ত বৈচিত্র্য নিয়ে গর্বিত পূর্ণ শক্তিতে এগিয়ে চলেছে। আর এসবের পেছনে আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি আমাদের সংবিধান।
বন্ধুগণ,
আমাদের সংবিধানের প্রস্তাবনার শুরুতেই যে ‘উই দ্য পিপল’ লেখা রয়েছে, এই তিনটি শব্দ নিছকই শব্দ নয়। এই ‘উই দ্য পিপল’ আসলে একটি আহ্বান, একটি প্রতিজ্ঞা, একটি বিশ্বাস। সংবিধানে লেখা এই ভাবনা সেই ভারতের মূল ভাবনা, যে ভারত বিশ্বে গণতন্ত্রের জননী ছিল, মাদার অফ ডেমোক্রেসি ছিল। এই ভাবনা আমরা দেখেছি, প্রাচীন বৈশালী গণরাজ্যে, বেদের ঋচাগুলিতেও আমরা এই ভাবনা দেখতে পেয়েছি।
মহাভারতেও বলা হয়েছে যে,
লোক-রঞ্জনম এব অত্র, রাজ্ঞাং ধর্মঃ সনাতনঃ।
সত্যস্য রক্ষণং চৈব, ব্যবহারস্য চার্জভম্।।
অর্থাৎ, ‘লোক’ বা নাগরিকদের সুখী রাখা সত্যের পক্ষে দাঁড়িয়ে থাকা এবং সরল ব্যবহার – এটাই রাজ্যের (এখানে রাষ্ট্র) ব্যবহার হওয়া উচিৎ। আধুনিক সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের সংবিধানে দেশের এই সকল সাংস্কৃতিক এবং নৈতিক ভাবনাগুলি সম্পৃক্ত হয়েছে।
আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে, আজ দেশ ‘মাদার অফ ডেমোক্রেসি’ বা গণতন্ত্রের জননী রূপে নিজেদের এই প্রাচীন আদর্শকে এবং সংবিধানের ভাবনাগুলিকে ক্রমাগত শক্তিশালী করে চলেছে। ‘প্রো পিপল পলিসি’ বা জনমুখী নীতির শক্তিতে আজ দেশ এবং দেশের গরীব, দেশের মা ও বোনেরা – প্রত্যেকের ক্ষমতায়ন হচ্ছে। সাধারণ মানুষের জন্য আজ আইনগুলিকে সরল করে পুনঃরচনা করা হচ্ছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিচার সুনিশ্চিত করতে আমাদের বিচার ব্যবস্থার সদস্যরাও একের পর এক নিয়মিত সার্থক পদক্ষেপ নিচ্ছেন। আজও সুপ্রিম কোর্ট দ্বারা চালু করা ‘ই-ইনিশিয়েটিভস্’গুলিকে উদ্বোধন করার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। আমি এই শুভ সূচনার জন্য এবং আপনাদের ‘ইজ অফ জাস্টিস’ – এর স্বার্থে সকল প্রচেষ্টার জন্য আপনাদের সকলকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই।
বন্ধুগণ,
এ বছর ১৫ অগাস্ট তারিখে লালকেল্লার প্রাকার থেকে জাতির প্রতি প্রদত্ত ভাষণে আমি কর্তব্য পালনের উপর জোর দিয়েছিলাম। এটাও ছিল আমাদের সংবিধানেরই ভাবনার একটি বিশেষ অভিব্যক্তি। জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীজী বলতেন যে, “আমাদের অধিকার আমাদের সেই কর্তব্যগুলিই, যেগুলিকে আমরা প্রকৃত ‘ইন্টিগ্রিটি’ এবং ‘ডেডিকেশন’ – এর সঙ্গে পালন করি”। আজ স্বাধীনতার অমৃতকালে যখন আমরা স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষ পূর্ণ করে আগামী ২৫ বছরের জন্য যাত্রা শুরু করছি, তখন সংবিধানের এই মন্ত্র দেশের জন্য একটি সংকল্প হয়ে উঠছে।
