নয়াদিল্লি, ২৭ অগাস্ট, ২০২২
গুজরাটের জনপ্রিয় মুখ্যমন্ত্রী শ্রী ভূপেন্দ্রভাই প্যাটেলজী, সংসদে আমার সহযোগী এবং ভারতীয় জনতা পার্টির গুজরাট শাখার সভাপতি শ্রী সি আর প্যাটেলজী, গুজরাট সরকারের মন্ত্রী ভাই জগদীশ পাঞ্চাল, ভাই হর্ষ সংভি, আহমেদাবাদের মেয়র কীরিটভাই, কেভিআইসি-র চেয়ারম্যান মনোজজী, উপস্থিত অন্যান্য শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিবর্গ এবং গুজরাটের নানা প্রান্ত থেকে বিপুল সংখ্যায় সমাগত আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা,
সবরমতীর এই তট আজ ধন্য হয়ে গেছে। স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ৭৫ শ বা ৭ হাজার ৫০০ বোন ও কন্যারা একসঙ্গে চরকায় সুতো কেটে নতুন ইতিহাস রচনা করেছেন। এটা আমার সৌভাগ্য যে, আজ আমিও কিছুক্ষণ সময় চরকা চালানোর অভ্যাস করার এবং সুতো কাটার সুযোগ পেয়েছি। আমি আজ এই চরকা চালাতে গিয়ে কিছুটা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলাম। আমার ছোটবেলার কথা মনে পড়ছিল। কারণ, আমাদের বাড়ির ছোট্ট ঘরে এক কোণায় এই সরঞ্জামগুলি রাখা থাকতো, আর আমার মা যখনই সময় পেতেন, আর্থিক উপার্জনের জন্য সুতো কাটতে বসতেন। আজ আমার মনে সেই স্মৃতি জেগে উঠেছিল। আজ আমার মনে হচ্ছিল যে, অতীতে যেমন ছিল, তেমন বর্তমানেও ভক্ত যেমন ভগবানের পূজার জন্য বিভিন্ন সামগ্রী সাজিয়ে বসেন, এই সুতো কাটার প্রক্রিয়াও তেমনই অনেকের কাছে ঈশ্বরের আরাধনার থেকে কম কিছু নয়।
স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় এই চরকা যেন দেশের হৃদস্পন্দনে পরিণত হয়েছিল। সেই হৃদস্পন্দন যেন আজ আমি এখানে সবরমতী তটে বসে অনুভব করতে পারছি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে, এখানে উপস্থিত সকলে,এই অনুষ্ঠান যাঁরা দেখছেন, প্রত্যেকে আজ এখানে খাদি উৎসবের এই প্রাণশক্তিকে অনুভব করছেন। স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসবে দেশ আজ এই খাদি মহোৎসব আয়োজনের মাধ্যমে তাঁর স্বাধীনতা সংগ্রামীদের অনেক সুন্দর উপহার দিয়েছে। আজই গুজরাট রাজ্য খাদি গ্রামোদ্যোগ পর্ষদের নতুন ভবন এবং সবরমতী নদীতে অনিন্দ্যসুন্দর অটল সেতুরও শুভ উদ্বোধন হ’ল। আমি আহমেদাবাদ তথা গুজরাটের মানুষকে আজ এই একটি নতুন পর্যায়ে এসে দাঁড়ানোর জন্য নতুন উদ্যম নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও শুভকামনা জানাই।
বন্ধুগণ,
অটল সেতু সবরমতী নদীর দু’পারকেই শুধু পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত করেনি, এটি তার অনুপম নকশা ও নির্মাণে উদ্ভাবন শক্তির মাধ্যমে একটি অভূতপূর্ব দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এর নকশা রচনার সময় গুজরাটের বিখ্যাত ঘুড়ি মহোৎসবের কথাও মাথায় রাখা হয়েছে। গান্ধীনগর তথা গুজরাট থেকে অটলজী সর্বদাই অনেক শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা পেয়েছেন। ১৯৯৬ সালে অটলজী এই গান্ধীনগর থেকেই রেকর্ড পরিমাণ ভোট পেয়ে লোকসভা নির্বাচনে জিতেছিলেন। এই অটল সেতু এখানকার জনগণের পক্ষ থেকে তাঁর পুণ্য স্মৃতির প্রতি একটি ভাবগম্ভীর শ্রদ্ধাঞ্জলিও।
