Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

গুজরাটের আদালাজ-এ উৎকর্ষ স্কুল মিশনের সূচনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

গুজরাটের আদালাজ-এ উৎকর্ষ স্কুল মিশনের সূচনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ


নমস্কার,

আপনারা কেমন আছেন? হ্যাঁ, আজ এখানে কিছু দারুন মুহুর্ত আপনাদের অপেক্ষায় রয়েছে।

গুজরাটের রাজ্যপাল শ্রী আচার্য দেবব্রতজি, জনপ্রিয় মুখ্যমন্ত্রী শ্রী ভূপেন্দ্র ভাই প্যাটেল, গুজরাট সরকারের মন্ত্রীরা, শিক্ষা জগতের বিশিষ্টজনেরা, গুজরাটের উজ্জ্বল ছাত্রছাত্রীরা, অন্যান্য বিশিষ্টজনেরা, ভদ্রমহোদয়া ও ভদ্রমহোদয়গণ!

আজ গুজরাট ‘তার অমৃত’ প্রজন্মের জন্য ‘অমৃত কাল’ গড়ে তোলার লক্ষ্যে বড় এক পদক্ষেপ নিতে চলেছে। উন্নত ভারতের জন্য উন্নত গুজরাট গড়ার পথে যা এক মাইলফলক হতে চলেছে। আমি গুজরাটের সমস্ত মানুষ, শিক্ষক, তরুণ সহকর্মী এবং ভবিষ্যত প্রজন্মকে উৎকর্ষ স্কুল মিশনের সূচনার জন্য অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাই।

বন্ধুগণ,

সম্প্রতি, আমাদের দেশ মোবাইল এবং ইন্টারনেটের ফাইভজি যুগে প্রবেশ করেছে। আমরা   ওয়াননজি থেকে ফোরজি পর্যন্ত ইন্টারনেট পরিষেবা ব্যবহার করেছি। এখন ফাইভজি দেশজুড়ে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে চলেছে। প্রযুক্তির প্রতিটি প্রজন্মের মাধ্যমে শুধু গতিই বেড়েছে তাই নয়, এর মাধ্যমে  জীবনের প্রায় সব ক্ষেত্রে প্রযুক্তিকে যুক্ত করেছে।

বন্ধুরা,

একইভাবে, আমরা বিভিন্ন সময়কালে দেশের  স্কুলগুলিও দেখেছি। এখন ফাইভজি-র মাধ্যমে অত্যাধুনিক সুযোগ সুবিধা, স্মার্ট ক্লাসরুম এবং উন্নত শিক্ষার সাহায্যে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে উন্নত স্তরে নিয়ে যাবে। এখন আমাদের স্কুলের শিক্ষার্থীরাও খুব সহজেই ভার্চুয়াল ব্যবস্থাপনা এবং ইন্টারনেট অফ থিংসের শক্তি অনুভব করতে পারবে।  উৎকর্ষ স্কুল মিশনের মত  দেশে  অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রথম পদক্ষেপ গুজরাট নেওয়ায় আমি অত্যন্ত  খুশি।  আমি ভূপেন্দ্রভাই, তাঁর সরকার এবং তাঁর পুরো টিমকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাই।

বন্ধুগণ

গত দুই দশকে গুজরাটের শিক্ষাক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন এসেছে  । ২০ বছর আগেও গুজরাটের ১০০ জনের মধ্যে ২০ জনই স্কুলে যেতনা । অর্থাৎ এক-পঞ্চমাংশ ছাত্রছাত্রী লেখাপড়া থেকে বঞ্চিত ছিল। এর উপর আবার অষ্টম শ্রেণীতে পৌঁছানোর আগেই বেশিরভাগ ই স্কুলছুট হয়ে যেত। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, মেয়েদের অবস্থা আরও বেশী খারাপ ছিল। বহু গ্রামে মেয়েদের স্কুলে পাঠানো হত না। উপজাতী প্রধান অঞ্চলে যে শিক্ষা কেন্দ্র ছিল সেখানে বিজ্ঞান নিয়ে পড়ার  কোনো সুযোগও ছিল না। আজ জিতুভাই এবং তার টিমের সদস্যরা যে উদ্যোগ নিয়েছেন, তার জন্য আমি খুব খুশি, আমি আপনাদের অভিনন্দন জানাই। যেহেতু আপনারা বেশিরভাগই জানেন না সেই সময় ঠিক কি কি ঘটেছিল, তাই আমি আপনার সঙ্গে সেই বিষয়গুলি ভাগ করে নিতে চাই।