স্বাধীনতার এই অমৃতকাল দেশের জন্য কর্তব্যকাল-স্বরূপ। ব্যক্তি হোক কিংবা সংস্থা, আমাদের সকলের দায়িত্বই আজ আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার। নিজেদের কর্তব্য পথে এগিয়ে যেতে যেতেই আমরা দেশকে উন্নয়নের নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিতে পারি। আজ ভারতের সামনে নিত্য নতুন সুযোগ তৈরি হচ্ছে। ভারত সমস্ত প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে এগিয়ে চলেছে।
আর এক সপ্তাহ পর ভারত জি-২০ গোষ্ঠীর সভাপতিত্ব পেতে চলেছে। এটা দেশের জন্য অনেক বড় সুযোগ। আমরা সকলে টিম ইন্ডিয়া রূপে বিশ্ব মানচিত্রে ভারতের প্রতিষ্ঠাকে আরও শক্তিশালী করব, ভারতের অবদানকে বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরবো – এটাও আমাদের সকলের মিলিত দায়িত্ব। স্বাধীনতার জননী হিসাবে ভারতের যে পরিচয়, আমাদের তাকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে হবে।
বন্ধুগণ,
আমাদের সংবিধানের আরেকটি বৈশিষ্ট্য আছে, যা আজ যুবভারতে আরও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। আমাদের সংবিধান প্রণেতারা আমাদের এমন একটি সংবিধান দিয়ে গেছেন, সেটি যতটা উন্মুক্ত, ততটাই ভবিষ্যতমুখী। আর ততটাই নিজস্ব আধুনিক দূরদৃষ্টির জন্য বিশ্ববিদিত। সেজন্য স্বাভাবিকভাবেই আমাদের সংবিধানের প্রাণশক্তি হ’ল যুব-কেন্দ্রিক।
আজ ক্রীড়া ক্ষেত্রে হোক কিংবা স্টার্টআপ, তথ্য প্রযুক্তি হোক কিংবা ডিজিটাল লেনদেন; ভারতের উন্নয়নের প্রতিটি মাত্রায় আজ যুবশক্তি নিজেদের জয় পতাকা উড়িয়ে চলেছে। আমাদের সংবিধান এবং সংস্থাগুলি ভবিষ্যতের দায়িত্বও আমাদের যুবশক্তির কাঁধেই ন্যস্ত হতে চলেছে।
সেজন্য আজ সংবিধান দিবসে আমি সরকারের সমস্ত ব্যবস্থাকে দেশের বিচার ব্যবস্থাকেও একটি অনুরোধ জানাবো। আজকের যুবসম্প্রদায়ের মনে সংবিধান সম্পর্কিত জ্ঞান যেন আরও বাড়ে, তা সুনিশ্চিত করতে তাঁদের জন্য বিভিন্ন সাংবিধানিক বিষয় নিয়ে বিতর্ক সভা এবং আলোচনা সভার আয়োজন করুন এবং নিজেরাও সেখানে অংশগ্রহণ করুন। যখন আমাদের সংবিধান রচিত হয়েছিল, তখন দেশের সামনে কী ধরণের সমস্যা ছিল, কেমন পরিস্থিতি ছিল, সংবিধান সভার বিতর্কের সময় কী কী হয়েছিল, আমাদের যুবসম্প্রদায় যেন এইসব বিষয় নিয়ে অবগত হন, তা সুনিশ্চিত করতে হবে। তবেই তাঁদের মনে সংবিধান নিয়ে আগ্রহ আরও বাড়বে। আর এর ফলে, যুবসম্প্রদায়ের মনে সাম্য এবং ক্ষমতায়নের মতো বিষয়গুলি বোঝার দূরদৃষ্টি গড়ে উঠবে।
উদাহরণ-স্বরূপ, আমাদের সংবিধান সভায় ১৫ জন মহিলা সদস্য ছিলেন। তাঁদের মধ্যে একজনের নাম ছিল দক্সায়িনী ধেলায়ুধন। তিনি দেশের দরিদ্রতম এক বঞ্চিত সমাজের প্রতিনিধি রূপে সংবিধান সভায় পৌঁছেছিলেন। তিনি দেশের দলিত ও মজুরদের স্বার্থ জড়িত বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ অন্তর্ভুক্তি ঘটিয়েছেন। দুর্গাবাঈ দেশমুখ, হংসা মেহতা, রাজকুমারী অমৃত কৌর – এরকম আরও বেশ কিছু সম্মানিত মহিলা সদস্য আমাদের সংবিধানে নারী অধিকার সংক্রান্ত বিষয়গুলি যুক্ত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। সংবিধান নিয়ে আলোচনার সময় তাঁদের অবদান নিয়ে খুব কমই আলোচনা হয়।