বন্ধুগণ,
কিছুদিন আগে গুজরাট সহ গোটা দেশে স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে অত্যন্ত উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব পালিত হয়েছে। গুজরাটের প্রতিটি গ্রামে, প্রত্যেক গলিতে, প্রতিটি বাড়িতে, ভারতের ত্রিবর্ণরঞ্জিত জাতীয় পতাকা উত্তোলন নিয়ে যে উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা গিয়েছে, তা অভূতপূর্ব। চারদিকে সকলের মনে তেরঙ্গা, সকলের দেহে তেরঙ্গা, প্রত্যেক মানুষ তেরঙ্গা, প্রত্যেকের উৎসাহে তেরঙ্গা, উদ্দীপনায় তেরঙ্গা – এই চিত্র আমরা সকলে দেখেছি। এই যে একের পর এক তেরঙ্গা নিয়ে শোভাযাত্রা বেরিয়েছে, গ্রামে গ্রামে, শহরে শহরে প্রভাতফেরি হয়েছে, এতে দেশভক্তির জোয়ার তো দেখা গেছেই, তার সঙ্গে অমৃতকালে উন্নত ভারত নির্মাণের সংকল্পও দেখা গেছে। এই সংকল্প আজ এখানে খাদি উৎসবেও দেখা যাচ্ছে। চরকায় যাঁরা সুতো কেটেছেন, তাঁরা প্রত্যেকেই নিজেদের হাতে ভবিষ্যৎ ভারতের বুনিয়াদ রচনা করেছে।
বন্ধুগণ,
ইতিহাস সাক্ষী রয়েছে যে, খাদির একটি সুতো স্বাধীনতা আন্দোলনের শক্তি হয়ে ওঠার ক্ষমতা রাখে, দাসত্বের শৃঙ্খল ভেঙে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। তেমনই, আজ খাদি একটি সুতো উন্নত ভারতের শপথকে বাস্তবায়িত করার আত্মনির্ভর ভারতের স্বপ্ন পূরণের প্রেরণার উৎস হয়ে উঠতে পারে। যেমন একটি প্রদীপের আকার যত ছোটই হোক না কেন, সে অন্ধকারকে হারিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। তেমনই আমাদের খাদির মতো পরম্পরাগত শক্তি ভারতকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেওয়ার প্রেরণাশক্তি হয়ে উঠতে পারে। সেজন্য এই খাদি উৎসব স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসকে পুনরুজ্জীবিত করার একটি পবিত্র প্রচেষ্টা। এই খাদি উৎসব ভবিষ্যতে উজ্জ্বল ভারতের সংকল্পকে বাস্তবায়িত করার ক্ষেত্রে প্রেরণা জোগাবে।
বন্ধুগণ,
এ বছর ১৫ আগস্টে আমি লালকেল্লার প্রাকার থেকে ৫টি শপথের কথা উল্লেখ করেছি। আজ সবরমতীর তটে দাঁড়িয়ে এই পুণ্যসলীলা নদীকে সামনে রেখে আমি সেই ৫টি শপথকে পুনরুচ্চারণ করতে চাই। প্রথমতঃ, দেশের সামনে এক বিশাল লক্ষ্য রয়েছে, তা হল – উন্নত ভারত গড়ে তোলা। দ্বিতীয়তঃ, দাসত্বের মানসিকতা থেকে সম্পূর্ণ মুক্তি। তৃতীয়তঃ, আমাদের ঐতিহ্যের প্রতি গর্ববোধ করা। চতুর্থতঃ, দেশের একতা বাড়ানোর জন্য কঠোর পরিশ্রম এবং পঞ্চমতঃ, যথাযথ নাগরিক দায়িত্ব পালন।