আমি এখন যাঁদের সঙ্গে দেখা করেছি তারা প্রথমবার ২০০৩ সালে স্কুলে ভর্তি হয়েছিল। জুনের মাঝামাঝি এক সময়ে আমি  একটি আদিবাসী গ্রামে যাই। তখন তাপমাত্রা ছিল প্রায় ৪০-৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি। আমি এমন একটা গ্রামে গিয়েছিলাম যেখানে ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার চল খুব কম ছিল, আর মেয়েদের অবস্থা ছিল অত্যন্ত খারাপ। আমি গ্রামবাসীদের বললাম যে আমি তাদের কাছে কিছু চাইতে এসেছি। তারা যাতে তাদের মেয়েদের শিক্ষিত করে তোলেন সেই প্রতিশ্রুতি আমি চেয়েছিলাম। সেদিন যারা ছোট ছিলো, তাঁদের সঙ্গে আবারো দেখা করতে পেরে আমি আজ  নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি, এঁদেরকেই আমি প্রথমবার স্কুলে নিয়ে গিয়েছিলাম। আমার অনুরোধ মেনে নেওয়ার জন্য আমি সেই সব বাবা-মা-দের প্রণাম জানাই। আমি শুধু তাদের স্কুলে পৌছে দিয়েছিলাম। কিন্তু শিক্ষার গুরুত্ব বুঝতে পেরে তারা তাদের সন্তানদের সাধ্যমতো পড়াশোনা করিয়েছেন এবং আজ সেদিনের সেই শিশুরা স্বাধীন হয়েছেন। আমাকে যাঁদের স্কুলে যাওয়া আমি নিশ্চিত করেছিলাম, সেদিনের সেই বাচ্চাদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য আমি গুজরাট সরকার এবং জিতুভাইকে অভিনন্দন জানাই ।

বন্ধুগণ,

গত দুই দশকে গুজরাটের জনগণ রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থায় যথেষ্ট পরিবর্তন এনেছেন। এই দুই দশকে গুজরাটে ১ লক্ষ ২৫ হাজারেরও বেশি নতুন শ্রেণীকক্ষ তৈরি করা হয়েছে এবং ২ লক্ষেরও বেশি শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগ করা হয়েছে। আমার এখনও সেই দিনের কথা মনে পরে, যেদিন ‘শলা  প্রবেশোৎসব’ (প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের নথিভুক্ত করার অভিযান) এবং ‘কন্যা কেলাবানী মহোৎসব’ ( প্রথাগত শিক্ষায় মেয়েদের অগ্রাধিকার দিয়ে বিশেষ অভিযান ) শুরু হয়েছিল। প্রথমবার ছেলে মেয়ে স্কুলে গেলে তা উৎসব হিসেবে উদযাপন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। ক আমরা দেশের নতুন প্রজন্মকে শিক্ষিত করার উদ্যোগ নিয়েছি তাই সেটি পরিবার, এলাকায় এবং পুরো গ্রামে উদযাপন হওয়া উচিত। মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে, আমি নিজে গ্রামে গ্রামে গিয়েছিলাম এবং সমস্ত লোককে তাদের মেয়েদের স্কুলে পাঠাতে অনুরোধ করেছিলাম । আজ গুজরাটের প্রায় সব ছেলে মেয়ে স্কুল-কলেজে যেতে শুরু করেছে।