যখন আমাদের যুবসম্প্রদায় এদের সম্পর্কে জানতে পারবেন, তখন তাঁদের মনে ওঠা অনেক প্রশ্নের জবাবও তাঁরা খুঁজে পাবেন। এর ফলে, তাঁদের মনে সংবিধানের প্রতি যে নিষ্ঠা জেগে উঠবে, তা আমাদের গণতন্ত্রকে, আমাদের সংবিধানকে এবং দেশের ভবিষ্যতকেও শক্তিশালী করে তুলবে। স্বাধীনতার অমৃতকালে এটাও দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজন-সাধন করবে। আমার আশা যে, এবারের সংবিধান দিবস এই লক্ষ্যে আমাদের সংকল্পগুলিকে আরও বেশি প্রাণশক্তি যোগাবে।
এই বিশ্বাস নিয়ে আপনাদের সকলকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
PG/SB/SB
Addressing a programme on Constitution Day at the Supreme Court. https://t.co/pcTGKhucYc
— Narendra Modi (@narendramodi) November 26, 2022
PM @narendramodi extends Constitution Day greetings to the nation. pic.twitter.com/Xk6l6J8hZp
— PMO India (@PMOIndia) November 26, 2022
PM @narendramodi pays tribute to those who lost their lives during 26/11 terror attack in Mumbai. pic.twitter.com/NjRgk6lbWq
— PMO India (@PMOIndia) November 26, 2022
‘We the people’ एक आह्वान है, एक प्रतिज्ञा है, एक विश्वास है। pic.twitter.com/XTTVOWAQ4e
— PMO India (@PMOIndia) November 26, 2022
आज़ादी का ये अमृतकाल देश के लिए कर्तव्यकाल है। pic.twitter.com/EkmHnQooLv
— PMO India (@PMOIndia) November 26, 2022
Our Constitution is youth centric. pic.twitter.com/t35sgsDrlv
— PMO India (@PMOIndia) November 26, 2022
The eyes of the entire world are set on India. pic.twitter.com/j8Nht97FSt
— PMO India (@PMOIndia) November 26, 2022
आज देश Mother of Democracy के रूप में अपने प्राचीन आदर्शों और संविधान की भावना को लगातार मजबूत कर रहा है। Timely Justice के लिए हमारी Judiciary द्वारा e-initiatives जैसे सार्थक कदम भी इसी का हिस्सा हैं। pic.twitter.com/jcuHbdPn9P
— Narendra Modi (@narendramodi) November 26, 2022
आजादी का ये अमृतकाल देश के लिए कर्तव्यकाल है। व्यक्ति हों या संस्थाएं, दायित्व का निर्वहन ही आज हमारी पहली प्राथमिकता है। pic.twitter.com/3itg5s9ROl
— Narendra Modi (@narendramodi) November 26, 2022
Here is why India’s Constitution is special…. pic.twitter.com/tYO0fBHaXs
— Narendra Modi (@narendramodi) November 26, 2022