আজকের এই খাদি উৎসব এই পঞ্চ শপথের একটি সুন্দর প্রতিবিম্ব। এই খাদি উৎসবের একটি বিরাট লক্ষ্য আমাদের ঐতিহ্যের জন্য গর্ব, গণঅংশীদারিত্ব, আমাদের কর্তব্য – এই সবকিছুর সমন্বয়। আমাদের খাদিও দাসত্বের মানসিকতার অনেক বড় ভুক্তভোগী। স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় যে খাদি আমাদের মনে স্বদেশী ভাবনাকে জাগ্রত করেছিল, স্বাধীনতার পর সেই খাদিকে তাচ্ছিল্যের নজরে দেখা হয়েছে। স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় যে খাদিকে গান্ধীজী দেশের আত্মাভিমানের প্রতীক করে তুলেছিলেন, সেই খাদিকে স্বাধীনতার পর হীন ভাবনায় জর্জরিত করে তোলা হয়েছিল। এর ফলে, খাদি ও খাদি সংশ্লিষ্ট গ্রামোদ্যোগ সম্পূর্ণ রূপে ধ্বংস হয়ে গেছে। খাদির এই দূরাবস্থা, বিশেষ করে গুজরাটের জন্য অত্যন্ত পীড়াদায়ক। কারণ, গুজরাটের সঙ্গে খাদির একটি বিশেষ সম্পর্ক আছে।
বন্ধুগণ,
আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে, এই গুজরাটের মাটিতেই আরেকবার খাদি পুনরুজ্জীবনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমার মনে আছে যে, ২০০৩ সালে খাদির দুর্দশা দূর করতে আমি গান্ধীজীর জন্মস্থান পোরবন্দর থেকে বিশেষ অভিযান শুরু করেছিলাম। তখন আমরা ‘খাদি ফর নেশন’ – এর পাশাপাশি, ‘খাদি ফর ফ্যাশন’ – এর সংকল্প নিয়েছিলাম। সেই সময় গুজরাটে খাদি জনপ্রিয় করে তুলতে অনেক ফ্যাশন শো-র আয়োজন করা হয়েছিল। অনেক বিখ্যাত শিল্পীদের এই অভিযানে যুক্ত করা হয়েছিল। তখন অনেকেই আমাদের নিয়ে ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করেছিলেন, তাচ্ছিল্য দেখিয়েছিলেন। কিন্তু খাদি ও গ্রামোদ্যোগের প্রতি কোনও রকম উপেক্ষা গুজরাটবাসী মেনে নিতে পারেনি। গুজরাট সম্পূর্ণ সমর্পণ ভাব নিয়ে এগিয়ে গেছে এবং খাদিকে পুনরুজ্জীবিত করে দেখিয়েছে।
২০১৪ সালে যখন আপনারা আমাকে দিল্লির দায়িত্ব নেওয়ার আদেশ দিলেন, তখন গুজরাট থেকে পাওয়া এই প্রেরণাকে আমি আরও এগিয়ে নিয়ে গেছি। এর পরিধিকে আরও বিস্তারিত করেছি। আমি ‘খাদি ফর নেশন, খাদি ফর ফ্যাশন’ – এর সঙ্গে ‘খাদি ফর ট্রান্সফরমেশন’ এর সংকল্পকে যুক্ত করেছি। আমি গুজরাটের সাফল্যের অভিজ্ঞতাকে সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে শুরু করেছি। সারা দেশে খাদি সংক্রান্ত যত সমস্যা ছিল, সেগুলিকে দূর করা হয়েছে। আমরা দেশবাসীকে খাদি পণ্য কেনার জন্য উৎসাহিত করেছি। এর ফল আজ সারা পৃথিবী দেখছে।
আজ ভারতের টপ ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলি নিজেরাই খাদির সঙ্গে যুক্ত হওয়ার জন্য এগিয়ে আসছেন। আজ ভারতে খাদির রেকর্ড উৎপাদন যেমন হচ্ছে, তেমনই রেকর্ড বিক্রিও হচ্ছে। বিগত ৮ বছরে দেশে চার গুণেরও বেশি খাদি বিক্রি হয়েছে। আজ প্রথমবার ভারতের খাদি ও গ্রামোদ্যোগের টার্নওভার ১ লক্ষ কোটি টাকার বেশি হয়েছে। খাদির এই বিক্রি বৃদ্ধির ফলে আপনারাই সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছেন। আমার দেশের গ্রামে গ্রামে বসবাসকারী খাদির সঙ্গে যুক্ত থাকা ভাই-বোনেরা উপকৃত হয়েছেন।