বন্ধুগণ,

আমরা শিক্ষার গুণগত মান ও ফলাফলের ওপরও সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছি। তাই আমরা ‘প্রবেশোৎসব’-এর পাশাপাশি ‘গুণোৎসব’ শুরু করেছি। একটি শিশু কতটা শিখতে পেরেছে, তার ফলাফল মূল্যায়নের এটি একটি উদ্যোগ।    প্রতিটি ছাত্রছাত্রীকে তার যোগ্যতা, আগ্রহ এবং কোথায় আগ্রহ নেই সেই দিকগুলি বিবেচনা করে তাদের  মূল্যায়ন করা হয়েছিল। একই সঙ্গে শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরও মূল্যায়ন করা হয়।

স্কুল বিভাগ ছাড়াও আমাদের আমলা,  পুলিশ অফিসার এবং বনবিভাগের কর্মকর্তারাও সচেতনতার কর্মসূচীর আওতায় তিন দিনের জন্য গ্রামে গ্রামে নানা স্কুলে যেতেন।

কিছু দিন আগে গান্ধীনগরে সফরকালে, আমি শিক্ষা পর্যালোচনা কেন্দ্র বা বিদ্যা পরীক্ষা কেন্দ্রে ‘গুণোৎসব’-এর  উন্নত, প্রযুক্তি-ভিত্তিক একটি সংস্করণ দেখে খুশি হয়েছিলাম। কেন্দ্রীয় সরকার এবং শিক্ষামন্ত্রী সম্প্রতি গান্ধীনগরে দেশের সব রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী এবং শিক্ষা দফতরের আধিকারিকদের একটি বৈঠক ডেকেছিলেন। সেখানে ‘বিদ্যা পরীক্ষা কেন্দ্র’-এর ধারণা বুঝতে প্রত্যেকের মধ্যে আগ্রহ দেখা এখন বিভিন্ন রাজ্যের প্রতিনিধিরা ‘বিদ্যা পরীক্ষা কেন্দ্র’-র বিষয়ে খোঁজ নিতে আসেন এবং তাদের নিজ নিজ রাজ্যে সেই মডেলটি অনুকরণ করার চেষ্টা করেন। এই প্রয়াসের জন্য গুজরাট অবশ্যই অভিনন্দনের দাবিদার।

রাজ্যের স্কুল শিক্ষা ব্যবস্থার বিষয়ে সার্বিকভাবে তথ্য পাওয়ার জন্য একটি কেন্দ্রীয় ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছে। এই  উদ্ভাবনী উদ্যোগের আওতায় গুজরাটের হাজার হাজার স্কুলের লক্ষাধিক শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং প্রায় ১ কোটি ২৫ লক্ষ ছাত্রছাত্রীর এখানে পর্যালোচনা করা হয় এবং তাদের মতামত দেওয়া হয়। এ কাজে বিগ ডেটা অ্যানালাইসিস, মেশিন লার্নিং, কৃত্রিম মেধা এবং ভিডিও ওয়ালের মতো প্রযুক্তির সাহায্যে তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়। শিশুরা যাতে আরো ভালো ফল করতে পারে, তার জন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হয়।

বন্ধুগণ

শিক্ষাক্ষেত্রে নতুন নতুন, অনন্য পরীক্ষা নিরীক্ষা করা গুজরাটের ডিএনএ-র মধ্যে রয়েছে। এটাই আমাদের স্বভাব।  গুজরাটেই প্রথম শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রশিক্ষণের জন্য ইন্সটিটিউট অফ টিচার্স এডুকেশন গড়ে তোলা হয়। বিশ্বের একমাত্র শিশু বিশ্ববিদ্যালয় এখানেই গড়ে উঠেছে। সরকারি ব্যবস্থাপনায় সুশৃঙ্খল কর্মসংস্কৃতি, খেলাধুলার প্রতি গুজরাটের যুবকদের আগ্রহ সহ সার্বিক যে পরিবেশ রাজ্যে রয়েছে তার ফলেই এখানে সুন্দরভাবে ‘খেল মহাকুম্ভ’ আয়োজন সম্ভব হয়েছে। দীর্ঘদিন পর আবারো গুজরাটে জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর জন্য প্রচুর প্রশংসা পাওয়া গেছে। আমি নিজে খেলোয়াড় এবং তাদের প্রশিক্ষকদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলাম। তারা আমাকে এই উদ্যোগের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন। আমি তাদের বলি, আমি নই – গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী এবং গুজরাট সরকার সমস্ত প্রশংসার দাবিদার। তাদের উদ্যোগ এবং কঠোর পরিশ্রমের কারণেই এই রাজ্যে দেশের বৃহৎ এই  ক্রীড়া উত্সব হয়েছিল। সমস্ত খেলোয়াড় বলেছেন আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট চলাকালীন আতিথেয়তা এবং ব্যবস্থাপনা থাকে তাঁরা সেগুলি গুজরাটেও পেয়েছেন। প্রকৃত অর্থে গুজরাট এই প্রতিযোগিতা সফলভাবে আয়োজন করে, ক্রীড়াজগতকে উত্সাহিত করেছে এবং উচ্চ মান নিশ্চিত করেছে। আমি গুজরাট সরকার, সমস্ত কর্মকর্তা এবং ক্রীড়া জগতের সঙ্গে যুক্ত, সকলকে এর জন্য আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।