খাদি বিক্রি বৃদ্ধির ফলে দেশের গ্রামগুলিতে বেশি টাকা গেছে, গ্রামেই প্রচুর কর্মসংস্থান হয়েছে। বিশেষ করে, মা ও বোনের বেশি ক্ষমতায়ন হয়েছে। বিগত ৮ বছরে শুধু খাদি ও গ্রামোদ্যোগ ক্ষেত্রে ১ কোটি ৭৫ লক্ষ নতুন কর্মসংস্থান হয়েছে। আর বন্ধুগণ, এখন গুজরাটে ‘গ্রিন খাদি’ অভিযান শুরু হয়েছে। এখন গুজরাটের গ্রামে গ্রামে সৌর চরকা দিয়ে খাদি উৎপাদন শুরু হয়েছে। কারিগরদের সৌর চরকা বিতরণ করা হচ্ছে। অর্থাৎ গুজরাট আরেকবার গোটা দেশকে নতুন পথ দেখাচ্ছে।
বন্ধুগণ,
ভারতের খাদি শিল্পের ক্রমবর্ধমান শক্তির পেছনে নারী শক্তির অনেক বড় অবদান রয়েছে। আমাদের বোন ও কন্যাদের মধ্যেও শিল্প ভাবনার প্রতিভা পরিলক্ষিত হয়েছে। এর প্রমাণ, গুজরাটে সখী মন্ডলগুলির সম্প্রসারণ। এক দশক আগে আমরা গুজরাটে বোনেদের ক্ষমতায়নের জন্য ‘মিশন মঙ্গলম’ শুরু করেছিলাম। আজ গুজরাটের বোনেদের ২ লক্ষ ৬০ হাজারেরও বেশি স্বনির্ভর গোষ্ঠী গড়ে উঠেছে। এগুলির মধ্যে ২৬ লক্ষেরও বেশি গ্রামীণ বোনেরা যুক্ত রয়েছেন। ডবল ইঞ্জিন সরকারের ডবল সহায়তায় সখী মন্ডলগুলি পল্লবিত- পুষ্পিত হয়ে উঠেছে।
বন্ধুগণ,
আমাদের বোন ও কন্যাদের এই শক্তিই অমৃতকালে দেশে আসল কার্যকারিতা সৃষ্টি করতে চলেছে। আমরা চাইছি, দেশের মেয়েদের অধিক কর্মসংস্থান। মেয়েরা যেন তাদের পছন্দসই পেশায় যুক্ত হতে পারেন। এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের মুদ্রা যোজনা অনেক বড় ভূমিকা পালন করছে। একটা সময় ছিল, যখন সামান্য ঋণ নেওয়ার জন্য বোনেদের নানা জায়গায় হাত পাততে হ’ত। আজ মুদ্রা যোজনার মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকা থেকে শুরু ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত কোনও রকম গ্যারান্টি ছাড়া ঋণ দেওয়া হচ্ছে। দেশের কোটি কোটি বোন ও কন্যারা এই মুদ্রা যোজনার মাধ্যমে ঋণ নিয়ে প্রথমবার নিজের ব্যবসা বা শিল্পোদ্যোগ শুরু করেছেন। শুধু তাই নয়, তাঁরা কিছু মানুষকে কর্মসংস্থান করে দিয়েছে। এদের মধ্যে অনেক মহিলা খাদি গ্রামোদ্যোগের সঙ্গেও যুক্ত রয়েছেন।
বন্ধুগণ,
আজ খাদি যে উচ্চতায় উঠেছে, সেখান থেকে আমাদের ভবিষ্যতের দিকে তাকাতে হবে। আজকাল আমরা প্রত্যেক আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে একটি শব্দ প্রায়শই শুনতে পাই, তা হ’ল –‘ সাস্টেইনেবল’ বা টেকসই। কেউ কেউ বলেন, টেকসই উন্নয়ন। কেউ আবার বলেন, টেকসই শক্তি উৎপাদন। কেউ বলেন, টেকসই কৃষি। আবার কেউ টেকসই উৎপাদনের কথাও বলেন। গোটা বিশ্বে এই লক্ষ্যে অনেক প্রচেষ্টা চলছে, যাতে মানুষের কৃতকর্মের ফলে আমাদের পৃথিবীকে, এই ধরিত্রী মাতাকে ন্যূনতম বোঝা ওঠাতে হয়। বিশ্ব আজকাল শেকড়ে প্রত্যাবর্তনের নতুন মন্ত্র নিয়ে এগিয়ে চলতে শুরু করেছে। প্রাকৃতিক সম্পদ সুরক্ষার উপর বিশেষ জোর দিচ্ছে। এক্ষেত্রে টেকসই জীবনশৈলী নিয়েও আলোচনা হচ্ছে।
আমাদের সমস্ত উৎপাদিত পণ্য যেন পরিবেশ-বান্ধব হয়, আমাদের উৎপাদন প্রক্রিয়া যেন পরিবেশের কোনও ক্ষতি না করে – এটা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এখানে খাদি উৎসবে অংশগ্রহণ করতে আসা সকলে হয়তো ভাবছেন যে, আমি এখানে এই টেকসই কাজের উপর কেন জোর দিচ্ছি। এর কারণ হ’ল – খাদি একটি টেকসই আভরণের উদাহরণ, খাদি একটি পরিবেশ-বান্ধব আভরণের উদাহরণ। খাদি থেকে ন্যূনতম কার্বন নিঃসরণ হয়। এরকম অনেক দেশ রয়েছে, যেখানে তাপমাত্রা অনেক বেশি থাকে, সেই দেশগুলিতে স্বাস্থ্যগত দিক থেকে খাদির প্রচার ও প্রসারের অনেক সম্ভাবনা রয়েছে । অর্থাৎ, খাদি আজ আন্তর্জাতিক স্তরে অনেক বড় ভূমিকা পালন করতে পারে। শুধু আমাদের মনে নিজেদের এই ঐতিহ্যের প্রতি গর্ব থাকতে হবে। খাদির সঙ্গে যুক্ত সংশ্লিষ্ট সকলের জন্য আজ একটি অনেক বড় বাজার তৈরি হয়ে গেছে। এই সুযোগ আমাদের হাতছাড়া হলে চলবে না। আমি সেই দিনটি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি, যখন বিশ্বের সমস্ত বড় সুপার মার্কেটে কাপড়ের বাজারে ভারতের খাদির জনপ্রিয়তা বাড়বে। আপনাদের পরিশ্রম ও আপনাদের ঘামের ফসল এখন সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়বে। জলবায়ু পরিবর্তনের নিরিখে এখন খাদির চাহিদা ক্রমশই বাড়বে। খাদিকে ‘লোকাল থেকে গ্লোবাল’ হয়ে উঠতে কোনও শক্তিই আর আটকাতে পারবে না।
বন্ধুগণ,
আজ সবরমতীর তট থেকে সমস্ত দেশবাসীর উদ্দেশে একটি অনুরোধ জানাতে চাই, আগামী উৎসবের মরশুমে প্রিয়জনদের খাদি গ্রামোদ্যোগে নির্মিত বস্ত্র ও অন্যান্য পণ্য উপহার দিন। আপনাদের বাড়িতে বাড়িতে নানাধরনের ফেব্রিকের কাপড় থাকতে পারে। কিন্তু, সেগুলির মধ্যে আপনারা খাদিকেও কিছুটা জায়গা দিন। আপনাদের এই উদ্যোগ দেশে ‘ভোকাল ফর লোকাল’ অভিযানকেও গতি প্রদান করবে। অনেক গরীব মানুষের জীবনের মানোন্নয়নে অনেক সহায়ক হবে। আপনাদের মধ্যে যাঁরা বিদেশে থাকেন, তাঁরা যখন আত্মীয়স্বজন বা বন্ধু-বান্ধবদের কাছে যাবেন, তখন উপহার হিসাবে খাদি পণ্য কিনে নিয়ে যান। এর ফলে, খাদি গ্রামোদ্যোগ যতটা উৎসাহিত হবে, পাশাপাশি অন্যান্য দেশের নাগরিকদের মধ্যেও খাদি নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে।
বন্ধুগণ,