বন্ধুগণ

এক দশক আগে গুজরাটের ১৫,০০০ স্কুলে টিভি  পৌঁছেছিল। তারও অনেক আগে রাজ্যে ২0,000-এরও বেশি স্কুলে কম্পিউটার ল্যাব সহ নানা ব্যবস্থাপনা একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছিল। আজ গুজরাটে এক কোটিরও বেশি ছাত্রছাত্রী এবং চার লক্ষ শিক্ষক-শিক্ষিকা অনলাইনে নানা তথ্য সংগ্রহ করেন। আর এখন রাজ্যের ২০ হাজার স্কুলে  ফাইভজি প্রযুক্তি ব্যবহার করা যাবে। উৎকর্ষ স্কুল মিশনের আওতায়, এই স্কুলগুলিতে অত্যাধুনিক  ৫০,০০০ নতুন শ্রেণীকক্ষ এবং এক লক্ষেরও বেশি স্মার্ট ক্লাসরুম তৈরি করা হবে। স্কুলগুলিতে আধুনিক, ডিজিটাল উন্নত এক পরিকাঠামো  শিশুদের জীবনে এবং তাদের শিক্ষার ক্ষেত্রেও আমূল পরিবর্তন আনবে। এখানে শিশুদের দক্ষতা বাড়াতে সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাদের শক্তি এবং উন্নতির উপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে।

বন্ধুগণ

ফাইভজি  প্রযুক্তির সাহায্যে খুব সহজেই এরপর  শেখা যাবে। যদি টুজি, ফোরজি এবং ফাইভজি কে সহজ ভাষায় ব্যাখ্যা করতে হয় তাহলে বলবো ফোরজি হল একটি সাইকেল, অন্যদিকে ফাইভজি হল একটি বিমান। নিছক গ্রাম্য ভাষায় আমি তো প্রযুক্তির এই বিষয়ে এভাবেই  ব্যাখ্যা করব।

গুজরাটকে আমি অভিনন্দন জানাই, কারণ এই রাজ্য ফাইভজি-র ক্ষমতা উপলব্ধি করেছে এবং আধুনিক শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা বুঝতে পেরেছে যা আগামী দিনে গুজরাটের ভাগ্য পরিবর্তন করবে। প্রতিটি শিশু তার চাহিদা অনুযায়ী শেখার সুযোগ পাবে। প্রত্যন্ত গ্রামের স্কুলে এই ব্যবস্থা খুবই সহায়ক হবে। এর মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলে সেরা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পাওয়া যাবে। তাঁরা হাজার হাজার কিলোমিটার দূরে থাকবেন ঠিকই, কিন্তু মনে হবে যেন তিনি ক্লাসেই হাজির আছেন। প্রতিটি বিষয়ের সেরা বিষয়বস্তু সকলের আয়ত্ত্বের মধ্যে আসবে। শ্রেষ্ঠ শিক্ষক শিক্ষিকারা এখন ভার্চুয়াল মাধ্যমে বিভিন্ন গ্রাম এবং শহরের শিশুদের পড়াতে পারবেন। এর ফলে বিভিন্ন স্কুলের মানের মধ্যে যে তফাৎ দেখা যায় তা দূর করতেও অনেক সুবিধা হবে।