যে দেশ তার ইতিহাস ভুলে যায়, সেই দেশ নতুন ইতিহাস রচনা করতে পারে না। খাদি আমাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অভিন্ন অঙ্গ। এখন আমরা নিজেদের ঐতিহ্য নিয়ে গর্ব করি বলেই সারা পৃথিবী তাকে সম্মান করছে। এর আরেকটা কারণ হ’ল – ভারতের খেলনা শিল্প। আমাদের খেলনা, ভারতীয় পরম্পরা-ভিত্তিক খেলনাগুলি পরিবেশ সুরক্ষার নিরিখেও অনেক অবদান রাখছে। ছেলেমেয়েদের স্বাস্থ্যের কোনও ক্ষতি হতে দিচ্ছে না। কিন্তু, বিগত কয়েক দশকে অসংখ্য বিদেশি খেলনার আবির্ভাব ভারতকে দুর্বল করে দিয়েছিল। ভারতের নিজস্ব সমৃদ্ধ খেলনা শিল্প বিনষ্ট হচ্ছিল।
সরকারের প্রচেষ্টায় খেলনা শিল্পোদ্যোগগুলির সঙ্গে যুক্ত আমাদের ভাই-বোনেদের পরিশ্রমে এখন পরিস্থিতি বদলাচ্ছে। এখন বিদেশ থেকে খেলনা আমদানি অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে। তেমনই, ভারতীয় খেলনাগুলি বিদেশের অধিকাংশ বাজারে নিজেদের বড় জায়গা তৈরি করে নিয়েছে। এর ফলে, আমাদের ক্ষুদ্র শিল্পোদ্যোগগুলি অনেক লাভবান হয়েছে। আমাদের শিল্পীরা, আমাদের শ্রমিকরা; বিশ্বকর্মা সমাজের সকলে অনেক উপকৃত হয়েছেন।
বন্ধুগণ,
সরকারের প্রচেষ্টায় হস্তশিল্পের রপ্তানি, হাতে বোনা কার্পেটের রপ্তানি নিরন্তর বাড়ছে। আজ ২ লক্ষেরও বেশি তাঁতি ও হস্তশিল্পী জেম পোর্টালের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। আর সরকারকে খুব সহজেই নিজেদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করছেন।
বন্ধুগণ,
করোনার এই সঙ্কটকালে আমাদের সরকার দেশের সমস্ত হস্তশিল্পী, তাঁতি, কুটির শিল্পের সঙ্গে জড়িত ভাই-বোনেদের পাশে দাঁড়িয়েছে। ক্ষুদ্র শিল্পকে অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগগুলিকে আর্থিক সহায়তা দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার কোটি কোটি মানুষকে কাজ হারানো থেকে বাঁচিয়েছে।
ভাই ও বোনেরা,
অমৃত মহোৎসবের সূত্রপাত গত বছর মার্চ মাসে ডান্ডি যাত্রার বর্ষপূর্তি উপলক্ষে সবরমতী আশ্রম থেকে শুরু হয়েছিল। অমৃত মহোৎসব আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালের ১৫ আগস্ট পর্যন্ত চলবে। আমি গুজরাট সরকারের এই সুন্দর আয়োজনের জন্য খাদির সঙ্গে যুক্ত আমাদের ভাই ও বোনেদের অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই। অমৃত মহোৎসবে আমাদের এরকমই নানা আয়োজনের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মকে স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে হবে।
আমি আজ আপনাদের সকলের একটি অনুরোধ রাখতে চাই। আপনারা হয়তো দেখেছেন দূরদর্শনে ‘স্বরাজ’ নামে একটি ধারাবাহিক শুরু হয়েছে। আপানারা দেশের স্বাধীনতার জন্য, দেশের আত্মাভিমানের জন্য, দেশের নানা প্রান্তে কত ধরনের স্বাধীনতা সংগ্রাম হয়েছে, কারা আত্মবলিদান দিয়েছেন – এই ধারাবাহিকে স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত গাথাগুলিকে অত্যন্ত বিস্তারিতভাবে দেখানো হচ্ছে। আজকের নবীন প্রজন্মকে অনুরোধ, প্রতি রবিবার সম্ভবত রাত ৯টায় দূরদর্শনে সম্প্রচারিত ‘স্বরাজ’ ধারাবাহিকটি গোটা পরিবারের সঙ্গে বসে দেখবেন। আমাদের পূর্বজরা আমাদের জন্য কী কী সহন করেছেন, তা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে জানতে হবে। দেশভক্তি, রাষ্ট্র চেতনা আর আত্মনির্ভরতার এই ভাব যেন ক্রমশই বাড়তে থাকে। এই কামনা নিয়ে আরেকবার আপনাদের সকলকে হৃদয় থেকে কৃতজ্ঞতা জানাই।
আমি আজ বিশেষভাবে আমার এই মা ও বোনেদের সম্মান জানাতে চাই। কারণ, চরকা চালানোও একপ্রকার সাধনা। সম্পূর্ণ একাগ্রতা নিয়ে যৌগিক পদ্ধতিতে এটি দেশের উন্নয়নে মা ও বোনেদের অবদানকে সুনিশ্চিত করছে। আর এত বড় সংখ্যক বোন ও মেয়েদের একসঙ্গে চরকা বোনা – ইতিহাসে প্রথমবার এই ঘটনা ঘটেছে।
যাঁরা বছরের পর বছর ধরে এই ভাবনার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন, এই আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন এমন প্রত্যেক বন্ধুকে আমি অনুরোধ করছি যে, আপনারা এতদিন পর্যন্ত যে পদ্ধতিতে কাজ করেছেন, যেভাবে কাজ করেছেন – আজ কেন্দ্রীয় সরকার মহাত্মা গান্ধীর সেই মূল্যবোধগুলি নিয়ে আরেকবার সেই প্রক্রিয়াকে প্রাণবন্ত করে তোলার যে প্চেষ্টা করছে, তাকে ভালোভাবে বুঝতে ও মেনে নিতে চেষ্টা করুন। তাঁদের এগিয়ে যেতে সাহায্য করুন। সেজন্য আমি উপস্থিত সমস্ত বন্ধুদের আমন্ত্রণ জানাই।
আসুন, আমরা সকলে মিলে স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসবে পূজনীয় বাপু যে মহান পরম্পরা রচনা করে গেছেন, যে পরম্পরা এখন ভারতের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের ভিত্তি হয়ে উঠতে পারে; তাকে রক্ষার জন্য সম্পূর্ণ শক্তি প্রয়োগ করুন। নিজের সামর্থ্য যুক্ত করুন। ঐতিহ্য নিয়ে গর্ব করুন আর কর্তব্য পালন করুন। এই প্রত্যাশা নিয়ে আরেকবার আপনাদের সকলকে, সমস্ত মা ও বোনেদের সাদর প্রণাম জানিয়ে আমার বক্তব্য সম্পূর্ণ করছি।
ধন্যবাদ।
বি.দ্র.ঃ প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের অনেকটা অংশই গুজরাটি ভাষায় ছিল, তার ভাবানুবাদ করা হয়েছে।
PG/SB/SB
Celebrating the vibrant Khadi tradition of India! Joined 'Khadi Utsav' at Sabarmati Riverfront. https://t.co/uiRB4JfeOZ
— Narendra Modi (@narendramodi) August 27, 2022
Every Indian has an emotional connect with the Charkha. It was a symbol of our freedom struggle and remains a symbol of hope and empowerment.
— Narendra Modi (@narendramodi) August 27, 2022
Glimpses from today's Khadi Utsav. pic.twitter.com/9qF5I2VigL
आजादी के 75 वर्ष पूरे होने के उपलक्ष्य में 7500 बहनों-बेटियों ने खादी उत्सव में एक साथ चरखे पर सूत कातकर नया इतिहास रच दिया है। pic.twitter.com/o5mAy4N738
— Narendra Modi (@narendramodi) August 27, 2022
Khadi then- a symbol of our Independence movement under Gandhi Ji.