অত্যাধুনিক স্কুলগুলি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র,  বাল বাটিকা, কেরিয়ার নিয়ে পরামর্শ এবং প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি সংক্রান্ত শিক্ষার্থীদের সব ধরণের প্রয়োজন মেটাবে। কলা, কারুশিল্প, ব্যবসা, কোডিং এবং রোবোটিক্স ౼ ছোটবেলা থেকেই এখানে সবধরনের শিক্ষা পাওয়া যাবে। এর মধ্য দিয়ে নতুন জাতীয় শিক্ষানীতির প্রতিটি বিষয়  বাস্তবায়িত হবে।

ভাই ও বোনেরা

বর্তমানে, কেন্দ্রীয় সরকার, নতুন জাতীয় শিক্ষা নীতির মাধ্যমে সমগ্র দেশে একই ধরনের পরিবর্তনকে উৎসাহিত করছে।  কেন্দ্রীয় সরকারও এখন দেশজুড়ে ১৪ হাজার ৫শোর বেশি পিএমশ্রী স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারতের বিভিন্ন স্থানে এই পাইলট প্রকল্প শুরু হবে। প্রায় এক বছর ধরে এটি পর্যবেক্ষণ করা হবে। পরিবর্তনশীল প্রযুক্তির প্রয়োগে কিছু ত্রুটি থাকলে বা নতুন কিছু যোগ করার প্রয়োজন হলে তা করা হবে। ভবিষ্যতে একে নিখুঁত মডেল হিসেবে দেশের বেশীরভাগ স্কুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হবে। এই স্কুলগুলোই সারাদেশে নতুন জাতীয় শিক্ষানীতির মডেল স্কুল হয়ে উঠবে।

কেন্দ্রীয় সরকার এই প্রকল্পে ২৭০০০ কোটি টাকা ব্যয় করতে চলেছে। এই স্কুলগুলি নতুন জাতীয় শিক্ষা নীতিকে যথাযথভাবে প্রয়োগ করবে যা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে ভাবনা চিন্তাকে অগ্রাধিকার দেবে এবং শিশুরা তাদের নিজ ভাষায় উন্নত শিক্ষা পাবে। এই স্কুলগুলি বাকি স্কুলগুলিকে পথ দেখাবে।

বন্ধুগণ,

স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসবে দেশ পরাধীনতার মানসিকতা থেকে মুক্ত হবার অঙ্গীকার করেছে। নতুন জাতীয়  শিক্ষানীতি দেশকে দাসত্বের মানসিকতা থেকে বের করে এনে মেধা ও উদ্ভাবনে উৎসাহিত করবে। ভেবে দেখুন, দেশের অবস্থা কী ছিল? ইংরেজি ভাষা জানাকে বুদ্ধিমত্তার মাপকাঠি বলে ভাবা হত। অথচ ভাষা হল যোগাযোগের একটি মাধ্যম মাত্র। কিন্তু এই ভাষাই এতদিন ধরে এমন এক বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল যে দেশের গ্রামাঞ্চলের ও দরিদ্র পরিবারগুলি মেধা সম্পদের সুফল পায়নি। মেধাবী ছেলেমেয়েরা যে ভাষায় বোঝে তাতে পড়াশোনার সুযোগ না পাওয়ায়, তাঁরা ডাক্তার ও ইঞ্জিনিয়ার হতে পরাননি। এখন এই অবস্থার পরিবর্তন করা হচ্ছে। ছাত্রছাত্রীরা এখন  ভারতীয় ভাষায়ও বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ডাক্তারি ইত্যাদি বিষয়ে পড়ার সুযোগ পেতে শুরু করেছে।