— Narendra Modi (@narendramodi) August 27, 2022
Khadi now- a symbol of Aatmanirbhar Bharat. pic.twitter.com/hp4e3qs74F
From the banks of the Sabarmati we begin a movement to further popularise Khadi. pic.twitter.com/7sXhs0RE5n
— Narendra Modi (@narendramodi) August 27, 2022
साबरमती के तट से देशभर के लोगों से मैं एक अपील करना चाहता हूं… pic.twitter.com/Ew6dQTifnb
— Narendra Modi (@narendramodi) August 27, 2022
साबरमती का ये किनारा आज धन्य हो गया है।
— PMO India (@PMOIndia) August 27, 2022
आजादी के 75 वर्ष पूरे होने के उपलक्ष्य में, 7,500 बहनों-बेटियों ने एक साथ चरखे पर सूत कातकर नया इतिहास रच दिया है: PM @narendramodi at 'Khadi Utsav'
अटल ब्रिज, साबरमती नदी को, दो किनारों को ही आपस में नहीं जोड़ रहा बल्कि ये डिजाइन और इनोवेशन में भी अभूतपूर्व है।
— PMO India (@PMOIndia) August 27, 2022
इसकी डिजाइन में गुजरात के मशहूर पतंग महोत्सव का भी ध्यान रखा गया है: PM @narendramodi
इतिहास साक्षी है कि खादी का एक धागा, आजादी के आंदोलन की ताकत बन गया, उसने गुलामी की जंजीरों को तोड़ दिया।
— PMO India (@PMOIndia) August 27, 2022
खादी का वही धागा, विकसित भारत के प्रण को पूरा करने का, आत्मनिर्भर भारत के सपने को पूरा करने का प्रेरणा-स्रोत बन सकता है: PM @narendramodi
15 अगस्त को लाल किले से मैंने पंच-प्रणों की बात कही है।
— PMO India (@PMOIndia) August 27, 2022
साबरमती के तट पर, इस पुण्य जगह पर मैं पंच-प्रणों को फिर दोहराना चाहता हूं।
पहला- देश के सामने विराट लक्ष्य, विकसित भारत बनाने का लक्ष्य
दूसरा- गुलामी की मानसिकता का पूरी तरह त्याग: PM @narendramodi
तीसरा- अपनी विरासत पर गर्व
— PMO India (@PMOIndia) August 27, 2022
चौथा- राष्ट्र की एकता बढ़ाने का पुरजोर प्रयास
पांचवा- नागरिक कर्तव्य: PM @narendramodi
आजादी के आंदोलन के समय जिस खादी को गांधी जी ने देश का स्वाभिमान बनाया, उसी खादी को आजादी के बाद हीन भावना से भर दिया गया।
— PMO India (@PMOIndia) August 27, 2022
इस वजह से खादी और खादी से जुड़ा ग्रामोद्योग पूरी तरह तबाह हो गया।
खादी की ये स्थिति विशेष रूप से गुजरात के लिए बहुत ही पीड़ादायक थी: PM
हमने खादी फॉर नेशन, खादी फॉर फैशन में खादी फॉर ट्रांसफॉर्मेशन का संकल्प जोड़ा।
— PMO India (@PMOIndia) August 27, 2022
हमने गुजरात की सफलता के अनुभवों का देशभर में विस्तार करना शुरु किया।
देशभर में खादी से जुड़ी जो समस्याएं थीं उनको दूर किया।
हमने देशवासियों को खादी के product खरीदने के लिए प्रोत्साहित किया: PM
भारत के खादी उद्योग की बढ़ती ताकत के पीछे भी महिला शक्ति का बहुत बड़ा योगदान है।
— PMO India (@PMOIndia) August 27, 2022
उद्यमिता की भावना हमारी बहनों-बेटियों में कूट-कूट कर भरी है।
इसका प्रमाण गुजरात में सखी मंडलों का विस्तार भी है: PM @narendramodi
खादी sustainable clothing का उदाहरण है।
— PMO India (@PMOIndia) August 27, 2022
खादी eco-friendly clothing का उदाहरण है।
खादी से carbon footprint कम से कम होता है।
बहुत सारे देश हैं जहां तापमान ज्यादा रहता है, वहां खादी Health की दृष्टि से भी बहुत अहम है।
इसलिए खादी वैश्विक स्तर पर बहुत बड़ी भूमिका निभा सकती है: PM
मैं देशभर के लोगों से एक अपील भी करना चाहता हूं।
— PMO India (@PMOIndia) August 27, 2022
आने वाले त्योहारों में इस बार खादी ग्रामोद्योग में बना उत्पाद ही उपहार में दें।
आपके पास अलग-अलग तरह के फैब्रिक से बने कपड़े हो सकते हैं।
लेकिन उसमें आप खादी को भी जगह देंगे, तो वोकल फॉर लोकल अभियान को गति मिलेगी: PM
बीते दशकों में विदेशी खिलौनों की होड़ में, भारत की अपनी समृद्ध Toy Industry तबाह हो रही थी।
— PMO India (@PMOIndia) August 27, 2022
सरकार के प्रयास से, खिलौना उद्योगों से जुड़े हमारे भाई-बहनों के परिश्रम से अब स्थिति बदलने लगी है।
अब विदेश से मंगाए जाने वाले खिलौनों में भारी गिरावट आई है: PM @narendramodi