গরীব এক মা, যিনি তাঁর সন্তানকে ইংরেজি স্কুলে পড়াতে পারেন না, তিনিও তাকে ডাক্তার বানানোর স্বপ্ন দেখতে পারেন। একটি শিশু তার মাতৃভাষায় পড়াশোনা করেও যাতে ডাক্তার হতে পারে, আমরা সেই বিষয়ে কাজ করছি। বেশ কয়েকটি ভারতীয় ভাষার পাশাপাশি গুজরাটি ভাষায়ও পঠনপাঠন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উন্নত ভারতের জন্য সকলে মিলে উদ্যোগী হতে হবে, এখন সেই সময় এসেছে। দেশে এমন কেউ থাকবেন উচিত নয় যিনি কোনো কারণে কোন বিষয়ে বাদ পড়বেন। নতুন জাতীয় শিক্ষানীতির এই ভাবনা নিয়েই এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।

বন্ধুগণ,

প্রাচীনকাল থেকেই ভারতের উন্নয়নের মূল ভিত্তি হল শিক্ষা। স্বাভাবিকভাবেই আমরা জ্ঞানচর্চার সমর্থক। আমাদের পূর্বপুরুষরা জ্ঞান-বিজ্ঞানে একটি প্রভাব বিস্তার করেছিলেন, শত শত বছর আগে বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলি গড়ে তুলেছিলেন এবং বৃহত্তম গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এরপর একটা সময় এল যখন  হানাদাররা ভারতের এই সম্পদ ধ্বংস করার অভিযান চালায়। কিন্তু ভারত শিক্ষার বিষয়ে তার মনোভাব পরিবর্তন করেনি। অত্যাচার সহ্য করলেও শিক্ষার পথ থেকে বিচ্যুত হয় নি।

তাই  জ্ঞান, বিজ্ঞান ও উদ্ভাবনের জগতে আজও আমাদের আলাদা পরিচিতি রয়েছে। স্বাধীনতার ‘অমৃত কাল’-এ সেই  প্রাচীন গৌরব পুনরুদ্ধারের সুযোগ এসেছে। বিশ্বের সেরা জ্ঞানচর্চার অর্থনীতি হয়ে ওঠার অপার সম্ভাবনা ভারতের  রয়েছে এবং সুযোগও তার অপেক্ষায়। বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবন সম্পর্কিত বেশিরভাগ উদ্ভাবন একবিংশ শতকে ভারতেই হবে। আমার দেশের যুবসম্প্রদায়ের প্রতি আমার আস্থা আছে। তাঁদের প্রতিভার কারণে আমি এই কথা বলার সাহস পেয়েছি।

এ ক্ষেত্রে গুজরাটেরও বিশাল সুযোগ রয়েছে। এতদিন গুজরাটের পরিচয় ছিল আমরা ব্যবসা বাণিজ্য করি। আমরা এক জায়গা থেকে জিনিস কিনে করে, অন্য জায়গায় বিক্রি করে এবং দালালির মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ ক্রি। গুজরাট এই তকমা থেকে বেরিয়ে এসেছে এবং ধীরে ধীরে উৎপাদন ক্ষেত্রে তার পরিচিতি হচ্ছে। গুজরাট একবিংশ শতাব্দীতে দেশের জ্ঞান ও উদ্ভাবনের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠছে। আমি নিশ্চিত যে গুজরাট সরকারের উৎকর্ষ স্কুল মিশন এই ভাবনাকে শক্তিশালী করবে।

বন্ধুগণ,

আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পেরে আমি নিজেকে ভাগ্যবান বলে মনে করছি। মাত্র এক ঘণ্টা আগে দেশের প্রতিরক্ষা শক্তির কর্মসূচির এক অনুষ্ঠানে ছিলাম আর এখন গুজরাটে দেশের জ্ঞানশক্তির এই কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার সুযোগ পেলাম। এই কর্মসূচীর পরে, আমি জুনাগড় এবং রাজকোটে যাচ্ছি যেখানে সমৃদ্ধির বিষয়গুলি গুরুত্ব পাবে।

বন্ধুগণ,

আরো একবার, আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে আমি গুজরাটের শিক্ষা জগত, আগামী প্রজন্ম এবং তাদের বাবা-মাদের  আমার শুভেচ্ছা জানাই। ভূপেন্দ্রভাই এবং তার টিমকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন!

ধন্যবাদ

প্রধানমন্ত্রীর মূল ভাষণটি হিন্দিতে ছিল।